![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না, কারন আমার আমি প্রতিদিনই রং পাল্টায় , ঠিক আকাশের মত একটা জিনিস বলতে পারি বাংলা লেখা যেখানেই পাই পড়া শুরু করি চাই সেটা ঝালমুরির ঠোংগায় লেখা হোক।অল্পতেই রাগ করি আবার পরোক্ষণেই শান্ত হই। খুব জানতে ইচ্ছা করে অজানাকে। সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরতে চাই।
শৈশব আর কৈশোরের স্কুল জীবনের দিনগুলি সত্যিই অনেক আনন্দের ছিল। মফঃস্বল এলাকায় লেখাপড়ার মান যাই থাকুক না কেন সেটা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথাই ছিল না, কারন মান জিনিসটাই আমি সেইসময় বুজতাম না। জীবনের লক্ষ বলে কিছু একটা থাকা আমার ভিতর তখনো ছিল না আজ ও নেই। মাঝে মাঝে ক্ষণিকের জন্য কিছু লক্ষ জন্মালেও তা পরক্ষণেই বিনাশ হয়ে যেত।
বাবা মায়ের একটাই কথা ছিল মানুষের মত মানুষ হতে হবে, আমি এখনো জানি না কি করলে বাবা মায়ের সংজ্ঞা অনুসারে আমি মানুষ হতে পারব।
থাক এবার আসল কথাই আসি, আমি থাকতাম অজপাড়া এক গ্রামে যেখানে ছিল না আধুনিকতার কোন ছোঁয়া, কিন্তু ছিল প্রকৃতির এক নিরমল ছোঁয়া ,সবুজ প্রান্তর পাখির কলতান যা শুনলে জুড়াত মন ও প্রাণ............
আঁকাবাঁকা নদীর বুক থেকে ভেসে উঠা নতুন চাঁদের মত বাকা দেখতে কিছুটা কাঁচির (এক ধরনের ছুরি) এক গ্রাম যার নাম ছিল কাঁচিচর। এই গ্রামেই কেটেছে আমার শৈশব আর কৈশোরের অনেকটা পথ।
মাষ্টার পরিবারের সদস্য হওয়ার কারনে ছোটবেলা থেকেই ছিল বাড়তি নজর যাতে করে পাড়ার আট দশটা ছেলের মত আমিও প্রাইমারীর গন্ডি পার না হতেই ঝরে পরে না যাই। এই বাড়তি নজরদারির কারণেই হয়তো ছোটবেলা থেকেই দুষ্টামির মাত্রা টা আমার বেশিই ছিল........
নানা ছিলেন প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক। যথারীতি নির্ধারিত সময়ে আমাকে স্কুলে ভর্তি করা হল কিন্তু ক্লাস ওয়ান এ না করে ক্লাস টু তে করা হল, কারন ছোটবেলা থেকেই একটু পন্ডিত ছিলাম।
লেখাপড়া যাই হোক ভালই চলছিল কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য, তা হল দৈনিক দুষ্টামির বিচার করতে করতে পরিবারের সদস্য রা মহা দুচিন্তায়!
স্কুলে মার খেতাম নানার কাছে ছাত্র হিসেবে আবার বাসায় আসার পর মার খেতাম নাতি হিসেবে।
ওহ বলতে ভুলেই গেছি যে আমার ছোটবেলায় আমরা নানার বাড়িতে ছিলাম, বাবা চাকুরী সুত্রে ঢাকায় একাই থাকতেন।
তখন বয়স কতই বা হবে এই দশ কি এগার , সবে মাত্র প্রাইমারীর গণ্ডি পার করেছি হাই স্কুলে ভর্তি হলাম। নানার হাত থেকে বেঁচে ভাবলাম এবার মুক্তি কিন্তু তা আর হল না মামার করনে, কারন এবার মামা হাই স্কুলের টিচার। নানা আর মামার কাছে দুষ্টামির জন্য যে কত মার খেয়েছি তার কোন ইয়াত্তাই নাই।
ক্লাস সিক্স এ পড়ি তখন, সালটা ২০০১, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হবে, বাছাই প্রক্রিয়ার পর চুড়ান্ত তালিকা করা হল। যথারীতি ফাইনালের দিন একে একে সব ইভেন্টের খেলা শুরু হল। বলাবাহুল্য গ্রামের স্কুলের এই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাটা অনেক জাকজমক ভাবে পালিত হয়।
আমি দুইটা ইভেন্টের চুড়ান্ত তালিকায় মনোনীত হয়েছিলাম। এবার মুল পর্বের খেলা শুরু হবে, খুব টেনশন হচ্ছে পারব কি পারব না এই চিন্তায়! প্রথমে দৌড় খেলায় চতুর্থ হয়ে মন খারাপ হয়ে গেল
এবার দ্বিতীয় খেলা অংক দৌড়, খেলা শুরু হল আমি এতই উত্তেজিত ছিলাম যে অংকের সমাধান কোন রকমে করেই দৌড়...............
দেখলাম আমার সামনে মাত্র একজন। আমি মনে মনে ভাবলাম যাক এইবার কে ঠেকাবে আমায়। কিন্তু আমার সব আশা মুহুরতেই ধূলিসাৎ হল কারন আমাদের সেরা চার জনের কাগজের টুকারা সংগ্রহ করেছিল এক জন টিচার, দেখা গেল চার জনের মধ্যে এক জনের অংক ভুল হয়েছে। এবার স্যাররা জিজ্ঞেস করল কে ভুল করেছে??
সবাই নিরুত্তর, কারন কোন চিরকুটে কারও নাম লেখা ছিল না তাই স্যাররাও বুজতে পারল না।
আমার এক বন্ধু বলল ও ভুল করেছে, কিন্তু আমি পরে বুজতে পারছিলাম ওই চারটা কাগজের মধ্যে ভুলটা আমার-ই ছিল, আমি ফার্স্ট বয় হওয়ার করনে কেউ আমাকে সন্দেহ করে নাই। পরে আমার মামা (স্যার) বলল এই খেলা হবে না এটা আবার হবে,
এবার আর আমি ভুল করি নাই। এবার থান্ডামাথায় অংক করেই এক দৌড় , দেখলাম সামনে কেউ নাই। হাই স্কুল জীবনের এটা আমার প্রথম প্রাইজ।
তখন অনেক আনন্দ পেয়েছিলাম, কিন্তু আজ ১৩ বছর পর যখন মনে পরে সেই দিনটার কথা তখন অনেক খারাপ লাগে এই কারনে যে আমার মিথ্যা কথার কারনে আমার সেই বন্ধুটা জীততে পারে নি কারন দ্বিতীয় বার ও খেলায় অংশগ্রহন করেনি অভিমান করে।
তারপর ক্লাস সেভেন এর পড় আমি ঢাকায় চলে আসি। ওই বন্ধুকে হারিয়ে ফেলি, দীর্ঘ ১২ বছর পর সেই বন্ধুকে পাই ফেসবুকের মাধ্যমে, তারপর কত না বলা কথা গল্প আর আড্ডা। আমার সেই বন্ধুটা আগের মতই আছে, দেখা করলাম অনেক গল্প হল, সেই ২০০১ সালে মিথ্যা বলার করনে তাকে সরি বললাম। বুকে জড়িয়ে ধরে ও আমায় আলিঙ্গন করল। কি যে অদ্ভুত ভাল লাগা বলে বুঝানো যাবে না।
সময়ের আবর্তনে চাকুরী সুত্রে এখন ঢাকায় থাকা হয়, নারীর টানে দুই ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়। বাড়িতে গেলেই চলে যাই প্রিয় সেই স্কুলের আঙ্গিনায়, ২০০১ সালে বন্ধুরা মিলে যে বট গাছটা লাগিয়েছিলাম তা আজ অনেক বড় হয়েছে, অনেক শাখা প্রশাখা আর পাতায় বৃস্তিরন্ন গাছটি ছায়া দিচ্ছে অচেনা পথিককে। বট গাছটার দিকে তাকালেই সব বন্ধুদের চেহারা ভেসে ঊঠে চোখের সামনে। মনে হয় প্রত্যেক টা ডাল পালা আমার এক এক টা বন্ধু !!!!!!!!!!!!!
আমরা ছিলাম স্কুলের দ্বিতীয় ব্যাচ। হাতে গোনা যে কয়েকজন বান্ধবী ছিল সবাই বিয়ে করে সংসারী হয়েছে, বন্ধুগুলাও সবাই ব্যস্ত সবাই নিজেদের ক্যরিয়ার নিয়ে। শত ব্যস্ততার মাঝেও মনে পরে বন্ধু তোদেরকে, অনেক মিস করি, যে যেখানেই থাকিস অনেক ভাল থাকিস।
২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
জাহিদ জুয়েল বলেছেন: আপনি ও ভাল থাকবেন ভ্রাতা
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৭
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক অনেক শুভকামনা ভাই।
যে যেখানেই থাকিস অনেক ভাল থাকিস।
কামনা করি, ভালো থাকুক সকলে, অনেক ভালো।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪০
জাহিদ জুয়েল বলেছেন: আপনি ও ভাল থাকবেন .শুভকামনা ভাই
৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:১৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: স্মৃতির বাকসো পড়ে তো আবেগী হয়ে গেলুম... ...
বেঁচে থাকুক সবার স্মৃতি উজ্জল মহিমায় ....
৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৪
জাহিদ জুয়েল বলেছেন: ভাল থাকবেন .শুভকামনা ভা।
৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২
ফ্জলূল করিম বলেছেন: যাক অনেক দিনবাদে আবারও স্মৃতিচারণ ....।ভাল লাগল
কবি দাদা
১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৮
জাহিদ জুয়েল বলেছেন: আমারও ভাল লাগল যে আপনি পড়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অনেকটা মিলে গেলো। অনেক স্মৃতি মনে পরে গেলো!
ভালো থাকবেন ভ্রাতা