নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলে যাব- তবু যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল।

হাবিব

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র।

হাবিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলে আমার বড় হবে

০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ২:০৫



আমাদের নবীজী (স.) একদিন কাজ শেষে বাড়ি ফিরেছেন। ঘরে এসে দেখলেন আয়েশার (রা.) রান্না তখনো শেষ হয়নি। এদিকে নবীজীও ক্ষুধার্ত ছিলেন। ক্লান্ত শরীরে ক্ষুধার্ত নবীজী কোন কথা বললেন না। কৈফিয়ত চাইলেন না স্ত্রীর কাছে। একবারও জানতে চাইলেন না রান্নায় দেরি হবার কারন। বরং তাঁর কাঁধের তলোয়ার নামিয়ে আয়েশার পাশে বসে তরকারী কেটে সাহায্য করতে লাগলেন। এই হলো আমাদের নবীর চরিত্র। আমাদের আদর্শ।

পরিবার একজন শিশুর প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র। মানুষ হবার দীক্ষা পরিবার থেকেই শিখে নেয় সে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তো কেবল পারিবারিক শিক্ষাকে বড় বৃক্ষে রূপদানের কর্ম সম্পাদন করে। পরিবার যদি শিশুমনে মানবিকতার বীজ বপন করতে পারে তবে সেই বীজ থেকে যে বৃক্ষ জন্মাবে তার সুমিষ্ট ফল নিশ্চিত মানব কল্যানে আসবে।

আমাদের ছোট ছোট কাজ শিশুরা খুব ভাল ভাবে অনুকরণ করে। কপি করতে চায় বড়দের। একদিন খাবার খেতে বসে বাচ্চার আম্মাকে বললাম, খাবার অনেক মজা হয়েছে। এ কথা বলতে বলতে হাত দিয়ে "ওয়াও" সাইন দেখালাম। আর পিঠে হালকা চাপর দিয়ে বললাম সাব্বাশ....! এমনটা আমি প্রায়ই করে থাকি। কারন, বাচ্চার আম্মা অনেক ভালো রান্না করে। আর রান্নায় যদি একাদিক পদ থাকে তাহলে সেগুলোকে মার্কিং করার গুরু দায়িত্বও আমার উপরই ন্যাস্ত থাকে। তো আমার সাব্বাস আর "ওয়াও" সাইন দেখানোতে আমার ছেলেও সাথে সাথে কপি করা শুরু করলো। শুধু তাই নয়, যে কোন খাবারই ছেলেকে দেই না কেন সব সময়ই এমনটা করে। আলহামদুলিল্লাহ।

আমি যদি কোন কাজ করি আমার ছেলেও আমাকে ফলো করে। ঘর ঝাড়ু দিতে দেখলে ছেলেটাও ঝাড়ু হাতে নেয়। একটু কোথাও ঘর নোংরা দেখলে কিংবা পানি ফেলা দেখলে সাথে সাথে কোন কাপড় দিয়ে মুছে দেয়। মশারি টানানোর সময় ছেলাটা মশারির একটা রশি নিয়ে এগিয়ে দেয় আমাকে। আর যদি ওর এ সমস্ত কাজে প্রশংসা করি তাহলে যে খুশী হয় সেটা দেখার মতো একটা দৃশ্য হয়। সেই সাথে এক গাল লজ্জা মাখানো হাসি দেয়।

মসজিদের আজান কানে যাবার সাথে সাথে দুই হাত নিয়ে বুকে বাঁধে ছেলেটা। ওর মা কিংবা আমি যদি নামাজে দাঁড়িয়ে যায় তখন বাচ্চাটাও হাত বেঁধে দাঁড়ায়। আর সিজদা যাবার সময় একেবারে উপুর হয়ে শুয়েই পড়ে! কখনো কখনো সিজদায় গেলে আমাদের পিঠের উপরও চড়ে বসে। তখন পিঠ থেকে না নামা অবধি সিজদাকে লম্বা করে দেই আমরা।

ছেলেটা এমনিতে বেশি দুষ্টুমি করে না। করার মধ্যে যেটা করে তা হলো পানি ভর্তি গ্লাস দিলে কিছুটা খেয়ে বাকিটা ফেলে দিবে ফ্লোরে, ঝুড়িতে আলু কিংবা পেয়াজ-মরিচ যাই থাকুক, ও সেটা ঢেলে দিবে। তবে সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো লবন ছড়ানো, চিনি ছিটানো আর ময়দা মেখে সাদা হওয়া। বালি দেখলে তো কথাই নেই! শরীরে বালি মেখে গোসল করে ফেলে। মাঝে মাঝে ফিল্টারের কল ছেড়ে পানি ফেলাও ওর প্রিয় কাজগুলোর একটি। একদিন ফিল্টারের পানি ফেলেছিলো বলে বাচ্চাটাকে বকেছিলাম। সেই থেকে আমার হাতেও মাঝে মাঝে পানি পড়ে যায়। এমন হয়েছে যে বোতলে পানি ভরার জন্য ট্যাপ ছেড়ে রেখে অন্য কাজ করছি আর ভুলে গেছি সেই কথা। এদিকে পানি সব পড়ে শেষ। যতক্ষণে টের পেয়েছি ততক্ষণে পানিতে মেঝে ভরে গেছে। তখন নিজের উপরই রাগ হয়েছে। মনে হয়েছে শুধু শুধু ছেলেটাকে বকেছিলাম। ভুল তো আমরা বড়রাও করি।

আজ জুন মাসের ৯ তারিখ। দেখতে দেখতে ছেলাটার দুই বছর পূর্ণ হলো। চোখের সামনে বড় হচ্ছে ও। সেই যে জন্মের পর প্রথম চিৎকার থেকে শুরু করে বাবা ডাক, হামাগুড়ি থেকে হাঁটতে শেখা, সব কিছুতেই মিশে আছে বাবা ছেলের হাজারো খুনসুটি। দোয়া করি ছেলেটা মানুষের মত মানুষ হোক। আল্লাহর প্রিয় বান্দা হোক।

ভুল আমাদের সবারই হয়। মানুষ মাত্রই ভুল করে। আর ভুল স্বীকার করা আরেকটি মহৎগুণ। পরিবারে হাসি আনন্দ থাকবে, ঝগড়া বিবাদ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের বিবাদ যেন শিশুর উপর প্রভাব না ফেলে সেদিকে নজর দেওয়া উচিত। শিশুদের কথার গুরুত্ব দিলে ওরা নিজেদের মূল্য বুঝতে শিখে। আমরা আমাদের সন্তানদের থেকে যেমন চরিত্র আশা করি আমাদের চরিত্র যদি তেমনই হয় তাহলে আর হাতে ধরে শিখানোর প্রয়োজন হবে না। ওরা এমনিতেই শিখবে।

মন্তব্য ৩৩ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ২:৫২

সোনাগাজী বলেছেন:



ছেলের জন্য ও আপনাদের জন্য শুভ-কামনা: সে স্বাস্হ্যবান ও শিক্ষিত হোক।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:০৭

হাবিব বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে প্রার্থনার জন্য।

২| ০৯ ই জুন, ২০২২ ভোর ৫:৩০

বেবিফেস বলেছেন: ভালো লিখেছেন। দোয়া করি আপনার সন্তান সত্যিকারের মানুষ হোক, তাকে দিয়ে আপনাদের আশা পূরণ হোক।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:০৭

হাবিব বলেছেন: আমিন।

৩| ০৯ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:১৮

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

ছেলের নাম কি?

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:০৭

হাবিব বলেছেন: আরিশ রহমান

৪| ০৯ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:০১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ নেক হায়াত দান করুন পিচ্চিকে

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:০৮

হাবিব বলেছেন: আল্লাহুম্মামিন

৫| ০৯ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:৫৩

জুল ভার্ন বলেছেন: আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন ছেলেকে হেফাযত করুন।

এই ছবিটা ফেসবুকে দেখেছিলাম।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:০৯

হাবিব বলেছেন: আমিন, ছুম্মা আমিন। আপনার দোয়া কবুল হোক। জ্বী, ছবিটি ফেসবুকেও শেয়ার করেছিলাম

৬| ০৯ ই জুন, ২০২২ সকাল ১১:৫৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অনেকদিন পরে এলেন সামুতে।
আপনার ও আপনার ছেলে এবং পরিবারের জন্য শুভকামনা রইলো।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১০

হাবিব বলেছেন: জ্বী ভাইয়া, অনেক দিন পর পোস্ট করলাম। তবে নিয়মিতই আপনার/আপনাদের পোস্ট দেখি। বিশেষ করে আপনার ছবিগুলো বেশ ভক্ত আমি।

আপনার জন্যও দোয়া রইলো

৭| ০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:০৫

তারেক ফাহিম বলেছেন: বাপ-বেটা উভয়ের জন্য শুভকামনা।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১১

হাবিব বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ ফাহিম ভাই

৮| ০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫০

রশিদ ফারহান বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে ও আপনার সন্তানকে নেক হায়াত দান করুন। পাশাপাশি আপনার এই চেষ্টাকে কবুল করে আপনার সন্তানকে উত্তম আখলাক এর মানুষ হয়ে ওঠার সুযোগ করে দিন।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১২

হাবিব বলেছেন: আমিন, আল্লাহুম্মামিন। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা

৯| ০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ছেলের জন্য ভালোবাসা।
সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বড় হোক।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১৩

হাবিব বলেছেন: আপনার এবং আপনার ছেলের জন্যও ভালোবাসা রইলো। আপনার প্রার্থনা কবুল হোক

১০| ০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৯

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: সে মানুষ হোক।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১৩

হাবিব বলেছেন: আমিন।

১১| ০৯ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার ছেলের জন্য শুভ কামনা।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১৪

হাবিব বলেছেন: আপনার জন্যও শুভকামনা

১২| ০৯ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:৪৬

গরল বলেছেন: এই বয়সে বাচ্চারা জানালা দিয়ে এটা ওটা ফেলে দেয়, তাই চাবি, মোবাইল ও দরকারি জিনিষপত্র ওর হাতের নাগাল থেকে সরিয়ে রাখবেন। আমার মেয়ে এটা ওটা ফেলে দিয়ে বলত যা নাই, কই গেল? আপনার ছেলের জন্য রইল অনেক অনেক আদর ও শুভকামনা।

১০ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:১৬

হাবিব বলেছেন: আমার ছেলেটাও এমন করে। সবকিছু ফেলে দেয়। খুব নজরে রাখতে হয়। আপমার ছেলে ফেলে দিয়ে বলে নিয়ে আসো। এনে দিলে আবার ফেলে দেয়।

আপনার কন্যার জন্যও ভালোবাসা ও আদর রইলো

১৩| ১১ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার ছেলে এখন যা যা করছে, আমার নাতি নাতনিরাও ঠিক তাই করেছে/করছে। আমি ওদের এসব কর্মকাণ্ডের সাথে সুপরিচিত।
ছেলে এবং তার মা বাবার জন্য শুভকামনা রইলো।
পোস্টে চতুর্থ প্লাস। + +

২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৫২

হাবিব বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ...... ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম ভাইয়া

১৪| ২৩ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১১:০২

শেরজা তপন বলেছেন: এরপর কোথায় হারাইলেন?

২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৫৪

হাবিব বলেছেন: আছিতো ভাই। আপনাদের মাঝেই। স্মরণ করার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা।

১৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৪৪

আরোগ্য বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম স্যার,
ছেলে আপনার বড় হবে আর আপনি হবেন বুড়া,
তার পূর্বে কি ব্লগে পাবো আপনার লিখা?


আপনার সুরা সনেটের অপেক্ষায় আছি। আশা করি সপরিবারে ভালো আছেন।

২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৫৫

হাবিব বলেছেন: ওয়ালাইকুমুসসালাম ভাই। ইনশাআল্লাহ লিখা হবে। সূরা সনেট লিখতে প্রচুর সময় দিতে হয়। অচিরেই লিখবো । আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি আল্লাহর রহমতে

১৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৯

অপ্‌সরা বলেছেন: ভেরি গুড ভাইয়া।

ছেলের কথা জেনে আর তোমার কথা জেনে ভালো লাগলো।


তবে তুমি আজকাল এত কম আসো কেনো?

অনেক ব্যাস্ত?

২৬ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৫৭

হাবিব বলেছেন: সায়মা আপু, আমাকে স্মরণ করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

অনেক ব্যস্ত না, তবে সবসময় কম্পিউটারে বসা হয়ে উঠেনা। আশা করি নিয়মিত লিখবো। দোয়া চাই। ভালো থাকবেন

১৭| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১১

করুণাধারা বলেছেন: ছেলেসহ পরিবার নিয়ে ভালো থাকুন।

অনেক দিন পর আপনাকে লগইন অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি। আশাকরি পোস্ট দেবেন আবার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.