![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’
‘তিস্তা একটি নদীর নাম (ছিল)'। একটি রম্যসাময়িকীর এই শিরোনামের পাশে ফুল হাতে পশ্চিবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলছেন, ‘আমার ওপর আস্থা রাখুন।’ ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি বেদি। এর মার্বেল পাথরফলকের একেবারে ওপরে লেখা-‘ভালোবাসা চিরন্তন’। তার নিচে ‘মৃতপ্রায় নদী তিস্তা’ কথাটি। একেবারে নিচে লেখা আছে-‘দয়া করে ফুল দেবেন না। পারলে অন্তত দু’ফোঁটা অশ্রুজল দিন’! দারুণ কৌতুকই বটে! হা হা হা।
মমতা ব্যানার্জি তিন দিনের সফরে ঢাকা ঘুরে গেলেন। সমাদর পেলেন অতুলনীয়। কথায় বলে না-এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। কিন্তু মমতা দিদি সবকিছু ঠিকঠাক পেয়েছেন, খেয়েছেন, দেখেছেন কিন্তু এদেশবাসীর মন জয় করতে পারলেন না। মূলত মমতা দিদি যদি তিস্তা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে এই দেশে আসতেন তবে তিনি নায়ক-নায়িকা আর গায়ক-গায়িকা না এনে কিছু বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী নিয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু দিদি তা করেন নি কারণ শুধু দিদি নয়, ভারত এর সকল ব্যক্তিই তার নিজের দেশকে আগে প্রাধান্য দেন; তারপর অন্য বন্ধু কিংবা মিত্রের কথা ভাবেন। এই দেশের জনগণ দেখেছে, প্রায় ছয় দশক এই দুই দেশের মধ্যে তিস্তা নিয়ে আলোচনা, বৈঠক এবং দরকষাকষির আর শেষ নেই। এদিকে ভারত তার অংশে তিস্তার গতি রুদ্ধ করেছে একাধিক বাঁধ দিয়ে। অন্য দিকে এর প্রভাবে ভাটির বাংলাদেশে প্রমত্তা তিস্তা যৌবন হারিয়ে ক্ষীণকায়া বিশীর্ণ নদীতে পর্যবসিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আশার আলো দেখিয়েছিলেন প্রাত্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনোমহন সিং। কিন্তু তাতে বাঁধ সাধে এই মমতা দিদি। অথচো শেষ পর্যন্ত সেই মমতা দিদি নিজেই বলেছেন এই তিস্তা সমস্যা সমাধান হবেই। সেই আশায় বাংলাদেশের মানুষ পুরোনো স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলো বটে। সেই দিদিই এই দেশে এসে বাঙ্গালী বাবুদের খেদমত নিয়ে তাদের কাঁধে আস্থার ঝুলি ঝুলিয়ে দিয়ে গেলেন। এতোদিনেও বাংলাদেশের মানুষের আস্থার ব্যাপারে মনে ভরসা করতে পারেন নি (বাংলাদেশের আস্থাভাজন একমাত্র মিত্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী) মমতা দিদি। তিনি মনে হয় এখনো বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর ওপর আস্থা নিয়ে সন্দিহান!
জনাব হাসান শাহরিয়ার বাংলাদেশের প্রবীণ সাংবাদিক। তিনি আদর্শিকভাবে আওয়ামী ঘরাণার লোক। আমারও খুব ভালো লাগে উনাকে। তবুও মমতার সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু কথায় চিড়ে ভিজে না’! গত চার বছর ধরেই তো তিনি ভাবলেন। তার এই ভাবা কবে শেষ হবে, তা শুধু তিনিই বলতে পারেন। এখন এটি স্পষ্ট যে, তিস্তার পানি ভাগাভাগির সমাধান সহজে সমাধান হচ্ছে না। ঢাকঢোল পিটিয়ে মমতা দিদি আসার ব্যাপারে যেভাবে আমাদের জানান দেয়া হয়েছিল, মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ এবার বুঝি কিছু একটা পেতে যাচ্ছে, যা অতীতে কারো পক্ষেই সম্ভব হয়নি। কিন্তু বাস্তবতা সেই তিমিরেই রয়ে গেল। অথচো এই ঊনাদেরকে বাংলাদেশের চিরমৈত্রি হিসেবে বিবেচিত করা হচ্ছে, এবং আদর-সমাদর-আপ্যায়ন এর কোনো রকমের ক্রুটি করা হয় নি এই দেশের পক্ষ থেকে। এ ব্যাপারে চিত্রনায়ক দেব তো মহাতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বলেই দিলেন, বাংলাদেশের আতিথিয়েতা বিশ্বসেরা। গত দু’দিন ধরে তো ইলিশের ওপরেই ছিলাম। কিন্তু এই যে ভূঁরিভোজ আর এতো সমাদর করা হলো, পেলো টা কি বাংলাদেশ!? বরং তিস্তা প্রসঙ্গে কোনো অঙ্গীকার না করে আশ্বাসের নিষ্ফলা বাণী শুনিয়ে গেলেন। এতে আশাহত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।
মনে রাখতে হবে, আমরা জাতীয় স্বার্থে মমতা ব্যানার্জির সমালোচনা করছি। সেই সাথে বলতে হয়, তিনি তার জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ জন্য তার পিতৃভূমি এবং মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশের মানুষের স্বার্থ উপেক্ষা করতেও কন্ঠিতবোধ করেনি। বাংলাদেশের স্বার্থ ‘জলাঞ্জলি’ (জল-অঞ্জলি) দেয়াও বলা যায় এটাকে। কারণ তাদের অংশের তিস্তায় তো জল আছে। সেখানেই জলশূণ্য না হলেও এ পারের তিস্তার স্বার্থ বিসর্জিত হয়েছে মাত্র। আমরা মমতা থেকে শিক্ষা নিতে পারি যে, কোনো দেশ যতই প্রিয় হোক, তার চেয়েও নিজ দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে আগে। রাষ্ট্রনায়ক কিংবা রাষ্ট্রনায়িকা তিনিই, যিনি মনে রাখেন, ‘কূটনীতিতে কোনো স্থায়ী বন্ধু বা শত্রু রাষ্ট্র নেই। আছে কেবল স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ।’ শুধু মমতা নন, মোদি-মনমোহনসহ ভারতের যেকোনে দলের কেন্দ্রীয় কিংবা প্রাদেশিক কারণে যতই ‘এপার বাংলা ওপার বাংলা’ ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ, একাত্তর-এর বন্ধন, অভিন্ন ঐতিহ্য-সংস্কৃতির বুলি আওড়ানো হোক, ভারতের স্বার্থের কাছে তার সবই তুচ্ছ। অথচো আমরা ‘পরীক্ষিত মিত্র’ ও শাশ্বত মৈত্রীর’ অবাস্তব ঘোরে দেশের স্বার্থকে বাস্তবে গৌণ করে ফেলতেছি।
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮
রুপম হাছান বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব আপনার ফিডব্যাকের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪
নিস্পাপ একজন বলেছেন: সহমত