নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে মানুষ জীবনের মূল্য দিতে জানে, জীবন কখনো তাকে নিরাশ করে না।

জীবন আল্লাহর দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার। তুমি তার মূল্য দেও, সেও তোমাকে মূল্য দিবে।

হাইড্রোজেন

কিছু বলার নাই।

হাইড্রোজেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইবার পরিষ্কার হবে তামাম সমুদ্রের পৃষ্ঠতল । একটি মেগা প্রকল্পের প্রযুক্তি বিশ্লেষণ (পর্ব - ১) The Ocean Cleanup

১১ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬

অদ্ভুত পৃথিবী, অদ্ভুত তার মানুষজন । তার থেকেও অদ্ভুত তাদের চিন্তা ভাবনা ।
ধরেন আমি আপনাকে আজ একটা দায়িত্ব দিলাম যে আপনি চিন্তাকরে এমন একটা পদ্ধতি / প্রযুক্তি বের করেন যার দ্বারা খুব কম সময়ে এবং সল্প খরচে পৃথিবীর তামাম সমুদ্র পৃষ্ঠে ভাসমান সকল বর্জ্য পরিষ্কার করা যাবে। কেমন হবে?
এই লিখায় আমরা পৃথিবীর একটি মেগা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করবো। “Project Ocean Cleanup”. প্রায় ২ বছর আগে ২০১৩ সালে মানবকণ্ঠ পত্রিকায় “পাঁচ বছরে সমুদ্র পরিষ্কার” শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত খবর পড়েছিলাম। তখন সেই বিশাল প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পারি । বিভিন্ন ওয়েবসাইট , ম্যাগাজিনের খবর এবং ব্লগ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য নিয়ে এই প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে বসলাম।



সমস্যাঃ

পৃথিবীর প্রায় ৭১% পৃষ্ঠ সমুদ্র দিয়ে বেষ্টিত। প্রায় ৩.৬ × ১০৬ কি.মি. ২ পৃষ্ঠ রয়েছে এই বিশাল সমুদ্রের দখলে । পৃথিবীর মোট পানির পরিমানের ৯৭% নোনা পানি অথবা সামুদ্রিক পানির দখলে । সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি বছর ৩০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য এই সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয় যা কিনা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ । অন্য আরেক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৫ ট্রিলিয়ন পিচ প্লাস্টিক বর্তমানে সমুদ্রে ভাসমান আছে যা কয়েক যুগ ধরে জমেছে । এই বিশাল সমুদ্রকে প্লাস্টিক মুক্ত করার কথা অনেকেই অনেকবার ভেবেছে । কিন্তু প্রচুর সময় এবং ব্যায় সাপেক্ষ হওয়ায় বারবার এই প্রকল্প ভেস্তে যায় ।


সমস্যার সমাধান

অনেকদিন আগ থেকেই বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার সমাধান খুঁজে আসছেন । সমস্যার সমাধানের জন্য আয়োজন করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলন , কথা বলা হয়েছে বিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের সাথে । কিন্তু সমাধান পাওয়া যায়নি কোন ।
তবে ২০ বছর বয়সের এক ডাচ কিশোর বিশ্বাস করে তার কাছে এই সমস্যার সমাধান রয়েছে ।
এই ২০ বছরের ডাচ কিশোর হলেন বোয়ান স্লেট । তিনি The ocean cleanup – প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও । স্লেট জানান তার এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাত্র ৫ বছরে এবং খুব কম খরচে সমুদ্রে জমে থাকা প্লাস্টিক সহ অন্যান্য আবর্জনা ৯৬% পর্যন্ত পরিষ্কার করা সম্ভব ।



সমুদ্র পরিষ্কার প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ

বোয়ান স্লেট ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়াতে অনুষ্ঠিত এশিয়ার প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সম্মেলনে বলেছেন- “এই প্রকল্পটি ২০১৬ সাল নাগাদ তাদের কাজ শুরু করবে । এখনো এই প্রকল্পের অনেক বিষয় পরীক্ষাধীন রয়েছে” । তিনি আরও বলেন – “বর্তমানে গবেষণার অধীনে থাকা জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যবর্তী শুশিমা দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশের অংশের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করার মাধ্যমে তাদের প্রকল্পের অনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন” ।
এই প্রকল্পের আওতায় পৃথিবীর সমগ্র সমুদ্র পৃষ্ঠকে ৫ টি প্রধান অংশে ভাগকরা হবে। প্রতি অংশ এক বছরে প্লাস্টিকমুক্ত করা হবে।
বোয়ান স্লেটের প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সামুদ্রিক জল এবং সূর্যের রশ্মির সাহায্যে পরিচালনা করা যাবে । সে কারনে এই প্রকল্পের খরচ কম হবে।



সমুদ্র পরিষ্কার প্রকল্পের প্রযুক্তি বিশ্লেষণঃ

এই প্রকল্পটি এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে তাতে ২০০০ মিটার (৬,৫৬১ ফুট ) দীর্ঘের একটা ফাঁদ ব্যাবহার করা হবে যা কিনা আজ পর্যন্ত সমুদ্রে ব্যাবহার করা যেকোন ফাঁদ অপেক্ষা অনেক বড় । এই ফাঁদ সাগরে ভাসমান থাকবে একটি সামুদ্রিক যানের সাহায্যে এবং প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য সে তার নিজের দিকে আকর্ষণ করবে । এই রকম প্রায় ৫০ টি যান প্রথম ধাপে কাজ শুরু করবে যা প্রায় ৩৫,০০,০০০ কি.মি. ২ ( ১৩৫১৩৫৭ মাইল ২)সমুদ্র পৃষ্ঠ প্লাস্টিক মুক্ত করবে ।




সাগরে ভাসমান এই যান একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করা হবে এবং তার সাথে যুক্ত ২০০০ মিটার ফাঁদটি একটি নির্দিষ্ট রেডিয়াস বরাবর ঘুরতে থাকবে । ফাঁদের সাথে যুক্ত থাকবে বর্জ্য সংগ্রহ করার থলি । তবে এই থলি বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি যার ভিতর কোন প্রকার প্রাণী আটকাবেনা।


সর্বমোট খরচঃ

এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ৫ বছর । বোয়ান স্লেট সংবাদ সম্মেলনে জানান তার এই প্রকল্পের পিছনে প্রতি বছর খরচ হবে মাত্র ৩৯ হাজার ডলার যা কিনা এখন পর্যন্ত প্রস্তাবিত সমুদ্রের পৃষ্ঠ পরিষ্কার করার যেকোন প্রকল্প থেকে অনেক কম । স্লেট আরও জানান , প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তির পরীক্ষা বাবদ তা প্রয়োগের আগ পর্যন্ত সর্বমোট খরচ হবে ৮৫ হাজার ডলার । তবে এই টাকার অধিকাংশই তিনি বিভিন্ন দাতাসংস্থার নিকট থেকে সংগ্রহ করা শুরু করে দিয়েছেন ।


নতুন নতুন প্রযুক্তি অথবা প্রকল্প সম্পর্কে আমার জানার আগ্রহটা বরাবরই বেশি । পৃথিবী অনেকদূর এগিয়ে গেছে , আমরা কেন পিছনে থাকবো । আসুন , আমরাও ভাবি- চিন্তা করি । ভাবতে পয়সা লাগেনা । আর এই চিন্তাকে কাজে লাগানোর সুযোগ ?? সুযোগ যে কোন সময় চলে আসবে । শুধু অপেক্ষা করুন আর আশেপাশে চোখ রাখুন ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.