![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ট) পরম সহিষ্ণুতা, পরমত সহিষ্ণুতা।
আমরা কঠোরভাবে সহিষ্ণু এবং পরমতসহিষ্ণু। আমাদের যেকোনো সিদ্ধান্ত এবং কর্মকাণ্ড গভীর চিন্তার প্রকাশ এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ঠ সময় প্রদান করে ধৈর্য ধারন করে কাজ করে থাকি। আমাদের সবাই পরম সহিষ্ণুতার অধিকারী এবং ধীর-স্থিরভাবে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বদ্ধপরিকর। অন্যমত বা ভিন্নমতকে আমরা শ্রদ্ধা করি। গ্রহণযোগ্য, যৌক্তিক এবং ভালো ফলাফল অর্জন করবার মতো হলে যেকোনো মতকে আমরা গ্রহণ করি অবলীলায়। এমনকি আমাদের বিরোধী দল থেকে কোনো প্রস্তাবনা এলে এবং গ্রহণযোগ্য ও যুগোপযোগী হলে আমরা সেটিকেও গ্রহণ করি অবলীলায়। আমরা সকলের মতকে শ্রদ্ধা করি। লক্ষ্য হাসিল আর উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য প্রতিটি মতকে আমরা গ্রহণ করবো, বিবেচনা করবো এবং এগুলোকে সমন্নিত করে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য একটি বা প্রয়োজনে সবগুলো মতকে আমরা কাজে লাগাবো। আমাদের ভুল কোনো সিদ্ধান্ত বা দুর্বল সিদ্ধান্তের বিপরীতে যেকোনো পরামর্শ বা আমাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের চেয়ে আরো উন্নত কোনো পরামর্শ এলে আমরা সানন্দে ভুল সংশোধন করে সেটিকে গ্রহণ করি। আপনাদের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে শতভাগ। তবে এটিও বলতে চাই, আমাদের গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং কাজের উপর আস্থা রাখতে পারেন আপনারা এবং আমরা যুগোপযোগী নেতৃত্ব আপনাদের উপহার দিতে সক্ষম হবো, এ আত্মবিশ্বাস রয়েছে আমাদের। আর এ আত্মবিশ্বাসের মূল ভিত্তিই হচ্ছেন আপনারা। আপনাদেরকে পেয়েই আমরা বাংলাদেশের জাগ্রত জনতা।
ঠ) মানবতাবাদ।
আমরা অনেক বেশি মানবিক। মানুষের মর্যাদা আমাদের কাছে সর্বাগ্রে। একক এবং সামষ্টিক প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা সবার প্রাপ্য সম্মান প্রদান করতে এবং সেটিকে চির জাগরুক রাখতে বদ্ধপরিকর। আমরা অহিংস নীতির। আমরা শান্তিবাদী। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশ এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। আমরা আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের অধিকার আদায়ে সদা সোচ্চার। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারক হিসেবে আমরা বিশ্বে বাঙালির গৌরবকে প্রতিষ্ঠিত করবো, বাঙালি স্বকীয়তাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে। আমরা বাঙালির গৌরব, সাহসীকতা, অর্জন আর সুদীর্ঘ বীরত্বপূর্ণ গৌরবদীপ্ত ইতিহাস আর সংস্কৃতির জন্য গর্বিত, অহংকারী। এর সাথে সাথে আমরা বিনয়ী। আমরা নম্র। আমরা সৎ, আমরা সাহসী, আমরা আত্মবিশ্বাসী, আমরা আত্মসম্মানী। আর এটাই আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদের অলঙ্কার। আমাদের শৌর্য-বীর্য, সাহস, শক্তির সাথে সাথে সততা, ধৈর্য, বিনয় আমাদেরকে বানিয়েছে মানব কল্যাণী আর মানবতাবাদী হিসেবে বিশ্বের বুকে অনন্য এক জাতি হিসেবে।
আমরা রাজনীতির মঞ্চে এসেছি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে। আমরা রাজনীতি করতে এসেছি বাঙালির গৌরব এবং ঐতিহ্যকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে। আমরা চাই বাংলাদেশের মানুষের সমৃদ্ধি, চাই বাংলাদেশের শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি। আমরা আমাদের দেশের মানুষের মানবিকতাবোধ এবং মানবিক গুণাবলী নিয়ে গর্ব করি। আমাদের দেশের মানুষের আতিথেয়তা, অতিথিপরায়ণতা, বন্ধুসুলভ আচরণ আর মানসিকতা, অন্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার প্রবণতা, নিজের ভালর আগে অন্যের ভালর জন্য এগিয়ে যাওয়া, এমনকি নিজের ভালর সম্ভাবনা ত্যাগ করে অন্যের জন্য সহযোগিতা এবং সেবার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মানসিকতা বিশ্বে অনন্য। আমাদের আছে প্রত্যক্ষ উদাহরণ: ‘আমাদের দেশে বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাশ, ঘূর্ণিঝড় বা সিডর, আইলার মতো নিম্নচাপজনিত মহাদুর্যোগ, লঞ্চডুবি বা সড়ক বা রেল পথে দুর্ঘটনা, রানা প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞের মতো দুর্যোগ/দুর্ঘটনা’ - সবখানে এগিয়ে গেছে আমাদের দেশের মানুষগুলো। যাদেরকে আর সবাই বলে সাধারণ জনগণ বা জনসাধারণ। আমরা বলি, ‘জাগ্রত জনতা’। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এ মানবিক গুণগুলো ধারন করে। আমাদের শেখার জায়গা আমাদের জনগণ। আমাদের জনগণের কাছ থেকে আমরা এটাই শিখেছি। আমরা এ মানবকিতাটাকেই ধারন করি।
বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যমান যুদ্ধাবস্থা, একতার অভাব, জাতিবিদ্বেষ, অস্থিতিশীলতা, আন্তঃদেশীয় বা আন্তঃমহাদেশীয় যুদ্ধ-বিগ্রহ, শক্তিশালী রাষ্ট্র কর্তৃক দুর্বল রাষ্ট্রের উপর আরোপিত বিভিন্ন অনাচার এবং আক্রমণ, বড়, অর্থনৈতিকভাবে, সামরিক এবং যুদ্ধাস্ত্রের দিক থেকে শক্তিশালী রাষ্ট্র কর্তৃক পিছিয়ে থাকা রাষ্ট্রগুলোর উপর দাদাগিরি, কোনো কোনো অঞ্চলে কট্টর মৌলবাদী মানসিকতা এবং এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী, উগ্রগোষ্ঠীর জন্ম ও তাদের সন্ত্রাসী এবং জননিরাপত্তাহানিকর কার্যক্রম, অস্ত্রের ঝনঝনানি, আরববিশ্বের অস্থিতিশীলতা, সিরিয়ার একনায়কতন্ত্র, আফ্রিকার মিশর, বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর তৎপরতা, পূর্ব এশিয়ায় চীন, জাপান, দুই কোরিয়া এবং আমেরিকার মধ্যকার তৈরি বৈরি সামরিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক, মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান বা দক্ষিণ আফ্রিকার উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী, লাতিন আমেরিকার মাদক বাণিজ্য বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এ চলমান মানবিক বিপর্যয়, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়ার প্রায় পঙ্গু বর্তমান আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা, আমেরিকা বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশ্বব্যাপী সামরকি ও অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপ পুরো বিশ্বে মানবিক বিপর্যয় এবং মানবিকতার অভাবকে নির্দেশ করছে প্রকটভাবে। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতে আফগানিস্তানে বিদ্যমান কট্টর মৌলবাদী শক্তির উত্থানজনিত কারণে সৃষ্ট তালেবান, সাধারণ আফগান এবং আমেরিকা এবং মিত্র দেশসমূহের বহুমুখী অংশগ্রহণে বিদ্যমান এবং চলমান অস্থিতিশীলতা, পাকিস্তানের জাতিগত বিদ্বেষ, ধর্মীয় অস্থিতিশীলতা, কাশ্মির সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান-চীন সীমান্ত বিরোধ, ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শ্রীলঙ্কার তামিল সমস্যা, নেপালের মাওবাদী আন্দোলনজনিত অস্থিতিশীলতা, মায়ানমারের সামরিক জান্তা বা সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী কর্তৃক সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর সহিংসতা বা মায়ানমার সামরিক বা সরকারি বাহিনী কর্তৃক মায়ানমারের সাধারণ জনগণের উপর নির্যাতন, আরাকানী জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণ এবং ফল হিসেবে বাংলাদেশ সীমান্তে উদ্বাস্তু সমস্যা বিশ্বব্যাপী মানবিক বিপর্যয়কে মনে করিয়ে দেয়।
আমরা, বাংলাদেশের বাঙালিরা অনেক এবং অনেক ভালো আছি আমাদের সমান্তরাল বিশ্বের তুলনায়। আমরা উল্লিখিত মানবিক বিপর্যয়গুলোর একটিও অনুভব করছিনা, আমরা অস্থিতিশীল বিশ্বের রাজনৈতিক কোন্দলের বাইরে অনেক ভালো আছি। আমরা একত্রিত থাকলে, আমরা একতাবদ্ধ হলে, আমরা দেশের মঙ্গল প্রত্যাশা করলে, আমরা আমাদের নিজেদের এবং আমাদের সবার সমৃদ্ধ আগামী আনতে চাইলে, আমাদের উপর আস্থা অর্জন করে আত্মবিশ্বাসী হতে পারলে আমরা আমাদেরকে নেতৃত্ব দেবার পাশাপাশি বিশ্বের বুকে আমাদের পুরনো অবস্থানকে ফিরিয়ে আনতে পারবো, পারবো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে। পারবো অস্থিতিশীল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে।
তবে! সবকিছুর মাঝখানে মনে করিয়ে দিতে চাই। দৃঢ়ভাবে বলছি, আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছিনা। আমরা আমাদের বর্তমান সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল। আমাদেরও সমস্যা আছে, আমরাও আমাদের নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি করছি। এখানে ঘটছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক জনসভায় অমানবিক বোমা হামলা, কোথাও কোথাও সিরিজ বোমা হামলা এবং ফল হিসেবে করুণ মৃত্যু আর হতাহতের ঘটনা, রক্তপাত। মৌলবাদী এবং ধর্মভিত্তিকি রাজনীতির নামে বোমাবাজি এবং জননিরাপত্তা হানিকর পরিকল্পিত বিচ্ছিন্ন আক্রমণ। ঘটছে অপহরণ, হত্যা, খুন, গুম, লুটতরাজ। চলছে প্রতিহিংসার রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক দুর্নীতি এবং অর্থ ও পণ্যের অবৈধ লেনদেন। বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অন্যায় কার্যক্রম বা অন্যায়ভাবে অযাচিত ও অবৈধ শক্তির প্রয়োগ। দৃঢ়ভাবে কাজ করছে হঠকারিতা, অন্যকে ঠকানো, প্রায় প্রতিটি পণ্যের বাণিজ্য এবং বিপণনে নকল, ক্ষতিকর, ভেজাল বা জাল পণ্যের বহুল মিশ্রণ আর ব্যবহার। জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চলছে অস্থিতিশীলতা, ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, ঝুঁকি, সংকোচ।
সবাইকে জানাতে চাই, বর্তমানের এ অনিয়মগুলোকে দূর করে আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্যই আমরা রাজনীতি করতে এসেছি। আমরা পারবো। আপনার কাজ আমাদের উপর আস্থা স্থাপন।
©somewhere in net ltd.