নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদাসিদে কথা কাজের ফাঁকে কিছু করা,ব্যস্ততার মাঝে যাকিছু ভাবি তাই লিখি।

HannanMag

শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।

HannanMag › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিরিয়ার যুদ্ধ মানবতার পরাজয় ২

১৪ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫

সিরিয়া পশ্চিম এশিয়ার দেশ। স্বাধীন দেশ। সিরিরা আরব রিপাবলিক নামে পরিচিত। আয়াতন মাত্র ১৮৫১৮০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ২০১৭ সালের হিসাবে মতে ১৮.০১ মিলিয়ন। কিন্তু বর্তমানে দেশের জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ উদ্বাস্তু। দেশের ভেতর কিংবা দেশের বাইরে। কিন্তু বর্তমানে দেশটি নানা ভাবে বিভক্ত। কোন একক শক্তির হাতে এই দেশটির শাসনভার হাতে নেই। সার্বভৌম ক্ষমতা বলতে যা বুঝায় তার চরম লঙ্ঘন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শক্তি ইচ্ছেমত তাদের এজেন্ডা কায়েম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই রকম পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের শাসকরা দেশের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখার কারণেই সংকটের তীব্রতা বেড়েছে। মানুষ যখন তাদের মৌলিক অধিকার হারায়।
সিরিয়ার ইতিহাস সবসময়ই অরাজকতা পূর্ণ। এর কারণ নানামূখী। অংশত কেন্দ্রীয় শাসনের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা। সিরিয়া একক পরিচিতির অভাব ছিল এখনও আছে। এখানে আত্মপরিচয়ের সংঘাত আছে। আত্মপরিচয়ের জন্য প্রতিযোগীতা আছে। আরব জাতীয়তাবাদ, সিরীয় জাতীয়তাবাদ, ইসলামিক ঐক্যবাদ। এই রকম নানা মূখী সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে সিরিয়ার যাত্রা। অন্যদিকে পারিবারিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বংশ কিংবা ধর্মীয় মতবাদের কর্তৃত্ববাদ এই সংঘাতকে আরো তীর্বতর করেছে। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে আলাবাইত পন্থি শিয়ারা; অন্যদিকে সুন্নি আরবদের অতিক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠী অর্থনীতির হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল। কিন্তু গ্রামীন জনপদে সকল মানুষের আর্থিক অবস্থা ছিল নাজুক। যুদ্ধে এই পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তোলে। আধা –সামন্ততান্ত্রিক আর্থিক কাঠামো উপর ভর করে দাঁড়ানো ছিল সিরিয়ার অর্থনীতি। সংকীর্ণ বিভাজিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিরিয়ার অন্যতম মূল সমস্যা। ধর্মের দিক থেকে সিরিয়া চরমভাবে বিভক্ত। শিয়া, সুন্নি, আলাবাইত ( শিয়াদের একটি শাখা), দ্রোজ (খ্রীষ্টানদের একটি শাখা), এই সাথে প্রান্তিক অর্থনীতিতে বসবাস মানুষের মাঝে বঞ্চনা ছিলা আগে থেকেই। এই পরিস্থিতি যখন ২০১১ সালে প্রথম দিকে বিপ্লবের সূচনা হচ্ছিল। সামাজিক, আর্থিক, ধর্মীয় বিরোধ গৃহবিবাদ কে গৃহযুদ্ধে রূপান্তর করার জন্য ভূমিকা রাখে। বর্তমানে জনসংখ্যার ৯০.৩০% আরব। কুর্দিস,আর্মেনিয়ান এবং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ৯.৭০ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য যে সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে বসবাস করে ২০০০০.০০ হাজার ইহুদি। ইসরাইল এই মালভূমি দখল করে আছে। ধর্মের দিক থেকে সিরিয়ায় বাস করে ৮৭% মুসলিম, ১০% খ্রীস্টান, ৩% ইহুদি। মুসলিমদের ৭৪ সুন্নি, ১৩% আলাবাইত, ইসমাইলি শিয়া। মজার ব্যাপার হল এই সকল জাতিতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় বিভক্তি সিরিয়াতে অত্যন্ত প্রবল। ভাষার দিক দিয়েও সিরিয়াতে নানা ভাষার প্রচলন আছে। সরকারি ভাষা আরবি। তবে সেখানে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আরামাইক, সিরকাসিয়ান, ফ্রান্স ও ইংরেজি ভাষা চলে।
সিরিয়ার প্রায় ৫৮% মানুষ শহরে বাস করত।নগরায়নের হার ছিল ৩.৫৯% শতাংশ। জনসংখ্যার আধিক্যের দিকে থেকে আলেপ্পো ছিল প্রথম। আলেপ্পোতে বাস করত প্রায় ৩.৫৬২ মিলিয়ন, দামাস্কাসে ( রাজধানী) ২.৫৬৬ মিলিয়ন, হোমসে ১.৬৪ মিলিয়ন, হামাতে ১.২৩৭ মিলিয়ন, লাতাকিয়া ০.৭৮১ মিলিয়ন( ২০১৫ সালের হিসাব)। মোট জনসংখ্যার ৫১.১৬ শতাংশ মানুষের বয়স ২৪ বছরের নীচে। অধিকন্তু ৩১.৬২ শতাংশের বয়স ১৪ বছরের নীচে। যুদ্ধের এই বিশাল সম্ভাবনাময় মানুষের স্বপ্ন আশা সব ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের বিশাল অংশ দেশ থেকে বিতাড়িত। যেখানে তাদের বাড়ি ছিল। ঘর ছিল। ব্যসসা বানিজ্য, সংসার ছিল। সবকিছু বদলে গেছে। যুদ্ধ, ধ্বংসলীলা, মৃত মানুষ, পুড়ামাটি, কংক্রিটের ভগ্নস্তুপ, গোলা বারুদ, বোমার আঘাতের চিহ্ন; দখল আর পাল্টা দখলের কাড়াকাড়ি। দেশের ভেতরের নানা বিভক্ত শ্রেণি আর বাইরের নানা বাহিনীর আনাগোনা ইত্যাদি প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ সিরিয়ার বাস্তবতা। বর্তমানে আলেপ্পো, লাতাকিয়া, হোমস, হামা প্রভৃতি শহরে আর বাসযোগ্য নয়। সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেণ্টকে পূর্ব ঘৌতা শহরে হামলার বিষয়ে সাংবাধিকরা জিজ্ঞেস করলে, তিনি উত্তর দেন আলেপ্পোতে যান। সেখানে ধ্বংসস্তুপের নীচে পড়ে থাকা লাশের দাফন করে আসুন। সেখানে এখনও অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে। যেমনটা ইরাকের মসূলে ধ্বংসস্তুপের নীচ পড়ে আছে।
আকাশের দিকে তাকালে দেখা যাবে মার্কিন, রাশিয়া, তুর্কি, সিরিয়া সরকার পন্থি, কিংবা ইসরাইলের বিমানের আনাগোনা, হামলা। উদ্দেশ্য ভিন্ন কিন্তু টার্গেট একটা সিরিয়ার মানুষ যতবেশি মারা যায়। কার লাভ কার লোকসান তা বিচার যাবে না। লাভ যারই হোকসান জনগণের। সম্পদ আর ইতিহাসে দিক বিবেচনা করলে সিরিয়ার শহরগুলোর সম্বৃদ্ধি অনেক সুপ্রাচিন। এই সুপ্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস আজ বিপন্ন। যুদ্ধে মানুষ মারা গেলেও এখানেও বানিজ্যের জয়। অস্ত্র বিক্রি বেড়ে গেছে। পুরানো অস্ত্র গোলা, ট্যাংক বহর, বিমান, কামান, ক্ষেপানাস্ত্রবিরোধী ব্যাটারি, যুদ্ধ বিমান সহ অন্যান্য অস্ত্র বিক্রি বেড়ে গেছে। সিরিয়ার পাশের দেশ সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, তুরস্ক, এবং সিরিয়া এই সবদেশ তাদের অস্ত্রের ভান্ডার বড় করছে। আর রাশিয়া, ইউরপীয় ইউনিয়ন( ফ্রান্স, জার্মানি), যুক্তরাজ্য সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রচুর অস্ত্র বিক্রি করছে। সস্তা তেল কিনে দামি অস্ত্র বিক্রি চলছে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া তাদের নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সরাসরি যুদ্ধ করছে। একদিকে আইএসআইএলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে আবার অন্যদিকে এদের হোতাদের কে কিভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদিকে তুরস্কের মিত্র আবার অন্যদিকে তুরস্ক বিরোধীদের কে অস্ত্র, অর্থ, প্রশিক্ষণ দিয়ে সরাসরি সাহায্য করছে। তুর্কিদের সাথে কুর্দিদের সংঘাত পুরানো। এই সংঘাত কে উস্কে দিতে কুর্দিদের অস্ত্র দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখানে তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে আগামীতে আসপাশের দেশ গুলো সাথে একটা স্থায়ী সংঘাত কে টিকিয়ে রাখা যাবে। তাদের স্বার্থ এখানেই।
আর কুর্দিদের দমনে ইরাক, সিরিয়া, তুরস্ক আর ইরান একট্টা। কুর্দি জাতিগোষ্ঠীকে দমন করা, তাদের স্বাধীনতার দাবিকে নিরুৎসাহিত করার জন্য এই সকল দেশে কখনও একা, কখনও যৌথ উদ্যোগে দমন অভিযান চালায়। কুর্দিরা ইরাকে সাদ্দামের পতনের পর থেকে তাদের দাবিকে জোরেশোরে করে আসছিল। সেখানে ইরাকের অখন্ডতা রক্ষা করার জন্য কুর্দিদেরকে দমনের ব্যবস্থা করা হয়। আজ সিরিয়ার আফরিনে কুর্দিদের অবস্থানে তুরস্ক আকাশ থেকে বোমা বর্ষন করছে। অন্যদিকে স্থল অভিযান করছে। এখানে আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদের কে রসদ দিচ্ছে। তার মানে হল ইরাকে বর্তমান অবস্থায় যুদ্ধ শেষ হলে কুর্দি সমস্যা তরতাজা থাকবে।আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করছে সব পক্ষ। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। যুদ্ধে প্রবৃত্ত দলগুলোর কাছে মানুষের জীবনের কোন মূল্যনেই। সহসা যুদ্ধ শেষ হবে তার কোন আলামত দেখা যাচ্ছে না। সিরিয়া বিভক্তি সময়ের ব্যাপার মাত্র। সিরিয়া বিভক্তি আগামী দিনেও এখানে যুদ্ধের বীজ বপন করবে। সিরিয়া আর কোনদিনে গোলান মালভূমি ফেরৎ পাবে না। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে যুদ্ধে এই এলাকা দখল করে। কৌশলগত অঞ্চল হিসাবে ইসরাইল এই এলাকাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তার দখল অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইল মনে করে গোলান তাদের দরকার। জোর করেই দখলে রাখতে পারবে। ১৯৮১ সালে ইসরাইলের সংসদ নেসেট আইন করে গোলান কে নিজেদের দেশের এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে। সিরিয়াকে বিভক্ত করতে পারলে ইসরাইল লাভবান। আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে ইসরালের অবস্থান এমনিতেই অতুলীয়। সেখানে সিরিয়াকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা উপরই তাদের স্বার্থকতা নির্ভর করছে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৫

আবু আফিয়া বলেছেন: লেখাটি লেগেছে, লেখককে ধন্যবাদ

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: স্পেস দিয়ে লিখবেন।

আজ পর্যন্ত কোন যুদ্ধেই মানবতার জয় হয় নি। কসাই
আসাদের কোন দয়া মায়া নেইX(। আর আরব বিশ্ব নিরব দর্শক।
দোয়া করা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নাই।।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৬

আলোর বার্তা বলেছেন: #পড়ুন: বিশ্বশান্তি ও সিরিয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে আহমদীয়া মুসলিম জামাতের পঞ্চম ও বর্তমান খলীফা হযরত মির্যা মাসরুর আহমদ (আইঃ) এর দিকনির্দেশনা
#পিডিএফ লিংক: https://goo.gl/E7eYkM

৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:০২

আবু তালেব শেখ বলেছেন: মুসলিমরা মনে গোটা বিশ্বে অশান্তির মধ্যে বাস করতে পছন্দ করে। নাহলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার হাতের ইশারায় চলতো না। দলাদলি করতো না।

৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: কোয়ান্টাম ফিজিক্স নয়, জ্বীন-ফিজিক্স নিয়ে গবেষণা হয়। আধুনিক বিজ্ঞান নয়, কোরআনী কেচ্ছা-কাহিনী নিয়ে গল্প হয়। যুক্তিবিদ্যা নয়, বেহেশতী হুরের লোভই এদেশে মূখ্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.