![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষাজীবন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাজতত্ত্ব বিভাগে। অনেকপরে আবার একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,বি,এ,করি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে কর্মজীবনের শুরু। উন্নয়ন সংস্হায় প্রথম কাজ করি। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্হানে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়। দেশের মানুষ ও প্রকৃতির রঙ, আর বিচিত্র পেশার মানুষে সাথে দেখা হয়। অতঃপর পোশাক শিল্পে কাজ করি। ২০০০-২০০৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। ২০০৪ সালে আবার ফেরৎ আসি আমার প্রাণের কর্মক্ষেত্র পোশাক শিল্পে। সেই থেকে আজ অবদি কাজ করছি এখানে। বিচিত্র অভিজ্ঞতা, নানান দেশে ভ্রমণ করি। কাজের ফাঁকে পড়ি। মন চাইলে লিখি। ভাষার দক্ষতা তেমন নেই। চেষ্টা করছি ভাষা আয়ত্ত্ব করতে। কিছু বিচিত্র বিষয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। লেখার কাজে হাত দিয়েছি। দেশে দেশে পোশাকের বিবর্তন নিয়ে লিখছি। এই নিয়ে পড়াশোনা করতে ভালই লাগে। যাপিত জীবনের কথা, ক্লেদ, প্রেম অভিজ্ঞতা লেখব ভাবছি।
আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষ করে জাতিসংঘ সিরিয়ার সমস্যাকে একবিংশ শতাব্দির সবচেয়ে ভয়া মানবিক বিপর্যয় হিসাবে উল্লেখ করেছে। তবে জাতিসঙ্ঘ নানাভাবে এই সমস্যার পক্ষপাত মুক্ত আচরণ করতে পারছে না। বরং জাতিসংঘ মার্কিন সমর্থনের বাইরে এসে নিরপেক্ষ সমাধানের পথ তৈরি করতে পারছে না। ফিলিস্তিন সমস্যার মত সিরিয়ার সমস্যা দিন দিন জটিল হচ্ছে। সিরিয়া ভেংগে গেলে ইসরাইল লাভবান হবে। এই সরল সমীকরণের বাইরেও ভেতরে আলাদা সমীকরণ আছে। আরব রাষ্ট্র সমূহের আন্তঃরাষ্ট্রিক রাজনীতি, তেল বানিজ্য। আঞ্চলিক কর্তৃত্ববাদের রাজনীতির দায় সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপন্ন হচ্ছে। বর্তমান সিরিয়ার অর্ধেকের বেশি মানুষ ঘর ছাড়া। সহায় সম্পদ হারিয়ে তারা বসবাস করছে অত্যন্ত মানবেতর জীবন। তাদের বিশাল জনসংখ্যা বর্তমানে লেবানন, জর্ডান, ইরাক, সৌদি আরব, তুরস্ক সহ ইউরোপ, উত্তর আমেরিকার কানাডা এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বাস্তু হিসাবে বসবাস করছে।
বর্তমানে জাতিসংঘ উদ্বাস্তু কমিশনের মতে সিরিয়ার যুদ্ধ আরম্ভ হবার পর থেকে ৫.৫ মিলিয়ন মানুষ দেশের বাইরে জীবন রক্ষার জন্য পালিয়ে যায়। আর দেশের ভেতর আরো ৬.৫০ মিলিয়ন মানুষ দেশের ভেতর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এই সকল মানুষের মধ্যে নারী ও শিশুদের অবস্থা আরো করুণ। মানবেতর এক জীবন। একদিকে আহত, অসহায়; অন্যদিকে খাদ্য, ঔষধ, আর পানির সংকটে জীবন যাপন করছে। অনেক নারী তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছে। উভয়পক্ষ,সরকারি বাহিনী ও তার মিত্ররা আরেকদিকে সরকার বিরোধী জোট, যুদ্ধ অপরাধ করেছে। প্রতিনিয়ত যুদ্ধ অপরাধ করে চলেছে। সিরিয়ার ভেতর ও বাইরে উভয় জায়গায় রিফিউজিদের পরিস্থিতি খুবই নাজুক। জাতিসংঘ উদ্বাস্তু হাই কমিশনের মতে সিরিয়ার ভেতর প্রায় ১৩.১০ মিলিয়ন মানুষের জন্য এই মুহুর্তে জরুরী সাহায্য দরকার। ফিলিপ্পো গ্রান্ডির মতে, “ Syria is the biggest humanitarian and refugee crisis of our time, a continuing cause of suffering for millions which should be garnering a groundswell of support around the world.”
তুরস্ক সিরিয়ার প্রতিবেশি দেশ। সেখানে সবচেয়ে বেশি সিরিয়ান রিফিউজি বাস করে। সেখানে তাদের সংখ্যা প্রায় ৩.৩০ মিলিয়ন নিবন্ধিত উদ্বাস্তু বাস করে। তাদের কাজ নেই ব্যবসা নেই। অনেকেই বাস করে রিফিউজি ক্যাম্পে, অস্থায়ী আবাস, নিন্মমানের ভাড়া করা গৃহে তাদের বসবাস। তুরস্কে বসবাস করা উদ্বাস্তুরা কিছুটা ভাল অবস্থানে আছে। সেখানে তাদেরকে নিরাপত্তা, খাদ্য সংস্থান ছাড়াও নিবন্ধনের পর অনেকেই সরকারি স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। কাজের অনুমতি পাচ্ছে। কেউ কেউ সেখানে নানা রকম ব্যবসা –বানিজ্য করার অনুমতি পাচ্ছে। আবার অনেকেই সেখানে থেকে ইউরোপে পাড়ি জমাচ্ছে। বিশ্ব সংস্থার নানা রকম আশ্বাস থাকা স্বত্তেও বাস্তবে সেখানে তেমন সাহায্য পৌছাচ্ছে না। তুরস্ক সরকার নিজ উদ্যোগেই তাদের ভরণপোষন, দেখভালের দায়িত্ব নিচ্ছে। নারী ও শিশুদের পাচার রোধেও তাদের কাজ করতে হচ্ছে। যুদ্ধ অনেক নারী –শিশুকে প্রথমে উদ্বাস্তু তৈরি করছে সেখানে থেকে পাচারের ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে। তুরস্ক তার সীমান্তে নতুন করে উদ্বাস্তু শিবির তৈরি করছে। সেখানে প্রায় ১৭০,০০০ লোকের বসবাস নিশ্চিত করবে। এই নতুন উদ্বাস্তু শিবিরের কারণ কি? উত্তর অত্যন্ত পরিস্কার। কেননা সিরিয়ার কুর্দিদের স্বাধীনতার দাবি কিংবা তাদের সংগঠন কে দমন করার জন্য তুরস্ক সেনা, বিমান প্রস্তুত। প্রতিশোধ মূলক এই দমন অভিযানে সেখানে নতুন করে সমস্যা তৈরি করবে। সাধারণ নাগরিক, নারী, শিশু যারা নিজেদের ঘর বাড়ী ছেড়ে পালাবে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য এই নতুন উদ্বাস্তু শিবির। কে জানে সেখানে আবার কত লোকের প্রাণহানি হবে। সিরিয়ার কুর্দিদের দমন না করতে মার্কিন সরকারের অনুরোধ, উপদেশ আছে। তুরস্ক তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার স্বার্থে এই উদ্যোগ নিচ্ছে। সেখানে কুর্দিরা স্বাধীন হলে, ইরাকের কুর্দিদের সাথে মিলে তুরস্কের ভেতরে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে আশংকা। তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরেই কুর্দিদের প্রতি দমনমূলক আচরণ করে আসছে। তুরস্ক, ইরাক, ইরান, কিংবা সিরিয়া কোন রাষ্ট্র কুর্দিদের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারছে না। প্রত্যেকেই তাদের প্রতি বৈরি, দমনমূলক আচরণ করে আসছে। আবার কুর্দিদের প্রতি মার্কিন নীতি বরাবরের মত পক্ষপাতমূলক।
তুরস্কের পরই বেশি উদ্বাস্তু বাস করে লেবাননে। লেবাননে তাদের কঠিন জীবন যাপন। আনুষ্ঠানিক তেমন কোন ক্যাম্প নেই। সেখানে ৮০ শতাংশের বেশি উদ্বাস্ত বাস করে ক্যাম্পের বাইরে। লেবাননের বিভিন্ন শহর, গ্রাম, পাহাড়ের পাদদেশে তাদের বসবাস। এই সকল মানুষের দৈনিক জীবন যাপনের যে চাহিদা তা মেটানোই সেখানে কষ্টকর। আর্থিক সংস্থান নেই। কিংবা যা সামান্য আছে তা দিয়ে চলা দুষ্কর। অনেকেই একসাথে ঘাদাঘাদি করে বসবাস করছে। অস্বাস্থ্যকর আবাস। চিকিৎসা নেই। সেনিটেশন নেই। পানির অভাব। মাথার উপর ভাল কোন ছাদ নেই। তাবুতে বসবাস। কিংবা সামান্য ছাইনি দিয়ে কোন মতে জীবন কে টেনে নেয়া চলছে। এখন পর্যন্ত লেবাননে নিবন্ধিত সিরিয়ার রিফিউজি সংখ্যা প্রায় ১ মিলিয়ন। এই বিশাল বাড়তি জনসংখ্যার চাপ লেবানলের নেই। বাধ্য হয়ে বাইরের সাহায্য দরকার, ইউএন এইচসি আর মতে এই অর্থের পরিমান প্রায় বছরে তিন বিলিয়ন ডলার।
এই সকল মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা দরকার। মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণ করা আবশ্যক। যে যুদ্ধ তাদের কে এখান থেকে বিতাড়িত করেছে জীবন যাপন তাদের কাছে আরো কঠিন। নিজের দেশের সীমানার বাইরে এসে বসবাস করা। কাজ নেই, ব্যবসা নেই। চাকরি নেই। তারা জেলের কয়েদি নয়। কোন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অতি সাধারন নারী, পুরুষ, শিশু ঘরের বাইরে, খোলা আকাশের নীচে সামান্য তাবুতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। গনগনে সূর্যের তাপ। পানির সরবরাহ কম। সেনিটারি দুর্বল। নারিপুরুষ গাদাগাদি করে বাস করছে। যুবতি মেয়েরা তাদের আব্রু রক্ষা করতে পারছেনা। অনেক নারী যুদ্ধের কারনে দেশের ভেতর নির্যাযিত হয়েছে। আবার ক্যাম্পেও নিরাপদ নয়। অনেকেই পাচার হয়ে যাচ্ছে। অনেক নারী নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার তাগিদে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আরেক যুদ্ধ। নারী আর শিশুরা সেখানে সবচেয়ে বেশী সমস্যা জর্জরিত। সেখানে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে নানভাবে। কাজের অভাবে স্বামীরা ঘরে থাকে। আয় নেই। ভরণপোষণ করতে পারছে না। স্ত্রীদের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আবার মেয়েরা বাল্য বিবাহে বাধ্য হচ্ছে। অনেক নারী জীবন বাঁচানোর তাগিদে বেঁচে নিচ্ছে পতিতাবৃত্তি। একে তারা জীবনের জন্য যৌনতা মনে করছে। অনেক যুবতি নারী মানসিক ভারসাম্যহীন জীবন যাপন করছে। দেশের ভেতর ঘটেছে নির্যাতন। মৃত্যু হাত থেকে বেঁচে গেছে সত্যি। বয়ে বেড়াচ্ছে আতংক। আপনজন হারানোর কষ্ট আছে মনে। নিয়ে তাদের মানসিক ভারসাম্য টিকে থাকে কিভাবে? লেবাননে আগে থেকেই ফিলিস্তিনি রিফিউজি বাস করে। নতুন করে সিরিয়ার রিফিউজি তাদের উপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করছে। এই অমানবিক জীবন কি তাদের প্রাপ্য ছিল। ক্ষমতার লড়াই নিজদেশের ভেতর একজন আরেকজনের শত্রু। এই যুদ্ধের দায় যারই হোক।
২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন:
সিরিয়ার আজকের অবস্থার ভবিষ্যদ্বাণী প্রতিশ্রুত মসীহ ও ইমাম মাহদী (আ) বহু আগেই করেছিলেন।
আহমদীয়া মুসলিম জামাতের চতুর্থ খলিফা হযরত মির্যা তাহের আহমদ (রাহে.) ও এইদিকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বহু আগেই।
আর আহমদীয়া মুসলিম জামাতের বর্তমান খলিফা হযরত মির্যা মাসরূর আহমদ (আই.) বিশ্বের নেতাদের দৃষ্টি চলমান বিশৃঙ্খলার দিকে আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।
আল্লাহ বিশ্বে শান্তি কায়েম রাখুন। বিপন্ন মানুষদের তিনি সহায় হোন। মুসলমানদের হেদায়াত দিন ও সঠিক পথে আসতে সহায়তা করুন। আমীন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
মানবতার পরাজয়, নাকি সিরিয়ার সাধারণ মানুষের পরাজয়? আরবেরা ক্রমেই এইদিকে যাবার কথা