![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য মেনে নেয়া আর ভুলকে স্বীকার করা, সৎ সাহসের উত্তম পরিচায়ক।
আস্-সালামু আলাইকুম, আমি জানি এই দোয়াটি ইতি পূর্বে পোষ্ট করা হয়েছে, তবুও পুনঃ দিলাম যাতে করে বেশি বেশি চোখে পড়ে, কেননা বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
"ইস্তেখারা বা কোন বিষয়ে আল্লাহতালার নিকট কল্যাণ চাওয়া।(ইস্তেখারা করার পদ্ধতী)
ইস্তেখারা শব্দের অর্থ :
ইস্তেখারা শব্দটি আরবী। আভিধানিক অর্থ, কোন কোন বিষয়ে কল্যাণ চাওয়া।
ইসলামী পরিভাষায় :
দুই রাকাত সালাত ও বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর তায়ালার নিকট পছন্দনীয় বিষয়ে মন ধাবিত হওয়ার জন্য আশা করা। অর্থাৎ দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনটি অধিক কল্যাণকর হবে এ ব্যাপারে আল্লাহর নিকট দু রাকায়াত সালাত ও ইস্তিখারার দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার নামই ইস্তেখারা।
[ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী শরহু সহীহিল বুখারী]
ইস্তেখারা করার হুকুম :
এটি সুন্নাত। যা সহীহ বুখারীর হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
ইস্তিখারা কখন করতে হয়?
মানুষ বিভিন্ন সময় একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটিকে গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দ্বিধা-দন্ধে পড়ে যায়। কারণ, কোথায় তার কল্যাণ নিহীত আছে সে ব্যাপারে কারো জ্ঞান নাই। তাই সঠিক সিদ্ধান্তে উপণিত হওয়ার জন্য আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তা, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত সকল বিষয়ে যার সম্যক জ্ঞান আছে, যার হাতে সকল ভাল-মন্দের চাবী-কাঠি সেই মহান আল্লাহর তায়ালার নিকট উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করতে হয়। যেন তিনি তার মনের সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের উপর স্থীর করে দেন যা তার জন্য উপকারী। যার ফলে তাকে পরবর্তীতে আফসোস করতে না হয়।
যেমন: বিয়ে, চাকরী, সফর ইত্যাদি বিষয়ে ইস্তেখারা করতে হয়।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন:
“সে ব্যক্তি অনুতপ্ত হবে না যে স্রষ্টার নিকট ইস্তিখারা করে এবং মানুষের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার উপর অটল থাকে।”
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“আর তুমি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মানুষের সাথে পরমর্শ কর। অত:পর আল্লাহর উপর ভরসা করে (সিদ্ধান্তে অটল থাক)। আল্লাহ ভরসাকারীদেরকে পছন্দ করেন।“
[সূরা আলে ইমরান: ১৫৯]
কাতাদা(রহঃ) বলেন:
“মানুষ যখন আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরষ্পরে পরামর্শ করে তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সব চেয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার তওফীক দেন।”
ইমাম নওবী রহ. বলেন:
“আল্লাহ তায়ালার নিকট ইস্তেখারা করার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ভাল লোকদের পরামর্শ গ্রহণ করা দরকার। কারণ, মানুষের জ্ঞান-গরীমা অপূর্ণ। সৃষ্টিগতভাবে সে দূর্বল। তাই যখন তার সামনে একাধিক বিষয় উপস্থিত হয় তখন কি করবে না করবে, বা কি সিদ্ধান্ত নিবে তাতে দ্বিধায় পড়ে যায়।”
ইস্তিখারা করার নিয়ম:
১) সালাতের ওযুর মত করে ওযু করতে হয়।
২) ইস্তিখারার উদ্দেশ্যে দু রাকায়াত সালাত পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে সুন্নত হল, প্রথম রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পর কুল আইয়োহাল কাফিরূন এবং দ্বিতীয় রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পর কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ পড়া।
৩) নামাযের সালাম ফিরিয়ে অথবা সালাম ফিরানোর ঠিক পূর্বমুহুর্তে আল্লাহ তায়ালা বড়ত্ব, ও মর্যাদার কথা মনে জাগ্রত করে একান্ত বিনয় ও নম্রতা সহকারে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দুরূদ পেশ করার পর নিচের দুয়াটি পাঠ করা:
اَللهم إنِّي أسْتَخِيرُكَ اَللهم إنِّي أسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْألُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيْمِ، فَإنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أعْلَمُ وَأنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اَللهم إنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أنَّ هَذَا الأمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أمْرِي عَاجِلِ أمْرِي وَآجِلِهِ ؛ فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي عَاجِلِ أمْرِي وَآجِلِهِ ؛ فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أرْضِنِي بِه
হযরত জাবের (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) প্রত্যেক কাজে আমাদের ইস্তিখরা করা সম্পর্কে এমন ভাবে শিক্ষা দিতেন যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার করবে তখন সে দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, এরপর সে পাঠ করবে:
–আল্লাহুম্মা ইন্নী আস্তাখিরুকা বি ইলমিকা
ওয়া আস্তাকদিরুকা বি কুদরাতিকা
ওয়া আসআলুকা মিনফাদ্বলিকাল আযীম,
ফা ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু,
ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু
ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ূব।
আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু
আন্না হাযালআমরা (এখানে নিজের কাজের কথা উল্লেখ করবেন)
খাইরুল্লি ফি দ্বীনী ওয়া মাআশীয়ী
ওয়া আক্বিবাতি আমরী
(অথবা বলবে: আ’ জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি)
ফাকদিরহু লি ওয়া ইয়াসসিরহু লী
সুম্মা বারিকলী ফিহি
ওয়া ইন কুনতা তা’লামু
আন্না হাযাল আমরা (এখানে নিজের কাজের কথা উল্লেখ করবেন)
শাররুল্লী ফী দীনী ওয়া মাআশীয়ী
ওয়াআক্বিবাতি আমরী
(অথবা বলবে: আ জিলি আমরী ওয়া আজিলীহি)
ফাসরিফহু আন্নিওয়াসরীফনি আনহু
ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা
সুম্মা আরদ্বিনী বিহি।
দু'আর অর্থ এমন:
হে আ্ল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণ চাই –আপনার ইলমের সাহায্যে।
আপনার কাছে শক্তি কামনা করি আপনার কুদরতের সাহায্যে।
আপনার কাছে অনুগ্রহ চাই আপনার মহা অনুগ্রহ থেকে।
আপনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী –আমার কোন ক্ষমতা নাই।
আপনি সর্বজ্ঞ – আমি কিছুই জানি না।
আপনি সকল গোপন বিষয় পূর্ণ অবগত।
“হে আল্লাহ, আপনার ইলমে এ কাজ (এখানে নিজের উদ্দেশ্যপূর্ণ জিনিসের কথা উল্লেখ করবেন) আমার দ্বীন আমার জীবন-জীবিকা ও কর্মফলের দিক থেকে (বা তিনি নিম্নোক্ত শব্দগুলো বলেছিলেন –এ কাজ দুনিয়া ও আখিরাতের দিক থেকে ভাল হয়) তবে তা আমাকে করার শক্তি দান করুন।
পক্ষান্তরে আপনার ইলমে এ কাজ (এখানে নিজের উদ্দেশ্যপূর্ণ জিনিসের কথা উল্লেখ করবেন) যদি আমার দ্বীন আমার জীবন-জীবিকা ও কর্মফলের দিক থেকে (অথবা বলেছিলেন, দুনিয়া ও পরকালের দিক থেকে মন্দ হয়) তবে আমার ধ্যান-কল্পনা এ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিন। তার খেয়াল আমার অন্তর থেকে দূরীভূত করে দিন।
আর আমার জন্যে যেখানেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে এর ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে এরই উপর সন্তুষ্ট করে দিন । (এরপর নিজের প্রয়োজনের কথা ব্যক্ত করবেন।)"
[বুখারী, ২য় খন্ড, হাদিস নং: ২৬৩ ]
©somewhere in net ltd.