![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৯১ সালের বাংলাদেশে ‘র’ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলো মি. মহাপাত্র। ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের কূটনীতিকের ছদ্মাবরণে তিনি ছিলেন ইন্টেলিজেন্স ক্যাডারের কর্মকর্তা। ১৯৯১ সালের পর প্রায়শই ভারতীয় দূতাবাসের উদ্যোগে কথক নাচের আয়োজন করা হতো। সেখানে মি. মহাপাত্র সুপ্রশিক্ষিত স্ত্রী থাকতেন আসরের মধ্যমনি। পৃথিবীখ্যাত ভারতীয় কথক নাচের ঐসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হতো দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বিরোধী দল এমনিক সরকারের বহু হোমরা চোমড়া মন্ত্রীদের। আপাত দৃষ্টিতে নাচ দেখার জন্য সেখানে দাওয়াত কবুল করতে কোন মন্ত্রী আপত্তির কিছু দেখতেন না। সরল বিশ্বাসে উপস্থিত হতেন কথক নাচ দেখার জন্য। অথচ এই নাচের ফাকে ফাকে বা আপ্যায়নের সময় মি. মহাপাত্রসহ ভারতীয় কূটনীতিকদের ছদ্মাবরণে থাকা র’ অপারেটিভগণ মন্ত্রী, এমপিদের কাছ থেকে আলাপছলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন লাভ করতেন তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসঙ্গেও ভারতের অনুকূলে আদায় করতেন অসংখ্য সুবিধা। এভাবে চলে গেছে বেশ কয়েকদিন। পরবর্তীতে বাংলাদেশী গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের নজরে আসার প্রেক্ষিতে সরকারি উচ্চপর্যায়ে এনিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে এ ধরনের অনুষ্ঠানে সরকারি দলের সদস্যদের যোগদান বন্ধ হয়ে যায়। তবে তাই বলে যে কথক নাচের আসরসহ বিভিন্নরূপ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আড়ালে র’ তার কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছিলো তা কিন্তু নয়। বরং অসংখ্য নাট্যশিল্পী সঙ্গীতশিল্পী বুদ্ধিজীবি কলামিস্ট যারা জ্ঞাতসারে বা অবচেতনভাবে র’ এর চক্রে জড়িয়ে গিয়েছিলো তাদের আনাগোনা এসব অনুষ্ঠানে মোটেও হ্রাস পায়নি। তথ্য আদান-প্রদান করনীয় সম্পর্কিত নির্দেশ লেনদেন রুটিন ওয়ার্ক চলেছে স্বাভাবিকভাবে।
(বই: “গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানদের কথা: বাংলাদেশে র”: অধ্যায়-১০, পৃষ্ঠা-২২২। লেখকের সূত্র: ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত এনএসআই’র মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত দু’জন উর্ধ্বতন সেনা কমকর্তার সাক্ষাৎকার)
উপরের দলিল দেখলে বোঝা যাচ্ছে, ১৯৯১ সালের পর ভারতীয় দূতাবাসের উদ্যোগে ভারতীয় কথক নৃত্যের আয়োজন ছিলো মূলত র’এর সদস্য রিক্রুট করা এবং বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের একটি উপলক্ষ মাত্র।
সময় পাল্টেছে, এখন সবকিছুই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনুকূলে। এখন আরো বড় পরিসরে আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয়েছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। গত বছর হয়েছে ৪দিন, এবার বেড়ে হয়েছে ৫দিন (বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে, আগামীকাল সোমবার শেষ হবে)। অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করে দিয়েছে খোদ বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী-সংস্কৃতিমন্ত্রী। উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে ছিলো ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, আমেরিকান রাষ্ট্রদূত। অনুষ্ঠানের স্পন্সর এনজিও ব্র্যাক, ধর্মান্তরিত স্কয়ার। প্রচারের দায়িত্ব প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, মাছরাঙা টিভির মত চিহ্নিত বাইরের মদদপুষ্ট মিডিয়াগুলো। আর অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলো ভারত থেকে আসা একঝাক গায়ক-বাদক-নৃত্যশিল্পী ।
এ অনুষ্ঠান শুধু উচ্চাঙ্গ সংগীত সম্মেলন নয়, বরং বিদেশী এজেন্ট সম্মেলন বলতে পারেন,
-এখানে নতুন সদস্য রিক্রুট হবে
-পুরাতন সদস্যদের আলাপ-আলোচনা হবে
- সংস্কৃতির নাম দিয়ে বাংলাদেশীদের ব্রেইন ওয়াশ হবে
- ভারতীয় ভালোবাসা প্রবেশ করানো হবে
- বাংলাদেশকে শোষন করার নতুন কোন পরিকল্পনা গৃহিত হবে।
সর্বপরি, এগুলো দেখে একসময় অভ্যস্থ হয়ে যাবে বাংলাদেশের শিক্ষিত সমাজ। তখন তাদের ভারতীয় আগ্রাসন দেখে আর গায় চুলকোবে না, সীমান্তে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ দেখে গা শিউরে উঠবে না, ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশে ঢুকে গেলে মুখ দিয়ে কথা বের হবে না। প্রত্যেক শিক্ষিত সমাজ তখন মনে প্রাণে বিশ্বাস করবে, বলতে থাকবে: “থাক না, ভারতই তো ভালো, তাদের সংস্কৃতি কত ভালো। আমার খুব পছন্দ। বাংলাদেশ ভারত হলে কতই না ভালো হতো।”
অনুষ্ঠানের সূত্র খবর:
১) বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব এবার পাঁচ দিন (http://goo.gl/cjhkD8)
২) পর্দা উঠলো বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের (http://goo.gl/EHoHa1)
৩) উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের প্রথম দিন (http://goo.gl/tssOTE)
৪) অনুষ্ঠান আয়োজকদের ফেসবুক লিঙ্ক: http://goo.gl/yjFz7A
©somewhere in net ltd.