নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুয়েল তাজিম

জুয়েল তাজিম

অলস হবেন, তো হতাশা পাবেন। শুরু করুন,শেষ হবেই। সামনে এগোতে থাকুন, পথ কমবেই।

জুয়েল তাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আকাশ ছুঁয়ে দেখা যায় বান্দরবানের এই নীলগিরি পর্যটন স্পটে

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২২



গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছিলাম বান্দারবানের চিম্বুক পাহাড়ের একটা মসজিদে, তখন মুশলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। অপরিকল্পিত পরিকল্পনায় আগের দিন রাত ন’টায় রওনা দিয়েছিলাম চট্টগ্রাম শহর থেকে, সারা রাত প্রকৃতির রহস্যা ঘেরা নীলাচলে রাত্রিযাপনের শেষে দুপুর নাগাদ রওনা দিয়েছিলাম নীলগিরির উদ্যেশ্যে। তখন প্রখর রৌদ্র ছিল !! চিম্বুক যেতে যেতে কতবার রৌদ্র আর বৃষ্টির কবলে পড়েছি তা হিসেব রাখিনি !
আমরা কে কে ছিলাম তা একবারও বোলা হয়নি এর আগে !! সাথে ছিল বন্ধু কাকু ক্যাপ্টেন Nur Mohammad ব্যাংকার বন্ধু Belalur Rahman ব্যাবসায়ি বন্ধু Abdul Wazed



নীলগিরি নিয়ে অনেকেই অনেক গল্প বা লেখা পড়েছেন, নিচে যা লিখছি তা ভ্রমণবিষয়ক লেখা যারা আগে পড়েছেন তাদের জন্য নয়!!
আপনি কি আকাশ ছুঁতে চান? তাহলে চলে আসুন বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন স্পট নীলগিরিতে। আকাশ ছুঁয়ে দেখা যায় বান্দরবানের এই নীলগিরি পর্যটন স্পটে। জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় নীলগিরির অবস্থান। অল্প সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত পর্যটন স্পট নীলগিরি সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা পথে বান্দরবান থেকে চাঁদের গাড়ি কিংবা জীপ-মাইক্রো বাসে নীলগিরিতে যাওয়া যায়। যারা এডভ্যাঞ্চার প্রিয় তাদের জন্য নীলগিরিতে যাওয়া বেশ উপভোগ্য হবে আর যারা আমার মত একটু ভিতু তারা এডভ্যাঞ্চার এবং ভয় দুটোই উপভোগ করতে পারবেন।




দুর্গম পাহাড়ে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাতানা নামে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা সম্বলিত তিনটি কটেজ। কটেজগুলো রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া পাওয়া যায় এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। এখানে এক কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক একটি রেস্টুরেন্টও। পাহাড়ি পথ পেরিয়ে নীলগিরিতে পৌঁছেই রেস্টুরেন্টে পেট পুরে খেতে পারা যায়।তবে পকেটের দিকেও অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে!! আমরা দুপুরের খাবার খেয়েছি চিম্বুক পাহাড়ের ঢালে সেনাবাহিনীর একটা রেস্টুরেন্টে যা হ্মুদার কারনে আমাদের বেশ উপভোগ্য লেগেছিল।






নীলগিরি যেন প্রকৃতির এক অনন্য দান। যারা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেন নীলগিরিতে গেলে তার কিঞ্চিত স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। নীলগিরিতে গেলে মনে হবে আপনি আকাশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। মেঘেরা নিজ থেকেই আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। নীলগিরির চূড়া থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং, প্রাকৃতিক আশ্চর্য বগালেক, কক্সবাজারের সমুদ্র, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের আলো-আঁধারি বাতি এবং চোখ জুড়ানো পাহাড়ের সারিও দেখতে পাওয়া যায়।

তবে এবারের আমাদের ভ্রমণটা ছিল পুরাপুরি আথিখ্যা ভ্রমন !!! নীলগিরির পরিবেশ এইরকম হবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি । পরিবেশ ছিল একেবারেই অপরিচিত , এই মেঘ তো এঈ রৌদ্র , এই গরম তো এই মেঘ। আমাদের চাঁদের গাড়ি যখন পাহাড়ের ঢালু বেয়ে যাচ্ছিল তখন ঠিক মেগের ভিতর দিয়েই যাচ্ছিল যা শুধু বিমানে ভ্রমনের সময় উপভোগ করা যায়। তবে পার্থক্য হচ্চে বিমানে চড়ে মেঘ ছোঁয়া যায় না আর নীলগিরিতে যাওয়ার সময় যখন গাড়ি মেঘের ভিতর দিয়ে যায় তখন মেঘই আপনাকে ছুঁইয়ে দেবে ভিজিয়ে দেবে আপনাকে !!!

নীলগিরির কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতীয় গ্রাম। নীলগিরির একদম কাছে কাপ্রু পাড়া, আপনি সহজেই পরিদর্শন করে ম্রো আদিবাসী সম্পর্কে জানতে পারবেন। নীলগিরিতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প। ফলে এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। আপনার যে কোন প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।






নীলগিরির রাতের সৌন্দর্য আরো হতবাক করে। চারিদিকের হরিণ, শিয়ালসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক আর পাহাড়গুলোর আলো-আঁধারির খেলা দেখে আপনার জীবনকেই যেন রহস্যময় বলে মনে হবে। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান। নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত। এখানে আদিবাসী বম তরুণীরা আপনাকে স্বাগত জানাবে। এখান থেকে কিনে নিতে পারেন আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা পণ্য। এর পরই চোখে পড়বে স্বপ্নচূড়া। স্বপ্নচূড়া থেকেও বান্দরবানের অবাক করা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

নীলগিরির সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এখান থেকে চোখে পড়ে বান্দরবানের উপর দিয়ে বয়ে চলা সর্পিল সাঙ্গু নদী। এখান থেকে মনে হবে সাঙ্গু নদী আপনার খুব কাছে। সাঙ্গু নদীর অপরূপ সৌন্দর্য এখান থেকে উপভোগ করা যায়। সাঙ্গুর বুক চিরে বয়ে চলা ছোট ছোট নৌকাগুলোকে দেখলে দূর থেকে মনে হবে স্বপ্নের কোন ডিঙি বয়ে চলছে সাঙ্গু নদী দিয়ে।





ভিআইপিদের সরাসরি অবতরণের জন্য এখানে নির্মাণ করা হয়েছে হেলিপ্যাডও। তবে সাধারণ দর্শনার্থীদের হেলিপ্যাডে প্রবেশ করা নিষেধ। নীলগিরিতে সৃষ্টি করা হয়েছে ফুলের বাগান,পাহাড়ের উপরে সুন্দর এই ফুলের বাগানও অবাক করার মত। নীলগিরিতে যাওয়ার জন্য বান্দরবান হিলবার্ড এর সামনেই রয়েছে নানা ধরনের গাড়ি। আপনার পছন্দের গাড়িটি ভাড়া করে চলে যেতে পারেন নীলগিরিতে। তবে কটেজ বুকিং এর জন্য আগে থেকেই কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।






এত ভালর মাঝে অব্যবস্থাপনা ও রয়েছে, প্রতিটি গাড়ির জন্য ৩০০ টাকা করে পার্কিং খরচ এবং জনপ্রতি ৫০ টাকা করে নীলগিরিতে প্রবেশ মুল্য আমার কাছে অমুলক মনে হয়েছে। শৌচ কাজের কাজের জন্য ব্যাবস্তা রয়েছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং পরিপাটি নয় । এই বিষয়ে কতৃপক্ষের আর কড়া নজর দেওয়া উচিত।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

অশ্রুঝরা বলেছেন: আমার বাড়ি বান্দরবান..

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

জুয়েল তাজিম বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আঁকাশ ছোঁয়া ভ্রমন কাহিনীতে অনেক ভাল লাগা....

+++

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

জুয়েল তাজিম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: বান্দারবান নিয়ে হয়তো এটা আপনার দ্বিতীয় পোষ্ট।

খুব সুন্দর। সামনের মাসে যাবো।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০১

জুয়েল তাজিম বলেছেন: তৃতীয় পোষ্ট , এর আগে নীলাচল এবং চিম্বুক পাহাড় নিয়ে লিখেছি। সিরিয়াল লেখা বলা যায়।

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১৭

অশ্রুঝরা বলেছেন: হুমম সত্যিই..।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.