নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলাদেশী

তারেক উজ জামান

তারেক উজ জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে প্রকৃত জঙ্গিবাদ উত্থান ও আইএস

০৩ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:২১

২০০১ সালের দিকে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমন করে তখন ঢাকায় মিছিল হত, ‘বাংলা হবে আফগান এবং আমরা হব তালেবান’ । তখনকার এ স্লোগান মানুষ বুঝে দিত যতটা তার চেয়ে অধিক বেশি দিত না বুঝে । বিশ্বের প্রধান পরাশক্তি মার্কিন মুল্লুকের বিরুদ্ধে ওসামা বিন লাদেনের শক্ত অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এ স্লোগান দেয়া হত । শুধু ইসলাম ধর্মের সম্পর্কে এবং মার্কিন আধিপত্যের বিরুদ্ধে কথা বলায় লাদেন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল । সেদিনগুলোতে এলাকার অর্ধশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত মুরুব্বীরা বিবিসি কিংবা রেডিও তেহরানের খবর শোনার সময় লাদেনের জন্য দোয়াও করত ।
বাংলাদেশে প্রকৃত জঙ্গিবাদ উত্থানের সাথে ছোট বেলায় পাঠকৃত মিথ্যুক রাখাল বালক এবং প্রতিদিন বাঘ আগমনের গল্পের অনেক দিক দিয়ে মিল রয়েছে । ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে জঙ্গিবাদ উত্থানের গল্প বলতে বলতে বোধহয় এবার সত্যিকারেই জঙ্গিবাদ শিকড় দিয়েছে । কিছুদিন পূর্বে আয়মান আল জাওয়াহিরির প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশকে নিয়ে তার পরিকল্পনার ঘোষণা দেশবাসীকে সত্যিকারার্থেই চিন্তায় ফেলেছে । সেই সরকারের এখন ‘ছেড়ে দে মো কেঁদে বাঁচি অবস্থায়’ । তবে ইতোঃপূর্বে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে যতটুকু সত্য প্রকাশ হয়েছে তার চেয়ে নাটক হয়েছে বেশি ।
জঙ্গীরা যতটুকু সুযোগ পেয়েছে তার চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুযোগ করে দিয়েছে বেশি বলেই প্রতীয়মান হয় । কথিত বন্দু যুদ্ধে এদেশের নিরীহ মানুষ মারা গেছে কিন্তু জঙ্গীদের কাউকে গ্রেফতার করে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে এমন সংবাদ কালে-ভদ্রেও প্রকাশ পায়নি।
বাংলাদেশে আইএসের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার ইস্যু তৈরি করতে আমেরিকার সরকার তাদের দেশের সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ নামক ইহুদিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছে।
এই প্রতিষ্ঠানের প্রধানের নাম রিটা কটজ সে একজন ইহুদী এবং আমেরিকার প্রভাবশালী ইহুদী লবির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে । এই ইহুদী রিটা কটজের সঙ্গে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা সোসাদ এবং আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশে দু’একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে-সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ প্রচার করে এটা হচ্ছে আইএসের কাজ। বাংলাদেশে দু’একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার পর আইএসের নামে দায় স্বীকারের মিথ্যা বার্তাটি শুধুমাত্র এই ইহুদি রিটা কটজ ও ইহুদিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স কাছে ফ্লাশের মতো পৌঁছে যায়, অন্য কেউ তা জানতে পারে না। কিন্তু আইএস কোন মাধ্যমে দায় স্বীকার করেছে এই মর্মে বিশ্বের বহু প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য জানতে চাওয়া হলে এই ইহুদী রিটা কটজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ কোনো উত্তর দেয় না।
মূলত, আইএস নামক মিথ্যা অজুহাত বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা এবং তার দোসরদের যেকোনো মুসলিম দেশে সামরিক হামলা করার এখন সবচেয়ে সহজ কৌশল।
আর সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা এবং তার দোসরা বাংলাদেশে আইএস আছে বলে প্রচার করছিল। আর ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দির্ঘদিন ধরে বর্তমান সরকার বিরতিহীন ভাবে তা প্রচার করে আসছিল। আর দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে আইএস আছে, এই মিথ্যা অপপ্রচারে যোগ দিয়েছে ভারতীয় মিডিয়াগুলোও। গতকাল রাত থেকে ভারতীয় টিভি চ্যানেল আর সংবাদপত্রগুলি বিরতিহীন ভাবে গুলশানের ঘটনা নিয়ে সংবাদ ও সনবাদের বিশ্লেষণ করে যাচ্ছে। কারণ ভারত বহুদিন থেকে বাংলাদেশের মহামূল্যবান প্রাকৃতিক এবং খনিজ সম্পদগুলি লুটপাট করতে চাচ্ছে। আর সেই মিথ্যাকে সত্যে পরিনত করার জন্যই বাংলাদেশে ঘটে গেল নজিরবিহীন হত্যাকান্ড।
আইএস কে যদি ইসলামী সংগঠন বলা হয়, তাহলে “ইসলাম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম” ইসলাম বিদ্বেষীদের এই দাবীটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায়।
মূলত ইসলামকে যারা সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তারাই আইএস কে ইসলামী সংগঠন দাবি করে। যদিও আইএসের অধিকাংশ কর্মকান্ডই ইসলামসম্মত নয়, তবুও অনেক অসচেতন মুসলিম না বুঝে কিংবা আবেগের বশবর্তী হয়ে তাদেরকে সমর্থন দেয়। অথচ আইএস যে ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায় সেটা কুরআন-সুন্নাহ সম্মত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা নয়, বরং তাদের মনগড়া সন্ত্রাসী রাষ্ট্রব্যবস্থা।
যেমন- ইসলামী রাষ্ট্রে বিধর্মীদের নিরাপদে বসবাস করার অধিকার থাকে, কিন্তু আইএসের সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে সেই ব্যবস্থা নেই। সাধারন নিরীহ অমুসলিমদের ক্ষতিসাধন করা ইসলামে নিষিদ্ধ হলেও, আইএসের মগের মুল্লুকে কোন অমুসলিমের বেঁচে থাকার অধিকারই নেই! এমনকি কারনে-অকারনে মুসলিমদের ক্ষতিসাধন করতেও পিছপা নয় সংগঠনটি। এখন পর্যন্ত মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রুরাষ্ট্র ইসরাঈল কিংবা আমেরিকার ন্যুনতম ক্ষতিসাধন করতে পারেনি আইএস, উল্টো মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এতে কি প্রমান হয় না- তারা ইসলাম রক্ষা করা নয় বরং ইসলাম ও মুসলিমদেরকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত
এই আইএসআইএসের এক নেতা এম আই ৬, কিংবা সিআইএ অথবা মসাদ থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যার নাম ছিল আদম গাদান যিনি আল কায়েদার একমাত্র মুখ্যপাত্র ছিলেন।
সে ছিল একজন আমেরিকান ইহুদী যার আসল নাম ছিল এডাম পার্লম্যান। ৯/১১ এর সময় তিনি রাতারাতি নাম বদল করে দাড়ি টুপি পড়ে একেবারে ইসলাম দরদি হয়ে যে কোন উপায়ে আল কায়েদার শীর্ষস্থানীয় নেতা বনে গেলেন। এটা আমেরিকার একটা চাল ছিল। এই সেই ব্যাক্তি যিনি "ওয়ার এগেইন্সট আমেরিকা" উচ্চারন করেছিলেন। পরবর্তীতে "অরেঞ্জ" পত্রিকা (একটা আমেরিকার পত্রিকা) এর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে যে তিনি ছিলেন ইহুদিদের সবচেয়ে সমর্থক গোষ্ঠীর কোন এক নেতার নাতি। ঐ দাদা ছিলেন ইহুদীদের সমর্থিত সংস্থার বোর্ড অফ ডাইরেক্টর। এই তথ্য বের হওয়ার পর আদম সাহেবের আর কোন হদিস পাওয়া যায় নাই।
২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে আবু বকর আল বাগদাদি এক অডিও বার্তায় জানিয়ে দেয় যে 'জিবহাতুন নুসরা' বা 'আন নুসরা ফ্রন্ট' 'আইএসআই'-এর অর্থ ও সহায়তা নিয়েই গঠিত হয়েছে এবং এই দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে 'আইএসআইএল' নাম ধারণ করেছে।
ধীরে এই দলটিই বিশ্বের ক্ষমতাবান দল হয়ে গেলো অথচ ক্ষমতাধর দেশগুলো দীর্ঘ দুই বছরেও তাদেরতো ধংস করলোই না বরং সিরিয়ার ইস্যুতে তাদের সাহায্য সহয়তা করলো। সিরিয়ায় কট্টর ইসরাইল-বিরোধী আসাদ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে পাশ্চাত্য, ইসরাইল এবং তাদের আঞ্চলিক সেবাদাস সরকারগুলোর মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ও বিদ্রোহীদের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হলে 'আইএসআই'ও বিদ্রোহীদের পক্ষে যোগ দিয়ে এ যুদ্ধে অংশ নেয়।'আইএসআইএল'-কে আমেরিকা ও ইসরাইল ছাড়াও অর্থ, অস্ত্র, রসদ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি সরকার যারা আমেরিকার মিত্র হিসেবেই পরিচিত।
আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামার ভাষ্যমতে ইসরাইলের গোয়েন্দাবাহিনী মোশাদ এবং আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ মিলে পরিকল্পিতভাবে আইএস গঠন করেছিল যার বিস্তার আজ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ পর্যন্ত পৌছে গেল।
ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকল দেশপ্রেমিক বাংলাদেশীদের আজ সজাগ হতে হবে। তা না হলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে সময় নিবে না আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:৪৮

মামুন আকন বলেছেন: এখন পর্যন্ত
মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রুরাষ্ট্র
ইসরাঈল কিংবা আমেরিকার ন্যুনতম
ক্ষতিসাধন করতে পারেনি আইএস,
উল্টো মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ মুসলিম
রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
নিয়ে গেছে। এতে কি প্রমান হয় না-
তারা ইসলাম রক্ষা করা নয় বরং ইসলাম
ও মুসলিমদেরকে ধ্বংস করার কাজে
নিয়োজিত।
একমত.......

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:২৪

মো সাদিকুর রহমান বলেছেন: একম

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: কথা শতভাগ সত্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.