নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেকড় ও সরূপ উদঘাটনে অবিরত চলবে কলম

মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী

লেখক-সাংবাদিক

মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইংরেজ আমলে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা দেওয়ান ছনুবুর রাজা ও বিলুপ্ত দোহালিয়া এমই বিদ্যালয়

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১৯

মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী
ইংরেজ আমলে সিলেটের গ্রামীণ জনপদে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিক দেওয়ান ছনুবুররাজা চৌধুরী। ব্রিটিশ আমলে উত্তরপূর্ব আসাম অঞ্চলসহ বৃহত্তর সিলেটের তৎকালীন রাজনৈতিক পরিমন্ডলে যে ক’জন রাজনৈতিক বেতা ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন দেওয়ান ছনুবুর রাজা তাঁদের মধ্যে ছিলেন একজন অগ্রগণ্য। তাঁর আদর্শিক পথ ও জাতীয়তাবাদের চিন্তার ফসল স্বরুপ ‘দোহালিয়া এমই বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ বিদ্যালয়টি ছিল ব্রিটিশ আমলে গ্রামীণ জনপদের ইংরেজী মাধ্যম এক অনন্য বিদ্যানিকেতন। এখানে পড়াশোনা করে পরবর্তী সময়কালে বৃহত্তর সিলেটের বহু গুনীজন স্ব স্ব অবস্থানে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন। দেশের খ্যাতনামা দার্শনিক ও জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ, সাহিত্য ও মুসলিম সংস্কৃতির পথিকৃৎ দেওয়ান মোহাম্মদ আহবাবসহ তৎকালীন সিলেট অঞ্চলের বহু জ্ঞানী গুনীদের লেখাপড়ার হাতেখড়ি ওই বিদ্যালয়ে। কালের বিবর্তনে ও শিক্ষানুরাগী দেওয়ান ছনুবুর রাজা চৌধুরীর পরবর্তী প্রজন্মের দায়িত্বহীনতার কারণেই ‘দোহালিয়া এমই বিদ্যালয়’টির শিক্ষা কার্যক্রমের বিলুপ্তি ঘটে।
১৮৭৪ সালে সিলেট জেলাকে ঢাকা ডিভিশন থেকে পৃথক করায় সিলেটের হিন্দু-মুসলমান সাধারণ জনগণ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। সে সময় দেওয়ান ছনুবর রাজা ও পৃথ্বিমপাশার কিশোর জমিদার আলী আমজদ খাঁ নেতৃত্ব দেন। তৎকালে প্রতিবাদকে প্রশমিত করার জন্য তখনকার দিনে ভারতের বড় লাট লর্ড নর্থব্রুক রাজধানী কলকাতা থেকে সিলেটে এনে তাঁকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তখন বড় লাট লর্ড নর্থব্রুক আশ্বস্থ করে বলেছিলেন, এখন থেকে সিলেটিদের হাইকোর্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতায়ই থাকবে। লর্ড নর্থব্রুক সিলেটে আসাকে কেন্দ্র করে জমিদার আলী আমজদ খাঁ সিলেটের সুরমা নদীর তীরে চাঁদনিঘাট নির্মাণ করেন। একই সময়ে গ্রামীণ জনপদে উচ্চ শিক্ষার আলো পৌছে দিতে দেওয়ান ছনুবুর রাজা বতর্মান সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়াতে মধ্যবঙ্গ (এমই) বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এক সময় তিনিই ওই বিদ্যালয়কে উচ্চ ‘মধ্যবঙ্গ’ বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৮৭৪ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত তিনি এ বিদ্যালয়ের সেক্রেটারি ছিলেন। পরবর্তীতে প্রায় নব্বই বছর বিদ্যালয়টি ঠিকে থাকলেও নানাবিধ সমস্যায় ও অবহেলা অব্যবস্থাপনায় বিদ্যালয়টি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে সুরমা তীরে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন ক্রমশই বিলীন হয়ে যায়।
দেওয়ান ছনুবুর রাজা চৌধুরী (১৯৪৫-১৯৩০) বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্তর্গত দোহালিয়া (পরগনার) পানাইল গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। সূদূর অতীত থেকেই হাওরপাড়ের গ্রামীণ জনপদে সুরমা নদীর তীরে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে দোহালিয়ায় পূর্ব জমিদারদের দানে একটি টোল প্রতিষ্ঠিত ছিল। শিক্ষার প্রতি সেই অনুরাগ থেকে দেওয়ান ছনুবর রাজা চৌধুরী ১৮৭৪ সালে দোহালিয়ায় এমই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পারিবারিক সূত্র ধরেই তিনি নিজেও তৎকালে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন।
দেওয়ান ছনুবুর রাজা লেখাপড়া করেন পূর্ব পুরুষদের প্রতিষ্ঠিত পারিবারিক ক্বওমী (খারেজী) মাদরাসায়। পরে তিনি সিলেটে তাঁর অপর ভাই মোহাম্মদ মসউদের সঙ্গে তখনকার দিনে সিলেটের কালীঘাটে বাস করে ইংরেজি পড়তেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকাতে চলে যান এবং ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে কুরআন-হাদিস, তফসির ও ফিকাহ শাস্ত্রের পান্ডিত্য অর্জনের পাশাপাশী ইংরেজিও অধ্যায়ন করতে থাকেন। ১৮৬৫ সালে তিনি এনট্রান্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্ততকালে তৎকালীন ঢাকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে ডেকে নিয়ে ঢাকার সাব রেজিস্ট্রারের পদ প্রদান করেন। পরবর্তীকালে এনট্রান্স পাসের পর তিনি ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হন। অতঃপর তিনি ঢাকার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হন।
এখানে উল্লেখ্য যে, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো বর্তমান দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়ার মধ্যবঙ্গ (পরবর্তীতে উচ্চ মধ্যবঙ্গ বিদ্যালয়) ও পানাইল জমিদার বাড়ীর ক্বওমী মাদ্রাসা। যা সুনামগঞ্জের মহকুমার দোয়ারাবাজার অঞ্চলে এর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সু নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তথাপি দোহালিয়া জমিদার বংশের লোকেরা সুদূর অতীত হতেই শিক্ষা দীক্ষায় অগ্রসর ছিলেন। তাই প্রাচীণকালে এই অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয়েছিল বলে প্রতিয়মান হয়। দোহালিয়ার জমিদার রাজা মোহাম্মদ ইসলাম (পানাইল) জমিদার বাড়ীতে ১৭১৩ খ্রিষ্টাব্দে (খানে বাড়ী) মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। উল্লেখ্য যে রাজা প্রেম নারায়ন চৌধুরী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রাজা মোহাম্মদ ইসলাম নাম ধারণ করায় তৎকালে তিনি নিজ হিন্দু পরিবারের রোষানলে পড়েন এবং বিতাড়িত হন। ফলে প্রথম দিকে তিনি প্রায় এক ঘরে হয়ে এই মসজিদের নিকটেই বসবাস শুরু করেন এবং পর্যায়ক্রমে তিনি এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে পানাইলে সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্মের শিক্ষা ও সংস্কৃতির গোড়া পত্তন করেন।দোহালিয়ায় বহু পূর্ব হতেই জমিদারদের দানে একটি টোল প্রতিষ্ঠিত হয়। যেটি ছিল এখানকার সংস্কৃতি শিক্ষার প্রাথমিক পাঠশালা। বহুবছর এ পাঠশালায় শিক্ষা-দীক্ষা অব্যাহত ছিল। এর সুত্র ধরেই পরবতীকালে পানাইলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার গোড়াপত্তন ঘটে বলে প্রতিয়মান হয়। রাজা প্রেম নারায়ন রায় চৌধুরীর ইসলাম গ্রহণের পর তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় পানাইলে একটি দ্বীনি বিদ্যাপীঠ (মাদরাসা) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ধারণা করা হয় এসময় থেকে এ অঞ্চলে সর্বপ্রথম মাদ্রসা শিক্ষা বা ধর্মীয় শিক্ষার বিকাশ ঘটে এবং এটিই এই অঞ্চলের প্রথম মাদরাসা। এই মাদরাসায় কুরআন-হাদীস, ফেকাহ শাস্ত্রের একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত ছিল। যদিও কালের বিবর্তনে পুরনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই বিলীন হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য যে, ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে দোহালিয়ার পানাইলে পূর্ব প্রতিষ্ঠিত ‘মধ্য বঙ্গ’ স্কুলটি এক সময়ে মধ্য ইংরেজি স্কুলে পরিণত হয়। এ বংশেরই দেওয়ান ছনুবর রাজা চৌধুরী নিজস্ব ভূমিতে নিজের অর্থায়নে সুনামগঞ্জ মহকুমার সাবেক ছাতক থানার বর্তমান দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়ায় প্রথম এমই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যেটি পরবর্তীতে উচ্চ মধ্যবঙ্গ বিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত হয়। এই বিদ্যালয়ে এমই স্কুল পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত ছিল।
বৃহত্তর সিলেটে ইংরেজ আমলে দোহালিয়া এমই স্কুলে পড় শোনা করে তৎকালে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে স্বস্ব ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন অনেকেই। এ স্কুল থেকে জ্ঞানলাভ করে বেশ কয়েকজন কৃতী বিদ্যা ব্যক্তি সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। তাঁদের মধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার কসবা গ্রামের কৃতী সন্তান, আসাম সরকারের মন্ত্রী, বিভাগ পরবর্তী ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের রাষ্ট্রদূত জনাব মদব্বির হোসেন চৌধুরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর সহোদর নজমুল হোসেন চৌধুরী, বৃহত্তর সিলেট জেলার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার, ঢাকা দক্ষিণের গিয়াসউদ্দিন সাহেব, সুনামগঞ্জ জেলার দুর্গাপাশার ইউনিয়নের দুর্গাপাশা গ্রামের প্রাক্তন ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রশিদ চৌধুরী, হেডমাস্টার আব্দুর রাজ্জাক, সুনামগঞ্জ গার্লস স্কুলের হেড মাস্টার বাবু, দেওয়ান একলিমুর রাজা (কাব্য বিশারদ), দেওয়ান আফতাবুর রাজা, সুনামগঞ্জ বারের দ্বিতীয় মুসলমান উকিল মফিজুর রহমান চৌধুরী।
অধিকন্ত এই বংশের (হিন্দু-মুসলিম) যাঁরা পড়াশোনা করে সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন তাঁরা হলেনÑদেওয়ান মোহাম্মদ আহবাব (বিদ্যাবিনোদ), দেওয়ান মোহাম্মদ আহমদ হেডমাস্টার সুনামগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল, অ্যাডভোকেট গুরু চরণ চৌধুরী, শিক্ষক জিতেন্দ্র মোহন চৌধুরী, গঙ্গেশ চন্দ্র চৌধুরী, ঈশ্বর চন্দ্র চৌধুরী, ডাক্তার প্রমথনাথ পুরকায়স্থ, আসাম সরকারের ইনস্পেকটর জেনারেল অব পুলিশ কুমুদ রঞ্জন চৌধুরী, মহন্তকুমার চৌধুরী, দোয়ারাবাজার উপজেলা দোহালিয়া ইউনিয়নের মেন্দা গ্রামের দেবেন্দ্র চক্রবর্তী, মান্নারগাঁও ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর খাঁন, দোহালিয়া ইউনিয়নের পানাইল পুরানপাড়ার মো. নজিরউদ্দিন, লেখক শ্রী লোকনাথ দাস, দেওয়ান মো. আজরফ, বালাগঞ্জ জালালপুর ইউনিয়নের সাবেক মন্ত্রী এমএ খাঁন এর দাদা গজনফর আলী খাঁন, বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের চাংবড়াং গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি (বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ) শফিকুর রহমান চৌধুরী দ্বয়ের দাদা আব্দুল ওয়াহাব চৌধুরী এবং রিয়াছত আলী চৌধুরী।
এছাড়া তাঁদের মতো আরো অনেকের এই স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ হয়।এ স্কুলে তৎকালীন ছাত্রসংখ্যা আনুমানিক দুইশত জনেরও অধিক ছিল। তৎকালে সুনামগঞ্জ মহকুমাসহ বৃহত্তর সিলেটের অন্যান্য জায়গায় এ ধরনের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ছিল না। পড়াশোনায়, আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানে সুনাম অর্জন করায় অনেকে এই স্কুলকে সিলেটের অক্সফোর্ড বলতেন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় দেওয়ান ছনুবর রাজা সাহেবের মৃত্যুর পর এ-স্কুলটি আর্থিক দৈন্যদশায় পতিত হয়। এতে এই অঞ্চলের গরিব মেধাবী ছাত্রদের পক্ষে এখানে বসবাস করে পড়াশোনা করা ভীষণ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে তাঁর উত্তরাধিকারীরা এ-স্কুলটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারেননি। দেওয়ান ছনুবর রাজা জনগণের স্বার্থে এবং তাঁদের ডাকে রাজনীতি করেছেন, রাজপথেও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত রাজনীতি সচেতন, নিষ্ঠাবান ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে আজীবন নিজস্ব অর্থ ও শ্রম ব্যয় করেছেন। কিন্তু তার জন্য কোনও প্রশংসা বা উপাধি গ্রহণ করতে চাননি। শিক্ষাদানে তাঁর এত উৎসাহ ও আগ্রহ ছিল যে, তিনি তাঁর পুত্রদ্বয় দেওয়ান রইছুর রাজা ও দেওয়ান রউফুর রাজাকে স্কুল দিতেন। পড়াশোনায় অনাগ্রহতা দেখলে তাদেরকে বেত্রাঘাত করতেও দ্বিধাবোধ করতেন না। তাঁর মেয়েদেরকে তিনি শিক্ষিত বরের কাছে পাত্রস্থ করেন। এটিও তাঁর শিক্ষানুরাগের বহিঃপ্রকাশ।
[০৮ অক্টোবর ২০১৮ দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.