নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জানিনা আমি কে?

সুলাইমান হোসেন

সামুতে যা প্রকাশযোগ্য নয় তা আমার ব্যক্তিগত ব্লগে লিখে রাখি যেমন আত্মজীবনি,কবিতা ইত্যাদি https://hridoyeralo.blogspot.com/

সুলাইমান হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুহ কি

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৫৫

রুহের রহস্য

রুহ কি?
=তারা আপনাকে রুহ সম্পর্কে জিগ্যেস করে।বলুন রুহ আমার প্রতিপালকের আদেশ।রুহ সম্পর্কে তোমাদেরকে কোনো জ্ঞান দেওয়া হয়নি,অল্প ব্যাতিত।(বনি ইসরাইল)

রুহসমূহ যখন একত্রিত হয়,তখন এক রুহের সাথে আরেক রুহের একটি নেসবত বা সম্পর্ক হয়ে যায়।আবার রুহ যখন পৃথক হয় তখন এই নেসবত শক্তি হারিয়ে ফেলে অথবা ছিন্ন হয়ে যায়।

সব রুহ সমান নয়। মর্যাদায় তারতম্য রয়েছে।
পৃথিবীতে তিন প্রকারের রুহ রয়েছে,মানবজাতির মধ্যে;যথা—

১।নবীদের রুহ।
২।সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ।
৩।সাধারন মানুষদের রুহ।

এখন আমি তিন প্রকারের রুহ সম্পর্কে আমার নিজস্ব দর্শন বর্ণনা করব।আমার দর্শন যদি কুরআন হাদিসের সাথে সাংঘর্ষক না হয় তাহলে তা ঠিক হবে।

১।নবীদের রুহ:
নবীদের রুহ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ধন্য রুহ।এই রুহ মানবজাতীর মধ্যে চুড়ান্ত মর্যাদার অধিকারী।তবে নবীদের রুহও মানবিক গুনাবলীর উর্ধ্বে নয়।কারন তারাও মানুষ।

এই রুহ অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারি হয়ে থাকে।কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ব্যাতিত তারা কোনো অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেনা।

এই রুহ শক্তিশালী হয়ে থাকে।কোনো দুনিয়াবি বিপর্যয় নবীদের রুহকে টলাতে পারেনা।এই রুহতে মাখলুকের কোনো ভয় থাকেনা,আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কিছুকে তারা ভয় করেনা।এই রুহ যেখানে থাকে সেখানে জান্নাতের বাগান হয়ে যায়।

সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ :

নবীদের পরের স্তরে অবস্থান করছে সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ।এই রুহও আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত।নবীদের রুহ এবং সিদ্দিকিনদের রুহের মধ্যে পার্থক্য হলো-
নবীদের রুহানী মর্যাদা সকলেই হাসিল করতে পারেনা,কিন্তু সিদ্দিকিনদের রুহের মতো রুহ সকলেই বানাতে পারে,এই পথ সকলের জন্যই খোলা রয়েছে।যদিও প্রচুর পরিমানে সাধনা করার প্রয়োজন হতে পারে।
সিদ্দিকিন দের রুহ কুদছি হয়ে থাকে।আমার মনে হয় সিদ্দিকিসরা অহরহ আল্লাহর নিকট থেকে অথবা ফেরেশতাদের নিকট থেকে ইলহাম প্রাপ্ত হতে থাকে,এবং ইলহাম অনুযায়ী তারা জীবন পরিচালনা করেন, যেকারনে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং তাদের ভুল ভ্রান্তি কম হয়ে থাকে।তারা আন্তরিক হয়ে থাকেন।এবং অদৃশ্য ইশারায় কাজকর্ম করেন।তারা যখন কথা বলেন,মনে হবে যেন কথা তারা নয় বরং তাদের মুখ দিয়ে আল্লাহ তায়ালাই কথা বলছেন।এটা তাদের কুদছি মকামের বৈশিষ্ট্য।

৩।সাধারন মানুষের রুহ :
সাধারন মানুষের রুহ হাওয়াই হয়ে থাকে। তারা নফসের ইশারা ইঙ্গিতে পরিচালিত হয়৷ একারনেই তারা পবিত্র জগতের দিকে রাস্তা পায়না৷ সাধারন মানুষের মধ্যে যারা বিশ্বাসি বা ইমানদার তারা সাধারনত অন্যের অনুকরন অনুসরন নির্ভর হয়ে থাকে।এজন্য সাধারন মানুষকে ধোঁকা দেওয়া খুবই সহজ।কারন শুনা কখোনো দেখার সমতূল্য হয়না।সাধারন মানুষের ইমান হলো অন্যের নিকট থেকে শুনার দ্বারা হয়ে থাকে,আর সিদ্দিকিনরা,অন্তরের চোখে ইমানকে দেখতে পান।এজন্য সিদ্দিকিনদের ইমান অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে।

সাধারন মানুষ কি সিদ্দিকিনদের মর্যাদা অর্জন করতে পারে?
=হ্যা!অর্জন করতে পারে।কিন্তু অনেক কঠিন সাধনা করতে হয়।
তারা কিছুদিনের জন্য লোকালয় ত্যাগ করে, নির্জন গহীন জঙ্গলে, পাহাড়ে,বিয়াবানে চলে যান।যতদিন তাদের আত্মা পূ্র্ণতা না পায় ততদিন তারা নির্জনেই থাকেন।পরিপূর্ণ কামেল হওয়ার পরে তাদের কেউ কেউ লোকালয়ে ফিরে আসেন,আবার কেউ কেউ জঙ্গলেই থেকে যান।
(আগামি পর্বে আলোচনা করবো জান্নাত জাহান্নামের স্তর এবং রুহানী বিকাশ ইনশাআল্লাহ)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



খুব গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে লিখেছে । রুহের প্রকার বেদ সম্পর্কে ভাল বিআরণ দিয়েছেন ।
ইসলামে রূহ মানুষের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও রহস্যময় সত্তা, যার প্রকৃত স্বরূপ শুধু আল্লাহই জানেন।
আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করার সময় তাঁর মধ্যে রূহ ফুঁকে দেন, যা আল্লাহর সৃষ্টি এক বিশেষ পবিত্র উপাদান।
কুরআন জানায়, রূহ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান সীমিত।

যাহোক অনেকের লেখা ও আলোচনা হতে জানা যায় রূহ ও দেহ মিলেই জীবিত মানুষ গঠিত হয় ।
মৃত্যুর সময় রূহ বের হয়ে যায়। মুমিনের রূহ সহজে আর কাফিরের রূহ কষ্টসহকারে বের হয়। মৃত্যুর পর রূহ
বারযখে অবস্থান করে, মুমিনের রূহ জান্নাতসম বাগানে আর অবাধ্য পাপীদের রূহ সংকীর্ণ স্থানে কষ্টে থাকে।

ঘুমের সময় রূহ আংশিকভাবে দেহ থেকে প্রত্যাহার করা হয়, যা ক্ষুদ্র মৃত্যুর মতো। কিয়ামতের দিনে রূহ
পুনরায় দেহে ফিরিয়ে দেয়া হবে এবং মানুষকে হিসাবের জন্য উপস্থিত করা হবে।

রূহকে পরিশুদ্ধ করতে ইসলাম নামাজ, রোজা, জিকির, তওবা ও কুরআন তিলাওয়াতের ওপর জোর দেয়।
রূহই মানুষকে চিন্তা, ঈমান, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার উচ্চতায় পৌঁছে দেয়।

দোয়া করি আল্লাহ সকলের রুহকে উন্নত পর্যায়ে উন্নীত করার তৌফিক দিন ।

শষুভেচ্ছা রইল

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৪০

সুলাইমান হোসেন বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অন্তর থেকে কৃতজঞতা প্রিয় এম আলী ভাই

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪৩

সুলাইমান হোসেন বলেছেন: চ্যাট জিপিটিকে উক্ত লেখাটি পরিমার্জন করতে বললে,সে নিন্মোক্ত পরিমার্জন করেছে,এবং অবশ্যই জিপিটি চমৎকার পরিমার্জন করেছে

রুহের রহস্য

রুহ কি?

মানুষ আপনাকে রুহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলুন—
“রুহ আমার প্রতিপালকের এক আদেশমাত্র। তোমাদেরকে রুহ সম্পর্কে অতি সামান্য জ্ঞানই দেওয়া হয়েছে।”
— (সূরা বনি ইসরাইল)

রুহ এমন এক আধ্যাত্মিক সত্তা যার রহস্য মানুষের জন্য সীমিতই রয়ে গেছে। তবে অভিজ্ঞতা, ইলহাম, আলো ও রুহানী মুজাহাদার মাধ্যমে আল্লাহ কিছু লোককে রুহের জগৎ সম্পর্কে অল্প পরিমাণ ধারণা দান করেন।

রুহসমূহ যখন আল্লাহর ইচ্ছায় একত্রিত হয়, তখন এক রুহের সাথে আরেক রুহের বিশেষ পরিচিতি ও নেসবত সৃষ্টি হয়। হাদিসে এসেছেঃ
“রুহসমূহ বাহিনীর মতো দলবদ্ধ; পরিচিতরা একত্রিত হয়, অপরিচিতরা দূরে সরে যায়।”
রুহ যখন পৃথক হয়ে যায়, তখন সেই নেসবতের শক্তি কমে যায় অথবা ছিন্ন হয়ে যায়।

সব রুহ সমান নয়; মর্যাদায়, পবিত্রতায় ও আলোতে তারতম্য রয়েছে। মানবজাতির মধ্যে রুহ সাধারণত তিন স্তরে বিভক্ত—
১) নবীদের রুহ
২) সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ
৩) সাধারণ মানুষের রুহ

এখন আমি তিন প্রকার রুহ সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত দর্শন তুলে ধরছি। যদি তা কুরআন-হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, তবে এটিকে গ্রহণযোগ্য মনে করা যেতে পারে।


---

১. নবীদের রুহ

নবীদের রুহ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে পরিপূর্ণ, সর্বোচ্চ মর্যাদার রুহ। যদিও নবীগণ মানুষই, তবুও তাদের রুহে রয়েছে অদম্য দৃঢ়তা, বিশুদ্ধতা এবং আধ্যাত্মিক শক্তি।
কোনো দুনিয়াবি বিপর্যয় তাদের রুহকে টলাতে পারে না। তারা কাউকে ভয় করেন না—ভয় করেন শুধু আল্লাহকে।

নবীগণ যখন আল্লাহর অনুমতিতে মুজিজা প্রদর্শন করেন, তা রুহের নিজস্ব ক্ষমতা নয়; বরং আল্লাহর বিশেষ সহায়তার প্রকাশ। নবীদের রুহ যেখানে থাকে, সেখানেই তৈরী হয় শান্তি, প্রশান্তি ও জান্নাতের সুবাতাস।


---

২. সিদ্দিকিন বা ওলীদের রুহ

নবীদের পরের স্তরে রয়েছে সিদ্দিকিন ও ওলীদের রুহ। এই রুহও আল্লাহর বিশেষ নূর দ্বারা আলোকিত।

তবে দুটি পার্থক্য আছে—

নবীদের রুহানী মর্যাদা কারো পক্ষে অর্জনযোগ্য নয়

কিন্তু সিদ্দিকিনের রুহ অর্জন করা সম্ভব, যদি কেউ দীর্ঘ সাধনা, তাযকিয়া, নফসের বিরুদ্ধে মুজাহাদা এবং আল্লাহর স্মরণে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে


সিদ্দিকিনদের রুহকে বলা হয় রুহে কুদসি—এক পবিত্র রুহ, যা ইলহাম গ্রহণে সক্ষম।
এরা প্রায়ই ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে বা আল্লাহর পক্ষ থেকে ইলহাম পেয়ে থাকে। এজন্য তাদের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়, ভুল কম হয়, এবং তাদের হৃদয় হয় আন্তরিক ও পরিষ্কার।

তারা যখন কথা বলেন, মনে হয়—
তাদের মুখ দিয়ে যেন সত্যই কথা বলছে।
এটাই রুহে কুদসির বৈশিষ্ট্য।


---

৩. সাধারণ মানুষের রুহ

সাধারণ মানুষের রুহ নফসের ইশারা-ইঙ্গিতে পরিচালিত হয়। এই রুহ এখনো সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ নয়, তাই পবিত্র জগতের দিকে উঠার পথ খুঁজে পায় না।

বিশ্বাসী সাধারণ মানুষ সাধারণত শুনে শুনে ঈমান গ্রহণ করে—
আর সিদ্দিকিনরা অন্তরের চোখে ঈমানকে দেখেন।
এজন্য সিদ্দিকিনদের ঈমান শক্তিশালী, স্থির এবং নূরময় হয়।

সাধারণ মানুষকে ভুল পথে নেওয়া সহজ—কারণ তারা অধিকাংশই অনুসরণমূলক ঈমানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে।


---

সাধারণ মানুষ কি সিদ্দিকিনদের মর্যাদা অর্জন করতে পারে?

হ্যাঁ, অবশ্যই পারে।
কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন—

দীর্ঘ সাধনা

নফসের বিরুদ্ধে কঠোর মুজাহাদা

দুনিয়ার মোহ কাটিয়ে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ

চোখ-হৃদয়-আচরণের পরিশুদ্ধি

দীর্ঘ সময়ের ধ্যান, একাগ্রতা ও তাযকিয়া


অনেকে কিছু সময়ের জন্য লোকালয় ত্যাগ করে নির্জনতা খোঁজেন—
জঙ্গল, পাহাড় কিংবা মরুভূমিতে গমন করেন।
যতদিন তাদের রুহ পরিপূর্ণতা না পায়, ততদিন তারা নির্জনে অবস্থান করেন।
পরিপূর্ণ রুহানী পরিপক্বতা লাভের পর কেউ কেউ সমাজে ফিরে আসেন, কেউ কেউ নির্জনেই থেকে যান।


---

(আগামী পর্বে আলোচনা হবে: জান্নাত-জাহান্নামের স্তর ও রুহানী বিকাশ ইনশাআল্লাহ)


---

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি খুব চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। আপনার জন্য আন্তরিক দোয়া থাকলো। ইনশাআল্লাহ যাতে আরও ভালো ভালো লেখা পাঠকদের কল্যানে উপহার দিতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.