ভালবাসি তোমায়, হে প্রিয় বাংলাদেশ

০৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:২২

ভালবাসি তোমায়, হে প্রিয় বাংলাদেশ

ভালবাসা মানেই এক গভীর টান, এক অন্তরের টান; আর সেই টানেই বাঁধা পড়ে আছি তোমার সঙ্গে, হে প্রিয় জন্মভূমি—বাংলাদেশ। তুমি কেবল একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় বাঁধা রাষ্ট্র নও, তুমি আমার আবেগ, আমার সংস্কৃতি, আমার স্বপ্ন আর আশা-ভরসার নাম।

তোমার নদী, মাঠ, পাহাড় আর সবুজে মোড়ানো প্রকৃতি যেন জীবনের সুর তুলে ধরে। কাশফুলে দোল খাওয়া বাতাসে যেমন মায়ের মমতা মিশে থাকে, তেমনি তোমার মাটির গন্ধে থাকে বেঁচে থাকার প্রেরণা। শীতের সকালের খেজুরের রস আর গ্রামের শিশিরভেজা পথ যেন জানিয়ে দেয়—এই দেশ এক অনন্য আশীর্বাদ।


বাংলাদেশ—নদীমাতৃক এক সবুজ-শ্যামল দেশ, যেখানে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে। এই দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে নয়নাভিরাম দৃশ্যপট, শান্ত নদীধারা, বিস্তৃত সবুজ মাঠ, অপার বনভূমি, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র ও ঝর্ণার মুগ্ধতা।

নদ-নদী ও হাওর-বাঁওড়ের সৌন্দর্য
বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি গঠিত হয়েছে শত শত নদ-নদীকে ঘিরে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রের মতো নদীগুলো শুধু দেশের যোগাযোগ ও কৃষির প্রধান ভিত্তিই নয়, বরং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম উৎসও। বর্ষাকালে এসব নদীর সৌন্দর্য অপরূপ হয়ে ওঠে। সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলগুলোতে পানির রাজত্বে তৈরি হয় এক স্বপ্নিল পরিবেশ।

সবুজের দেশ, বনের রাজ্য
চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চল, বিশেষ করে বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে যেন এক স্বর্গরাজ্য। বনভূমির ভেতর দিয়ে বয়ে চলা ছোট ছোট ঝরনা ও পাহাড়ি ঝিরি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

সৈকতের স্বর্গ—কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার ও প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মুকুটমণি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য, নীল জলের ঢেউ আর বালুকাময় তটভূমি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

শান্তির প্রতীক সুন্দরবন
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও অসংখ্য জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। এটি শুধু একটি বন নয়, বরং একটি জীবন্ত জাদুঘর, যেখানে প্রকৃতি তার নিজ রূপে বিরাজমান।
বাংলাদেশ শুধু প্রকৃতি দিয়ে নয়, ইতিহাস দিয়েও গর্বিত। একাত্তরের রক্তস্নাত স্বাধীনতা সংগ্রাম আমাদের শিখিয়েছে আত্মত্যাগের অর্থ। এই স্বাধীনতা কেবল রাজনৈতিক নয়, তা সাংস্কৃতিক, মানসিক ও আত্মিকও বটে। হাজারো শহীদের রক্তে রাঙানো এই দেশ আমাদের জন্য এক বিরাট নেয়ামত।

আজ বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। প্রযুক্তি, শিক্ষা, কৃষি, ক্রীড়া, সাহিত্য—সবখানেই রয়েছে আমাদের জয়যাত্রার গাথা। যদিও নানা সমস্যায় জর্জরিত, তবুও আমরা আশাবাদী। কেননা এই জাতি কখনো হার মানেনি, হার মানে না।

তোমার প্রতিটি গাছ, প্রতিটি নদী, প্রতিটি ভাষা, আর প্রতিটি মানুষকে আমি ভালবাসি। তুমি আমার পরিচয়, আমার আত্মপরিচয়ের প্রাচীন মূল। আমি গর্ব করি—আমি বাংলাদেশি।

ভালবাসি তোমায়, হে প্রিয় বাংলাদেশ।

০ টি +০/-০