![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
ক’দিনে সাত দিন হয়!? জিজ্ঞাসাটা কিছুটা অবান্তরই বটে। তবে যে দেশের জনগণ একটি বিশেষ বাক্যে মোটামুটি অভ্যস্ত সেটি হলো (নাথিং ইজ ইম্পসিবল ইন পলিটিক্স), সে দেশে সাত দিন পার হতে কয়েক মাসও যে লেগে যেতে পারে, তা বুঝতে খুব একটা কষ্টের কিছু নেই। অর্থাৎ পলিটিক্সের সাত দিন কয়েক মাসেও হতে পারে।
হ্যাঁ। এ ধরনের বেশ কয়েকটি সাত দিন নিয়ে গত মাসাধিককালে রাজনীতির হাওয়া গরম হয়েছে বাংলাদেশে। বিগত ৫ই জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া অবরোধ-হরতালের সূত্র ধরে সরকারের কয়েকজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতা বিবৃতিতে সাত দিনের আলটিমেটাম দিতে শুরু করেন। মঞ্চ কাঁপিয়ে তাদের বলতে শোনা যায়, ‘সাত দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে’। মাসাধিককালে বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে এ ধরনের সাত দিনের আলটিমেটাম শোনা গেছে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির মুখ থেকেই। তবে এ সাত দিনের শেষ হবে আসলে ক’দিনে, তা দেখার অপেক্ষায় সীমাহীন উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় সাধারণ মানুষ।
এবার আসুন আমরা একবার দেখে নিই, কার সাত দিন কত তারিখ থেকে শুরু হয়েছে -!?
15.01.2015ইং অর্থমন্ত্রী-এম এ মুহিত, সচিবালয়ে সাংবাদিকদের রাজনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির হালচাল নিয়ে বলেছিলেন, প্রত্যাশা করছি পরিস্থিতি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (বিশেষ মন্তব্য : আমরা দেখতে চাই, কথা কাজের মিল আছে।)
17.01.2015ইং খাদ্যমন্ত্রী-কামরুল ইসলাম, সেগুনবাগিচায় খাজা নাজিমুদ্দিন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এরপর বিএনপি আন্দোলনের নাম ও নিতে পারবে না। (বিশেষ মন্তব্য : আমরা দেখতে চাই, আগামী দিনগুলি যেনো নিরাপদে জনপথ অতিক্রম করা যায়।)
19.01.2015ইং যুগ্ম মহাসচিব-মাহবুব উল আলম হানিফ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে স্বাচিপ আয়োজিত এক মানববন্ধনে বলেছেন, কথা দিলাম আগামী সাত দিনের মধ্যে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যদিও এখন তিনি বলছেন, বিএনপি একটি বড় দল তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন করতে বেশ কিছু সময লাগবে। (বিশেষ মন্তব্য : তিনি তাঁর কথার জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন।)
22.01.2015ইং বাণিজ্যমন্ত্রী-তোফায়েল আহমেদ, দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে মাগরিবের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে। (বিশেষ মন্তব্য : আমরা দেখতে চাই, অধিবেশনে জনগণের যোগানকৃত অর্থের সঠিক মূল্যায়ন করা হবে। এবং বুঝা যায় পরিস্থিতি ঠিক আগের তুলনায় কিছুটা নমনীয় হয়েছে।)
23.01.2015ইং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য-সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে দেশ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (বিশেষ মন্তব্য : দেশ স্বাভাবিক আছে কিনা জানি না, তবে সাধারণ মানুষ খুব একটা স্বাভাবিক অবস্থানে আছে বলে মনে হয় না।)
28.01.2015ইং বিজিবি মহাপরিচাল, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (বিশেষ মন্তব্য : এখন পরিস্থিতি তূলনা মূলক কিছুটা স্বাভাবিক।)
03.02.2015ইং ডিএমপি কমিশনার-আছাদুজ্জামান মিয়া সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নতুন কমিটির নেতাদের সাথে মতবিনিময় কালে বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। (বিশেষ মন্তব্য : পুলিশ চাইলে দেশে সুন্দর একটি পরিবেশ উপহার দিতে খুব একটা বেগ পেতে হবে বলে মনে হয় না কিন্তু তাঁরা কি তা চাইতেছেন। আশা করি আপনাদের কাছে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই সহযোগিতা পাবেন এবং সেটাকে যেনো তার দুর্বলতা না মনে করা হয়। সেদিকে পুলিশ বিশেষ নজর রাখবে বলেও মনে করি।)
এইতো গেলো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেয়া সাত দিন এবং সেই তারিখ ইতিমধ্যে উর্ত্তীর্ণ হয়ে গেছে। যদিও হরতাল-অবরোধ কিংবা পেট্রোলবোমা বাজদের সঠিক রহস্য এখনো রহস্যই থেকে যাচ্ছে। আমি কিংবা আমার মতো আরো যারা সাধারণ নাগরিক আছেন সবার একটি আশা, অচিরেই যেনো দেশের পরিস্থিতি আগের তূলনায় স্বাভাবিক হয়ে যায় এবং আমরা নির্ভয়ে রাস্তা চলতে পারি। ঘর থেকে বের হলে মনে ভীষণ ভয় ভর করে। যার কারণে কাজ থাকা সত্তেও অনেক সময় অফিসে যেতে মন চায় না। তাই দিনের দোহায় না দিয়ে, দেশের অনাকাঙ্খিত সমস্যাগুলির কথা চিন্তা করে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কথা মাথায় রেখে সবার একটি কেন্দ্রে আসা উচিত। যেখান থেকে কাজ করলে দেশ ও জাতি উভয় বেশি লাভবান হতে পারে।
এখন আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করছি, আপনি কি বলতে পারেন -ক’দিনে সাত দিন হয়!?
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭
শেখ মফিজ বলেছেন: ভূল ভবিয্যৎবাণী ।