![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।
২.১.৩ দার্গ বিপ্লব এবং স্বাধীন ওরোমো রাষ্ট্রের ধারনাঃ
------------------------------------------
হেইলে সেলাসি চেয়েছিলেন পদ্ধতিগতভাবে বিরোধী জাতীয়তাবাদি নেতাদের কে নিজেরদের অনুকূলে নিয়ে আসতে। সাংস্কৃতিক ভাবে অঙ্গিভূত করার ধারনা কিংবা ওরোমোদের কে আমহারিক সংস্কৃতির সাথে মিশিয়ে নেয়া সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়। ধীরে ধীরে সুস্পষ্ট হতে থাকে যে, ওরোমোদের কে সমান মর্যদা দেয়া সম্ভব নয়। ক্ষমতা ভাগাভাগি করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা ইথিওপিয়া রাষ্ট্র কাঠামোতে আমহারিক সংস্কৃতি প্রবলভাবে বিদ্যমান। আমহারা ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম মৌলিকভাবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে জড়িয়ে আছে। তার পরিবর্তন করা কঠিন। সম্রাট কিছুটা সফল হলেও রাষ্ট্র কাঠামোর কারণে তিনি ব্যর্থ হচ্ছিল। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল, সোয়ান –আমহারান এলিট শ্রেনীদ্বারা। তাদের সবাই ইথিওপিয়া সংস্কৃতিতে অঙ্গিভূত ছিল। মানে আমহারিক সংস্কৃতি।ইথিওপীয় রাষ্ট্রে বহুজাতি ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো আপাতদৃষ্টিতে একটা ঐক্যের মধ্যে দেখা গেলেও বাস্তবে সফল তার মধ্যে অনেক গলদ আছে। তৎকালীন রাষ্ট্রে ইরিত্রীয়, ওগাডেন, সোমালী, ওরোমো সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাধছিল। ইথিওপীয় রাষ্ট্রে নানা জাতিসমূহের সাথে যখন বিরোধ খুবই তুঙ্গে তখন, হেইলে সেলাসি সরকারের পতন ঘটে। কতিপয় আর্মি জেনারেলের হাতে সম্রাটের ক্ষমতার পতন হয়। দার্গ বিপ্লব নামে খ্যাত এই বিপ্লবের আদর্শ হল “বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র” । বিপ্লবী সরকার গঠন করেই তারা ঘোষণা করেন যে, জাতিতাত্ত্বিক ধারনা বৈধ নয়। মানুষ জাতি ভিত্তিতে নয় বরং আর্থ সামাজিক ভূমিকা দ্বারাই শ্রেণীবিভাজিত। এই সময় তারা মানুষ কে জাতি ভিত্তিক বিভক্তিকে বাদ দিয়ে সমতা প্রতিষ্টার আহব্বান জানান। প্রথমে তারা একটি সংবিধান রচনা করেন যাতে তাদের ক্ষমতার বৈধতা দান করে।অন্য বিরোধী পক্ষকে দমন করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করেন। বিপ্লবি সরকার অত্যন্ত কঠোরতা প্রদর্শন করে। একদিকে ওরোমো, আমহারা বিরোধী পক্ষকে দমন করে। অন্যদিকে সোমালিদের কে তাদের কার্যক্রম বিশেষত ওগাডেন কে ইথিওপীয়তা কে বিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়া থেকে সফলভাবে নিবৃত্ত করেন।ইতিহাসে একে ওগাডিন যুদ্ধ নামে খ্যাত। এই যুদ্ধ চলে ১৯৭৬-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত। তাছাড়া ১৯৭৫ সালে ইরিত্রীয়দের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
দার্গ সরকার অনুধাবন করে যে, শুধুমাত্র ক্ষমতা –শক্তি প্রয়োগ করে ঐক্যপ্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তাদের ক্ষমতা কে পাঁকাপোক্ত করার জন্য ১৯৮৪ সালে ওয়ার্কাস পার্টি অফ ইথিপিয়া (WPE) গঠন করে। এই দল গঠনের কিছুদিন পর ১৯৮৭ মার্ক্সবাদি –লেনিনবাদি এইসরকার সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, রোমানিয়া যেভাবে সরকার পরিচালনা করেছে অনুরূপ পদ্ধতিতে একদলিল জনগনের সামনের তোলে ধরে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারের বৈধতা প্রতিষ্ঠা। জনগনের বৈধতা পেতে তাদের সমস্যা হয়নি। কেননা দেশে চলছিল এক ভয়ংকর ত্রাসের রাজত্ব। তাদের এই দলিলে অনুসারে নতুন সংবিধান রচনা করে। প্রেসিডেণ্ট এর ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করা হয়। সেই সাথে গঠিত নতুন সাধারণ পরিষদ। সাধারন পরিষদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৩৫। সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রশাসনিক পুনঃবিন্যাস গঠন করে বিল পাশ করা হয়। সেখানে ইথিওপিয়াকে ২৪টি প্রশাসনিক অঞ্চল আর পাঁচটি ততাকথিৎ স্বায়ত্বশাসিত রাজ্যে ভাগ করা হয়। যেমন; ইরিত্রিয়া( বর্তমানে স্বাধীন), আসাব, দিরেদাওয়া, তিগের, ওগাদিন। দার্গ সরকার অনেক চেষ্টা করেও জাতিগত বিরোধ, স্বশাসনের আন্দোলন দমাতে পারেনি। বরং তাদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জাতিভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিজদের অধিকার, অধিকতর দাবি দাওয়া আদায়েড় জন্য আন্দোলন কে আরো বেগবান করে। এমনকি সামরিক কায়দায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তোলে। সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই দল গুলোর মধ্যে আছে, ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্ট, ইরিত্রিয়ান পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট আর তিগরে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট। দার্গ সরকারের বিরুদ্ধের তাদের কিছু ঐক্যবদ্ধ অপারেশন পরিচালনা করে। দেশ এক মারাত্মক গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হয়। দেশে খাদ্যাভাব, অর্থনৈতিক সংকট, বেকার সমস্যা চলছে। পাশাপাশি যুদ্ধ তাদের জীবন ভয়ানক এক অন্ধকারাঞ্চ দিকে নিয়ে যায়।এইদিকে খরার কারনে দুর্ভিক্ষের কবল থেকে দেশ পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি। হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। যুদ্ধে দেশান্তরিত হয় অনেক মানুষ। আভ্যন্তরীণভাবে স্থানচ্যুতি ঘটে হাজার হাজার মানুষের। ১৯৭৭ সাল থেকে দার্গ বিপ্লবিরা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় নিজদের কর্তৃত্বকে টিকিয়ে রাখছিল। ১৯৮৮ সালের পর এই হাওয়া বদল হচ্ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নে তাদের সমস্যার কারনে বাইরের দেশ থেকে তাদের সমর্থন, সহযোগিতা, অস্ত্র, অর্থের যোগান কমিয়ে দিচ্ছিল। সেই কারনে দার্গ তার সরবরাহ লাইন বাঁধাগ্রস্ত হয়।জাতিগত আন্দোলন আরো চরমে পৌছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন দার্গ সরকার কে জানিয়ে দেয় তাদের সাহায্য ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। এইদিকে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে আদ্দিস আবাবা’য়। ক্যুঁ ব্যর্থ হলেও তাদের পুরো সামরিক ইউনিট বিরোধী পক্ষে যোগ দেয়। ক্রমাগতভাবে দার্গ বিপ্লবের দিনক্ষন শেষ হতে আরম্ভ করে। ১৯৯১ সালে দার্গ সরকারের পতন হয়। তবে মজার ব্যাপার হল এই দুবছরে তিগরে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট(টিপিএলএফ) ও তাদের ছায়া সংগঠন ইথিওপিয়ান পিপলস রিভুলোশানারি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইপিআরডিএফ)পুরো তিগরে অঞ্চল, ওয়ালো, সোয়া, গন্দর প্রভৃতি এলাকা নিজদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। ২৫সে মে দার্গ সরকারের সম্পূর্ণ পতন হলে, ইপআরডিএফ খুব দ্রুত অন্তবর্তি সরকারে গঠনের উদ্যোগ গ্রহন করেন। জাতীয় কনভেনশন ডাকা হয়। এই কনভেনশনে ৩১ দলের নেতাদের নিয়ে একটি চার্টার গঠন করে। এই চার্টারের শর্তানুসারে একটি অন্তরবর্তি সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের সহযোগিতার জন্য একটি পরিষদের অনুমোদন দেয়া হয়। এই পরিষদের সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত হয় ৮৭ জন। সেখানে ইপিআরডিএফ এর হাতে থাকে সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ৩২ আর ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্ট লাভ করে মাত্র ১২জন। এই চার্টারের শর্তে আমহরা জাতিগত দল স্বাক্ষর করে। উল্লেখ্য যে এই চার্টারের শর্তানুসারে সকল জাতিগত পরিচিতি স্বীকৃতি দেয়া হয়। আত্মনিয়ন্ত্রন, পরিচিতি, ফেডারেল কাঠামোতে নিজদের কে শাসন করার অধিকার নিশ্চিত করার শর্ত দেয়া হয়। অন্যদিকে জাতিগত পরিচিতি, বসবাস ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় ও আঞ্চলিক প্রশাসন কাঠামো গড়ে তোলার জন্য করনীয় নির্ধারণ করা হয়।
তবে ইপিআরডিএফ এর স্ব –শাসনের অর্থ এই নয় যে, ইথিওপীয় জাতি সমূহ তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের পথ খোলা রাখবে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্যে ছিল জাতীয় পর্যায়ে ক্ষমতাকে সংহত করা। তাদের সারা দেশে সমর্থন ছিল। এই দলের প্রধান ভিত্তিভূমি হচ্ছে আমহারা প্রদেশ,তিগরে প্রদেশ। অধিকন্তু অন্যান্য জাতিগত গোষ্ঠীর ভেতর তাদেরকে সমর্থন করে এমন রাজনৈতিক দলও তারা গঠন করেছে।যেমন ওরোমোদের ভেতর, ওরোমো পিপলস ডেমোক্রেটিক অর্গানাইজেশন( ওপিডিও)। ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্টকে চাপে রাখা যাবে এই উদ্দেশ্যে তাদের কে সহযোগিতা দেয় সরকার।
১৯৯১ সালে বিপ্লবের পর, ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্ট, অন্তরবর্তি সরকার কে সহযোগিতা প্রধানের আশ্বাস দেয়। তাদের জন্য বরাদ্ধ ১২ আসন গ্রহন করে। অন্তরবর্তি সরকারের অংশগ্রহন করে। তাদের বিশ্বাস ছিল ইপিআরডিএফ তাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবে না। কিছুদিনে মধ্যেই তাদের মাঝে সন্দেহ দানা বাঁধে। অল্পকিছুদিনের মাঝেই ওএলএফ তাদের দলের কর্মী সংগ্রহের জন্য নিবন্ধন করতে পারছে না, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী দিতে পারছে না। ওপিডিও তাদের কে বাধা দিচ্ছে। তারা বুঝতে পারে যে, ইপিআরডিএফ তাদের জাতিকে বিভক্ত করে শাসন করার কৌশল নিচ্ছে। আগের সরকার যেভাবে দেশ পরিচালনা করেছে ইপিআরডিএফ ও একই পথে হাঁটছে। তারা নির্বচন বয়কট করে। ফলে তাদের কে কোয়ালিশন সরকার থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।এই কারণে ওএলএফ সাথে আবার সংঘর্ষ বাঁধে। অল্পমাত্রার গৃহযুদ্ধের মোকাবেলা করতে হয়। ক্রমান্ময়ে ওরোমো লিবারেশন ফ্রন্ট দুর্বল হয়ে যায়। তাদের নেতারা সংঘর্ষে যেতে চাননি। তাদের প্রত্যাশা ছিল সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে। ১৯৯৩ সালে ডিসেম্বরে প্রধান প্রধান বিরোধী দল একাটা সম্মেলন আয়োজন করে। এতে ওএলএফ, অল –আমহারা পিপল’স অর্গানাইজেশন(এএপিও), সাউদার্ন পিপল’স ডেমোক্রেটিক কোয়ালিশন (এসপিডিসি) অংশগ্রহন করে। সরকার সম্মেলনের অনুমতি দানকরে। তবে বিদেশ থেকে আগত অনেক নেতাকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়। কিংবা বিভিন্ন বাহিনী দ্বারা নাজেহাল করা হয়। এই সম্মেলনের কোন দাবী –দাওয়া মেনে নেয়নি। কিন্তু ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাবকে বাদ রাখা হয়। অতঃপর এসপিডিসি নতুন করে সংগঠিত হতে চেষ্টা করে। তাদের প্রাথমিক চেষ্টা হল নির্বাচন কে অর্থাৎ সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেয়া। রাজনীতিক প্রক্রিয়া সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেই নির্বাচন করার দাবী উঠে।
১৯৯৪ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এই সকল দল অংশ নেয়নি। কিন্তু তাদের অংশগ্রহনে অন্তর্বর্তি সরকারের যে পরিষদ গঠিত হয়েছিল তাদের দ্বারা সাংবিধানি রোড ম্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তারা নির্বাচনে আসেনি। যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাতে নরওয়ের একজন অবজারভার এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
“Neither those voters who went to the polls without knowing why, nor those who did not go because their political leaders boycotted the election, are likely to accept and cherish this documents as their democratic constitution. All the major political groups in Ethiopia agree in principle that the documents is well designed- yet they lack confidence in its impartial application. The political climate of uncompromising confrontation reigning in Addis Ababa today inhibits the development of such confidence. The election must thus be understood in a political context of distrust”
নির্বাচিত পরিষদ সর্ব সম্মতিক্রমে নেগাসো গিদাদা ( Negasso Gidada) কে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে। অন্যদিকে মেলিস জেনাবি (Males Zenawi) প্রধানমন্ত্রি নির্বাচিত হন। মেলিস জেনাবির হাতে থাকে নির্বাহি ক্ষমতা। আর রাষ্ট্রপতি কে হলেন দেশের অলংকারিক প্রধান। ইপিআরডিএফ চেয়েছিল ওরমোদের মৌন সম্মতি। এই জন্য ওএলএফ কে মূল্য দিতে হয়েছে। ইপিআরডিএফ ওরোমোদের মাঝে তাদের ভিত্তি তৈরি করতে যা দরকার তাই করেছিল। ওপিডিসি’র কে তারা দাবার ঘুটি হিসাবে ব্যবহার করে। ওরোমোদের মাঝে একটা সচেতন সমর্থন পেতে অনেক কাজ করেছে। প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেণ্ট কে বেঁচে নেয়া হয় ওরোমোদের মাঝ থেকে।
অনেক ওরোমো এখনও বিশ্বাস করে তারা একদিন স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। আবার অনেকেই বৃহত্তর ইথিওপিয়ার ভেতর থেকেই তাদের ভাগ্য, ভবিষ্যত আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চায়।কতজন ইপিআরডিএফ কে সাহায্য করবে। ওএলএফ নেতাদের মাঝে সংহতির অভাব আছে। তাদের মাঝে চিন্তাচেতনা নিয়ে অনেক পার্থক্য আছে। দেশের বাইরে ওরোমো জাতীয়তাবাদের ধারনার সমর্থন করে এমন গোষ্ঠীর সংখ্যা কম। নাই বললেই চলে। বাইরের জগতের কাছে বৃহত্তর ইথিওপিয়া ধারনাকে জুড়ালো সমর্থন করে থাকে। নিজেদের মাঝেও এই নিয়ে সন্দেহ আছে। আধুনিক ওরোমো জাতীয়তাবাদের ধারনা ইথিওপিয় উপনিবেশ বাদের ফসল। অধিকন্তু বহুজাতিক ইথিওপীয় রাষ্ট্রে সম নাগরিকতার আন্দোলন থেকে গড়ে উঠা। তাদের মাঝের এই ধারনা কারণ হল, অধিকাংশ ওরোমো মনে করে তারা আবার আরেক কোন শাসনকারি জান্তার রোষানলে পিষ্ট হবে। সাম্প্রতিক নানা জাতি গোষ্ঠীর মাঝে সংঘাত,দ্বন্দ্বের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ জাতির লোকেরা মনে করেন, রাষ্ট্র গঠনের কাঠামোতেই এর সমস্যা নিহিত। যখন তাদের মাঝে শোষণ, নির্যাতনের ঘটনা ঘটে তখন তাদের বিকল্প ভাবার সুযোগ নেই। ওরোমোদের অতীত অভিজ্ঞতাই তাদের মনে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নকে নীরবে বাঁচিয়ে রেখেছে। আগামীতেই স্বপ্ন থাকবে।
বর্তমানে ওএলএফ সশস্ত্র সংগ্রাম করার শক্তিও হারিয়ে ফেলছে। তাদের হাতে অস্ত্র নেই, অর্থনেই। এমনকি তাদের জন সমর্থনও কমে গেছে। সরকার সমর্থক রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতি মানুষের আস্থাবেশি। তবে সমান নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্য তাদের সংগ্রাম সাংবিধানিক পদ্ধতিতেই করে যেতে হবে। সেখানে তাদেরকে সহজে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। বরং এই রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা কর্মিরা দুই পক্ষ সরকার এবং সরকারের প্রতি আস্থাশীল সংগঠন উভয়ের কাজ থেকেই বাঁধা গ্রস্ত হচ্ছে। হেইলে সেলাসির আমল থেকে আমহারা সংস্কৃতি যে আগ্রাসন, কর্তৃত্ব চলছে তার এই ধারাবাহিকাতা অব্যাহত আছে। এই কর্তৃত্বকে বহাল রাখার জন্য শক্তি, কূটকৌশল, কিছুটা সমঝোতার দিয়ে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে আবার ব্যাপক জনভিত্তি নেই। সকল জাতি সমাজ গোত্রের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে কিংবা স্বতন্ত্র জাতি সমূহের একটা ইউনিয়ন গঠনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে দেশে আবারো জাতিগত বিরোধ, সহিংসতা বেড়ে যেতে পারে।
১৯৯১ সালে দার্গ সমাজতন্ত্রের পতনের পর অন্তর্বর্তি সরকার বহু জাতিতাত্ত্বিক সমস্যা কে সামনে নিয়েই দেশের প্রশাসনিক কাঠামো সাজাতে চেষ্টা করেন। সারা দেশকে ১২ আঞ্চলিক সরকার আর ২টি স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ( আদ্দিস আবাবা আর দিয়ে দাওয়া)। বর্তমান সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্চ অনেক। ওরোমোদের স্বাধীনতার স্বপ্নের আকাংখা কে সাংবিধানিক কাঠামোতে রেখে বৃহত্তর ইথিওপিয়া রাষ্ট্রের ভেতর শক্তিশালী ফেডারেল কাঠামোতে মিটানো সম্ভব। তাদের সমান নাগরিক অধিকার প্রধান করা, চাকুরি ব্যবসা –বানিজ্য, শিক্ষার সুযোগ দেয়া। অর্থনৈতিক বঞ্চনাকে লাগব করা। রাজনৈতিক কর্মকান্ড করা অধিকার নিশ্চিত করা। দমন পীড়ন করে স্বাধীনতার আকাংখাকে নিরুৎসাহিত করা যাবে না।
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০১
HannanMag বলেছেন: বর্তমানে নেই। সেখানে ছিলাম কিছুদিন। আবার যাব।
সেখানকার মানুষের কাজ কর্ম নিয়ে আমার ধারাবাহিক লেখার শেষের দিকে থাকবে। আশা করি ভাল লাগবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি কি ওখানে আছেন, নাকি ছিলেন?
মানুষজন কাজকর্ম করেন? নাকি ফাঁকি দিয়ে চলে যাচ্ছেন?