নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হীরক কণা

হীরক কণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মার্কিনি, ব্রিটিশ ও ইসরাইলীদের মুসলিম দেশসমূহ ভাঙ্গার বিস্তৃত পরিকল্পনা এখন বাস্তবে প্রকাশ পাচ্ছে।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২২

আল-কায়েদার নতুন সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আইএসআইএল’ বা ‘আইএসআইএস’ বা ‘আইএস’-

সউদী আরবকে পাঁচ টুকরা ও ইরাককে তিন টুকরা, পাকিস্তানকে তিন টুকরাসহ অন্যান্য মুসলিম দেশও টুকরা টুকরা করার চক্রান্তই বাস্তবায়ন করছে।

তারা হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের পবিত্র মাযার শরীফ একের পর এক ধ্বংস করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না-

তাদের তথাকথিত খলীফা ইহুদী শামউন ইয়েলুতের আদেশে পবিত্র কা’বা শরীফ ধ্বংসের হুমকিও দিয়েছে।

ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক অবগত হয়ে প্রতিহত করতে সক্রিয় হতে হবে মুসলমানদের।

কয়েক বছর আগে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ সউদী রাজার আয়োজিত এক ভোজসভায় তলোয়ার নিয়ে রাজার সঙ্গে নাচ করে। নাঊযুবিল্লাহ! সেই তরবারি ছিল একটি বিশেষ অবস্থার প্রতীক ও আভাস।

আজ মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ মুসলিম জনগণ মুসলমান নামধারী একদল সন্ত্রাসীর হাতেই নিহত হচ্ছে! এসব সন্ত্রাসীরা সেখানে নিরপরাধ মানুষের মাথা দিয়ে ফুটবল খেলছে। হত্যা ও সম্ভ্রমহরণের শিকার হচ্ছে মুসলিম মেয়েরা কথিত জিহাদীদের হাতে!

এ অবস্থায় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও ধর্মান্ধ সন্ত্রাসীদের মনগড়া ইসলামের পার্থক্য তুলে ধরা জরুরী হয়ে পড়েছে। পাশ্চাত্যের প্রকৃত ইসলামী জাগরণকে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার মাধ্যমে প্রতিহত করতে চায়, যাতে বিশ্বব্যাপী তাদের লুণ্ঠন ও দখলদার ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী তৎতপরতা নিরাপদ থাকে।

আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে পারলে পাশ্চাত্যে অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহণের হিড়িকও কমে আসবে বলে ইসলামের শত্রুরা আশা করছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, মুসলিম জাগরণকে সন্ত্রাসী লেবেল লাগিয়ে পাশ্চাত্যে, বিশেষ করে হলিউডে নানা ছায়াছবিও নির্মাণ করা হয়েছে, করা হচ্ছে। তবে সম্প্রতি পাশ্চাত্যের গোপন ও প্রকাশ্য-মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী দল ‘আইএসআইএল’ বা ‘আইএসআইএস’ বা ‘আইএস’-এর উত্থান কোনো চলচ্চিত্র নয়; বরং বাস্তব ঘটনা।

সন্ত্রাসী দল আল-কায়েদার নতুন সংস্করণ ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এন্ড লিভান্ট বা সংক্ষেপে ‘আইএসআইএল’ বা ‘আইএস’ একটি ওহাবী-সালাফী সন্ত্রাসী সংগঠন।

আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত দখলদারিত্ব ও প্রভাব মোকাবেলার জন্য আমেরিকাই বিন লাদেনকে দিয়ে গঠন করেছিল আল-কায়েদা এবং আরো পরে গঠন করে তালেবান।

তালেবান ও আল-কায়েদাকে দ্বিমুখী বা ত্রিমুখী কাজে ব্যবহার করেছে সিআইএ। প্রথমতঃ ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে এক শ্রেণীর যুবককে শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, দ্বিতীয়তঃ প্রথম এই উদ্দেশ্য হাছিলের পর তথা সরলমনা যুবকদের ব্যবহার করার পর ইসলামের নামে ধর্মান্ধতার বিস্তার ও সন্ত্রাসবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে আতঙ্ক ও খারাপ ধারণা ছড়িয়ে দেয়া এবং তৃতীয়তঃ এদেরকে সন্ত্রাসী তৎপরতায় ব্যবহার করে সেই একই সন্ত্রাস দমনের নামে বিভিন্ন মুসলিম দেশে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম হয় কুচক্রী আমেরিকা।

যাই হোক, ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলার সময় সর্বপ্রথম গঠিত হয়েছিল ‘আইএসআই’ গ্রুপ। তখন গ্রুপটির নাম ছিল ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক।

২০০৬ সালের ১৫ অক্টোবর বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ‘আইএসআই’-এর আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের কথা ঘোষণা করা হয় এবং আবু ওমর আল বাগদাদী গ্রুপটির নেতা বলে জানানো হয়।

২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল আবু ওমর নিহত হলে আবু বকর আল বাগদাদী এই সন্ত্রাসী গ্রুপটির নতুন প্রধান হয় এবং মধ্যপ্রাচ্যে গ্রুপটির বিস্তার শুরু হয়।

‘নয়া বিন লাদেন’ নামে খ্যাত বাগদাদীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য মার্কিন সরকার দশ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। বাগদাদী ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইরাকের উম্মে কাসর শহরে একটি মার্কিন কারাগারে বন্দি ছিল। ২০০৩ সালের আগেও সে আল-কায়েদার সদস্য ছিল। তাকেসহ হাজার হাজার চরমপন্থী বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয় উম্মে কাসর শহরের ‘বুকা’ কারাগার থেকে।

ইহুদী বংশদ্ভুত বাগদাদীর আসল নাম শামউন ইয়েলুত। ২০০৫ সালে হত্যা ও অপহরণসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। ইরাকি নাগরিকদের অপহরণের পর শামউন ইয়েলুত ওরফে বাগদাদী তাদের বিরুদ্ধে এক গাদা অভিযোগের ফিরিস্তি শুনিয়ে তাদেরকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতো।

এই বাগদাদী ২০১১ সালে বাগদাদের একটি মসজিদ বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এছাড়াও সে ইরাকের সুন্নীদের প্রতিনিধি বা নেতা হিসেবে খ্যাত খালেদ আল ফাহদাওয়িকেও হত্যার জন্য অভিযুক্ত হয়।

ইরাকের কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে দক্ষ বাগদাদী সবসময় গোপনে বিচরণ করে এবং তার কর্মী ও ভক্তরাও খুবই কমই তাকে দেখতে পেয়েছে। সে প্রায় সবসময়ই তার মুখ ঢেকে রাখে যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে। আল-কায়েদার অন্য যে কোনো নেতার চেয়ে আবু বকর বাগদাদী অনেক বেশি উগ্র চিন্তাধারায় বিশ্বাসী।

সিরিয়ায় কট্টর ইসরাইল-বিরোধী আসাদ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে পাশ্চাত্য, ইসরাইল এবং তাদের আঞ্চলিক সেবাদাস সরকারগুলোর মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহীদের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হলে ‘আইএসআই’ও বিদ্রোহীদের পক্ষে যোগ দিয়ে এ যুদ্ধে অংশ নেয়। গ্রুপটি পরে তার নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ধারণ করে।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে গঠিত আন নুসরা ফ্রন্টও ‘আইএসআই’-এর একটি শাখা হিসেবে দেশটির সরকারি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকে।

২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে আবু বকর আল বাগদাদী এক অডিও বার্তায় জানিয়ে দেয় যে ‘জিবহাতুন নুসরা’ বা ‘আন নুসরা ফ্রন্ট’ ‘আইএসআই’-এর অর্থ ও সহায়তা নিয়েই গঠিত হয়েছে এবং এই দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে ‘আইএসআইএল’ নাম ধারণ করেছে। সম্প্রতি এ নামও পরিবর্তন করে গভীর দুরভীসন্ধিমূলকভাবে শুধু ‘আইএস’ বা ইসলামিক স্টেটস নামে প্রচার করছে।

কিন্তু এই দুই গ্রুপের মধ্যে শুরু হয় ক্ষমতা নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব। দুই গ্রুপের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকলে উভয় গ্রুপের কাছে আল-কায়েদার সন্ত্রাসী নেতা আইমান আল জাওয়াহেরি সিরিয়ার জন্য আন নুসরা ফ্রন্টকেই নিজের প্রতিনিধি বলে ঘোষণা করে এবং আন নুসরার নেতার আনুগত্য করতে বাগদাদীকে নির্দেশ দেয়।

‘আইএসআইএল’ বা আইএস-এর সন্ত্রাসীরা এ বছরের দশই জুন ইরাকের নেইনাভা প্রদেশের প্রধান শহর মসুলের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নেয়। শহরটি জনসংখ্যার দিক থেকে ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এছাড়াও তারা দখল করে ফাল্লুজা ও তিকরিত। তিকরিত সালাহউদ্দিন প্রদেশের প্রধান শহর।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সরকারি ও গণবাহিনীর হামলার মুখে এইসব অঞ্চলের বহু স্থান থেকে বিতাড়িত হয়েছে ‘আইএসআইএল’-এর সন্ত্রাসীরা।

ইরাক সরকারের সাথে গোপন এক ষড়যন্ত্রমূলক সমঝোতার আওতায় এই প্রদেশের ৫০ হাজারেরও বেশি সরকারি সেনা কোনো ধরনের বাধা না দিয়েই সন্ত্রাসীদের কাছে শহরটির প্রধান সরকারি ভবন, অস্ত্রাগার, ব্যাংক ও কারাগারগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়।

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে ‘আইএসআইএল’ সিরিয়ার রাক্কা শহরে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী কথিত ফ্রি-সিরিয়ান আর্মির সেনাদের বিতাড়িত করে। সেখানে সন্ত্রাসী এই গ্রুপ একটি স্থায়ী ঘাঁটিও গড়ে তোলে।

রাক্কার জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় নানা ধরনের কঠোর ও চরমপন্থার শাসন। ফলে সেখানে প্রায়ই প্রকাশ্যে ঘটেছে হত্যাযজ্ঞ ও নানা ধরনের কঠোর শাস্তি; যার শিকার হয়েছে নিরপরাধ বেসামরিক সিরীয় জনগণ।

২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সমর্থক ‘সিরীয় মানবাধিকার পর্যবেক্ষক’ সংস্থা বা এসওএইচআর বলেছে: ‘আইএসআইএল’ হচ্ছে উত্তর সিরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ত্রাসী গ্রুপ।

‘আইএসআইএল’ বা আইএস-কে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইসরাইল, বিভিন্ন পশ্চিমাদেশ ছাড়াও অর্থ, অস্ত্র, রসদ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি মুসলিম নামধারী সরকার। এজন্য তারা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঊত্থানের সময় কোনো কথা বলেনি। বরং তাদের পক্ষে ও ইরাক সরকারের বিরুদ্ধে সাফাই গেয়েছে।

মসুলে এই সন্ত্রাসী দলটির অভিযানের পর ইরাকি কর্মকর্তারা সউদী ও তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থাকে এবং ইরাকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট তারিক আল হাশিমিকে এই অভিযানের নেপথ্য পরিচালক বলে অভিযোগ করেছে। হাশিমি ‘আইএসআইএল’-এর উত্থানকে ইরাকি জনগণের স্বপ্নের বিপ্লব বলে দাবি করেছে।

ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে এক মহা-ষড়যন্ত্রের আওতায় অস্থিতিশীল করার জন্যই এই সন্ত্রাসীরা ইরাকে প্রকাশ্য যুদ্ধ শুরু করেছে।

মুসলিম দেশগুলোর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার এক মহা-ষড়যন্ত্র করছে দেশী-বিদেশী কয়েকটি চক্র। আর এইসব চক্রের মদদদাতারা হলো- ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ এবং তুরস্ক, কাতার ও সউদী সরকার।

ইরাকের আগে সিরিয়ায়ও বিনা অপরাধে বেসামরিক সাধারণ মুসলমানদেরকে কাফির বলে হত্যা করতে অভ্যস্ত ওহাবী-সালাফী মতবাদে বিশ্বাসী সন্ত্রাসী আইএসআইএল বা আইএস, আল-কায়েদাসহ সব সন্ত্রাসী দলকে অস্ত্র, অর্থ, প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা সহযোগিতাসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে এই সরকারগুলো ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.