নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদাসিদে কথা কাজের ফাঁকে কিছু করা,ব্যস্ততার মাঝে যাকিছু ভাবি তাই লিখি।

HannanMag

শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।

HannanMag › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাক্তার বন্ধুরা ক্ষমা করবেন ৩

০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:২৭


২০০০ সালের কথা আমি ব্যাংকে কাজ করি। আমার কর্মস্হল চান্দিনা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সবে মাত্র যোগ দিয়েছি। আমাদের শাখার সেকেন্ড অফিসার সাহেব একদিন অফিসে এসে খুবই মর্মাহত। উনার এক ছেলে গ্রামের বাড়ি যাবার পথে রাস্তায় এক্সিডেন্ট এর কবলে পড়ে। বাসে যাচ্ছিল। দেবিদ্বার বাজার পার হয়ে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সড়কে মুখোমুখি সংঘর্ষ হবার উপক্রম হয়। ফলে দ্রুত টার্ননেয়। একটি বাস সড়কের পাশে খাটে পড়ে যায়। অনেকেই আহত হয়। সম্ভবত দুইজন মারা যায়। উনার আরেক ছেলে পেছনের আরেকবাসে ছিল। সে এক্সিডেন্ট কাছে গেলে বাস থেকে নামতে হয়। রাস্তা বন্ধ ছিল। মানুষের চিৎকার কান্নাকাটি শোনে সামনে যায়। গিয়ে দেখে তার ভাইকে মাটিতে শুইয়ে রাখা আছে। আহত, চিৎকার করছে। দাঁড়াতে পারছে না। তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সারা শরীর ফুলে যায়। ব্যথা অসহ্য। খেতে পারছে না। কোন কিছু খেলেই বমি হচ্ছে। শরীরে পানি জমে যাচ্ছে। হাত পা ফুলে মোটা হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্হায় দুইদিন। শরীরে জ্বর আছে। কমছে না। কাজেই ছেলের শরীর খারাপ থাকায় মন খারাপ নিয়ে অফিসে আসে। পরেরদিন আমি ও আমাদের শাখা ব্যবস্হাপক ছেলেটা কে দেখার জন্য হাসপাতালে গেলাম। গিয়ে কি মনে করে জানি তার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরিক্ষা-নিরিক্ষার রিপোর্ট দেখলাম। আমার পাশাপাশি ম্যানেজার সাহেব ও দেখছেন। মজার ব্যাপার হল তার আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্টে পরিষ্কার করে হাতে লেখা আছে, ছেলেটার বামদিকের কিডনি ভেঙ্গে গেছে। যিনি রিপোর্ট করেছেন তার নিজ হাতে লাল কালি দিয়ে লেখেছেন, Left Kidney has been broken down. Right one is okay.

এই লেখাটি দেখার পর আমি ডাক্তারের সাথে আলাপ করতে বললাম। ডাক্তার এসে বলল আমাদের এখানে কিডনির কোন চিকিৎসা নাই। আমি বললাম চিকিৎসা নাই তা’হলে একে আটকে রেখেছেন কেন। রিলিজ করে দিতে পারেন, যেখানে গেলে কিডনির চিকিৎসা পাবে সেখানে যাবে। ডাক্তার আমাদের অত্যন্ত রূঢ় ভাষায় বুঝাতে চাইল, আপনারা এখানে ওকে ভর্তি করেছেন। আমি বললাম, আপনি রিপোর্ট দেখার পর বলতে পারতেন; যেহেতু কিডনি সমস্যা ওকে ঢাকা নিয়ে যান। যাক শেষে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকা নেয়ার পর কিডনির ডাক্তার পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বললেন, অপারেশন করে বিকল হওয়া কিডনি ফেলে দিতে হবে। আহত ছেলেটার এক চাচা দেশের বাইরে থাকতেন। উনার সাথে পরামর্শ করে। ওকে কোলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঢাকার ডাক্তারের মত কিডনি অপারেশন করে ফেলে দিতে বলে। শেষে ছেলেটা কে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাই। সেখানে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ডাক্তার আগে কিডনি ভেতরের অংশে জমে থাকা ফ্লোইড বের করে। পরিক্ষা করে দেখা যায়, যতটুকু অংশ ভেঙ্গে গেছে তা বাদ দিয়ে বাকি অংশ ফাংশান করতে পারে তাদের মত। শেষে ওকে একমাসে ঔষধ পত্র দিয়ে বিশ্রামে থাকতে বলে। খাওয়া দাওয়া পরিমাপ করে দেয়। পানির পরিমান ঠিক করে দেয়। এক মাস পর আবার দেখা করতে বলে। আস্তে আস্তে ছেলেটা সুস্হ্য হয়ে যায়। তার আর অপারেশন করতে হয়নি।
অন্যদিকে ২০০৩ সালের ঘটনা আমাদের এক কলিগের বাবা কিডনি সমস্যায় ভোগছিলেন। জানা গেল, উনাকে ঢাকায় ডাক্তার পরমর্শ দিলেন অপারেশন করে লাভ হবে না। তোমরা চিকিৎসার জন্য যেখানে যাও একই মত হবে। যতদিন বাঁচেন ঔষধের উপর থাকতে হবে। আবার এও বলে দিলেন তোমরা যদি দেশের বাইরে যাও চিকিৎসার জন্য, দেশে আসলে আমাকে উনার রিপোর্টগুলো দেখাবে। উনাকে ভারতে নেয়া হল। সমস্যা বিবেচনায় কয়েকদিন পার করে দিলেন। শেষে সিদ্ধান্ত নিলেন অপারেশন করতে হবে। অপারেশন করা হল। দুইদিন হাসপাতালে থাকা হল। যেদিন উনাকে রিলিজ করা হয়, সেদিন অপরেশনের জন্য জমা দেয়ার টাকার একটা অংশ ফেরৎ দিলেন। বাবার সাথে গিয়েছিল আমাদের কলিগ। সেতো অনেক খুশি। টাকা ফেরৎ পেয়ে। পরামর্শ দেয়া হল যেন তাড়াতাড়ি দেশে চলে আসতে। উনারা সবাই দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর কি মনে করে ঢাকা গিয়ে আগের ডাক্তারকে রিপোর্টগুলো দেখায়। উনি রিপোর্ট দেখে বলে দেন, তোমার বাবাকে উরা মেরে ফেলেছে। অপরেশন করা জন্য সবকিছু করেছে; তারপর আবার অপরেশন না করে সেলাই করে বন্ধ করে দিয়েছে। ছোট্ট করে নোট দেয়া আছে, ইনঅপারেবল। ফলে বুঝা গেল কেন টাকা ফেরৎ দেয়া হয়েছে। এই ঘটনার কয়েকদিন পর উনি মারা যান। তবে এখানে উল্লেখ্য কাজ হয়নি বলে টাকা নেয়নি। আর আমাদের দেশে মৃতরোগিকে আইসিওতে আটকে রেখে বাড়তি বিল করার নজির আছে। এমনি ঢাকার নামিধামী হাসপাতালেও এমন ঘটনার নজির পাওয়া যায়।

আমাদের দেশে টাকা দিয়েও অনেক সময় সেবা পাওয়া যায় না। এই জন্য অনেকেই দেশের বাইরে যায় টাকা খরচ করে চিকিৎসা সেবা পেতে। অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধেও যেতে হয়। একজন ডাক্তারের সেরিয়াল থেকে আরম্ভ করে প্রতি পদে পদে এখানে অনেক বিড়ম্ভনা পোহাতে হয়। দেশের বাইরে গেলেই যে ভাল চিকিৎসা হবে তা নয়। কিন্তু মানুষ বিশ্বাস করতে পারে না। নানা যক্কি ঝালেমা পোহানোর চেয়ে বাইরে যাওয়া ভাল। এতে করে আমাদের দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা চলে যাচ্ছে বাইরে। বছর খানেক আগে ভুল চিকিৎসায় একজন রোগি মারা যায় চট্টগ্রামে। রোগির পরিবার আদালতের আশ্রয় নেয়। ফলে সব ডাক্তার ধর্মঘটে যায়। কয়েকদিন অচল ছিল প্রাইভেট হাসপাতাল। অনেক মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়েছে। কয়েকদিন হল, এক প্রাইভেট হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ ব্যবহার করে অপারেশন থিয়েটারে। সবকিছুর পেছনে শুধু ডাক্তার দায়ি তা নয়। একটা একটা দুষ্টু চক্র কাজ করছে। হাসপাতাল, ডাক্তার, ঔষধ শিল্প, ঔষধসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ কারি থেকে আরম্ভ করে এই সেবার সাথে জড়িত অন্য সকল কাঠামোগত বিষয়কেএখানে দায়ি করা যায়। তবে ডাক্তার কে কেন বলা হচ্ছে, ইচ্ছে করলে তা লোভ লালসার বাইরে থেকে রোগির কল্যানে প্রকৃত সেবা দিতে পারে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬

রাখালছেলে বলেছেন: বানানগত সমস্যা বাদ দিলে লেখা অনেক ভাল হয়েছে । ডাক্তাররা এখন আর রোগীর আত্মীয়দের প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না । নার্সরা অকথ্য ভাষায় কথা বলে । রোগীকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে বেশী বিল করে। তবে ভাল কিছু উদাহরন কিন্তু আছে ।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৩৬

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.