![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু বলার নাই।
রমজান মাস চলছে । তাই আমরা মোটামুটি সবাই অন্তত এই এক মাসে নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়ার চেষ্টা করি । কিছু পুণ্য- সওয়াব লাভের আসায় মসজিদে এসে যদি পাপ নিয়ে যাই , তাহলে কি হবে? এই সামান্য বিষয়গুলো মাথায় থাকলে , আমরা অনেক পাপ থেকে বেঁচে থাকতে পারবো ইনশাআল্লাহ ।
নামাজ আদায়ের নিয়ম , ফরয শর্ত অথবা সূরা পড়া আমরা ছোট বেলা থেকেই শিখে আসছি । এইসব বিষয় আমরা সবাই কম বেশি জানি । তাই আজ এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবো না ।
নামাজের আদায়ের আগে, পরে এবং আদায়ের সময় কিছু কমন মিস্টেক যা আমরা জেনেও মনের ভুলে করি । অনেকেই এই ভুল গুলোকে ভুল বলে জানেন না , অনেকেই আবার জেনেও মানেন না। এই সামান্য কথা গুলো না মানার কারনে আমাদের কি ক্ষতি হচ্ছে আমরা তা কল্পনাও করতে পারি না।
এই ধরনের কিছু ভুল নিন্মে দেয়া হলঃ
তাড়াহুড়া করে অজু করা উচিত নয়:
অজুর ফরজ চারটি। মুখমন্ডল ধৌত করা, উভয় হাত কনুইসহ ধোঁয়া, মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসেহ করা এবং উভয় পা টাখনুসহ ধোয়া। এগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। আমাদের অনেকেই নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় খুব তাড়াতাড়ি করে অজু করি । এইটা উচিত না। হাত-পা, মুখমন্ডলের নির্দিষ্ট স্থানে পানি পৌঁছাতে হবে। কোনো জায়গা শুকনো থাকলে অজু হবে না। তাই তাড়াহুড়া করে অজু না করা ভালো।
অজু সম্পর্কে একটি ছোট্ট আমলঃ অজু শেষে কালেমা শাহাদাত পড়া যেতে পারে। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু শেষে কালেমা শাহাদাত পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হয়। সে ইচ্ছা করলে এর যে কোনো দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে।’ -মুসলিম শরি
ছানা পড়া নিয়ে বিভ্রান্তি:
অনেকেই ভাবেন ইমামকে রুকুতে পেলে ছানা পড়তে হবে কি না- বিষয়টি নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগেন। বস্তুত ছানা পড়া সুন্নত। নামাজে নিয়ত বাঁধার পর প্রথম কাজ হলো ছানা পড়া। কেউ একা পড়–ক বা জামাতে নামাজ পড়–ক, উভয় অবস্থায় ছানা পড়তে হয়। ইমাম আস্তে কেরাত পড়া অবস্থায় ইমামের সঙ্গে নিয়ত বেঁধে ছানা পড়তে পারে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। আর ইমাম জোরে কেরাত পড়া অবস্থায় কেরাত শুনা ফরজ বিধায় তখন ছানা পড়া নিষেধ। কিন্তু এক্ষেত্রে অনেকের যে ভুলটা হয়ে থাকে তা হলো, ইমামকে যদি রুকুতে পায় তাহলে প্রথমে তাকবির বলে হাত বাঁধে তারপর দ্রুত ছানা পড়ে রুকুতে যায়। অনেক সময় ছানা পড়তে পড়তে ইমামের রুকু শেষ হয়ে যায় ফলে ওই রাকাত ছুটে যায়। এটা ঠিক নয়। এ অবস্থায় ছানা পড়তে হবে না, হাতও বাঁধতে হবে না।
নিয়ম হলো, প্রথমে দাঁড়ানো অবস্থায় দু’হাত তুলে তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) বলে হাত ছেড়ে দেবে, তারপর দাঁড়ানো থেকে তাকবির বলে রুকুতে যাবে। এক্ষেত্রে অনেকে আরেকটি ভুল করে থাকেন সেটা হলো, ইমাম রুকুতে চলে গেছে দেখে দ্রুত রুকুতে শরিক হয়ে রাকাত ধরা দরকার, তা না করে এ সময়ও আরবিতে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়তে থাকে। ফলে ওই রাকাত পায় না। এটা আরও বড় ভুল। নিয়তের বিষয়ে আলেমরা বলেন, নিয়ত অর্থ সংকল্প করা, যা মনে মনে হলেই চলবে। উচ্চারণ করে নিয়ত পড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। -রদ্দুল মুহতার: ১/৪৮৮
অতএব ইমামকে রুকুতে পেতে হলে কয়েকটি কাজ করা জরুরি। প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে একবার আল্লাহু আকবার উচ্চারণ করবে। তারপর হাত না বেঁধে সোজা ছেড়ে দিবে। অতপর আরেকটি তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলতে বলতে রুকুতে যাবে। সারকথা এই যে, এখানে তাকবির দু’টি। প্রথমটি তাকবিরে তাহরিমা, যা নামাজের প্রথম কাজ। এই তাকবির না বললে নামাজ হবে না। আর দ্বিতীয়টি রুকুর তাকবির। এই তাকবির বলা সুন্নত। কেউ যদি রুকুতে ইমামের সাথে শামিল হতে চায় তাহলে তার জন্য নিয়ম মাফিক এই দু’টি তাকবির আদায় করা উচিত। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে রুকুর তাকবির তো ছাড়া যেতে পারে, কিন্তু স্থির দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) অবশ্যই বলতে হবে। এ বিষয়ে অধিক তাড়াহুড়া বা অবহেলা করলে নামাজ শুদ্ধ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। -ফতোয়া শামি: ১/৪৪২-৪৫২, আল বাহরুর রায়েক: ২/২৭৬
নামাজের জন্য দৌঁড়ে যাওয়া ঠিক নয়:
অনেকেই নামাজের জন্য মসজিদে দৌঁড়ে যান। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্রুত হাঁটা দৌঁড়ের কাছাকাছি বা দৌঁড় দিয়েও অনেকে নামাজে পৌঁছে হাঁপাতে হাঁপাতে কাতারে দাঁড়িয়ে যান। এই হাঁপানো অবস্থাতেই এক রাকাতের মতো চলে যায়। এটা আল্লাহর রাসূল (সা.) পছন্দ করেননি। তিনি নিষেধ করেছেন। আপনি হয় সময় নিয়ে নামাজ পড়তে যাবেন অথবা ধিরস্থির ও শান্তভাবে হেঁটে গিয়ে যতটুকু জামাতে শরিক হতে পারেন হবেন এবং বাকি নামাজ নিজে শেষ করবেন।
হজরত আবু কাতাদা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার আমরা নবী (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম, নামাজরত অবস্থায় তিনি লোকের ছুটাছুটির শব্দ অনুভব করলেন। নামাজা শেষে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কি করছিলে? তারা আরজ করল, ‘আমরা নামাজের জন্য তাড়াতাড়ি আসছিলাম। আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, এরূপ কখনো করো না। শান্তিশৃঙ্খলা ও ধীরস্থিরভাবে নামাজের জন্য আসবে, তাতে যে কয় রাকাত ইমামের সঙ্গে পাবে পড়ে নেবে, আর যা ছুটে যায় তা ইমামের নামাজের পর পুরা করে নেবে।’ -বোখারি শরীফ, খ--১, হাদিস নম্বর- ৩৮৭
ফজরের সুন্নতে তাড়াহুড়া করা নিষেধঃ
ফজরের নামাজের জামাতে অংশ নেয়ার জন্য ফজরের ফরজের আগের সুন্নত নামাজ সংক্ষিপ্তভাবে শেষ করে জামাতে ইমামের সঙ্গে দাঁড়ানোর চিত্র হরহামেশাই দেখা যায়। এমন অযাচিত তাড়াহুড়া নিষেধ, এমন অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে হাদিসে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং সেটাই মান্য। সেই নির্দেশনা হলো, যদি কেউ ফজরের জামাতের আগে মসজিদে যেতে পারেন তাহলে প্রথমে সুন্নত দুই রাকাত পড়ে জামাতের জন্য অপেক্ষা করবেন। আর যদি দেরি হয়ে যায় এবং জামাত শুরু হয়ে যায় তাহলে প্রথমে মসজিদে গিয়ে ইমামের সঙ্গে জামাতে শামিল হতে হবে এবং জামাতের পর বাকি নামাজ (যদি থাকে) শেষ করতে হবে। এবার আপনি অপেক্ষা করবেন সূর্য উদয়ের জন্য এবং সূর্য উদয়ের পর নামাজের নিষিদ্ধ সময় (সাধারণত সূর্য উদয়ের পর ২০মিনিট) পার হওয়ার পর আপনি ফজরের সুন্নত নামাজ আদায় করবেন। মধ্যবর্তী যে সময় সে সময় আপনি হয় মসজিদে বসে অপেক্ষা করতে পারেন অথবা ঘরেও ফিরে আসতে পারেন এবং সময় হওয়ার পরই আপনি ফজরের সুন্নত আদায় করে নেবেন। এটাই আল্লাহর রাসূল (সা.) নির্দেশিত নিয়ম।
কাতার পূর্ণ না করে নতুন কাতার করা উচিত নয়:
সামনের কাতারে দাঁড়ানোর জায়গা আছে। সে জায়গায় না দাঁড়িয়ে অনেকেই নতুন কাতার শুরু করেন। ফলে কাতারের ডান কিংবা বাম দিক অপূর্ণ থাকে। মুসল্লি থাকা সত্ত্বেও কাতার পূর্ণ হয় না। এভাবে কাতার অপূর্ণ রাখা ঠিক নয়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কাতার মিলিত করে আল্লাহ তার সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে দেন, আর যে ব্যক্তি কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেন।’ -নাসায়ি
নামাজীর সামনে দিয়ে যাওয়া পাপ:
ফরজ নামাজের পর অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়েন মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য। জুমার পর তো রীতিমতো হুড়াহুড়ি লেগে যায়। ফরজের পর অনেকেই সুন্নত পড়তে দাঁড়িয়ে যান। তাদের সামনে দিয়ে অনেকেই অবাধে চলে যান। এটা ঠিক না। নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়া সমীচীন নয়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নামাজের সম্মুখ দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত এতে কী পরিমাণ পাপ রয়েছে, তবে তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার চেয়ে ৪০ বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম হতো। হাদিসের বর্ণনাকারী আবু নসর বলেন, আমার মনে পড়ে না ৪০ দিন না ৪০ মাস, না ৪০ বছর বলেছেন।’ -সহিহ বোখারি
পোষ্টের অনেক কিছুই সংগ্রহীত । আমার মনে হল সকলের এই কথাগুলো জানা দরকার। তাই নিজের মতনকরে গুছিয়ে দিলাম।
পোস্ট পরে যদি ভাল লাগে আমার জন্য দোয়া করবেন ।
২২ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭
হাইড্রোজেন বলেছেন: আপনাকেও thanks
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:০১
তানভীরএফওয়ান বলেছেন: many thanks