![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
না বুঝে অল্প বিদ্যা সবসময়ই ভয়ঙ্কর।
যে শিখছে তার জন্যও ভয়ঙ্কর, আশেপাশের মানুষের জন্যও ভয়ঙ্কর
আর যে বিষয়টি শিখছে সেই বিষয়টিরতো গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়ার অবস্থা হয়!
অনেক ডিপার্টমেন্টেই সাবসিডিয়ারি সাবজেক্ট হিসেবে জেন্ডার বিষয়ক কোর্স করানো হয়। কোর্সের উদ্দেশ্য থাকে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জেন্ডার সচেতন করা, বাস্তব জীবনে এ বোধটা কতটুকু কাজে লাগাবে তা সম্পর্কে ধারণা দেয়া। বাকিটুকু কে নিজের জীবনে কতটুকু কাজে লাগাবে তা তার তার নিজস্বতার উপর নির্ভর করে।
কিন্তু আমি জানি না কেন এমন না হয়ে, উলটা একটা অবস্থা তৈরি হয়!
ছাত্র-ছাত্রীরা প্রথমেই যে ধারণাটা নিজের মাথার একদম গভীরে ঢুকিয়ে নেয় তা হল জেন্ডার মানে হল এখানে আমি শুধু নারী-পুরুষের বৈষম্য সম্পর্কে শিখছি যেখানে পুরুষ সবসময় ভিলেন আর নারী হচ্ছে বাংলা সিনেমার অবলা নায়িকা যে শুধুই নির্যাতনের শিকার হয়। জেন্ডারের মধ্যে শুধু নারী-পুরুষ ছাড়াও যে আরো অনেক কিছু আছে তা হয় কারো চোখে পরে না, নাহলে আমরা চোখে ফেলতেই চাই না।
একটা পুরুষ (ছাত্র) যখন মাথায় নিয়ে নেয় যে সকল কিছুতেই তাকে/তার জাতিকে দোষ দেয়া হচ্ছে তখন স্বভাবিকভাবেই তার মধ্যে একটা অনীহা চলে আসে, জেন্ডার সচেতন হওয়ার কোন ইচ্ছাতো তার থাকেই না বরং যারা নিজেদেরকে জেন্ডার সচেতন (!) হিসেবে দাবি করেন তাদের কাছ থেকে সে দূরে থাকতে চায়, তাদেকে সে অবজ্ঞার চোখে দেখা শুরু করে, আরেহ! এরা তো পাগল! আবার আমার শত্রুও!
নারীদের (ছাত্রীদের) ক্ষেত্রে প্রভাবটা হয় আরো ভয়াবহ! এরা নিজেদেরকে সকল ব্যপারেই পুরুষের ভিক্টিম হিসেবে ধরে নিয়ে পুরুষ জাতিকে ক্রমাগত দোষারোপ করতে থাকে, মানে ব্যপারটা হয় এমন যে, এই আমার পেন্সিলটা ভেঙ্গে গেসে! নিশ্চয়ই আমার পাশে বসা পুরুষ বন্ধুটির ষড়যন্ত্র! ও তো পুরাই প্যাট্রিয়ারকাল!
স্বভাবিকভাবেই জেন্ডার পড়ার সময় ফেমিনিজম, নারী আন্দোলন এই টার্মগুলোর সাথে তারা পরিচিত হয়। ফেমিনিজম পড়তে গিয়ে পড়ে প্রথম চারটি স্কুল সম্পর্কে- লিবারেল, র্যাডিকাল, মার্ক্সিস্ট আর সোশ্যালিস্টদের সম্পর্কে যার প্রতিটিরই অরিজিন কিন্তু ওয়েস্টার্ন ফেমিনিজম। তো থিওরিটিক্যাল কথাগুলোর সাথে অনেক জায়গায়ই আমাদের কালচারের সাথে তারা মেলাতে পারে না। আর যেহেতু তারা মাত্র ৬মাসের জন্য একটা কোর্স স্বাভাবিকভাবেই তাদেরকে অত গভীরে গিয়ে আমাদের দেশের কন্টেক্সট অনুযায়ী থিওরীগুলোকে বোঝানোর সময়ও থাকে না। ফলাফল হয় হিতে-বিপরীত! কিছু মানুষ ফেমিনিজম সম্পর্কে উলটো ধারণা নিয়ে দূরে সরে যায়, কিছু মানুষ হুট করেই এমন এক্সট্রিমলি এটা প্র্যাকটিস করা শুরু করে যে তাও ঠিক আমাদের কালচারাল স্টেরিওটাইপের সাথে যায় না। ভাই রে! নিজেকে ফেমিনিস্ট দাবি করা এত সোজা না! ১০০বছর বাঁচলেও মনে হয় না আমি নিজেকে ফেমিনিস্ট হিসেবে দাবি করতে পারবো যদি না আমি আমার কন্টেক্সট বুঝি!
স্বাভাবিকভাবেই ৪ক্রেডিট এর ৬মাসের একটি কোর্সে দুনিয়া শিখে ফেলা যায় না, সবকিছু অনুভবও করা যায় না। যন্ত্রের মত কিছু টার্ম শিখে আর কিছু থিওরি পড়ে আর যাই হোক জেন্ডার সচেতন হওয়া যায় না, বরং উল্টোটা হতে পারে। অন্য বেসিক কোর্সগুলো হয়ত আমাদের মধ্যে সমাজের কোন একটা নির্দিষ্ট অংশের প্রতি বিদ্বেষ বা ঘৃণা তৈরি করে না, কিন্তু এই ছোট্ট একটা জেন্ডার কোর্স অনেকসময়ই তা তৈরি করে দেয়।
তাহলে কি আমরা জেন্ডার নিয়ে কোর্স করবো না? নাকি কোর্স করে বলবো টিচারটা পাগল/ টিচারটা ভালো করে পড়ায় না/ ভুলভাল পড়ায়??
উহু! জীবন থেকে জেন্ডার তো না পড়লেও বাদ দেয়া যায় না! আমি কথা বললেও তার সাথে জেন্ডারের একটা সম্পর্ক থেকেই যায়। তাই বাদ তো দেয়া যাবেই না, অন্যকে দোষারোপও করা যাবে না। আমরা যেটা করতে পারি কোর্সটা পড়ার সময় থিওরির কথা বেশি চিন্তা না করে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সাথে যৌক্তিকভাবে মেলাতে পারি, প্রতিটা বিষয় পড়ার আগে-পরে নিজের বিবেককে একবার প্রশ্ন করতে পারি, চোখ মেলে নিজের আশেপাশে কি ঘটছে তা দেখতে পারি। এই বোধটুকু যদি আগে নিজের ভিতর নিয়ে আসতে পারি আর নিজের ব্রেইনের যৌক্তিক অংশটাকে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আর অন্য কেউকেই পাগল মনে হবে না, নিজেকেও দোষী মনে হবে না, বরং শুধুমাত্র নিজের জীবনে (ছেলে-মেয়ে উভয়েরই) জেন্ডার সচেতনতা থাকাটা যে কতটা জরুরী তা বুঝতে পারবো বলে আশা করি।
সুতরাং অল্প বিদ্যা দিয়ে শুধু পরীক্ষায় পাশ করে ভুলে না যেয়ে, অল্প বিদ্যা দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করার সাথে সাথে নিজেকে অনুভব করতে শিখি......
!! ধন্যবাদ !!
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:০৮
হালিমা সাদিয়া বলেছেন:
২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৮
প্রলয়শিখা বলেছেন: "আমরা যদি না জাগি মা,
কেমনে সকাল হবে"।
ছোটবেলায় পড়া কবিতার লাইনটা মুখস্ত করেই গেছি শুধু। উপলব্ধির চেষ্টাটা আর করা হয়ে উঠে না। অলসতা আর উদাসীনতা দুইটাই সমান দায়ী।
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:১৩
হালিমা সাদিয়া বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
এই অলসতা-উদাসীনতা আমাদের মধ্যে যে কী পরিমাণ কমপ্লেক্স তৈরি করছে তা যদি আমরা বুঝতাম!
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৩
আমিই মিসির আলী বলেছেন: Right.
Stop learning, start thinking.