নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“আমি আপনার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারি কিন্তু আপনার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে জীবনও উৎসর্গ করতে পারি”

রুপম হাছান

‘‘আত্মত্যাগ সব সময় ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকরও বটে...’’

রুপম হাছান › বিস্তারিত পোস্টঃ

-‘রিমান্ড’ : এর অপব্যবহার : (পর্ব-2)-

০৪ ঠা মে, ২০১৫ সকাল ১১:৩০



‘রিমান্ড’ নিয়ে আরো ভালো কিছু জানার জন্য ধারস্ত হলাম এ্যাডভোকেট জনাব তৈমুর আলম খন্দকারের লিখায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে যুবলীগ প্রধান ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলূল হক মণি’র ছোট ভাই বহুবারের সংসদ সদস্য শেখ সেলিমও ১/১১ সরকারের রিমান্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবের কন্যা দুইবারের প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মণি, শেখ সেলিম, শেখ হাসিনাসহ শেখ পরিবারের কাউকে চেনাতে ‘তথা’ দিয়ে ভূরি ভূরি বিশেষণ সংযুক্ত করে জাতিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হয় না। তারপরেও কেনো যেনো মনে হয় ওনাদের নামের আগে-পিছে এই কৃতিমান বোঝাগুলো না থাকলে ওনারা হালকা হয়ে যান। বারবার জাতিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে, কানে খোঁচা দিয়ে বোঝাতে চাইছেন, নানা মাত্রিক পরিচয়সম্ভার। মনে হচ্ছে, এসব শাখা-প্রশাখা পরিচয় বারবার স্মরণ করিয়ে না দিলে একসময় হয়তো ইতিহাস থেকে মুছে যেতে পারে। শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক পূর্ব বাংলার সব ভূমিহীনদের ৫৫ হাজার বর্গমাইল ভূমির মালিকানা দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান সেই ভূমি ও মালিকদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা দিয়ে আলাদা সার্বোভৌমত্ত্বর পতাকা দিয়েছেন। আমরা সেই মহান নেতা শের-ই-বাংলাকে মাত্র অর্ধশতাব্দীর মাথায় ভূলতে বসেছি। যে নতুন প্রজম্মকে এখনই দেশের কান্ডারি হওয়ার মুলো দেখিয়ে রক্ত ঝরাতে উদ্বুদ্ধ করছি, সেই প্রজম্ম ভুলে গেছে শের-ই-বাংলা, মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীদের মতো মহান জাতীয় নেতাদের। বর্তমান সমাজ তথা রাষ্ট্র এখন পাতি নেতা বন্দানায় জীবন উৎসর্গে ব্যস্ত।

আমাদের নেতারা জাতিকে উদ্ধার করার জন্য নিজেকে নিরাপদ সুরক্ষিত রেখে জাতির টনকে টন রক্ত দিয়েছেন এবং আরো আরো রক্ত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন অনবরত! সব সময় তরুণদের সামনে মুলা ঝুলিয়ে নিজেরা নিরাপদ দূরত্বে থাকেন কিংবা থাকার চেষ্টা করেন। বায়ন্ন’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-আন্দোলন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ কিংবা ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আনেদালনের শহীদদের কবরে এখন শিয়াল ঘুমায়! বাড়িতে চূলা জ্বলে না! অথচ তাদের নামেই হচ্ছে লাখ লাখ শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ! বর্তমানে ক্ষমতার কাড়াকাড়ি মুজিব-জিয়ার ওয়ারিশদের লম্বা লম্বা কৃতিগাথার পরে ওই সব মরহুম নেতাদের, শহীদদের ধারণ করার মেমোরিকার্ড নতুন প্রজম্মের মাথায় আর অবশিষ্ট নেই! কৃতিত্বের কাঙ্গালেরা বাজারের পণ্যের মতো তাবৎ কৃতিত্ব বস্তাবন্দী করে নিজেদের নামে চালান করে দিচ্ছেন ফরমায়েশি তথাকথিত ঐতিহাসিকদের মাধ্যমে সমগ্র জাতির মাথায়।



১/১১-এর রিমান্ডে শেখ সেলিমের হাড়-পাঁজর ঠিক ছিলো কিনা জানি না, তবে জনতার মঞ্চের প্রবীণ ম. খা আলমগীরের হাড়-পাঁজরে যথেষ্ট নড়াচড়া হয়েছিলো ১/১১-এর রিমান্ডে। ওই সময়ে আজকের প্রধানমন্ত্রীকে জেলখানায় হত্যার প্রচেষ্টা হয়েছিল বলে পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। ২১শে আগষ্ট এর গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের তদন্ত সাহেবেরা রিমান্ডে নিয়ে ‘জজ মিয়া’ নামের ব্যক্তির আজগুবি স্বকারোক্তি আবিষ্কার করেছিল। দ্বিধা বিভক্ত আবেগী জাতির কোনো কোনো অংশ এটা অবিশ্বাস করেছে, আবার কেউ কেউ বিশ্বাসও করেছে। তাদের বিশ্বাস-অবিশ্বাসে কিছু যায়-আসে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে শেখ সেলিমের প্রদত্ত স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছা প্রণোদিত বলে বিশ্বাস করলে অবশ্যেই আজকে তার পরিণতি হতো কমপক্ষে মাহামুদুর রহমান মান্নার মতো। কিন্তু না, শেখ সেলিম বহাল আছেন এবং রিমান্ডে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত স্বীকারোক্তি তুলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কথার ভাঁজে ভাঁজে মহাসমারোহে ‘হেই.....ও’ দিয়ে মহাযু্দ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি’র বিরুদ্ধে। আবার যারা ম. খা আলমগীর, শেখ সেলিমদের কিঞ্চিত গুঁড়া গুঁড়া করেছিল তারাও জনরোষের ভয়ে শেখ হাসিনার আশীর্বাদে রাজকর্মচারী হয়ে আলীশান প্রবাসজীবন যাপন করছেন!

মাহমুদুর রহমান মান্না কতখানি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন তা আইনের বিষয়, তবে পত্রিকায় এসেছে তিনি ফোনালাপে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে বিশ্ববিদ্যালয় বেইজ আন্দলোন গড়ে তোলার কথা বলেছেন। সরকারের নিবর্তনমূলক আচরণে (আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে) সাদেক হোসেন খোকা প্রাণহানির আশঙ্কা করায় মান্না দুই একটা প্রাণহানি মেনে নিয়েই আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে প্রকাশ হয়েছে। ওই পরামর্শের কারণেই মান্নাকে জঙ্গিবাদ ও নাশকতার অভিযোগে আপাতত অভিযুক্ত করা হয়েছে। রিমান্ডে এই নেতার হাড়-মাংসে নাড়া দিয়ে শেখ সেলিম বা জজ মিয়াদের মতো আর কী কী তাদের মতো তথ্য বের করেছেন জানি না। তবে মান্না এখন হাসপাতালের বেডে। ‘আমার দেশ’ সম্পাদক আর এক মাহমুদুর রহমান আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর চরিত্রের বিরুদ্ধে নোংরা ব্লগারদের কুৎসিত মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে নোংরা ব্লগারদের কুৎসিত মন্তব্যে আমাদের ক্ষমতাসীনদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পায়নি, আঘাত পেয়েছেন মাহমুদুর রহমানের প্রতিবাদে!

মহান নেতা, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু ৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেবো’। হানাদার ইয়াহিয়া বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গিবাদী বলেননি। ক্ষমতাসীনসহ ১৬ কোটি মানুষ বলছে,‘বিএনপি আন্দোলন করতে জানে না, নেতারা সবাই নিরাপদে লুকিয়ে গেছে। রাজনীতি করলে সরকারের গুলি-বন্দুককে মোকাবেলা করার সাহস নিয়েই রাজপথে থাকতে হয়’। মান্না একই রকম পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুও একই রকমের বক্তব্য দিয়েছিলেন। ২০শে ফেব্রুয়ারী ২০১৫ তারিখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো মামলা-মকদ্দমা ছাড়াই হলি চাইল্ড স্কুলের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রিফাতকে উত্তরা হাই স্বুল পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ধরে নিয়ে যায়। অতঃপর এই কিশোর ছেলেকে দুই দিন অজ্ঞাত স্থানে রেখে ২২শে ফেব্রুয়ারী আদালতে সোপর্দ করে। রিফাতের সামনের পরীক্ষা দেয়া হলো না। সে এখন ক্ষমতাসীনদের বীভৎস রিমান্ডের পরীক্ষা দিচ্ছে! একই পরীক্ষা দিয়েছেন শেখ সেলিম, মখা আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, আমার দেশ পত্রিকার মাহমুদুর রহমান এবং কিশোর রিফাত। পূর্বোক্তরা রাজনীতির যে বিশাল সিলেবাস অতিক্রম করতে পেরেছে, সেই সিলেবাস অধ্যায়ন করছে আজকের কিশোর!?

পরীক্ষার মধ্যে, পরীক্ষার হলে, সামনে পরীক্ষা রেখে একটা কিশোর যদি জঙ্গিবাদী হয়ে যায় তাহলে সেই জাতির আগে রিমান্ডে নিতে হবে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে, রাজনীতিকে। অথচ আজকে ১৬কোটি মানুষ রিমান্ডের আওতাভূক্ত। মুক্ত থাকেন শুধু ক্ষমতাসীনেরা!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.