![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংবাদে দেখলাম গত এক বছরে দেশে বেকার বেড়েছে সোয়া ৩ লাখ। সরকারি ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের অভাব এবং ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধিই এর মূল কারণ। কিন্তু বাস্তবতা তার চেয়েও গভীর এবং অন্ধকারে ঢাকা।
পুঁজির একচেটিয়া দখল ও অর্থনীতির ধ্বংসযজ্ঞ
গত ১৪-১৫ বছরে বাংলাদেশের প্রায় সমস্ত পুঁজি একটি নির্দিষ্ট দলের নেতা-কর্মীদের হাতে কুক্ষিগত হয়েছে। কলকারখানা, গার্মেন্টস, ব্যাংক, বীমা, মিডিয়া—সবকিছুর মালিকানা চলে গেছে তাদের হাতে। শুধু আজিজ খান, এস আলম বা সালমান রহমানের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, কী পরিমাণ সম্পদ তারা কুক্ষিগত করেছে। এছাড়াও, ফরিদপুরের মতো জেলায় তাদের ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নামেও হাজার কোটি টাকার সম্পদ জমা ছিল।
কিন্তু আজ? এই নেতারা দেশের অর্থ-সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। ভারত, মালয়েশিয়া, দুবাই, ইউরোপ, আমেরিকায় তারা রাজার মতো বিলাসিতা করছে। আর দেশে রেখে গেছে বন্ধ হওয়া কারখানা, পুড়িয়ে দেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অথবা মালিকানা বদলের অপেক্ষায় থাকা শিল্প-কারখানা। স্বাভাবিকভাবেই, এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, বেকারত্ব বাড়ছে।
মিডিয়া দখল ও রাজনৈতিক খেলা
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ইতিমধ্যেই দখল হয়ে গেছে। ক্ষমতায় না থেকেও বিএনপি তাদের প্রভাব খাটিয়ে সরকারকে জটিলতায় ফেলার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, জামাতের এজেন্ডা ভিন্ন—তারা তাদের হারানো প্রতিষ্ঠানগুলো (ইসলামী ব্যাংক, মানারাত ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি) ফিরে পেয়েছে এবং সরকারের সাথে সখ্যতা করে দলের লোকদের পদ-পদবি দখল করাচ্ছে।
দেশকে দুধেল গাই ভাবার মানসিকতা
এদেশের শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশকে একটি "দুধেল গাই" হিসেবে দেখে। গাইয়ের বাচ্চার জন্য যে দুধ থাকার কথা, তা তারা আগেভাগেই খেয়ে নেয়। গত সরকারের ১৪ বছর লেগেছিল দেশের সম্পদ কুক্ষিগত করতে। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা অর্ধেক সময়েই এই কাজ শেষ করে ফেলবে। বরং, ইতিমধ্যেই অনেকটা করে ফেলেছে।
কী হবে এই দেশের ভবিষ্যৎ?
যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো শুধু নিজেদের এবং দলীয় স্বার্থ দেখছে, সেখানে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী জুটবে? বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক সংকট—এগুলো তো বাড়বেই। কারণ, দেশের সম্পদ যখন একদল লুটেরার হাতে, তখন সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।
শেষ কথা:
দেশের বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও পুঁজির একচেটিয়া দখল। যতদিন না এই চক্র ভাঙা হবে, ততদিন এই অবস্থার উন্নতি হবে না। জনগণকে জাগতে হবে, সচেতন হতে হবে। নইলে এই দুধেল গাইয়ের সব দুধ লুটেরাই খেয়ে যাবে, আর সাধারণ মানুষ মুখ বুঝে ক্ষুধা সহ্য করতে বাধ্য হবে।
©somewhere in net ltd.