![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলে (১৮৪৬-১৯০১)
১৯০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ। নিউয়র্কের বাফেলো শহরের একটা মেলা যার নাম ছিল 'প্যানআমেরিকান এক্সপজিশন' সেটা দেখতে এসেছেন আমেরিকার ২৫ তম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলে।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটা তার দ্বিতীয় মেয়াদ, পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
জনতার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে'র শেষ ভাষন
৫ ই সেপ্টেম্বর ১৯০১ সেখানে (প্যানআমেরিকান এক্সপোজিশন) একটা ভাষন দিয়েছেন, তারপরদিন মানে ৬ তারিখে সকালে গিন্নিকে নিয়ে গেছেন কাছেই নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে। ঐদিন বিকেল ৪ টার দিকে 'টেম্পল অফ মিউজিক' নামক একটা কনসার্ট হলে জনতার সাথে তার মোলাকাত হ্ওয়ার কথা আছে।
টেম্পল অফ মিউজিক এর ছবি
নায়াগ্রা দেখে আসার পর গিন্নি বললেন তিনি ক্লান্ত প্রেসিডেন্ট যেন একাই টেম্পল অফ মিউজিকে যান। বিকেল ৩:৩০ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে চলে গেলেন টেম্পল অফ মিউজিকে, স্হানীয় জনগনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে। উল্লেখ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে তিনি মোটেই সিরিয়াস ছিলেননা, গার্ড ফার্ড ছাড়াই তিনি প্রায়ই এখানে সেখানে ঘুরতেন বা চলে যেতেন। আর এতে নিরাপত্তার দায়ীত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তিরা বেশ ঝামেলায় পড়তেন।
জেমস এ গারফিল্ড
উল্লেখ্য যে এর ৩৬ বছর আগে ১৮৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন আর মাত্র বছর বিশেক আগে ১৮৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জেমস আব্রাহাম গারফিল্ড--- দুজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট আততায়ীর হাতে খুন হয়েছেন।
শেষবারের মত টেম্পল অফ মিউজিকে উঠছেন প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলে, তারিখটা ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯০১ বিকেল ৩:৩০ মিনিট।
বিকেল ৪:০০ টার সময় গেট খুলে গেল আর জনতা হুড় হুড় করে ভেতরে ঢুকতে শুরু করল। তাদের উদ্দেশ্য প্রেসিডেন্টর সাথে সৌজন্য বিনিময়।
ঐ জনতার মাঝে একজনের নাম ছিল লিয়ন কযলগশ (Leon Czolgosz)। তার বয়স ছিল ২৮ বছর জন্মস্হান মিশিগান আর তিনি বিশ্বাস করতেন এনার্কীজম এ (Anarchism) মানে প্রচন্ড ভায়োলেন্স আর অরাজকতাতে। তার উদ্দেশ্য ছিল আদর্শগত কারণে প্রেসিডেন্টকে খুন করা।
(আততায়ী লিয়ন কযলগশ ১৮৭৩-১৯০১ বৈদ্যুতিক চেয়ারে মৃত্যু)
যাহোক দর্শনার্থী সবাই ঢুকে প্রেসিডেন্ট এর সাথে হ্যান্ড শেক করে 'হ্যালো নাইস টু মিট ইউ মিঃ প্রেসিডেন্ট' বলে বেরিয়ে যাচ্ছিল।
বিকেল ৪:০৭ মিনিটে লিয়ন কযলগশ এর সুযোগ এল প্রেসিডেন্টের সাথে হাত মেলাবার । তিনি ডান হাতে ০.৩২ ক্যালিবারের ইভর জনসন রিভলবারটা একটা রুমাল দিয়ে ঢেকে প্রেসিডেন্টের দিকে এগোলেন।
তখন ছিল গরম কাল, অনেকেই ঘাম মুছবার জন্য হাতে রুমাল রাখছিল, তাই কেউই ততটা সন্দেহ করেনি।
আবার প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে মনে করেছিলেন লিয়নের ডান হাতটা আহত বা জখম তাই তিনি লিয়নের বাঁহাতের সাথে হ্যান্ড শেক করার জন্য নিজের হাত বাড়িয়ে দেন।
(লিয়ন কযলগশ প্রেসিডেন্টকে গুলি করছেন, শিল্পির আঁকা ছবি)
তখনই লিয়ন কযলগশ ডানহাতের রিভলবার দিয়ে প্রেসিডেন্ট এর বুকে দুটো গুলি করেন।
ডানে নীচে কোনায় ক্রশ চিহ্ন দেয়া জায়গাতেই প্রেসিডেন্ট গুলিবিদ্ধ হন
প্রেসিডেন্টকে দুটো গুলি করা হয়েছিল। একটা গুলি হয়ত শার্টের বুতামে বা মোটা কোন জায়গাতে লেগে ভেতরে আর ঢুকতে পারেনি, তবে অন্য আরেকটা গুলি তার তলপেট দিয়ে ঢুকে পাকস্হলি, কিডনি আর প্যানক্রিয়াস ফুটো করে দেয়।
এই ঘটনার পর উপস্হিত উত্তেজিত জনতা রিভলবারধারী আততায়ী লিয়ন কযলগশকে ধরে গনপিটুনি শুরু করে, তবে প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে তাদের নিবৃত্ত করেন আর এও বলেন 'আমার স্ত্রীকে এই খবর বলার সময় সাবধানে বলবে'।
তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, তাকে দ্রুত বাফেলোর স্হানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খেয়াল করুন এধরণের পরিস্হিতি মোকাবেলার জন্য প্রেসিডেন্ট অফ আমেরিকার বা তার সফরসঙ্গীদের কোন প্রস্তুতিই ছিলনা!
দুর্ভাগ্যবশত বাফেলোর সেখানে ভাল কোন ডাক্তার ছিলেননা, আর একমাত্র সার্জন গেছিলেন অন্য আরেকটা অপারেশনে অন্য এক জায়গাতে। সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় সরন্জামও তেমন কিছুই ছিলনা।
গুলি বের করার একমাত্র সার্জন যাকে পাওয়া গেল তিনি ছিলেন একজন গাইনকলজিস্ট, নাম ডাঃ ম্যাথিউ মান।
গাইনকলজিস্ট ডাঃ ম্যাথিউ মান যিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে'র শরীর থেকে গুলি বের করবার অপারেশন করেন তবে বের করতে পারেননি
প্রেসিডেন্টেকে যেখানে রেখে অপারেশন করা হয় সেই অপারেশন টেবিল
বিকেল ৫:২০ মিনিটে অপারেশন শুরু হয়। ডাক্তার সেই ২য় বুলেটটা খুজে না পেয়ে তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য সেই অবস্হাতেই ভাল করে জীবানুমুক্ত না করেই তলপেট সেলাই করে দেন, সময় তখন সন্ধ্যা ৭:০০ টা, ০৬ ই সেপ্টেম্বর ১৯০১, যুক্তরাস্ট্র।
প্রথমদিকে মনে হচ্ছিল তিনি ভাল হয়ে যাবেন। কিন্তু ভাল করে পরিষ্কার না করাতে আর সম্ভবত বুলেট রয়ে যাওয়াতে সেই জায়গাতে পরে ইনফেকশন হয়ে গ্যাংগ্রীন হয়ে যায়, যা আর ভাল হয়নি।
১৪ ই সেপ্টেম্বর ১৯০১ রাত ২:১৫ মিনিটে যুক্তরাস্ট্রের ২৫ তম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলে গুলি খাওয়ার পর গ্যাংগ্রীনে মারা যান।
থিউডর রুজভেল্ট যুক্তরাস্ট্রের ২৬ তম প্রেসিডেন্ট
ঐদিন বিকালে থিউডর রুজভেল্ট যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।
এই বাড়ীতেই প্রেসিডেন্ট গুলিবিদ্ধ হন
লিয়ন কযলগশ তখনি গ্রেফতার হন আর দ্রুত তার বিচার সম্পন্ন করা হয়। তিনি মোটেই অনুতপ্ত ছিলেননা, বরং বলেছিলেন 'আমি প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে কে খুন করে আমার কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। আমি মনে করি তার এত সুযোগ সুবিধা থাকবে আর আরেকজনের কিছুই থাকবেনা, এটা বেআইনী'।
বিচারে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন আর তার শাস্তি হয় মৃত্যুদন্ড ।
২৯ শে অক্টোবর ১৯০১ তারিখে বৈদ্যুতিক চেয়ারে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলে'র নিজ রাজ্য ওহায়োতে তার স্মৃতিসৌধ
সুত্র: ইন্টারনেট
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: আমার ব্লগে স্বাগতম, সেই সাথে পড়ে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫২
তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: ++++
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৭
ঢাকাবাসী বলেছেন: পড়া আর প্লাসের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন।
৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫৯
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: চ্রম পোষ্ট। প্রিয়তে।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২১
ঢাকাবাসী বলেছেন: কেমন আছেন, থার্ড রাইখের পর তো দেখছিনা! পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৬
তারছেড়া লিমন বলেছেন: তথ্যবহুল.............+++++++++++++
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: পুরোনো ব্লগারের দ্বারা অত্তোগুলো প্লাস ভাল লাগল, ধন্যবাদ আপনাকে, ভাল থাকুন।
৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫
রীতিমত লিয়া বলেছেন: খুব ভালো পোস্ট। +++
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: আরিব্বাস প্লাস তো অনেক! অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন।
৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩১
মর্গের লাশ বলেছেন: এত চমৎকার একটা পোস্ট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪২
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: চমৎকার , অনেক জানা হল
ধন্যবাদ
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
৮| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:২৩
বিষণ্ণ বালক বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। না পড়লে এই ইতিহাস অজানাই থেকে যেতো।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন 'বিষন্ন বালক'।
৯| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৭
কাউসার রুশো বলেছেন: ভেরি গুড পোস্ট। আব্রাহাম লিংকন আর জেএফকে-এর মৃত্যু নিয়ে অনেক লেখা থাকলেও উইলিয়াম ম্যাকিনলেকে নিয়ে তেমন কোন লেখা পাওয়া যায়না। আপনার পোস্টটা ভালো লাগলো পড়ে
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০২
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে তাই আমারো ভাল লাগলো, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১০| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২১
বিভ্রান্ত??? বলেছেন: পুরনো ইতিহাস পড়তে খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্টের জন্য।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ।
১১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬
আহমাদ জাদীদ বলেছেন: এই আততায়ীগুলো ছাগল ছাড়া আর কিছু না, সমস্যা না থাকলেও এরা সমস্যা তৈরি করত । গুড পোস্ট ।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮
ঢাকাবাসী বলেছেন: একেবারে ঠিক ধরেছেন। তবে সেজন্যই কিন্তু এরা ইতিহাসের অংশ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬
আমার আমি নাই বলেছেন: শিরোনাম দেখে চমকে উঠেছিলাম, ভাবছিলাম এই নিউজ কোথাও আসে নাই কেন? উইলিয়াম ম্যাকিনলে নামটা দেখে বুঝতে পারছি এটা আসলে অতীতের কোন ঘটনা। সব ঠিক আছে, কিন্তু শিরোনামটা ঠিক হয়নি। এরকম হওয়া দরকার ছিল, 'আততায়ীর হাতে যেভাবে খুন হয়েছিলেন যুক্তরাস্ট্রের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিনলে'। আশা করি পরের বার আর এই ভুল করবেন না। তথ্যবহুল পোস্টে +।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনিই রাইট, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯
রাঘব বোয়াল বলেছেন: খুব ভালো লাগলো।এরকম আরও পোস্ট আপনার কাছ থেকে আশা করি।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে তাতেই আমি খুশী, আর সেই সাথে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ও হ্যাঁ অবশ্যই চেষ্টা করব।
১৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৪
উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: জী আছি ভাই ভালো। আপনি কেমন আছেন? থার্ড রাইখের প্রথম অর্ধযুগ নিয়ে লিখার চেষ্টা করতেসি বর্তমান সিরিজে। হিমশিম খাইতেসি আর কি।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫১
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল আছি আর উত্তর পেয়ে আরো ভাল থাকা হলো। থার্ড রাইখের প্রথম অর্ধযুগ তো কম হচ্ছে ভাই, তবু পড়ার আশায় রইলুম, ভাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৬
লোনলিফাইটার বলেছেন: গুড পোস্ট ব্রো+++