![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে কিছুটা পুনর্বিন্যাস হচ্ছে সরকারি চাকরিতে 'কোটা' পদ্ধতির। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ শতাংশ কমছে, বাড়ছে মেধা কোটা।মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ ভাগ কমছে
বর্তমান নিয়োগ পদ্ধতির পুনর্বিন্যাস করে মেধা কোটা ৪৪ ভাগের স্থলে বাড়িয়ে ৪৯ ভাগে উন্নীত করা হচ্ছে। অন্যান্য কোটা অপরিবর্তিত থাকছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে, পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সংশোধিত ফল আজ বিকেলে প্রকাশ করবে পিএসসি। তবে আগের ফল বহাল রেখেই সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হবে। এতে আরও ২০ থেকে ২২ হাজার শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষার সুযোগ পাবে।
প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন উপদেষ্টা এইচটি ইমাম শনিবার সমকালকে বলেছেন, 'কোটা পদ্ধতির সমন্বয়ের ব্যাপারে আমরা ভাবছি। মেধা ও কোটা ৫০ :৫০ নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে আলাপ করেছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।'
তবে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এইচটি ইমাম বলেন, "আন্দোলন করা হচ্ছে কোটা বাতিলের জন্য। এটা ঠিক নয়। কোটার সংস্কার তারা চাইতে পারে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশি কোটা রয়েছে। আন্দোলনের 'ধরন' দেখে মনে হচ্ছে, তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাবিরোধী আন্দোলনে এটি পরিণত হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, তাদের আন্দোলন যা-ই হোক না কেন, সরকার বাস্তবমুখী চিন্তাভাবনা করেই মেধাবীদের সরকারি চাকরিতে আরও সুযোগ করে দিতে ইতিবাচক চিন্তা করছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার সমকালকে বলেন, 'কোটা নিয়ে এত বড় আন্দোলন এর আগে কখনও হয়নি। এখন যেহেতু বিষয়টি সামনে এসেছে, তাই সরকার কোটা সংস্কারের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে।' তিনি বলেন, বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় ৩০ শতাংশ পদ পূরণ হয় না। এ কোটা কমিয়ে আনা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মেধা কোটায় চাকরির সুযোগ বাড়বে।
৮ জুলাই ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ৯ জুলাই শাহবাগ মোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী 'বঞ্চিত মেধাবী'র ব্যানারে একত্র হয়। তারা সড়ক অবরোধ ও পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুর করে। এমন প্রেক্ষিতে সরকার কোটা সংস্কার বিষয়ে উদ্যোগী হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের দিনই 'কোটা পদ্ধতি'র সংস্কার করতে বর্তমানে কোটার ব্যবহার ও পদশূন্যতা ইত্যাদি বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটায় নিয়োগের বাস্তবতা তুলে ধরে এরই মধ্যে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। দু'একদিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, গতকালও ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছে।
কোটার প্রয়োগ যেভাবে শুরু: অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকারি কর্মচারী নিয়োগে মাত্র ২০ ভাগ ছিল মেধা কোটা, ৪০ ভাগ জেলা কোটা, ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর ১০ ভাগ ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত নারী কোটা। ১৯৭৬ সালে এ কোটা ব্যবস্থার পরিবর্তন করে মেধা কোটায় বরাদ্দ হয় ৪০ ভাগ, জেলা কোটায় ২০ ভাগ। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আগের মতোই ৩০ ভাগ পদ রাখা হয়। ১৯৮৫ সালে এ ব্যবস্থা আবারও বদলানো হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৪৫ ভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ ভাগ, জেলা কোটায় ১০ ভাগ, নারীদের জন্য ১০ ভাগ এবং প্রথমবারের মতো উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ ভাগ পদ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ ভাগ কোটা বরাদ্দ রাখা হয়।
ফল বহাল রেখেই সংশোধন: সংশোধিত ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল আজ রোববার বিকেলে প্রকাশ করবে পিএসসি। তবে আগের ফলটিও বাতিল হয়নি। আগের ফল বহাল রেখেই তা সংশোধিত করেছে পিএসসি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিষয়টিও নতুন করে জটিলতার সৃষ্টি করবে।
©somewhere in net ltd.