নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদাসিদে কথা কাজের ফাঁকে কিছু করা,ব্যস্ততার মাঝে যাকিছু ভাবি তাই লিখি।

HannanMag

শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।

HannanMag › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইথিওপিয়ার মানুষ-জাতি –ভাষা ৩ ( ওরোমো জাতি)

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬

২.১ ওরোমো নৃগোষ্ঠী (Oromo):
বর্তমান ইথিওপিয়ার সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ওরোমো। ইথিওপিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪.৬০% হল ওরুমো। এই জাতির লোকেরা কিছু অংশ কেনিয়া, সোমালীয়ায় বাস করে। ইথিওপিয়া সহ হর্ণ অব আফ্রিকায় এই জাতির লোকেরা একটা বিশাল জায়গা দখল করে আছে। ইথিওপিয়ায় বর্তমানে ৩৫ মিলিয়ন ওরুমো জাতির লোক বসবাস। আফ্রিকা সহ সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশে ওরোমোদের সংখ্যা প্রায় ৬০ মিলিয়িন। অন্যতম বৃহ্ত জাতি। ওরোমোদের নিজস্বভাষা আছে। ওরোমো তাদের মাতৃভাষা।এই ভাষা আবার আফান/ আফোয়ান ওরোমো (Afaan/Afoan Oromo)কিংবা ওরোমিফফা ( Oromiffa) বলা হয়ে থাকে। এই ভাষা মূলত আফ্রো –এশিয়না ভাষা গোষ্ঠী কুশাইট এর অন্তর্ভুক্ত। ১৮৯৩ সালে প্রথম ওরোমো শব্দটি ইউরোপীয়দের লেখায় পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে তার বিস্তার ঘটে। বিংশ শতাব্দির দ্বিতীয়ার্ধে এই ভাষার ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধিপায়। সবার কাছে পরিচিতি লাভ করে। ওরোমোদের আদি ইতিহাস জানা কঠিন। কেননা তাদের লিখিত ইতিহাস নেই। এই জাতির লোকেরা লৌকিক প্রথা অনুসরণ করত। মুখে মুখে তাদের বংশ গৌরব পরবর্তি প্রজন্মের কাছে তোলে ধরত। ষোড়শ শতাব্দির আগ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত ছিল। উপনিবেশিক দলিল দস্তাবেজে তাদের উল্লেখ করা গাল্লা (Galla)নামে।অনেক ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানী এবং জাতিতাত্ত্বিক গবেষকদের মতে ওরোমো মানুষেরা সম্ভবত শামো হৃদের (lake Shamo/ Chamo) পাশে এবং স্টিপানির (Stepanie) আসপাশের এলাকায় তাদের বসতি, বিস্তার ঘটেছিল।তাদের উৎপত্তি হয়েছে কুশাইটিক জাতি থেকে।কুশাইটিক জনগন পূর্ব ও উত্তর পূর্ব আফ্রিকায় বসতি করেছিল। প্রথম মিলিনিয়ামের প্রাথমিক দিকে তাদের অস্তিত্ব ছিল বলে ইতিহাস প্রমাণ করে। ষোড়শ শতাব্দিতে আবিসিনিয়া- আদল যুদ্ধের পরে ওরোমোরা ইথিওপিয়া সাম্রাজ্য আর আদল সালতানাতে ছড়িয়ে যায়। হার্লা জাতির লোকেরা ইথিওপিয়া আর সোমালিয়ায় ওরোমোদের সাথে মিশে যায়।
ইতালিয়ান মানচিত্র বিশারদ ফ্রা মরো (Fra Mauro ) ১৪৬০ সালে তার অংকিত মানচিত্রে ওরোমোদের কথা উল্লেখ করেন। তিনি সেখানে গাল্লা শব্দ ব্যবহার করেছেন। ইথিওপীয় ধর্মযাজকদের পরামর্শে তিনি এই কাজ করেছিলেন। এই যাজক ১৪৪১ সালে ইতালি ভ্রমণ করেছিলেন। নদী এবং জঙ্গল বুঝাতে গাল্লা শব্দ ব্যবহার করা হত। তাছাড়া উচু মালভূমিতে পশুচারণ কারিদেরকে বুঝাতে এই শব্দের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মুহাম্মদে হাসেন আমহারা জনগোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য আলোচনা করতে গিয়ে ওরোমোদের কে গাল্লা বলেছেন। ইতিহাসে প্রমাণিত হয় যে পঞ্চদশ শতকের আগেই ওরোমোরা ইথিওপিয়ার দক্ষিনাঞ্চলের উচ্চভূমিতে সুপ্রতিষ্ঠিত।আবার অনেক ওরোমো অন্যান্য উপজাতিয় গোষ্ঠীর সাথে আন্তঃসম্পর্ক বজায় রেখেছিল।ওরোমোরা তাদের নিজেদের কে কখনও গাল্লা নামে পরিচয় দেয়নি। বরং তারা একে তাদের প্রতি অন্যায়ভাবে আরোপিত মনে করেছে। তাদের কে নিন্মশ্রেণীর কিংবা বর্বর বুঝাতেই এই শব্দটা ব্যবহার করা হত। বার্টন এই বক্তব্যেকে স্বীকার করেন। তিনিও মনে করেন যে গাল্লার কাছাকাছি অনেক বর্বর শব্দ অন্যান্য জাতির ভাষায় পাওয়া যায়, যেগুলো ওরোমোদের কে বুঝাতে ব্যবহৃত হত। যেমন প্রকৃতি পুজারি, বর্বর, নিন্মশ্রেণীর, শত্রু, ধর্মহীন ইত্যাদি। আফার ভাষায় পাওয়া যায় ওরোমোদের কে বুঝাতে যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তা’হল মোরিন (Morin), গল্লি (Galli- Plural of Galla ) মানে হল জনতা ও বিদেশি। এই শব্দগুলো সাধারণত মোডাই শব্দের বিপরীতে ব্যবহৃত হত। মোডাই (Moddai) মানে হল উচ্চবংশীয়। অন্যদিকে আনুয়াক ভাষায় উচু মালভূমিতে থেকে অভিবাসনকারী জনগণ একসাথে গাল্লা বলে ডাকা হয়। এতে করে ওরোমো সহ আমহারা সবাইকে গাল্লা নামে ডাকা হয়। অন্যদিকে তিগরে ভাষায় আমহারা জাতিকে অর্ধেম গাল্লা বলে স্বীকার করে। এখানে উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালের আগ পর্যন্ত ওরোমোদের কে তিরস্কার না করেই ইউরোপীয়রা গাল্লা শব্দটি ব্যবহার করে। তবে ওরোমোরা এই শব্দটিকে তাদের প্রতি অবিচার, অন্যায়, অন্যায্যতার প্রতিক হিসাবে দেখে; তারা একে জাতিবিদ্বেষাক্তক আক্রমন হিসাবে মনে করে। বর্তমানে সবাই একমত যে ওরোমো শব্দের অর্থহিসাবে বলা হয়, “জন্মগতভাবে স্বাধীন মানুষ” ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ইথিওপিয়ার অবস্থা খুব খারাপ।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১২

HannanMag বলেছেন: বর্তমানে অনেক উন্নতি করছে। ১০ কোটি মানুষের দেশ। খরা আর যুদ্ধ ছিল জীবনের সাথী। ১৯৯১ সাল থেকে হাওয়া বদল হচ্ছে। এখন অনেক অবকাঠামো হচ্ছে। রাজধানীতে মেট্রো চলে। আন্তঃদেশীয় রেলপথ স্থাপিত হয়েছে। আদ্দিস আবাবা থেকে জিবুতি বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ তৈরি হয়েছে।বিমান সেবায় অনেক উন্নতি করেছে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই। ৬৩% খ্রিস্টানের ৩৩% মুসলিম বাস করে। তাদের মধ্যে জাতি তাত্ত্বিক কিছু বিরোধ আছে। ১৯৯৩ সালে দেশে নতুন সংবিধানের আওতায় জাতিগত সমস্যা সমাধানের জন্য ফেডারেল কাঠামোর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে সংসদে বিরোধী দলের প্রতিনিধি নাই বললেই চলে। একধরনের একদলীয় সরকার দেশ চালাচ্ছে। অঞ্চলভেদে কিছু অসন্তোষ বিরাজ করলেও আপাতঃদৃষ্টিতে শান্তি বিরাজমান।
অনেক বিদেশি সেখানে যাচ্ছে বিনিইয়োগের জন্য। অতি সম্প্রতি আমি নিজেও সেখানে গিয়েছিলাম কিছু শিল্প পার্ক দেখার জন্য। একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিয়েছি। শিল্প মেলা ঘুরে দেখেছি। আদ্দিস আবাবা অনেক সুন্দর শহর। রাস্তাঘাট পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন। মানুষের যাতায়তের জন্যে ফুটপাত প্রসস্ত, মুক্ত। রাত বিরাতে চলাফেরা করা যায়। কোন অসুবিধানেই। আমার কাছে আমাদের পরিচিত চারপাশের চেয়েও অনেক ভাল লেগেছে। এই কথা সত্য মানুষের জীবন যাত্রা বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে অনেক কষ্টকর। বিশুদ্ধ পানির অভাব আছে। খাদ্য ঘাটতি আছে। সামাজিকভাবে অনেক সংঘবদ্ধ। গোত্রের লোকেরা বয়স্ক মানুষ কে অনেক সন্মান করে। আমাদের দেশের চাইতে অনেক ভাল। অনেক অঞ্চলে মানুষ এখনও পশুপালন নির্ভর জীবিকায় জীবন যাপন করে থাকে। ইথিওপিয়া অনেক প্রাচীন স্থাপনা আছে। আমাদের আবেগের সাথে মিশে ইথিওপিয়া। ইসলামের প্রথম অভিবাসন, মদিনার আগে কিছু মুসলমান মক্কা থেকে আবিসিনিয়া গিয়েছিল। সেই আবিসিনিয়াই বর্তমান ইথিওপিয়া। ইথিওপিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর হারা ( হারার) কে আফ্রিকান মক্কা নামে ডাকা হয়।
আশাকরি আমার ধারাবাহিক লেখা সমূহ পড়ে আপনার ধারনা বদলাতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.