নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন অ্যামেচারের কিছু কথা...

মু.ই.মা ইমন

বাংলাদেশী হওয়ার চেষ্টায় আছি

মু.ই.মা ইমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারেন্ট - ভূতুর অত্যাচারে ...

১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪২

আমাদের মেসে একটা ভূত থাকে ।



'কারেন্ট ভূতু ' ।



বিদ্যুৎ প্রবাহ এবং বিদ্যুৎ নির্ভর সব যন্ত্রপাতির সাথে এর আঁতাত আছে ।

মেসের প্রোপাইটর আমাদের রক্ত চুষে খেয়ে BMW কিনতে যেয়েও যে কারণে কিনতে পারল না তার পেছনে আছে এই ভূতের অদৃশ্য হাত ।

অবশ্য ভূতই অদৃশ্য ... আর হাত !



কারণ প্রতিদিনই এখানে ওখানে বিকট শব্দে ফেটে যায় বাল্ব ।

অথবা, কোন না কোন রুম থেকে কেউ না কেউ মুখ দিয়ে পবিত্র(!) শব্দাবলী উচ্চারণ করতে করতে বেরিয়ে আসে ।

ঠিকমত শুনতে চেষ্টা করলে এতটুকু বোঝা যায় , " 'ইয়ে'র ফ্যান আবার নষ্ট হইছে :@ "



এই সেদিন বাথরুমে গিয়ে লাইটের সুইচটা দিতেই 'বুম' জাতীয় একটা শব্দের পর এলাকা ডুবে গেল অন্ধকারে ।

'আই ডিড নাথিং ... আই ডিড নাথিং...' বিড় বিড় করতে করতে বাথরুম ত্যাগ করলাম ।



ভূতুটা আরেকটা কাজ করে ।

টূক করে কারেন্ট গিলে ফেলে ।

তারপর পনের মিনিট থম মেরে বসে থাকে ।

আবার বমি করে কারেন্ট দিয়ে দেয় ।



আমরা ১৫ মিনিটে কারেন্ট ফিরে পেয়ে খুশি হয়ে আবারও PC অন করি ।

আবার ১৫ মিনিটের মধ্যে ভুতুটা টুপ করে গিলে নেয় কারেন্ট ...

তারপর বমি করেও আবার ১৫ মিনিট পর ।



ওকে সামনে পেলে জানতে চাইতাম , 'ইয়ার্কি নাকি???'



আমার মনের কথা টের পেয়ে গেছে ভূতের বাচ্চা !

তাই এখন আমার রুমে এসে বসে থাকে সারাদিন ।

তাই বলে গোটা মেসে তান্ডব চালাতে ওর সমস্যা হয় না ।

ওর হাত অনেক লম্বা ।



প্রথম শুরু হল এভাবে - রুয়েট থেকে এসে রুমে ঢুকে ফ্যানটা চালালাম ।

ফ্যান বাবাজি সিম্পল হারমোনিক অসসিলেশন দেওয়ার কথা মনে হয় বেমালুম ভুলে বসে আছেন ...

আর দিবেই বা কিভাবে ?

কারেন্ট ভুতু ওর তিন হাত দিয়ে তিনটা ব্লেড ধরে ঝুলে আছে না !



ওটাকে ভয় দেখাতে 6'4'' হাইটের সদ্যবহার করলাম ।

আমিও তো মিনি ভূতু !

জোরে একটা ব্লেডে ধাক্কা দিতেই কারেন্ট ভুতু পড়ে যেয়ে 'আউক' জাতীয় শব্দ করল , আর সেই সাথে ঘুরতে শুরু করল ফ্যান ।



ভূতরা এতটা প্রতিশোধপরায়ণ হয় কে জানত !!

তার ঠিক তিনদিন পরের কথা ।



সকাল আটটায় কেমিস্ট্রি ল্যাব ছিল ।

আমি আবার ভ্যাম্পায়ার টাইপের প্রাণী , ঘুম ভাঙ্গে না কিছুতেই !।

তাই PC তে একটা অ্যালার্ম ক্লক ডাউনলোড করে 100% ভলিউমে সাউন্ড দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি ।



ফুল ভলিউম - তাই সাউন্ডবক্সের ইসরাফিল শিঙ্গা টাইপ শব্দের ধাক্কায় প্রায়ই ভোরের দিকে তালাইমারী মোড়ে র‍্যাব আর পুলিশরা বোমা খুঁজে ।

সেদিনও সব ঠিকই ছিল -

তার আগের কয়েক দিন দৈনিক ১ ঘন্টা করে ঘুমানোয় সাউন্ড বক্স রেখেছিলাম রুমের দূরবর্তী কর্ণারে ।

যাতে উঠে ওটাকে বন্ধ করা লাগে, বিছানা থেকে ধরা সম্ভব না হয় ।



ঘুম ভাঙল ০৯:৫০ এ ।

মনিটরে দেখাচ্ছে অ্যালার্ম এখনও দিচ্ছে আমার অ্যালার্ম ক্লক ।

সাউন্ড বক্সের কাছে গিয়ে দেখি পাওয়ার অফ করা !!

অথচ রাতে ওটার পাওয়ার সুইচের হাল্কা আলো দেখতে দেখতেই ঘুমিয়েছিলাম ।



দাঁত কিড়মিড় করলাম ।

কারেন্ট ভূতু !!!



জান-প্রাণ নিয়ে ছুটে বেড়িয়ে পড়লাম মরা ল্যাব ধরতে ।

ভাবলাম ফিরে এসে একহাত নেব ভূতের বাচ্চাকে ।



কিন্তু - ওই যে বলেছিলাম ভূতুটা মনের কথা বুঝতে পারে!

১.২০ এ ফিরে দেখলাম , আমার রুমের মেইন সুইচ [প্রতিটা রুমে একটা করে মেইন সুইচ থাকে] গলে গেছে !

সুতরাং ভেতরে বিদ্যুত প্রবাহ পাওয়ার প্রশ্নই আসে না !



পুরো দুইটা দিন থাকলাম কারেন্ট ছাড়া ...

সময়ে অসময়ে শুনতে পাই কারেন্ট ভূতুর বিচ্ছিরি হাসি ।

কি খুশি ওইটা !!



মনে মনে বললাম , 'তোমার সাথে যুদ্ধের শখ মিটে গেছে বাবা । ভিক্ষা চাই না , এখন কুত্তাটা সামলান !!'



সন্ধি করে কাজ হল কিছু ??

উহু !

কিসের কি !



ঘটনা আরও একটু বাকি ছিল ।

মাঝে ১০ দিন বন্ধ পেয়েই 'উড়াল দিলাম আকাশে' আই মিন, দাদুর বাড়িতে ।

কোথাও ২৪ ঘন্টার বেশি সময়ের জন্য বের হলে আমি সব সুইচ বন্ধ করে যাই ।

তারপর , সকেট থেকে মাল্টিপ্লাগের প্লাগটাও খুলে রাখি ।

যাতে কোন ভাবেই কারেন্ট ওভারফ্লো করলে আমার PCর ক্ষতি না হয় ।



ফিরে এসে দেখলাম PC নষ্ট ।

কেনার পর মাত্র ৬ মাস হল ।

যখন ওইটাকে বন্ধ করে রেখে গেলাম তখন এই কাহিনী ?



নিয়ে গেলাম নিউমার্কেট ।

ঠিক করে বলল 'শর্ট হয়ে গেছিল' ।



বাহ ... ঠিকমত বন্ধ করে পাওয়ার সাপ্লাই খুলে রেখে গেলাম ।

ওটাকে ছোঁয়াই হল না ।

শর্ট করে কি করে ??



কারেন্ট ভূতু !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!



তবে ভূতুটা রসিক আছে ।

কাল রাতে এক ফ্রেন্ডের রুমে ছিলাম ।

ও সিভিলের ।

আমাকে বলল, ‘তোদের মেকানিক্যালে মেয়ে কয়জন?’

আমি বললাম , ‘আমাদের মেকানিক্যালের মেয়ে _ ’

এতটুকু উচ্চারণ করতেই কারেন্ট গেল ।

বললাম, ‘আর জীবনে মেকানিক্যালের মেয়েদের নিয়ে কিছুই বলব না, কারেন্ট আয় ভাই... !’

অরন্যে রোদন ...

আঘ ঘন্টা পর –

চারপাশ ঘুটঘুটে অন্ধকার , আড্ডা চলছিল এই সময় দরজায় ‘টক টক’



অস্বাভাবিক একটা নকিং । দরজা খুলে দেখি ‘কোনখানে জনমানুষ নাই’ [-রবীন্দ্রনাথ] ।

আবার আড্ডা দিচ্ছি এই সময় আরও জোরে ‘টক টক’ ।

বিরক্ত হয়ে বললাম , ‘ভূত নাকি!!’

এই কথা মুখ দিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে কারেন্ট চলে আসল !!



মানে মেয়েদের নাম নিলে এলাকা অন্ধকার হতে পারে আবার ভূতের নাম নিলে আলোকিত !

উল্টোটা হওয়ার কথা না ? ;)





গতান্তর না দেখে সামুতে শেয়ার করছি এখন ...

কারেন্ট ভূতুকে মারার কোন উপায় কেউ জানলে বলবেন প্লিজ ।

বড্ড জ্বালাচ্ছে :( :@



[এইটুকু লেখে পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম আধ ঘন্টা ধরে ।

মডেমের সফটওয়্যার আর ওপেন হয় না … কারেন্ট ভূতু !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! :@ :@ ]



[প্রতিটা ঘটনাই সত্য ।এগুলোর পিছনে কারণ বের করতে গিয়ে কারেন্ট ভূতুর উপস্থিতির সম্ভাবনা মাথায় আসল , তাই লেখে ফেললাম । তবে ঘটনাচক্রে আমিও মজা পাইসি - অস্বীকার করার উপায় নেই :) ]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.