![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনমনের প্রেক্ষাপটে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাস দমন অভিযানে নিযুক্ত করা হয়। প্রথম রাতেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসামী ধরা পড়ে। আর যারা ধরা পড়েনি তারা রাতের অন্ধকারেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রায় তিন মাস ধরে চলা সেই অভিযানে সরকারদলীয়, বিরোধীদলীয় কোন সন্ত্রাসীই না পালাতে পারলে রেহাই পায়নি। সাধারন মানুষ অবশেষে শান্তির দেখা পায়। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সন্ত্রাসী/অভিযুক্ত ব্যাক্তি সেনা হেফাজতে মৃত্যুবরন করার ফলে অভিযানের সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ফলে সুশীল সমাজের অনকেই সোচ্চার হয়ে ওঠেন। পরবর্তীকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হয় এবং পুলিশের বাছাই করা বেশ কিছু সদস্যকে (আনুমানিক ৮৫ জন) ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন কর্তৃক প্রশিক্ষন দিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন টিম বা র্যাট গঠন করা হয়। কিন্তু দেশের জনসংখ্যার তুলনায় র্যাট এর আকার অপ্রতুল বলে বিবেচিত হয়।
এর প্রেক্ষিতে আর্মড পুলিশ আইন সংশোধন করে র্যাব গঠন করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুসারে র্যাব এর ৪০% সদস্য পুলিশ, ৪০% সদস্য সশস্ত্র বাহিনী এবং ২০% সদস্য অন্যান্য বাহিনী থেকে নেওয়া হয়। র্যাব প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে সেনাবাহিনী থেকে অত্যন্ত মেধাবী ও পেশাদার অফিসারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা অতি ক্ষিপ্রতা ও সাফল্যের সাথে চরমপন্থী, জংগী ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে অংশ নিতে থাকেন। যে দক্ষিন-পশ্চিমান্চলে (বানান সঠিক করে টাইপ করতে পারছি না বলে দুঃখিত) চরমপন্থীদের কারনে মানুষ রাতে বাড়ী ফিরতে ভয় পেত, সেখানে র্যাবের অভিযানে জনমনে স্বস্তি নেমে আসে। হঠাৎ উথ্থিত জংগী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেও র্যাব কার্যকর অভিযান চালায় এবং জংগী কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। একই ঘটনা ঘটে চরমপন্থীদের ক্ষেত্রেও। তবে এসময়ে র্যাবের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ার নামক বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভুযোগ ওঠায় মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজ ব্যাপক সমালোচনা করে। (ক্রসফায়ার নিয়ে একটি পৃথক পোস্ট লেখার সম্ভাবনা রয়েছে)।
সময়ের পরিক্রমায় একসময়ে র্যাবে সশস্ত্র বাহিনীর অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্বের বিবেচনায় ছাড় দেওয়া হয়। সশস্ত্র বাহিনীকে তো নিজেদের সংগঠনকে পেশাদারভাবে দাঁড় করাতে হবে। (এছাড়া অন্য কারণ থাকতে পারে)।
২০১১ সালে চট্টগ্রামে দরবার শরীফ লুটের ঘটনায় র্যাবের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মত বড় ধরনের অভিযোগ ওঠে ( উল্লেখ্য যে এখানে মূল অভিযুক্তগণ সশস্ত্র বাহিনীর অফিসার)। এরপর র্যাবের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ ওঠে যা মিডিয়ায় আসুক বা না আসুক, সশস্ত্র বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা এসব কারনে চাকুরীচ্যুত হন। সম্প্রতি নারায়নগন্জ্ঞে ৭ খুনের ঘটনার পর র্যাবের বিরুদ্ধে আলোড়ন সৃষ্টিকারী অভিযোগ ওঠে ( এ বিষয়ে আমার " সময় টিভির দুপুর ২টার খবরের প্রতিবেদন: চাক্ষুস স্বাক্ষী, গণশুনানীর স্বাক্ষী- ঘাপলা নেই তো? " এবং " নারায়নগন্জ্ঞের ৭ জন অপহরন, হত্যা ও পরবর্তী ঘটনাবলী সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন " শিরোনামে ২টি লেখা আছে)। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাবের সাবেক ৩ অফিসার (সশস্ত্র বাহিনীর) গ্রেফতার হন এবং পুলিশ রিমান্ডে যান।
এরই মধ্যে ডিএমপির ওয়েবসাইটে র্যাবের মেজর পদবীর অফিসার সহ ১৮ সদস্যকে সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা নিয়ে নজিরবিহীন একটি খবর প্রকাশ করা হয় (ডিএমপি ওয়েবসাইটের এ ধরনের খবর প্রকাশের ক্ষমতা আছে কি না তা প্রশ্নবিদ্ধ)। এখানে দুটি জিনিস আসে। প্রথমে র্যাবের কোন সদস্য ডিএমপির কাছে এই তথ্য দিয়েছে এবং দ্বিতীয়ত ডিএমপি সেই খবর প্রকাশ করেছে। দুটি বিষয়ই র্যাবের ব্যাপারে পুলিশের অস্বস্তি প্রকাশ করছে কি না তা আলোচনা সাপেক্ষ। কেন জানি মনে হচ্ছে পুলিশও র্যাবকে সহ্য করতে পারছে না।
যাই হোক, নারায়নগন্জ্ঞের ঘটনার পর র্যাব বিলুপ্ত করার বিষয়ে ব্যাপক দাবী ওঠে। অনেকে বিলুপ্ত না করে বরং সংস্কার করার কথা বলেন। আমারও মনে হয় সরকারের এ বিষয়টি ভাবার সময় এসেছে। বিলুপ্ত করা হলে তো বিলুপ্ত করা হলোই। ব্যাস, খেল খতম, পয়সা হজম। কিন্তু বিলুপ্ত না করে সংস্কার করলে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
প্রথমেই র্যাব থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া যেতে পারে। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কৈশোর-যৌবনের সন্ধিলগ্নে কাদামাটির মত অবস্থা থেকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে, রোদে পুড়িয়ে যোদ্ধায় পরিনত করা হয় যাদের মূলনীতি "এক বুলেট, এক শত্রু""। অর্থাৎ সামরিক বাহিনীর মূল প্রশিক্ষন হলো শত্রু হত্যা। স্বাভাবিকভাবেই তাদের বলপ্রয়োগ প্রানঘাতী ধরনের হওয়াটাই স্বাভাবিক। পুলিশি কার্যক্রমের মূলনীতি কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। পুলিশের লক্ষ্য থাকে অপরাধীদের জীবিত ধরে আইনের আওতায় আনা (বাস্তব নিয়ে কোন মন্তব্য করবো না)। সুতরাং, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে পুলিশী কার্যক্রম চালানো যথেষ্ট কঠিন এবং তা কতটুকু উচিৎ তা প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া, মনে হচ্ছে পুলিশ র্যাবকে ভালো চোখে দেখছে না। এটা মূলত র্যাবে সামরিক বাহিনীর সদস্য থাকায় তাদের কিছু অসুবিধা হওয়ার কারনে হতে পারে ( কি অসুবিধা তা নিজে বুঝে নেন)।
র্যাবকে পুলিশ থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র বাহিনী রূপে গড়ে তোলা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পুলিশ থেকে বাছাই করে ভালো সদস্যদের র্যাবে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারা আর কখনো র্যাবে ফেরৎ আসবে না।
র্যাবকে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী, হরতাল দমন ইত্যাদিতে মোতায়েন করা যাবে না। র্যাব শুধুমাত্র ক্রিটিকাল অপারেশন এবং চরমপন্থী-জংগী বিরোধী অপারেশনে নিয়োগ করা যেতে পারে।
র্যাব থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নিলে পুলিশের উপর একটা পজিটিভ চাপও পড়তে পারে। ভালো পুলিশ সদস্যরা তখন নিজেদের যোগ্যতা প্রমানে ভালো কাজ করবে।
আর পুলিশ সদস্যরা তো গত ১০ বছরে র্যাবের কাছ থেকে সামরিক ক্ষিপ্রতার অপারেশন যথেষ্ট শিখেছে। এখন এই দায়িত্বটা পুলিশের ওপরই সমীচীন হবে। অনেক তো হয়েছে। এখন থেকে যার যার কাজ, তাকে তাকেই করতে হবে।
২০ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১২
ইসপাত কঠিন বলেছেন: বিষয়টি পুলিশের জন্য লজ্জাজনক এবং অস্বস্তিকর।
২| ২০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮
াহো বলেছেন:
জিয়ার আমলে অভুত্থ্যান প্রচেষ্টার অজুহাতে সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালত
20 Oct 1977 টাইমস সংবাদপত্র
লন্ডন যুক্তরাজ্য
02 Oct বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের চক্রান্ত
37 মৃত্যুদন্ড কার্যকর ,20 জনের life-term কারাগার
মার্শাল ল ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত 460 জনের বিচার এবং 63 নির্দোষ বলে রায়
তিনটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
1)বিচারবহির্ভূত হত্যা
এ ধরনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছিল ২০০৫ ও ২০০৬ সালে বিএনপির আমলে। ২০০৫-এ ৩৭৭ এবং পরের বছর ৩৬২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তখন ‘ক্রসফায়ার’ নামে পরিচিত
2)অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ
১২ বছরের মধ্যে ২০০২ সালে ১০৪০, ২০০৩ সালে ৮৯৬ জন, ২০০৪ সালে ৮৯৮ জন, ২০০৫ সালে ৭৬৫ জন, ২০০৬ সালে ৭২২ জন, ২০০৭ সালে ৭৭৪ জন, ২০০৮ সালে ৮১৭ জন, ২০০৯ সালে ৮৫৮ জন, ২০১০ সালে ৮৭০ জন, ২০১১ সালে ৭৯২ জন, ২০১২ সালে ৮৫০ জন ও ২০১৩ সালে ৮৭৯ জন অপহরণ, গুম ও নিখোঁজ হয়েছে।
৩)অপরেশন ক্লিন হার্ট( ২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ই জানুয়ারি )
ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে এজন্য তখন ‘যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ই জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে যৌথবাহিনী ‘অপরেশন ক্লিন হার্ট' নামে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালায় ৷ এই অভিযানে হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে এজন্য তখন ‘যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন ২০০৩' পাশ হয়৷
Source
1)Prothom Alo ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৪
2)ITTEFAQ 30 April 2014
২০ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:১৭
ইসপাত কঠিন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের ২য় অংশের তথ্য দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু প্রথম অংশের সাথে এই লেখার কোন অংশের সাথে কি মিল যে আপনার বুদ্ধিজীবি মাথা খুঁজে পেল তা অধিকাংশ ব্লগারের পক্ষ থেকে আমি প্রশ্ন রাখলাম।
৩| ২০ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৮
রাজীব বলেছেন: কোন কিছুর দরকার নেই। তাদেরকে জামাই আদরে রাখা হোক।
বরং বিএনপির সময়েের অপকর্মের জন্য বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যেতে পারে।
২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৯
ইসপাত কঠিন বলেছেন: আপনার ক্ষোভের যথেষ্ট কারন থাকলেও এ ব্যাপারে গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা চলতে পারে।
৪| ২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২০
অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: র্যাব বিলুপ্ত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
যেমন ভাবে রক্ষী বাহিনী বিলুপ্ত হয়েছে তেমনি ভাবে, আপনা আপনি।
প্রকৃতি অনিয়ম সহ্য করে না।
সেনা বাহিনী ভাগ বসানো সহ্য করে না।
২১ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:০৬
ইসপাত কঠিন বলেছেন: হয়ত, হয়ত বা না। দেখা যাক।
৫| ২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
RAB পুলিশেরই একটি অংশ।
আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান এক্ট এর আলোকে র্যাব গঠন করা হয়েছিল।
র্যাব থেকে সামরিক সদস্য বাতিল বা র্যাব বিলুপ্ত করা বোকামি হবে, বরং একে আরো শক্তিশালি করে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে হবে।
একটি সুশৃক্ষল বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ঠিকমত বহাল থাকলে, সঠিক ভাবে মেনে চললে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু এদেশের সামরিক কর্তারা বেশীরভাগ সময় সিভিল বসের কমান্ডে চলতে চায় না।
২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:১১
ইসপাত কঠিন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের শেষাংশের সাথে আমি একসময় একমত ছিলাম। কিন্তু পরে জানতে পারি বাস্তবতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভিন্ন। সামরিক কর্তারা সিভিল বসদের কমান্ডে তুলনামূলক বেশী স্বাচ্ছন্দ অনুভব করেন।
কেন জানেন?
একজন সিভিল বস যে পরিমানে Flexibility দেন এবং উদারতা প্রদর্শন করেন, সামরিক বস সেখানে অত্যন্ত Strict হয়ে থাকেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫
ফা হিম বলেছেন: লজ্জার ব্যাপার এটাই যে পুলিশ থাকা সত্ত্বেহ আরো একটা আলাদা বাহিনী গঠন করতে হয়।