![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আহসান খোকন। আমের জন্য দুনিয়া বিখ্যাত চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে আমার জন্ম। বছর দু\'য়েক আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে একাডেমিক শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি টেনেছি। এখন বিশ্বায়ন ও মন্দার চক্করে পড়ে পরিপূর্ন বেকার জীবন উপভোগ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পর্কে আমি খুবই উন্নত ধারনা পোষন করতাম। ভাবতাম ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের জ্ঞান হবে ইউনিভার্সাল। আমার এই ভুল ভাঙতে বেশিদিন লাগেনি। কয়েকদিনেই বুঝে গেলাম এখানে ক্রিয়েটিভিটির স্থান নেই। সব মুখস্তের দলে। তাই প্রচলিত পদ্ধতির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাকে তেমন একটা টানেনি। যে ক\'জন মনের মত শিক্ষক ছিলেন তারাও কেউ ঢাকায়, কেউ বিদেশে পাড়ি জমালেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আমার প্রাপ্তি কিছু অসাধারণ মানুষের বন্ধুত্ব, গীটার শেখা এবং প্রকৃতি ও আড্ডা থেকে প্রাপ্ত অসীম জ্ঞান। এগুলোই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই আমার কাছে চিরকাল অপাঠ্যই ছিল। সাহিত্য আমাকে ছোটবেলা থেকেই পড়া শিখিয়েছে। জন্মসূত্রে প্রাপ্ত বাবার ছোট্ট লাইব্রেরী এবং গ্রামের \'প্রতীতি\' নামক বিশাল লাইব্রেরীর বই আমার জন্য বিরাট প্রাপ্তি। আমি হলপ করে বলতে পারি বাংলাদেশের নব্বই শতাংশ মানুষ এই সুবিধা সারা জীবনে পায়না। এটা আমার জন্য ডায়মন্ড লাক বলতে হবে। বাবার সংগ্রহ করা অতি পুরাতন মলাটহীন বইগুলো চাখতে চাখতে কখন যে নেশায় ডুবে গেছি বুঝতে পারিনি। যখন বুঝলাম তখন বই গিলে খাওয়া শুরু করেছি। ইদানিং অবশ্য ইন্টারনেট ব্যবহারের চাপে বই পড়া কমে গেছে।পদার্থবিজ্ঞান আর রসায়নের জটিল ও উচ্চমার্গীয় সমীকরন ছাড়া আমার সমস্ত বিষয় পড়তে ভাল লাগে। সাহিত্য, ইতিহাস, রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, ধর্ম, দর্শন,বিতর্ক, চিত্রশিল্প, চলচিত্র, সঙ্গীত, কার্টুন ও অ্যানিমেশন ও কার্টুন, খেলা ইত্যাদি আমার প্রিয় বিষয়। সবগুলোকেই আমি উপভোগ করি। কিন্তু এও জানি কোন একটা বিষয়ে পন্ডিত হতে না পারলে কোথাও সফল হওয়া সম্ভব নয়। ছোটবেলা থেকেই কবিতা লেখার অভ্যাস ছিল। এখন গীটারের টুংটাং এর সাথে মিলিয়ে কিছু কথা লিখতে ভালই লাগে। আমি জানিনা কথাগুলো সত্যিকারের লিরিক কিংবা সুরগুলো গান হয়ে উঠে কিনা। না হলেও কোন ক্ষতি নেই। আমি এসব নিজের জন্যই করি, একান্তই নিজের প্রশান্তির জন্য করি। সঙ্গীতে আমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ব্লগিং আমি করতে চাইনা। এটা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর একটি জিনিস। তারপরও ব্লগীং করতেই হবে যেমনটা টয়লেটে যেতে না চাইলেও যেতেই হয়। আমি চাই গান নিয়ে থাকতে, সারাবেলা সুরের মুর্ছনায় ডুবে থাকতে চাই। কিন্তু আমি পারিনা। দেশমাতৃকার বেহাল দশা, মানুষের অবর্ননীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক দুর্দশা দেখে আমি কিছুতেই স্থির থাকতে পারিনা। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনা, আমি দুর্বল মানুষ। আমি সমাজ বদলে দিতে চাই, কিন্তু হাতিয়ার নেই। নাহ ভূল বললাম। গানই আমার হাতিয়ার, গীটারই আমার অস্ত্র। সুরের হাওয়ায় বদলে দেবো সমাজ, এ আমার অঙ্গীকার। কবির সুমন আমার ভাবগুরু।আমার ব্লগে শালীনতা বজায় রেখে যেকোন মন্তব্য করবেন। মতভেদ হলে সমস্যা নেই। মতভেদ তো থাকবেই এবং এর মাধ্যমেই আমার সত্যটা জানা হয়ে যাবে। আপনি নাস্তিক হলেও আমার সমস্যা নেই কিন্তু কোন ধর্মকে আঘাত করে মন্তব্য করবেন না। মানুষের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করার মত জঘন্য কাজ আর কিছু নেই। কারন মানুষ একমাত্র ধর্ম পালন করেই পরিপুর্ন আত্মিক প্রশান্তি লাভ করে। যার যা ধর্ম তাতেই তার আত্মীক আনন্দ।ফেসবুকে আমি- www.facebook.com/ahsan.khokon ইমেইল- [email protected]আমার ব্লগ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন, ভালোবাসুন প্রতিটি সৃষ্টিকে।
সাপ্তাহিক ছুটিটা ইদানিং আমার কাছে খুব লম্বা মনে হয়। মনে হওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে বৈকি। সপ্তাহের শেষ কর্মদিনে দুপুরের উত্তাপ যত কমতে থাকে অফিস ততই ফাঁকা হতে থাকে। বিকেল গড়াতেই বিশাল এই বিল্ডিং এর ভিতরে গা ছমছম করে। আমি হয়ে পড়ি একা। এমনকি বাসাতেও একা।
বাসার একজন ফ্যামিলিওয়ালা গতকালই পগারপার। বাকি দুজন ট্যুর প্ল্যান করলো। সুতরাং ভোরের আলো ফুটতেই আমি পুরোপুরি একা। মনে মনে খুশিই হলাম, যাক আজ ইচ্ছেমত ঘুমানো যাবে- কেউ ঘুম থেকে উঠানোর জন্য জ্বালাতন করবেনা। ধারনা ভুল প্রমাণ করতে আধাঘণ্টা লাগলো- বুয়া এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করছে। বললাম যান আজ রান্না করা লাগবেনা। ভেবেছিলাম খুশি হয়ে চলে যাবে। গেলনা। বললো রান্না না করলে দুপুরে-রাতে খাইবেন কি? হক কথা। বললাম ঠিক আছে রান্না করেন।
আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। আধাঘণ্টা পরে আবার বুয়া ঘুম ভাঙালো।
-নাস্তা রেডি খেয়ে নেন।
-যান পরে খাবো।
-কিছু বাজার লাগবে টাকা দেন।
বেকায়দায় পড়ে উঠতেই হল। নাস্তা করে আবার শুয়ে পড়লাম। এবার কড়া নির্দেশ, ভুমিকম্প হলেও জাগাবেন না। ঘুমাবার শতরকম চেষ্টা বিফলে গেল। বুঝলাম চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি সঠিক নয়। মানুষ পুরোপুরি দুশ্চিন্তামুক্ত থাকলে ভাল ঘুম হয়না। পরীক্ষার আগের রাতে প্রচুর পড়াশোনার চাপের মধ্যে ব্যাপক ঘুম পায়, এমনকি সকালেও খুব সহজে ঘুম ভাঙেনা। ইউনিভার্সিটি লাইফে আমার পরিচিত একজনকে এরকম বহু পরীক্ষা মিস করতে দেখেছি। পরে জিজ্ঞাসা করলে হাসিমুখে বলেছে, ঘুমিয়ে যে শান্তি পেয়েছি পরীক্ষা দিয়ে সেই শান্তি পেতাম না।
এরকম সাত সতেরো ভাবতে ভাবতে ইলেক্ট্রিসিটি গেল। সুতরাং.....
উঠে দেখি বুয়া বিদ্যুৎ গতিতে সব কাজ সেরে চলে গেছে। এমনকি সারা সপ্তাহের জমানো সব কাপড় ধোয়া সারা। ভাবতে লাগলাম এই মস্ত ছুটির দিন কি কাজে লাগানো যায়। আমার কোথায় যাবার নেই, কিচ্ছু করার নেই- এরকম অবস্থা। গানওয়ালা হবার চেষ্টা করা যেতে পারে। সেটাও জমলো না। শ্রোতা না থাকলে গান জমেনা- প্রমাণিত সত্য।
কি করা যায়? হিমু সেজে বরিশাল শহরে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করা যেতে পারে। চিন্তাটা মন্দ না। ছুটির দিনে সবাই ঘুরতে বের হবে। নানা রঙের, নানা ঢঙের মানুষ দেখা যাবে। ভালই লাগবে বোধহয়। কিন্তু রোদ্রের যে চান্দিফাটা তাপ!! সেটা উপেক্ষা করেই রাস্তায় বের হলাম। ধারনা ভুল। এত গরমে কেউ বের হয়নি। যে শ্রেণীর মানুষের ছুটি বলে কিছু নেই তারাই শুধু ছুটাছুটি করছে। বাস্তবতা আধাঘন্টার মধ্যেই আমাকে বাসায় ফেরত পাঠালো।
এবার কি করা যায়? ভাবতেই রুমমেটের ল্যাপটপ চোখে পড়ল। নিজেকে গাধা শ্রেনির মানুষ মনে হল- এত ভাল বিনোদন ব্যবস্থা রেখে আমি কিনা পথে পথে ঘুরছি। ল্যাপটপ চালু হল। হাতে দেখার মত প্রচুর নতুন মুভি। কাটাপ্পা কেন বাহুবলীকে মেরেছিল তা আজ জানা যেতে পারে। সমস্যা একটাই- হাতে প্রচুর নতুন মুভি থাকলে পুরাতন ভাল মুভি দেখতে ইচ্ছে করে।
সেরকমভাবেই শুরু করা যাক। মুভি চালু করলাম। দুই সেকেন্ড পাঁচ সেকেন্ড পরপর মুভি আপনা আপনি পজ হয়ে যায়। কাহিনী কি? ভাবলাম প্রিন্টের সমস্যা। অন্য মুভি চালু করেও একই ফল। তাহলে তো ল্যাপটপের সমস্যা। মনটা ভাল হয়ে গেল। যাক একটা কাজ পাওয়া গেল। ব্যাপক উদ্যম নিয়ে সমস্যা খোঁজা শুরু করলাম। সমস্যা খুব সহজেই ধরা পড়লো। কিবোর্ড নষ্ট। আশার বেলুনটা চুপসে গেল। কিবোর্ড ফেলে দেওয়া ছাড়া সারাইয়ের উপায় নেই। সুতরাং সেভাবেই মুভি দেখা শুরু।
চারটা পর্যন্ত বিপুল ধৈর্য নিয়ে মুভি দেখে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম। এবার ঘুম ভাল হবে আশা করা যায়। ঘুম ভালই হল। সন্ধ্যে সাতটায় ঘুম ভাঙল। ফ্রেস হয়ে রাস্তায় বের হলাম। ব্যাপক গরম, তবু হাটতে ভাল লাগছে। বেশখানিকটা হেটে নদীর ধারে চলে এলাম। জোড়া বেজোড়া ব্যাপক মানুষের সমাহার। জনতার মাঝে নির্জনতা বেশ ভালই লাগছে। খালি বেঞ্চ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। দশ টাকার বাদাম কিনে একটা খালি বেঞ্চে বসে পড়লাম। বাদাম খেয়ে মজা পাচ্ছিনা। বাতাসে লবল সব উড়ে গেল। তাছাড়া একাএকা বাদাম খেয়ে মজা পাচ্ছিনা।
এর মধ্যে তিনজন অল্প বয়সী ছেলে আমার পাশে বসে পড়ল। তাদের বাদাম অফার করলাম। তিনজনই সন্দেহের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। কেউ কিছু বললো না, বাদামেও হাত দিলনা। এরপর তারা বিপুল আগ্রহে টিনেজার গল্প শুরু করলো। গল্পের ভাষাগুনে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাকে সসম্মানে উঠে যেতে হল। জোড়াগুলোর পাশের ফাঁকা সিটে বসা যাচ্ছেনা। প্রকৃতি এদের একলা ছেড়ে দিতে বলেছে।
কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে ঘর্মাক্ত হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়লাম। একটা ঠান্ডা কোল্ড ড্রিংক অর্ডার করলাম। রেস্টুরেন্টও প্রায় ফাঁকা। মনে মনে একটা চরিত্র সৃষ্টি করে তার সাথে গল্প করলে কেমন হয়? এটা ভালই হবে। চরিত্রের থাকা না থাকা আমার হাতে। সে চাইলেও পালাতে পারবেনা। তো শুরু করা যাক। প্রথমেই সে প্রশ্ন করে বসলো-
-এই, তুমি এত ঘামছো কেন?
-আমি খুব ঠান্ডা আছি তাই ঘামছি। তোমাদের ভাষায় কি যেন বলে- I'm very cool.
-বুঝলাম না! Cool থাকলে ঘামবে কেন?
-ঐ দেখো, টেবিলে রাখা সুদৃশ্য ঠান্ডা কোকের বোতলটাও ঘামছে। সে আমার চেয়েও বেশি ঘামছে। সুতরাং সে আমার চেয়েও বেশি Cool.
সে কঠিন চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এরকম কথোপকথন সে আশা করেনি। ভেবেছিলাম আমি না চাইলে সে যেতে পারবে না। ধারনা ভুল। সে চুপচাপ উঠে চলে গেল।
আমি আতঙ্কিত বোধ করছি। ফাঁকা বাসায় রাতটা একাই কাটাতে হবে।
(চলবে)
২৬/০৫/২০১৭
বরিশাল।
২| ১৪ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: একা থাকার মধ্যেও একটা মজা আছে সেই মজাটা একবার নিতে জানলে মনে হয় আর সমস্যা হবে না।
৩| ১৪ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:২০
গান সৈনিক বলেছেন: প্রবাস জীবন আসলেই অনেক কষ্টের। কষ্টগুলো শেয়ার করার কাউকে পাওয়া যায়না। অথচ মানুষ ভাবে বিদেশে খুব সুখে আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:২৮
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা প্রবাসীরা বিশেষ করে আমার মত কুনোব্যাংরা এমনতর সমস্যাই ফেস করে থাকি।।