![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
My name is Md. Kamrul Islam. I completed MBA from Stamford University of Bangladesh. Now I'm Officer of Eastern Bank Ltd.
৩৯
মফিজের বর্তমান উপার্জন ভালো। জরিনা ও সে মিলে যা উপার্জন করে তা থেকে ব্যাংক একাউন্টে প্রতিমাসে কিছু টাকা জমা রাখে। তাদের স্বপ্ন একটা ভালো ব্যবসা করার। তাই যেই সময়ই হাতে বাড়তি টাকা থাকে তা ব্যাংকে জমা রাখে।
জরিনা কার কাছে যেন শুনেছে প্রাইজ বন্ড কিনলে ভাগ্যে অনেক টাকার পুরস্কার লাগতে পারে। এবার সে একশ টাকার পাঁচশ প্রাইজ বন্ড কিনলো ভাগ্য যাচাই করতে।
মফিজ ভাগ্য খুব বিশ্বাস করে। ভাগ্যে না থাকলে দুনিয়াতে কিছুই পাওয়া যায় না। আর ভাগ্যটা নির্ধারণ করে বিধাতা। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য শৈশব থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যেভাবে ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায় সেভাবে পরিবর্তন হয় না। সংসারে অভাবের একটা রেশ লেগেই থাকে । পৈতৃকভাবে সে কিছুই পায় নাই। তার দাদা তার বাবার কাছ থেকে যা পেয়েছে ধরে রাখতে পারে নাই। বিশাল জমিদারি ধ্বংস করেছে নেশা ও মেয়েমানুষের পিছনে । পর পর পাঁচবার চেয়ারম্যানি নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছে। দাদা তার তালুকদারীর দাপটে সাধারন মানুষকে হুকুমের গোলাম মনে করতো। সাধারন মানুষ তাকে ভয়ে সম্মান করলেও নির্বাচনে ভোট দিত না। এভাবে তার দাদা বিশাল তালুকদারী বিনাশ করে শেষে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মারা গেছে এবং তার বাবাকে রেখে গেছে শূন্য হাতে।
মফিজ তেমন লেখা-পড়া করতে পারি নাই। লেখা-পড়া বিধাতার দান। বিধাতা চাইলে এমনেতেই লেখা-পড়া হয়। না চাইলে হয় না। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার জোড়ে কিছু লেখতে পড়তে পারে। আতাহার আলী এক ক্লাসও পড়ে নাই তার চেয়ে বেশী শিক্ষিত মফিজ।
চায়ের দোকানদার মোখলেস বললো, ‘আল্লাহ না চাইলে কিছুই হয় না। একটা জর্রাও এদিক ওদিক হয় না।’
মফিজ বললো, ‘অবশ্যই আল্লাহ না চাইলে কোন কাজই হয় না। আমি চেষ্টা করে যাব দেওয়ার মালিক আল্লাহ।’
মে মাসের ১৮ তারিখে ১০০ টাকার প্রাইজবন্ডের ড্র । ১৯ তারিখে পুস্কারের নম্বরগুলো প্রকাশিত জাতীয় দৈনিকগুলোতে। জরিনার প্রাইজবন্ডের নম্বরগুলো মিলিয়ে দেখে গ ৫৪৩২ নম্বর ১ম পুরস্কার। পুরস্কার পেয়ে জরিনা ও মফিজ মহাখুশি । বিষয়টা কারো কাছে জানালো না। দু’দিন পর্যন্ত তাদের সবকিছুতেই বাড়তি আনন্দ। দু’দিন পর গেলা বাংলাদেশ ব্যাংকে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাইজবন্ডটি দেখিয়ে ৬ লাক্ষ টাকা আনলো ।
অনেকদিন আগে তাহের চৌধুরী নামে এক লোকের সাথে মফিজের ব্যবসায়িক আলাপ হয়েছিল। সে চায়না থেকে মোবাইল, কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ এনে ঢাকার বড় বড় মার্কেটে বিক্রি করে। বর্তমানে এই ব্যবসায় অনেক লাভ। তাহের চৌধুরীর সাথে কয়েকজন আছে যারা কেবল টাকা দেয় চায়না থেকে মাল আনার। মাস শেষে তাহের চৌধুরী তাদের আসল টাকার সাথে কিছু লাভ ধরিয়ে দেয়। সে তাাকে বললো, ‘মফিজ মিয়া টাকা লগ্নী কর এই ব্যবসায়।’
মফিজ কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানলো বিষয়টা কিরকম এবং তাহের চৌধুরী মানুষ হিসাবে কেমন। সবার কাছ থেকে তার সম্পর্কে ভালো রিপোর্ট পেলো। প্রাইজ বন্ডের পুরস্কারের টাকায় তাহের চৌধুরীর সাথে চায়না থেকে মালামাল এনে বাংলাদেশ মার্কেটে বিক্রি করার পরিকল্পনা করলো সে।
তাহের চৌধুরী সাথে দেখা করে বললো, ‘ভাই, এবার আপনার সাথে চীনে যেতে চাই। কবে নিবেন বলেন ?’
তাহের: ‘আগামী মাসের ২৪ তারিখে। কি পরিমান টাকা নিতে পারবা মফিজ মিয়া ?’
মফিজ বললো, ‘পাঁচ লক্ষ।’
তাহের: ‘তোমার পাসপোর্ট আছে ?’
মফিজ: ‘না, কালই পাসপোর্ট করতে দিব।’
তাহের: ‘মফিজ মিয়া শোন, টাকা থাকলেও অনেকে অনেক কিছু করতে পারে না। এ ব্যবসা তোমার জন্য ভালো হবে। আমাদের ইসলাম ধর্মে নবী করিম (সঃ) জীবিকার জন্য ব্যবসার উপড় সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছে। তা কি জানো ?’
মফিজ বললো: ‘জানি।’
তাহের চৌধুরী এই ব্যবসা করে অনেক টাকার মালিক। ঢাকাতে তার দু’টো বাড়ি । মার্র্সিডিল গাড়ী। তার স্ত্রী রিনি বেগম স্বামীর টাকা নিজের শখের পিছনে দু’হাতে টাকা উড়াচ্ছে। এক সময় তাহের চৌধুরী ঢাকাতে এসে তিন বেলা ঠিকমত খেতে পারে নাই। আজ কোটি কেটি টাকার মালিক। ঢাকাতে এ রকম বহু ইতিহাস আছে। কথায় আছে কষ্ট না করলে কেষ্ট মিলে না। দুঃখ কষ্ট অনেক কিছু শিখায়। অনেকে দুঃখ কষ্টের সমুখীন হলে জীবনটাকে অভিশপ্ত মনে করে। আসলে যার জীবনে দুঃখ কষ্ট নাই তার জীবনে সুখ নাই। দুঃখ-কষ্ট থেকে মানুষ প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। তাহের চৌধুরী জানে কিভাবে সঠিকভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয়। এক সময় সেও দুঃখকে ভয় পেত। কষ্টে পড়লে নিজেকে অসহায় মনে করতো। যখন বুঝলো এরকম ভাবা ঠিক না। তখন কঠিন বিপদেও নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখলো। আজ সেই তাহের চৌধুরীর শিল্পপতি। ব্যবসায় সবচেয়ে বড় সস্পদ: কথা দিয়ে কথা রাখা। নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম করা। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের গুন ও মানের পরিবর্তন আনা। যুগউপযোগী ব্যবসায়ই সফল ব্যবসা।
আগের প্রশ্নের উত্তর: ১৯৯৩ সালে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশ ক্রিকেটে ওয়ানডে স্ট্যাাটাস লাভ করে কবে ?
উত্তর:
আপনার উত্তরটি সঠিক হয়েছে কিনা পরের অধ্যায়ের শেষে মিলিয়ে নিন ।
©somewhere in net ltd.