নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এত বুড়ো কোনোকালে হব নাকো আমি, হাসি-তামাশারে যবে কব ছ্যাব্লামি। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমাদের সময় "ধাতুক্ষয়" নামক এক ধরনের অদ্ভুত রোগ ছিলো। সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত অল্প বয়সী ছেলেদের হতো। এই রোগের চরম ও চূড়ান্ত চিকিৎসা ছিলো বিবাহ।
আমার সমবয়সী বন্ধু বজলু এই অদ্ভুত ধাতুক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। ধাতু রোগের প্রভাবে তার শরীর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে খানখান, চোখ ঢুকে গেছে গর্তে , দিনদিন সে কঙ্কালিক দেহাবয়বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
বজলুকে বাঁচাতে তার বাপ চাচারা সলাপরামর্শ করে ধাতুক্ষয় রোগের চরম ও চূড়ান্ত চিকিৎসা বিবাহের বন্দোবস্তো করলো। দিন-দশেকের মধ্যেই পাশের গ্রামের এক ডাগর আঁখির চঞ্চলা হরিণীর সাথে বজলুর বিবাহকাব্য রচিত হলো।
নববিবাহিত বজলু হুড তোলা রিকশায় লাল চাদর পেঁচিয়ে নববধূ নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যায়।
বউভক্ত বজলু বউয়ের জন্য রসগোল্লা কিনে, শ্বাশুড়ির জন্য পান সুপারি কিনে, ছোট্ট শালির জন্য আদুরে খেলনাপাতি কিনে।
বিবাহ সম্পাদনের পরপরই অভূতপূর্বভাবে বজলুর হারানো স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার হলো। ঈর্ষনীয় আনন্দময় জীবন পেলো ধ্বজভঙ্গ বজলু।
বজলুর এই জীবনধারা দেখে আমার মানসপটে একটাই আকাঙ্খা, কেন আমার ধাতুক্ষয় রোগ হচ্ছে না!
একদিন একান্ত আলাপে বজলুকে বললাম,
- বন্ধু, কি করলে এই রোগ হবে?
প্রিয় বন্ধু বজলু কাউকে না বলার শর্তে ধাতুক্ষয় রোগের প্রারম্ভিক ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালো। এবং আমি সে অনুযায়ী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলাম।
তারপর একদিন আমার এক প্রতিবেশী দাদাকে ঘটনা জনালাম,
- দাদা, আমার তো বজলুর মতো ধাতুক্ষয় রোগ হইছে।
দাদাজান বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলে বললেন,
- কস কী?
- জী দাদাজান, আব্বাকে বলেন চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে।
অতঃপর এক কাক ডাকা দুপুরে ধাতুক্ষয় রোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত আলাপের জন্য আব্বা আমাকে ডেকে পাঠালেন। পিতাপুত্রে একটা আদবপরিপন্থি রোগ নিয়ে আলোচনা হবে,পুত্র হিসেবে আমার যতটুকু লজ্জিত হওয়া উচিত আমি তার চেয়েও বেশি লজ্জাবনত হয়ে আব্বার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
কোনোকিছু বুঝার আগেই আব্বাজান আমার মাথা, কান ও গালের সম্মিলন স্থলে একটা কুংফু থাপ্পড় লাগালেন।
আব্বার থাপ্পড় শিল্প পর্যায়ের। প্রথমার্ধে ঝিমঝিম অনুভূতি হয় দ্বিতীয়ার্ধে ফার্স্ট টাইম গাঁজা খেলে যেমন অনুভূতি হয় তেমন লাগে।
থাপ্পড় খেয়ে আমি ঢলো ঢলো পায়ে মাতালের মতো হেঁটে গৃহ থেকে ক্ষানিক দূরের এক আম্রবাগানে পা মেলে বসে আছি।
মাথা কাজ করছেনা, মনে হচ্ছে মস্তিষ্কের ইকুইলিব্রিয়াম পুরোপুরি ডেমেজ হয়ে গেছে।
আব্বার ঐ থাপ্পড়ের সুদূরপ্রসারী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমার ধাতুক্ষয় রোগ সমূলে উৎপাটন করতে সক্ষম হয়।
অভিবাদন হে পিতা।
(©উব্দাস্তু অনিক,কিঞ্চিৎ সম্পাদিত)
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: থাপ্পড় খেয়ে কারো মাথা চক্কর দেয় আর কেউ সেখানে "রসালো ঘটনা" খুঁজে পায় বড়ই তাজ্জব!
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: খালুজান গুণী মানুষ ছিলেন। বুঝতে পেরেছিলেন পুত্রের এমন কঠিন রোগের আদর্শ ঔষধ কী হতে পারে। তাই চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনি তো আর এই চিকিৎসার ভিতর দিয়ে যাননি,কথকের দুস্ক বুঝবেন ক্যাম্নে?
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬
সোনাগাজী বলেছেন:
হাজার হলেও জাপানী বাবা
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ছেলেও!
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩
বাকপ্রবাস বলেছেন: একই রোগের ভিন্নভিন্ন চিকিৎসা তরিকা।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এটা অবিচার ব'ই অন্য কিছু নয়!
৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৮
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: এটা থেরাপি জাতীয় চিকিৎসা ছিলো।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: জি চড় থেরাপি
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৪৯
কামাল১৮ বলেছেন: বজলুর বাতানো ক্রিয়া কর্ম ৫/৭ দিনের মাথায় একবার রপ্ত করলে খারাপ না।কিন্তু মজা পেয়ে দিনে রাতে সমানে করলে বজলুর মতো অবস্থা হবে।আমার বক্তব্য বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত।এখন অনেক কিছু নিয়ে রিসার্চ হয়।
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানবেন কামাল১৮
৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:০৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: গিয়াস উদ্দিন লিটন,
ঐ রহম কুংফু থাপ্পড় খাইয়া যহোন ঘুরাইন্না মাথা লইয়া আম্রকাননে পা ছড়াইয়া বসিয়াছিলেন তহনতো চউক্ষে লালপরী, নীলপরী দ্যাহার কতা। নিদেন পক্ষে চঞ্চলা হরিণীর মতো কেহই কি চউক্ষের সামনে দিয়া দৌঁড় দ্যায় নাই? তাহা হৈলে তো থাবা দিয়া ধরতে পারতেন! ধরতে যহোন পারেন নাই তহন বোজা গ্যাছে ক্ষয়রোগ অর্জন করতে গিয়া হাতেরও বারোটা বাজাইছেন........
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: হাহাহা আপনার রসবোধ বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করে।
৮| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:১৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
খারাপ না।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ নিন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন
৯| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২২
জাহিদ অনিক বলেছেন: হা হা হা! ভীষণ বিনোদিত হইয়াছি। ভালো লেগেছে গিয়াস ভাইয়া। অনেকদিন পরে আপনার এই অষ্টাদশোর্ধ রম্য পড়লাম।
সোনাগাজী বলেছেন:
হাজার হলেও জাপানী বাবা
মন্তব্যখানা খাসা। জাপানী কলিকাতা সকল মন্তব্যের সেরা যে বাংলা মন্তব্য আবারও প্রমানিত!
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সোনাগাজীর এলাকার অশিক্ষিত লোকজন নিজ জেলা ছাড়া অন্য সকল জেলার লোক কে জাপানি বলে। সোনাগাজী সেই মুদ্রা দোষ ছাড়তে পারেন নি।
আপনি বিনোদিত হওয়ায় আনন্দিত বোধ করছি জাহিদ অনিক।
১০| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৩০
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: হাহাহা...
দারুন দাদা...
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ নিন নয়ন বড়ুয়া।
১১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:১৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ঢাকা দক্ষিণের শনির আখড়া বাস স্টপেজে নেমে যে কোন রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেই হবে।
বলতে হবে -জাপানি বাজার যাবেন?
ভাড়া মাত্র ২০ টাকা।
জাপানি বাবা যেমন আছেন জাপানি বাজার ও আছে ঢাকাতেই।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চাটগাঁইয়া গাইয়াদের কাছে চিটাগং ছাড়া সারা দেশ ই জাপান।
১২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: অল্প বয়সে বিবাহ করা ভুল। অনেক বড় ভুল।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে করা যেতে পারে
১৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খুব মজার। পড়ে হাসি থামিয়ে রাখতে পারলাম না।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে আনন্দিত বোধ করছি।
১৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: জোস হয়েছে।+++
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ধন্যবাদ নিন জনাব মাইদুল সরকার।
১৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২
বিজন রয় বলেছেন: হে হ হা হা যেমন রোগ তেমন চিকিৎসা।
তবে আপনার এই রম্য পড়ে অনেকেই ভয় পাবে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভয় পাবে কেন বিজন দা?
১৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হাহাহাহ এসব কী লিটন ভাইয়অ হাহাহাহা
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:৩৬
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সমস্যা কি ছবি,এ তো চিকিৎসা সংক্রান্ত পোস্ট।
১৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০৬
মিরোরডডল বলেছেন:
লিটন, সেইরাম মজার হয়েছে
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:১৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মিরোরডডল
১৮| ২০ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: মাতাপিতা কর্তৃক প্রদেয় থাপ্পড় থেরাপির প্রয়োজন ছিল, আজও আছে। কিন্তু পাশ্চাত্যে এ থেরাপির চর্চা করতে গেলে সন্তান কর্তৃক মাতাপিতার মামলা খাওয়া হবে একটা অনিবার্য পরিণতি।
রোগটা বয়ঃপ্রাপ্তির স্বাভাবিক পরিণতি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সাধারণতঃ প্রাকৃতিক নিয়মেই এর বিলুপ্তি ঘটে থাকে। যাহোক, আমার মতে আপনার এ পোস্টের সার সংক্ষেপঃ
যে কোন রোগের চিকিৎসা
রোগী ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
কারও সেটা পরিণয়ে সারে,
কারও সারে থাপ্পড়ে!
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: যে কোন রোগের চিকিৎসা
রোগী ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
কারও সেটা পরিণয়ে সারে,
কারও সারে থাপ্পড়ে!' এটা চমৎকার বলেছেন। এই প্রকারের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে প্রথাসিদ্ধ। যে ওইষধে একজনের মাথা ব্যথা ভাল হয় সেই একই অইষধে আরেকজনের মাথা ব্যথা ভালো নাও হতে পারে।
১৯| ০৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬
আমি তুমি আমরা বলেছেন: একই রোগের ভিন্ন চিকিৎসা,
অথচ দুটোই ফলদায়ক
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০২
প্রামানিক বলেছেন: বড়ই রসালো ঘটনা।