নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
"অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৮" পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুনঃ অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৮
বইমেলার শেষদিনে মেলা শুরু হয়েছিলো বেলা ১ টা থেকে। বিকেল নাগাদ ভিড় বাড়তে শুরু করে। আমি বিকেল ৫টার কিছু পরে মেলায় পৌঁছলাম। প্রথমে বইপত্র প্রকাশনে কিছুক্ষণ বসলাম। শেষদিন বলে সেদিন ঐ স্টলে অন্যান্য বেশ কয়েকজন লেখক লেখিকা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবার উপস্থিতিতে স্টলটা বেশ সরগরমই ছিলো। ক্রেতাদের ভিড়ও মোটামুটি ভালোই ছিল। মেলার শুরু থেকে লক্ষ্য করেছিলাম, এই স্টলে কবি সালাহউদ্দিন আহাম্মদ এর গত বইমেলায় প্রকাশিত "জলের নামতা" বইটি বিক্রী হচ্ছে। বই এর নামটা আমাকে মুগ্ধ করে। কয়েকটা কবিতা ওখানে দাঁড়িয়েই পড়েছিলাম, বেশ ভালো লেগেছিল। পরে জানলাম সালাহউদ্দিন আহাম্মদ কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের একজন এক্স ক্যাডেট। প্রকাশককে বলে রেখেছিলাম, আমি কবির সাথে পরিচিত হতে চাই, উনি যেদিন স্টলে আসেন সেদিন যদি আমি স্টলে উপস্থিত থাকি তবে তিনি যেন আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন। সেদিন স্টলে পৌঁছে দেখলাম, প্রকাশক সেখানে উপস্থিত নেই, তবে একজন "জলের নামতা"য় শুভেচ্ছা স্বাক্ষর দিচ্ছেন। বুঝলাম, উনিই "জলের নামতা"র কবি। নিজে থেকেই পরিচিত হলাম। আমিও একজন এক্স ক্যাডেট জেনে উনি যথাবিহিত সৌজন্য প্রদর্শন করলেন। আমরা একে অপরের বই নিজেদের মধ্যে বিনিময় করলাম।
সেদিন বেশ কিছু শিশু কিশোরও আমার বইটির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলো। এদের কারো কারো নাম মনে রেখেছি, আবার কারো কারোটা ভিড়ের ডামাডোলে ভুলেও গেছি, তবে ওরা সবাই ছবি তুলে নিয়েছে ওদের কিংবা ওদের বাবা মায়ের সেলফোনে, আমিও আমারটায়। তেমন কয়েকটা ছবি এখানে দিলাম। কুড়িগ্রামের কবি সোহান সরকার এর বই ‘নয়নমনি’ও বিক্রয় হচ্ছিলো একই স্টল থেকে। তার সাথেও নিজ নিজ বই এর সৌজন্য কপি বিনিময় হলো। এমসিসি’র এক্স ক্যাডেট সদা হাসিখুশী শরীফ এলো আমার এবং অন্যান্য এক্স ক্যাডেটদের বই কিনতে। এখানে বলে রাখি যে ‘বইপত্র প্রকাশন’ থেকে এবারে মোট চারজন এক্স ক্যাডেটের বই বিক্রয় হয়েছে। বইমেলায় আমার বইটির সর্বশেষ ক্রেতাছিলেন এ এস এম ইউনুছ। তিনি “বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম (BDSF)” এ কাজ করেন। তার দুই সহকর্মীর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাদের একজনের নাম সুমাইয়া জামান, অপরজন সাবিদিন ইব্রাহীম, যিনি একজন সদালাপী, সদা হাসিখুশী সজ্জন ব্যক্তি, সেটা মনে রেখেছি। আরও মনে রেখেছি যে তিনি একজন খ্যাতিমান অনুবাদক। অনুবাদ সাহিত্যে তার বেশ কিছু ভালো কাজ রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে এবং সুমাইয়া পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। ইউনুছ সাহেব বেশ আলাপী লোক। তিনি BDSF এর পরবর্তী কোন একটা আলোচনায় গেস্ট স্পীকার হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন।
বইমেলার শেষ দিন হিসেবে ‘বইপত্র প্রকাশন’ এর প্রকাশক আমাদের মিষ্টিমুখ করালেন। আজিজ সুপার মার্কেটে লোক পাঠিয়ে তিনি আমাদের জন্য চিকেন শর্মা, সন্দেশ আর পেপসি আনিয়েছিলেন। স্টল বন্ধ করার আগে তিনি আমাদের সাথে একটা ছবিও তুললেন, তবে সবার পেছনে দাঁড়িয়ে। সবশেষে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ আমেজ নিয়েই আমার এবারের বইমেলার মাসব্যাপী অভিজ্ঞতার অবসান হলো। সে আমেজ নিয়েই বাসায় ফিরে এলাম, তবে বাসায় প্রবেশের আগে দেখলাম আমার বন্ধু ও প্রতিবেশী আহসান উল্লাহ’র অফিস কাম বৈঠকখানায় আলো জ্বলছে। উঁকি মেরে দেখি উনি এবং আমার অপর এক বন্ধু যাকে তাঁর পান্ডিত্যের কারণে আমরা সবাই “গুরু” বলে ডাকি, বসে গল্প করছেন। তাদের উভয়কে আমার দুটো বই দিয়ে আমিও সে আলাপচারিতায় কিছুক্ষণের জন্য যোগ দিলাম। তারপরে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এলাম, শেষ হলো মাসব্যাপী বই ও বইমেলা নিয়ে উত্তেজনা ও উদ্দীপনার।
ঢাকা
৩০ মার্চ ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
কবি সালাহউদ্দিন আহাম্মদ (ককক) এর সাথে, তার "জলের নামতা" হাতে...
শান্তির সাথে...
"জীবনের জার্নাল" হাতে ইশমাম....
তিন ক্ষুদে পাঠকের সাথে...
বইমেলার শেষ দিনে...শেষ ক্ষণে....শিল্পীর হাতে "গোধূলির স্বপ্নছায়া", মোহনার হাতে "জীবনের জার্নাল"...
এবারের বইমেলার আমার বইটির সর্বশেষ ক্রেতা এ এস এম ইউনুছ (মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পরিহিত), সুমাইয়া জামান আর তার পাশে দাঁড়ানো সাবিদিন ইব্রাহিম, যিনি একজন বিখ্যাত অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। পেছনে দন্ডায়মান "বইপত্র প্রকাশন" এর প্রকাশক মাহবুবুর রহমান বাবু। মেলা সাঙ্গ হবার পরে ছবিটি তোলা হয়। —
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: জীবনের আনন্দঘন একটি দিন হারিয়ে গেল,কালের পরিক্রমায়।। প্রত্যাশায় আগামী বছর। -- ঠিকই বলেছেন, সচেতনহ্যাপী।
এবারের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আগে প্রকাশনার ব্যাপারে তেমন সম্পৃক্ত ছিলাম না, তাই অভিজ্ঞতাও ছিল না। বইমেলার সময় প্রকাশকেরা মুখিয়ে থাকেন প্রবাসী লেখকদের প্রতি। তাদের নিয়ে ঝামেলা খুব কম। তারা প্রুফরীডিং এর ব্যাপারে খুঁতখুঁতে নন, পেমেন্টের ব্যাপারেও উদার, বই বিক্রী না হলেও তেমন মাথাব্যথা নেই, কোন রকমে লেখকের খাতায় নামটা উঠলেই হলো।
প্রবাসী লেখকগণ তাই প্রকাশকদের নয়নের মনি। এর ব্যতিক্রম অবশ্য প্রকাশক, প্রবাসী লেখক, উভয় ক্ষেত্রেই আছে।
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:২৭
ডি মুন বলেছেন:
পাঠকের সাথে আলাপন সবসময়ের জন্যেই আনন্দের।
২০১৭ তেও নিশ্চয়ই বই প্রকাশের পরিকল্পনা আছে আপনার ?
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৫৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: জ্বী আছে। "প্রেম ও প্রার্থনা" নামে পরবর্তী কবিতার বই প্রকাশের ইচ্ছে আছে, ইন শা আল্লাহ!
অনেক ধন্যবাদ, ডি মুন আপনাকে লেখাটা পড়ার জন্য। প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি।
৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫২
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: ব্যাস্ত সময় পার করছি তাই অনেক প্রিয় ব্লগারের লেখা মিস করছি । আজ আপনার এই পোষ্টে এসে মনে হচ্ছে প্রথম থেকেই
পড়তে হবে সব পর্ব গুল কিন্তু পড়ার কি সময় হবে ? মাঝে মাঝে সময় কাটেনা আবার এক সময় নিঃশ্বাস ফেলার সময় বের
করা যায় না । ভাল থাকুন প্রিয় ব্লগার ।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্যস্ত সময়ের ভেতরেও সময় করে আমার এ লেখাটা পড়েছেন দেখে অত্যন্ত প্রীত হলাম, দৃষ্টিসীমানা। মন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। শুভেচ্ছা জানবেন।
আপনার একই মন্তব্য দু'বার এসেছে বিধায় পরেরটা মুছে দিলাম।
৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: বইমেলার সাথে একটা সম্পর্ক আত্মার।যাওয়া হয়নি আপনার গণ্পে কিছুটা আমেজ নিয়ে গেলাম শুভ কামনা
২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: এর আগে আপনার কোন লেখা বা মন্তব্য পড়ে ধারণা হয়েছিলো বইমেলার সাথে আপনার "আত্মার সম্পর্ক" সম্বন্ধে। এখন আপনার নিজের কাছ থেকেই তা শুনে ভালো লাগলো।
লেখাটা পড়ার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ, রোকসানা লেইস। মন্তব্যে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: জীবনের আনন্দঘন একটি দিন হারিয়ে গেল,কালের পরিক্রমায়।। প্রত্যাশায় আগামী বছর।
আমি গিয়েছিলাম প্রথম সপ্তাহেই।। গিন্নীকে সাথে নিয়ে।। ফাকা মাঠেই গোল দিয়ে ফিরেছি।। অবশ্যই খালি হাতে না।।
তবে এক অভিজ্ঞতা আমাকে সন্মানিত করেছে।। ফেরার পথে হঠাৎ সামনে এসে দাড়ালেন এক মধ্যবয়স্কা।। বিনীতস্বরে বললো, ভাইয়ের কি বই কেনা শেষ?? জানতে চাইলাম কেন?? তখন বুকের ভাজ থেকে একটা বই বের করে বললেন এটা আমার লেখা, যদি কেনেন!! আমিতো প্রথমে হতবাক, জানি এটা বিচিত্র না।। কারন প্রকাশকরা কোন ঝুকি নিতে চান না।। তবুও সন্দেহে বইটাকে নেড়েচেড়ে দেখায়, ভদ্রমহিলা বুঝতে পেরেই জানালেন শেষে আমার ছবি আছে।। দেখলাম ঠিকই।। নিয়ে নিলাম।।(নামটা তার সন্মানর্থেই প্রকাশ করলাম না)।। এইতো আমাদের কালচার!!
ব্যাক্তিগত ভাবে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।।