নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখি, ছবি তুলি আর সিনেমা বানাই ।
চরিত্র
রাজাকারের ছেলে
রাজাকার ও ৪ জন সঙ্গী
ছখিনা বিবি
২ জন দারোয়ান
প্রসিকিউটর ও তার সহকারী
সাংবাদিক ও তার সহকারী।
দ্রশ্যপট ০১: গভীর রাত। ঝিঁ ঝিঁ পোকা ডাকছে। পাশের রাস্তা থেকে কয়েকটা কুকুরের ডাক ভেসে আসছে। হারিকেনের মৃদু আলোতে একটা ছেলে কবর খুঁড়ছে। তার পরনে গেঞ্জি। কোমরে গামছা। লুঙ্গিটা কাছা মারা।
দ্রশ্যপট ০২: কংক্কাল হাতে কর্দমাক্ত ছেলেটা ট্রাইব্যুনালের দরজার সামনে অপেক্ষমান দারোয়ানের সাথে বাকবিতণ্ডা করছে উচ্চস্বরে “ আমারে ভেতরে যাইতে দেন, আমারে ভেতরে যাইতে দেন। হুজুরের লগে আমার কিছু আলাপ আছে”।
দ্রশ্যপট ০৩: বাইরের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ভেতর থেকে প্রসিকিউটরের সহকারী এসে ছেলেটাকে ভেতরে প্রসিকিউটরের সামনে নিয়ে যাবে। প্রসিকিউটর ছেলেটাকে দেখার সাথে সাথেই অপ্রকৃতস্ত হয়ে বলবে...
প্রসিকিউটর : এই এই এই পাগলটা এইখানে ক্যান ওরে বের কর বের কর
ছেলে : হুজুর আমি পাগল না আমি পাগল না এই যে আমার হাতে যে জিনিসটা দেখছেন (কংক্কালের দিকে আঙ্গুল ইঙ্গিত করে) এইটা আমার বাজান আমি সারারাত কবর খুইরা নিয়া আইছি।
প্রসিকিউটর : আরে এতো বদ্ধ উন্মাদ ওকে তাড়াতাড়ি বের কর।
ছেলে : হুজুর আমি পাগল না আমি পাগল না আমার কথা একটু শুনুন।
দ্রশ্যপট ০৪ : একজন সহকারী নিয়ে সাংবাদিকের প্রবেশ। সহকারীর কাঁধে ক্যামেরা । সাংবাদিকের হাতে মাইক্রোফোন। সাংবাদিক বলবে “কি হয়েছে আমাদের বলুন”
ছেলে : ভীষণ ক্ষোভ নিয়ে বলবে “ ৭১’এ আমার বাজান আছিল রাজাকার। তার নখের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল ছখিনা বিবির শরীর...”
পিছনের ইতিহাস...
দ্রশ্যপট ০৫ : অন্ধকার রাত। রাজাকারের সাথে ৪ জন সঙ্গী। রাজাকার ঘরের দরজায় কড়া নাড়বে। ভেতর থেকে ছখিনা বিবি দরজা খুলে বলবে
ছখিনা : এতরাইতে আপনি
রাজাকারঃ আমিতো রাইতের কাম সারণের লাইগা আইছি
ছখিনা : কি কন মাতব্বর সাব ( ভয় থাকবে ছখিনার চোখে মুখে) “মা মা ও মা” বলে মাকে ডাকবে।
মা : বৃদ্ধ মহিলা । মাতব্বর সাব আমার মাইয়ার সর্বনাশ কইরেন না। আপনাগো আল্লাহর দোহাই লাগে আমার মাইয়ার সর্বনাশ কইরেন না।
রাজাকার : ঐ তোরা কই বুড়িরে ধর।
৪ জন সঙ্গী : মা’কে ধরে রাখবে।
রাজাকার : তোর জামাইরে কইছিলাম আমাগো রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিতে সেতো দিলনা । সে নাকি দেশ স্বাধীন কইরবো । দেশ স্বাধীন হইলে হিন্দুস্তানিগো শাসন কায়েম হইব আসতাগফিরোল্লাহ !!!! নাউজুবিল্লাহ !!!! । পাকিস্তান শব্দের মধ্যে একটা পাক পবিত্রতার ভাব আছে । তোগো মতোন নাফরমান মুসলমানের মধ্যে ইসলামের জন্য কোন দরদ নাই। আর তোগো মতোন নাফরমানের ভরাট শরীর আমার বেশ ভালা লাগে।
ছখিনা বিবির চিৎকার...
দ্রশ্যপট ০৬ : ছেলেটা বলবে “ আমার বাজান যখন ইন্তেকাল করলেন মহল্লার সকলে আইছিল জানাজায় শামিল হইতে। আমার বড়ই শরম লাগছে আমার বড়ই হাঁসি পাইছে। সবাই কি তাইলে ভুইলা গেছে আমার বাজানের ৭১’ এর কাহিনী। আমিতো ভুলি নাই । ছখিনা বিবিতো ভুলে নাই। এখনও আমার বাজানের নখের আঘাত ছখিনা বিবির শরীর থেইকা মুইছা যাই নাই। এত অল্প সময়ে আপনারা বেবাগে ভুইলা গেলেন?”
সাংবাদিক সাব আপনার মাধ্যমে আমি আমার রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানাই আমার বাজানের এই কংক্কালটারে (কংক্কালের দিকে আঙ্গুল ইঙ্গিত করে) ফাঁসির দড়িতে ঝুলাইয়া রাজাকারের শাস্তি কার্যকর করুক। তাইলে আমি ফিরা পামু একজন নিষ্পাপ বাপ। আর বলতে পারুম আমার বাজান রাজাকার না। আর এতোদিন যে বিবেক আমারে খুইরা খুইরা খাইছে আর বলছে তুই রাজাকারের সন্তান,এই দেশের আলো বাতাস তোর না। আমি তারে কইতে পারুম আমি রাজাকারে সন্তান না এই দেশ আমার এই দেশের আলো বাতাসও আমার।
সাংবাদিক : এই ছেলেটার ভাব ভঙ্গি পাগলের মত মনে হলেও তার কথা গুলো অত্তন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ । আশা করি আমাদের মত আমার দেশের মহান রাষ্ট্রপতি এই ছেলের কথার গুরুত্ব বিবেচনা করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিবেন। স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের সামনে থেকে গোলাম সরয়ার । চ্যানেল আমাদের কথা । ঢাকা।
[email protected]
prachin
23 kb plaza,chawkbazar,Chittagong
©somewhere in net ltd.