![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ এবং বিশ্ব মোড়ল হওয়ার পরেও বিশ্ব মানচিত্রে আমেরিকা বলে কোনো দেশেরই অস্তিত্ব নেই! তা হলে প্রশ্ন জাগে, আমেরিকান কারা? এই জটিলতা বা অস্পষ্টতার কারণে অনেকে মার্কিনি বলে ডেকে থাকে। বাস্তবে সারা দুনিয়ার লোকেরা যাদের এই মুহুর্তে আমেরিকান বলে জানেন, তারা আর কেই নন, কেবল উত্তর আমেরিকার একটি দেশ আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের (ইউনাইটেড স্টেট অব আমেরিকা) নাগরিক। আসলে কিন্তু উত্তর আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা এই দুই মহাদেশের সব দেশের লোকই আমেরিকান হওয়ার দাবিদার। যেমনটি আফ্রিকান, এশিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান অর্থাৎ অন্য সবার জন্য প্রযোজ্য। সে ক্ষেত্রে ইউএসএ’র নাগরিকেরা সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কেবল নিজেদেরকে আমেরিকান হিসেবে পরিচয় দেয়ার একসেটিয়া অধিকার হাতিয়ে বা ছিনিয়ে নিয়েছে। আবার মজার বিষয় হলো, এভাবে আমেরিকান হওয়ার মনোপলি বাগিয়ে নেয়ার পরও খোদ আমেরিকার মূল ভূখন্ডে কিন্তু অফিসিয়ালি কোনো আমেরিকানই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাহলে কি হলো, ব্যাপারটা নিশ্চয় হাস্যকরও বটে!? এ আবার কেমন কথা? এ দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি জনস হপকিন্সের এক ছাত্র ‘স্টুডেন্ট ম্যাগাজিন’-এ এক নিবন্ধে লিখেছেন : জম্মগতভাবে আমরা আমেরিকান হয়েও অফিসিয়ালি বলতে বা লিখতে পারি না সরাসরি যে, আমি আমেরিকান। কেননা এই সাথে আবার বলতে হয় কিভাবে বা কোন পরিচয়ে আমি আমেরিকান?
চায়নিজ, জাপানিজ, স্প্যানিশ, ব্রিটিশ, আফ্রিকান, ইতালীয়, অস্ট্রেলিয়ান কিংবা এশিয়ান ইত্যাদি হরেক রকমের আমেরিকান গিয়ে গড়ে উঠেছে আজকের গোটা আমেরিকান জাতিতে। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ বা জাতি নেই, যারা আজকের আমেরিকার নাগরিক নয়। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকানই হয়ে দাঁড়িয়েছে একমাত্র জাতি, যেটি দুনিয়ার সব দেশ ও জাতির এক জগাখিচুড়ি সংমিশ্রণের ফসল। প্রেসিডেন্ট রিগানের ভাষায়- জাতি হিসেবে আমরা অভিবাসীর জাতি! আবার মজার ব্যাপার হলো, আদিবাসীরা নিজ দেশে থেকেও সরাসরি বলতে পারে না আমরা আমেরিকান! ইন্ডিয়ান হিসেবে তাদের আবার কেউ কেউ পরিচয় দিতে হয়। যদিও ঐতিহাসিকভাবে তাদের কেউই এ দেশে ভারত থেকে আসেনি এবং তাদের পূর্বপুরুষের কেউই এমনকি ইন্ডিয়া দেখেনি বা না কোনো ইন্ডিয়ান ভাষা জানত! তারপরেও আজ অবধি তারা এ দেশে ইন্ডিয়ান হিসেবেই বেঁচে বা টিকে আছে। কলম্বাসের এক ঐতিহাসিক ভূলের জন্য আমেরিকার আদিবাসীরা ইন্ডিয়ান খেতাবটি পেয়েছিল। কলম্বাসের সময়ে ইউরোপ জানতো না পৃথিবীর মানচিত্রে আমেরিকা বলে কোনো জায়গা আছে। ইতালীয় নাবিক কলম্বাস ভারতে আগমনের জন্য সমুদ্র রুট আবিষ্কারের মাধ্যমে ভারতে নৌযাত্রা শুরু করেন। ভূলক্রমে তিনি এক নতুন জনপদে পৌঁছে যান, যেটি পরে জানা যায় উত্তর আমেরিকা। ভারতে পৌঁছে গেছি ধারণা থেকে পরে এই দেশের সবাইকে তিনি ইন্ডিয়ান বলে ডাকেন। আর সেই থেকে আজো অবধি পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার নাগরিকেরা নিজেদেরকে ইন্ডিয়ান কিংবা আমেরিকান বলে দাবি করেন। যেটা ঐতিহাসিক সত্যি।
যদিও ঐতিহাসিকভাবে এ কথা প্রচারিত যে, কলম্বাস আমেরিকার আবিষ্কারক কিন্তু মার্কিন মুল্লুকের বিভিন্ন জনপদে প্রত্মতাত্ত্বিক খননকাজ ও গবেষণায় এমন কিছু ঐতিহাসিক তথ্য ও উপাদান বেরিয়ে এসেছে, যার ফলে প্রত্মতাত্ত্বিক গবেষক এবং ঐতিহাসিকেরা ইতিমধ্যে দাবি করেছেন, ইতালীয় নাবিক কলম্বাস আমেরিকার প্রকৃত আবিষ্কারক নন। কলম্বাসের বহু আগে প্রায় 500 বছর আগেই আফ্রিকান ও স্প্যানিশ আরব মুসলমানেরা আমেরিকার মাটিতে পৌঁছে যান। শিলালিপি, আরবীয় মুদ্রা ও অস্ত্রপাতির সন্ধান পেয়ে গবেষকেরা বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেছেন! ওয়াশিংটন ডিসিতে সেসব দালিলিক কিছু নমুনা সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে।
আমার এক বন্ধু নিকট জানতে পারি, আমেরিকার সর্বত্রই নিট অ্যান্ড ক্লিন। তার পরও এ দেশে কোনো ডাস্টবিল নেই। অবাক হবেন জেনে যে, ডাস্টবিন কী তা-ও নাকি অনেকে জানেন না!! ব্রিটিশ শব্দ ডাস্টবিন এটাকে এরা বলে ট্রাশ ক্যান। টয়লেট/ল্যাট্রিনও নেই এ দেশে!! তা হলে উপায়? এটা কি পরীর দেশ রে বাবা!? শৌচাগারের সামনে লেখা রেস্টরুম সাথে পুরুষ/মহিলার ছবি। হা হা হা। এ দেশে কোনো গ্রাউন্ড ফ্লোর নেই! ব্রিটিশদের কাছে ফার্স্ট ফ্লোর হচ্ছে দোতলা, সেকেন্ড ফ্লোর তৃতীয় তলা কিন্তু এখানে একতলা একতলায় আর দশতলা দশ তলায় বলা হয়। অর্থাৎ প্রতিটা ফ্লোর ফাস্ট, সেকেন্ড ইত্যাদি। লিফটে পাঁচ নম্বর বোতাম টিপলে ছয়তলাই নয় পাঁচতলায় পৌঁছে যাবেন। আমরা হিসাব এবং কাজের সুবিধার্থে ইঞ্চি, গজ, ফুট, মাইল ঝেঁটিয়ে বিদায় দিয়েছি কিন্তু আমেরিকানরা পুরনোটাই আঁকড়ে ধরে বসে আছে। ওজন মাপের জন্য গ্রাম, কিলোগ্রাম বদলে পাউন্ড, তাপমাত্র মাপতে সেলসিয়াসের বদলে ফারেন হাইট ডিগ্রি ব্যবহৃত করেন। এখানে রাস্তার ডান দিকে ড্রাইভ করে আর বাতি নেভাতে সুইচে নিচের দিকে আর জ্বালাতে উপরের দিকে চাপ দেয়া হয়। এসব খুঁটিনাটি বিষয় হলেও হঠাৎ করে অবাক হতে হয় অন্য একটি ব্যাপারে। রিলেটিভিটি সাইন্স বলছে, কেবল আলোর চেয়ে গতিবেগ বেশি হলে সময় বা কারো বয়স ওঠানামা করতে পারে কিন্তু অন্য দেশ থেকে এখানে এসেই বয়স এক বছর পর্যন্ত কমে বা বেডে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে! তবে এটা হয় ভুলক্রমে। আমরা তারিখ লিখতে প্রথমে দিন পরে মান উল্লেখ করি। 12/1 বলতে আমাদের কাছে জানুয়ারীর 12 তারিখ আর ওখানে পহেলা ডিসেম্ভর! হা হা হা।
আরো মজার ব্যাপার, আপনি কেমন আছে জিজ্ঞাসায় এখানে বলবে, What’s up? অথবা How you doing? বেশ কিছু আমেরিকানের ইংরেজি শব্দ তাদের নিজস্ব! আমি তামাশা করছি বলতে বলবে-I am Ridding! যদিও Ridding এর বদলে ব্রিটিশ শব্দ Joking. আমেরিকানরা এ যাবৎ হাত দিয়ে ফুটবল খেলেছে। আর পা দিয়ে ফুটবল খেলার নাম দিয়েছে সকার। কেন এ দেশের লোকেরা পা দিয়ে না খেলে হাত দিয়ে ফুটবল খেলে? তার ইতিহাস লিখেছে সেখানকার স্থানীয় ম্যাগাজিন। অতীতে পৃথিবীর অন্য সব দেশের মতোই আমেরিকানরা পা দিয়েই ফুটবল খেলত। দেশের শীর্ষস্থানীয় দু’দলের মধ্যে উত্তেজনাকর খেলা। সেরা দু’দলের মধ্যে এক দলের দলনেতা ছিলেন সে সময়কার শীর্ষ ফুটবল ব্যক্তিত্ব। খেলা চলছে তো চলছেই। কেউই গোল করতে পারছে না। এক দলনেতা যিনি সে সময় সেরা ফুটবলার, আকস্মিক বল হাতে নিয়ে দৌঁড় দিয়ে হুঙ্কার ছেড়ে চ্যালেঞ্জ করলেন; তোমাদের হারাতে আমাদের পায়ের দরকার নেই হাত দিয়েই হারিয়ে দেবো! হা হা হা। এভাবে পায়ের বদলে হাত দিয়ে ফুটবল খেলা শুরু হয় আর আদি ফুটবল খেলা হলো সকার। আরেকটা মজার ব্যাপার হলো- বাল্টিমোর শহরে এক স্থানে চোখে পড়বে, রাস্তার পাশে উঁচু করে দেয়াল গেঁথে বড় করে লেখা, আপনার সমন্তানকে শিখান-সতীত্ব নোংরা শব্দ নয়। আমাদের মনে হওয়াটা স্বাভাবিক, ভার্জিনিটি নোংরা শব্দ; এ কোন ধরনে কথা হলো? যে মেয়ের ছেলে বন্ধু নেই তার খেতাব ভার্জিন। মেয়েটির কোনো গুন, যোগ্যতা এবং আকর্ষণ নেই বলেই সে বয়ফ্রেন্ড পায়নি। এ ধরনের মনোভাব থেকে জম্ম হয়েছে ভার্জিনিটি নোংরা শব্দ! সে জন্য অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে দেয়াল লিখনের মাধ্যমে। আমাদের সমাজে সতী শব্দটি কোনোকালেই খারাপ অর্থে ব্যবহৃত হয়নি। আর এটা কখনো ভাবাও যায় না। এই সমাজে নোংরামি কোন পর্যায়ে উন্নীত হলে সতীত্বকে নোংরা শব্দ মনে করার আবহাওয়া সৃষ্টি হতে পারে?
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫১
রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার ফিডব্যাকের জন্য আপনাকে ো আমার ভালো লাগলো। হা হা হা।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮
অন্যসময় ঢাবি বলেছেন: এতদ সত্ত্বেও তারা অনেক এগিয়ে গেছে, আমি শুধু দেখার অপেক্ষায় আছি আগে গেলে বাঘে খায় নাকি। sometimes lagging behind is an optimistic position.
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০০
রুপম হাছান বলেছেন: ভাই জবাব নেই আপনার মন্তব্যের। তবে জানেন তো, মাঝে মাঝে রক্তের সন্তানেরা পিতা-মাতার খোঁজ খবর না রাখলেও পালক ছেলে পালিত পিতা-মাতার খোঁজ খবর রাখেন।
সেই দিক থেকে আমেরিকা হয়তো তাই পেয়েছে। বাহিরের লোক দিয়ে নিজের দেশের উন্নয়নের কাজটা ঠিকই আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছে। হা হা হা।
তবে একটি কথা না বললে নয়, ইউনিটি অলওয়েজ সুপারপাওয়ার। আমাদের মাঝে সেটা নেই বলে হয়তো আমরা পিছিয়ে আছি।
বর্তমান পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে, আপনার কথাটিই সত্য। আগে গেলে বাঘে খেতে পারে! বরং পিছনে থাকেন। কার কি হলো, তাতে কি! বেঁচে থাকলে উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে ভালো থাকা যাবে। হা হা হা।
*বিশেষ ট্যাগ- গণতন্ত্রের প্রয়োজন নেই, উন্নয়ন হলেই হলো! ধন্যবাদ।
আনপার মন্তব্যটি আমার খুব পছন্দ হয়েছে। লাইকস।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
স্পেলবাইন্ডার বলেছেন: ভাল লাগল।