নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজনীতি

চির উন্নত মম শির

হিমরাজ ব্লগ

চির উন্নত মম শির

হিমরাজ ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ জাগ্রত জনতা: রাজনৈতিক ভাবনা, দর্শন ও মতাদর্শ (৩য় কিস্তি)

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

ঘ) প্রগতিশীলতা।

আমরা প্রগতিশীল মানসিকতার। আমরা আলোকতি। যেকোনো ধরনের নেতিবাচক মানসিকতা, নেতিবাচক ভাবনা, নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী আমরা। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। আমরা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আনতে চাই দেশ এবং দেশের জনগণের জন্য সোনালি সুদিন। আমরা দেশের মানুষকে প্রায়োগিক এবং লাভজনক খাতগুলো দেখিয়ে দিয়ে ক্ষুদ্র বা বৃহৎ উদ্যোগ গ্রহণে প্রয়োজনীয় মতামত, সুপারশি এবং সহযোগিতা প্রদান করি। আমরা মানুষকে দক্ষ কর্মীতে পরিণত করে থাকি। আমরা আমাদের সাধারণ জনগণকে শারীরকি ও মানসিক শ্রম প্রদান করে প্রয়োজনীয় পরিমাণ এবং ক্রমে উদ্বৃত্ত অর্থ উপার্জনের পথ বাতলে দিই, যেটি মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, মানুষের শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে দেয়, অসৎ এবং দুর্নীতিপরায়ণ মানসিকতা থেকে সরে আসতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠায় এবং সহমর্মিতা গঠনে সহযোগিতা প্রদান করে। আমাদের প্রগতিশীল কর্মকুশলতায় আমাদের দেশের কিশোর, যুব ও তরুণ সমাজকে মাদকাসক্তি, সহিংস আচরণ, বখাটপেনা, সময়ক্ষেপণ, ইভটিজিং এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসতে সবধরনের সহায়ক সহায়তা প্রদান করবো। মানুষকে সচেতন করবার জন্য আমাদের রাজনৈতিক দলে একটি বিশেষ উইং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। আমরা কথা বলা, প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে এবং/বা প্রসঙ্গক্রমে বিরোধী মনোভাব প্রকাশের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী প্রদান করে থাকি। কোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড বা সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে মতামত প্রকাশের জন্য সরাসরি সেটিকে উড়িয়ে দিয়ে নেতিবাচক কথা বলে বা নেতিবাচক বিশেষণ ব্যবহার করে কর্তাকে তুলাধুনা না করে আমরা বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত প্রকাশপূর্বক ইতিবাচক কী ধরনের কর্মসূচী বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতো সেটির প্রতি জোর দিই।



একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। সাধারণভাবে সরকারের একটি কাজের প্রতিবাদ হিসেবে আমাদের দেশে প্রচলতি নিয়মটি হলো সেটির প্রতিবাদ করা তীব্র ভাষায়। বলা হয়ে থাকে, “এ সরকার দুর্নীতিবাজ। ফ্যাসিবাদী সরকারের হত্যা-গুম-ধ্বংসের রাজনীতির কারণে দেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। মানুষ আজ পথে বের হতে পারছেনা, সহজভাবে স্বাভাবকি কাজ করতে পারছেনা। দেশে আজ বিভিষিকাময় পরিস্থিতি। দেশে চলছে প্রধানমন্ত্রীর একনায়কতন্ত্র। এ সরকারের ক্ষমতায় থাকবার অধিকার নেই, আমরা সরকারকে পদত্যাগের আহবান করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে নতুন নির্বাচনের জোর দাবী জানাচ্ছি; না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতার গদি থেকে নামিয়ে আনবো আমরা। জনগণ আপনাদেরকে উৎখাত করবে। সেদিন আপনাদেরকে বাঁচানোর কেউ থাকবনো, আপনারা পালাবার পথ পাবেন না। সময় থাকতে জনগণের দাবি মেনে নিন।” যে অভিযোগগুলো করা হলো তার সিংহভাগই বর্তমান প্রেক্ষাপটে সত্য। আমরা বক্তব্য প্রদান করলে বলতাম, “দেশে বর্তমানে যে ধরনের দুর্নীতি, হত্যাকাণ্ড, গুম, আর জনগণের জান-মালের ক্ষতিসাধন হচ্ছে তা কখনোই কাম্য নয়। প্রতিটি জীবনের মূল্য আমাদের কাছে অপরিসীম। জনগণের জীবনের যেকোনো ধরনের সুরক্ষা দান করবার দায়িত্ব সরকারের। সরকারকে আহবান জানাই দ্রুত পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানোর। আমরা বিরোধী দল হিসেবে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। জনগণকে জানাতে চাই, আপনারা সাহসী হোন, সাবধানী হোন, আমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমাদের হাতকে শক্ত করুন। আগামী নির্বাচনে আমরা আপনাদের মনোনয়ন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে সরকার গঠন করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবো।”



ঙ) ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী।

‘মানুষের জীবনে ধর্মের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ এ বিষয়টি আর সবার মতো আমরা সর্বাগ্রে বিশ্বাস করি। দেশে শান্তিপূর্ণভাবে এবং স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের সবধরনের ব্যবস্থা ও আয়োজন করে দেবার পক্ষে আমরা। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার এবং সব ধর্ম পালনের এবং প্রচারের ব্যবস্থা করে দেবো আমরা। ধর্ম সুরক্ষিত আছে এবং কেউ ধর্মের ক্ষতি করতে পারে বলে আমরা মনে করিনা। কারো কোনো ধরনের প্রচার বা অপপ্রচারে শঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই; নিজের বুদ্ধিমত্তা আর যুক্তিবোধকে জাগ্রত রাখুন আপনার যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের র্পূবে। তারপরও যদি কারো কোনো ধরনের আশঙ্কা থাকে, আমরা বলতে চাই আপনাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবেনা, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আপনাদের ধর্মের সুরক্ষা বিধানের দায়িত্ব আমাদের। যেকোনো ধরনের ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা। ধর্মীয় যে কোনো ধরনের উষ্কানির মাধ্যমে সহিংসতা বা হানাহানি করবার জন্য অস্থিতিশীল ও ভীতিকর পরস্থিতিরি জন্ম দেয়া হলে আমরা সেটিকে রুখে দেবো সম্মলিতি শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধের মাধ্যমে। ধর্ম প্রেমের বাণী প্রচার করে। ধর্ম শান্তির কথা বলে। ধর্ম সঠিক পথ অনুসরণ করবার কথা বলে। ধর্ম সম্প্রীতি স্থাপনের কথা বলে। সব ধর্মে অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করবার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, “তোমার ধর্ম তোমার কাছে আমার ধর্ম আমার কাছে”। আপনারা যারা ধর্ম পালন করতে চান, নিশ্চিন্তে পালন করুন ধর্ম। ধর্ম পালন করতে যেয়ে মাঠে নামতে হবনো আপনাদের। ধর্ম চর্চা করুন আপনাদের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা আর নিজ নিজ উপাসনালয়ে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনাদের অধিকার আদায়ে আমরা মাঠে সক্রিয় আছি। আপনারা আপনাদের সমস্যাগুলো জানান আমাদের। আমরা সমাধান করবো আপনাদের সমস্যা।



চ) বিজ্ঞানমনস্কতা।

আমরা বিজ্ঞানমনস্ক। আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মকাণ্ড বিজ্ঞানভত্তিকি। আমরা দেশের উন্নয়নে বিজ্ঞানের প্রয়োগকে সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহারের পক্ষপাতি। আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর করবার পক্ষে। দেশের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো আলাদা ভাগ না রেখে সবগুলো বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে মানবকি, বাণজ্যি এবং বিজ্ঞান বিভাগগুলোকে একীভূত করে একটি সমন্নিত পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে পাঠ দান করা হবে। উচ্চশিক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে কে কোন বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চায়। বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ণকারী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের উচ্চতর প্রশক্ষিণ এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য উন্নত বিশ্বে বৃত্তির ব্যবস্থা করে তাদেরকে সেসব দেশে প্রেরণ করা হবে। আমরা আমাদের দলীয় কর্মকাণ্ডকে সহজ করবার জন্য প্রযুক্তির সংমশ্রিণ ঘটাবো আমাদের রাজনৈতিক দলের সাথে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন আবিষ্কারকে উৎসাহ প্রদান করা হবে। বিশ্বের সমান্তরালে আমরা বাংলাদেশকেও এগিয়ে নেবো প্রযুক্তিখাতে। পাশাপাশি লাগসই এবং দেশিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্ভাবন করা হবে যেকোনো ধরনের কঠিন কাজকে সহজসাধ্য করবার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। দেশের প্রথিতযশা সম্ভাবনাময় এবং প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানী এবং তাদের আবিষ্কারগুলোকে একত্রিত করা, প্রযুক্তিখাতে সহায়তা প্রদান আর অর্থসংস্থান করবো আমরা। কম্পিউটার, সফটওয়্যার, বিভিন্ন সফটওয়্যার এপ্লিকেশন, আইটি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী গতিশীলতা আনবার জন্য সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে আমাদের রাজনৈতিক দল থেকে এবং সরকার গঠন করলে এ খাতে প্রদান করা হবে সর্বোচ্চ প্রাধান্য। প্রতিটি স্তরে আমরা আমাদের জনগণকে প্রযুক্তির সাথে একীভূত করে গড়ে তুলতে চাই দক্ষ জনশক্তি হিসেবে, যাদের নিত্যসঙ্গী হবে উন্নত এবং লাগসই প্রযুক্তি। প্রসঙ্গক্রমে উল্লখ্যে যে, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হবে, তবে এটিও নিশ্চিত করা হচ্ছে, জ্ঞানের প্রতিটি শাখা আমাদের কাছে সমান গুরুত্বর্পূণ এবং বাণিজ্য এবং মানবিক বিষয়ের চর্চার ক্ষেত্রেও আমরা সমান গুরুত্ব প্রদান করবো।



ছ) দুর্নীতিবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী।

আমরা আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিটি স্তরে যেকোনো ধরনের দুর্নীতিবিরোধী মানসিকতার। আমরা কঠোর পরিশ্রমী এবং কঠোর পরিশ্রম করে কাজের মাধ্যমে আমাদের যেকোনো উদ্দেশ্যকে আদায় করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ এবং কাজের ফলাফল হিসেবে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। এ কারণে কোনো কিছু অর্জনে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণে আমরা কখনোই বিশ্বাস করিনা এবং এধরনের মানসিকতা আমাদের মননে জাগ্রত হয়না। পাশাপাশি আমাদের সবাই প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ উপার্জন এবং সংস্থান করতে সক্ষম এবং অন্যকেও অর্থ উপার্জনক্ষম করে গড়ে তুলতে বিশেষভাবে পারঙ্গম। এ জন্য দুর্নীতির যেকোনো ধরনের মানসিকতা আমাদের নেই এবং আমরা দুর্নীতি দূর করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। দুর্নীতি প্রবণতার কারণগুলো আমরা খুব ভালোভাবে ওয়াকিবহাল। আমরা দুর্নীতিগ্রস্ততার কারণগুলোকে ধরে ধরে সেগুলোর মূলোৎপাটন করবো। আমাদের জনগণের নিত্য চাহিদাগুলো পূরণের জন্য যে অর্থ স্বল্পতা এবং আত্মবিশ্বাস বা সামর্থ এর অভাবে কোনো কিছু অর্জন করবার ক্ষেত্রে যে অক্ষমতা বা ব্যর্থতা সেগুলোকে দূর করে দেবো আমরা। আমরা আত্মবিশ্বাস তৈরি করি প্রকৃত মেধা এবং শ্রমকে কাজে লাগিয়ে মেধা আর শ্রমের মূল্যায়ণ করবার মাধ্যমে। আমাদের সাথে সংশ্লিষ্টরা হবেন আথির্কভাবে স্বচ্ছল এবং আমরা আমাদের সবাইকে একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত করে সমবায় বা সবার অংশগ্রহণে একের ক্ষতিকে দশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাধান করি। আর এভাবে আমরা যেমন দুর্নীতিগ্রস্ততার বাইরে, ঠিক একইভাবে সবাইকে অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে সমৃদ্ধ এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলবার মাধ্যমে করা হবে দুর্নীতির মূলোৎপাটন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.