নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়েল তাজিম

জুয়েল তাজিম

অলস হবেন, তো হতাশা পাবেন। শুরু করুন,শেষ হবেই। সামনে এগোতে থাকুন, পথ কমবেই।

জুয়েল তাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেয়ঃ

১৯ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৭

বনী ইসরাইলের সময় এক ছোট্ট গ্রামে বারসিসা নামে অত্যন্ত ধার্মিক এক ব্যক্তি ছিল। তাকে সন্ন্যাসী বলা যেতে পারে। সে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করত এবং বিশ্বাস করত যে ঈসা আলাহিসসালাম আল্লাহর একজন রাসুল।

সেই গ্রামে তিন ভাই ও এক বোন থাকতো । সেই ভাইদের জিহাদের জন্য ডাকা হল । কিন্তু তারা বোনকে একা রেখে যেতে চাইল না। কার কাছে রাখবে চিন্তা করতে লাগলো। গ্রামবাসি বারসিসার কথা বলল। কারণ গ্রামের সবাই বারসিসাকে উত্তম চরিত্রবান হিসাবে জানতো । তো তারা বারসিসার কেছে গেল, যখন তার কাছে তাদের বোনকে রাখতে চাইলে সে রাজি হল না এবং বলল ‘আমি অভিশপ্ত শয়তানের কাছ থেকে পানাহ চাই।’

কারণ সে ভয় করছিল যে সে গুনাহে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে। তখন শয়তান বারসিসার মনে কুমন্ত্রণা (ওয়াসওয়াসা) দিতে আসল। চালাক শয়তান জানতো যে বারসিসার মন খুবই নরম। সে কানে কানে বারসিসাকে বলল – “তারা যদি ভাল কাউকে তাদের বোনের জন্য খুঁজে না পায় এবং খারাপ কারো কাছে মেয়েটিকে রেখে যায় তখন কি হবে ! এই পরিণতি কি তোমার ভুলের জন্য নয়?”

বারসিসা বুঝতে পারেনি যে এটা শয়তানের কুমন্ত্রণা। মানুষের প্রতি দরদের কারনে মেয়েটিকে সে সাহায্য করতে রাজি হল।

সে মেয়েটিকে গির্জার বিপরীতে একটি ঘরে থাকতে দিল। গির্জার সামনে মেয়েটির জন্য খাবার রেখে আসত, মেয়েটি নিজে এসে খাবার নিয়ে যেত। বারসিসার সাথে তার দেখা হত না।

শয়তান বারসিসার কাছে আবার আসল এবং বলল, “তুমি কেন মেয়েটির খাবার তার ঘরের সামনে রেখে আসো না? এর ফলে মেয়েটাকে ঘর থেকে কেউ এতটা পথ একা একা হেঁটে বের হতে বা ফিরে যেতে দেখবে না!”

বারসিসা রাজি হল এবং মেয়েটির ঘরের সামনে খাবার রেখে আসতে শুরু করল। শয়তান এতেও খুশি হল না, সে আবার আসলো এবং কানে কানে বলল – ‘কেন তুমি তার ঘরে ভিতরে খাবার দিয়ে আসো না? ফলে মানুষ তাকে ঘর থেকে একা একা বের হতে আর ঢুকতে দেখত না!’ এবার বারসিসা তার ঘরের মধ্যে খাবার দিয়ে আসতে শুরু করল। শয়তান আবার আসলো এবং বলল – ‘মেয়েটার সাথে তোমার কথা বলা উচিত ,এভাবে একা থাকলে তো সে পাগল হয়ে যাবে’। বারসিসা মেয়েটির কথা চিন্তা করে তার সাথে রুমের আড়ালে কথা বলতে শুরু করল ।

শয়তানের কুমন্ত্রণায় এক সময় তারা একই রুমে কথা বলতে লাগল।

এভাবে শয়তান তার কাজের কঠিন অংশ বাস্তবায়ন করল। এই পর্যায়ে বারসিসা এবং মেয়েটা একে অপরের প্রতি দুর্বল হল এবং এক সময় ব্যভিচারে লিপ্ত হল। মেয়েটি গর্ভবতী হল , একটি বাচ্চা জন্ম দিল। বাচ্চা জন্মের সময় শয়তান বারসিসার কাছে আবার আসল এবং বলল, “এটা তুমি কি করলে? তোমার পাপের প্রমাণ সরিয়ে ফেল, না হলে মেয়েটির ভাইরা ফিরে আসলে তোমাকে খুন করবে!”

বারসিসা বাচ্চাটিকে খুন করল এবং ঐ ঘরের মেঝেতে পুতে ফেলল।

শয়তান এবার বলল , “তুমি এক নারীর সন্তান হত্যা করেছ এবং আশা করছ যে সে এটা কাউকে বলবে না?”

তখন বারসিসা মেয়েটিকেও খুন করল এবং তাকেও ঐ ঘরের মেঝেতে পুতে রাখল। মেয়েটির ভাইরা ফিরে আসলে তাদেরকে একটা মিথ্যা কবর দেখিয়ে বলল “তোমাদের বোন অসুখে মারা গিয়েছে এবং ঐ কবরে দাফন করা হয়েছে”। তারা বারসিসার কথা বিশ্বাস করল।

সেই রাতে শয়তান তিন ভাইকে একই স্বপ্ন দেখাল যে “বারসিসা তোমাদের বোনকে হত্যা করেছে, প্রমান হিসাবে তোমাদের বোন যে ঘরে থাকত তার মেঝে খুঁড়ে দেখতে পারো”। ঘুম ভাঙ্গলে তারা একে অপরকে স্বপ্নের কথা বলল এবং বুঝতে পারল তারা তিনজন একই স্বপ্ন দেখেছে।

যাচাই করার জন্য তারা বারসিসার এলাকায় যেয়ে প্রথমে বারসিসার দেখানো কবর খুঁড়ল, দেখল কিছু নেই, এর পর যে ঘরে তাদের বোন থাকত তারা ঐ ঘরের মেঝে খুঁড়ে তাদের বোনের এবং বাচ্চার লাশ পেল। তারা বারসিসাকে ধরল এবং বলতে বাধ্য করলো আসলে কি হয়েছিল।

তারপর তারা তাকে রাজার কাছে নিয়ে গেলে রাজা তাকে শিরচ্ছেদ করতে আদেশ দিল। যখন বারসিসাকে শিরচ্ছেদ করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন শয়তান কাছে আবার আসল। এবার ওয়াসওয়াসা না, মানুষের রূপ নিয়ে সে আসল। এসে বলল, “শুনো বারসিসা, আমি হলাম শয়তান, তোমার এই অবস্থা তোমার নিজের চিন্তায় হয়নি, আমিই করেছি আর একমাত্র আমিই তোমাকে বাঁচাতে পারি যদি তুমি আমার কথা মেনে চল।” বারসিসা বলল, “আমাকে কি করতে হবে?”

শয়তান বলল” আমাকে সেজদা কর আমি তোমাকে রক্ষা করবো” তো বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে বারসিসা শয়তানকে সিজদা করল এবং কাফের হয়ে গেল। সিজদা করার সাথে সাথে শয়তান তাকে বলল – ‘আমি এখন তোমার থেকে মুক্ত। আমি আল্লাহকে ভয় করি যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক’। এই বলে শয়তান সেখান থেকে পালালো , এবং বারসিসার শিরচ্ছেদ করা হল। কেয়ামতের দিন বারসিসাকে যখন জীবিত করা হবে তখন সে শয়তানকে সিজদা করতে করতে উঠে দাঁড়াবে!

দেখুন শয়তান কিভাবে বারসিসাকে ফাঁদে ফেলেছিল। সে এসেছিল বন্ধুর বেশে, ভালো ভালো কথা বলতে আর আপাত:দৃষ্টিতে ভালো কাজে উৎসাহ দিতে, কিন্তু আসলে সে ছিলো সবচেয়ে বড় শত্রু!

আল্লাহ বলেন ,

তাদের দৃষ্টান্ত শয়তান যে মানুষকে বলে কুফরি করো। অতঃপর যখন সে কুফরি করে , তখন

শয়তান বলে: আমি তোমার থেকে মুক্ত। আমি বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি।

[সুরা হাশর ৫৯:১৬]



রেফারেন্সঃ Story of Barsisa, the worshipper.

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

পংবাড়ী বলেছেন: আপনি কি শয়তান?

২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪

জুয়েল তাজিম বলেছেন: প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান থাকে , কোনটা সক্রিয় আর কোনটা নিস্ক্রিয়

২| ১৯ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এখন আর বারসিসা কই!!!

শয়তান হবার পথেই সবাই ম্যরাথন দৌড়ে ব্যস্ত!!!!
মিথ্যা, ঘুষ, দুর্নীতি প্রতারণা যোগ্যতার মাপকাঠি!
ভোগ বিত্ত বিলাসে সমাজের কর্তৃত্ব!!!
ষ্টাটাস মেইনটেইনই জীবনের ব্রত! যে কোন উপায়ে হোক!


ওয়াসওযাছা কোথায় প্রত্যক্ষ শয়তানির আহবানেই কথিত সভ্যতা সুশীলতা, সংস্কৃতি!!!!নিত্য প্রত্যক্ষ এই ময়দানে বরং বিশ্বাসী মানুষই মেলা বড় দায়!!!!



২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

জুয়েল তাজিম বলেছেন: ধন্যবাদ , আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আর অনুভিতি খুব সুন্দর , ভালো থাকবেন

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩

সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন:

কঠিন বাস্তবতা ...

ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.