নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।
“সার্ভিং দ্য হিউম্যানিটি”, সংক্ষেপে এসটিএইচ ("Serving the Humanity- STH") নামের একটি ছোট্ট সংগঠন গঠিত হয়েছিল আজ থেকে ৭/৮ বছর আগে। প্রথম প্রথম একটু অগোছালো ভাবেই কাজ শুরু হয়েছিল, পরে স্থপতি জগলুল এর গুলশানের অফিসে বসে একটা আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে এ সংগঠনের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী নিয়ে একটা প্রাথমিক রূপরেখা তৈরী করা হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের কিছু উপকারে আসা এবং এ লক্ষ্যে যার যার সাধ্যমত অবদান রাখা। সংগঠনটির কোন সাংগঠনিক কমিটি তখনো ছিলনা, এখনো নেই। এর উদ্যোক্তা মূলতঃ মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজের (পরবর্তীতে“মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ” নামে নতুন করে নামকরণকৃত - মির্জাপুর এর তৎকালীন এম পি জনাব ফজলুর রহমান ফারুক সাহেবের ইচ্ছায় ও প্রচেষ্টায় এক সরকারী আদেশবলে) কিছু প্রাক্তন ক্যাডেট। এই সভার আগে থেকেই ওরা কিছু সমমনা বন্ধু মিলে সমাজহিতৈষী কাজ করে বেড়াতো, যেমন শীতবস্ত্র বিতরণ, গ্রামের পাঠশালা বা স্কুলঘর মেরামত বা নতুন তৈরীকরণ, বন্ধুদের মধ্যে যারা ডাক্তার ছিল তাদের কয়েকজন মিলে মাঝে মাঝে বিনামূল্যে রোগী দেখে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান ইত্যাদি। ওরা খেয়াল করেছিল যে ওরা যদি কোন জনহিতৈষী কাজের উদ্যোগ নেয়, তবে প্রচুর সাড়া পাওয়া যায়। অনেক লোকজন অকাতরে দান করতে প্রস্তুত থাকে, যদি তারা বুঝতে পারে যে তাদের দেয়া দানের টাকার সদ্ব্যবহার হবে। কিন্তু যারা প্রাথমিক উদ্যোগটি নিয়েছিল তারা সবাই ছিল চাকুরীজীবি। তাদের পক্ষে বড় কোন উদ্যোগ নেয়া কিংবা ঢাকার বাইরে কোন কাজ করাটা দুরূহ ছিল, এমনকি নিয়মিতভাবে আলোচনা সভা আয়োজন করাও সম্ভব হতোনা।
আমি তখন সদ্য অবসরে গেছি। স্থপতি জগলুল এর আমন্ত্রণে একদিন ওদের একটা আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকি। ওরা আমাকে এবং আমার ব্যাচমেট ডাক্তার হাবীবকে অনুরোধ করে, আমরা যেন সিনিয়র হিসেবে ওদের এসব জনহিতকর কাজকে সমন্বয় করার একটা অভিভাবকসুলভ দায়িত্ব পালন করি। সেদিন আমি এবং হাবীব ওদের কথায় না বলতে পারিনি। এভাবেই আমিও জড়িয়ে গিয়েছিলাম STH এর দুটো মূল প্রকল্পে- STH ক্লিনিক এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য STH শিক্ষা প্রকল্পে। এই দুটো কাজ নিয়ে আমি এর আগেও এখানে একটা পোস্ট লিখেছিলাম এই নামেঃ দুটি ক্ষুদ্র সাফল্যের কথা। পরে দেখা গেলো, ওদের এমসিসি সতীর্থরা ছাড়াও, ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু এমনকি পেশাগত জীবনের কিছু কিছু বন্ধুরাও প্রচন্ড রকমের আগ্রহী এসব কাজে অংশ নিতে। তারা স্বেচ্ছায় তাদের নিজস্ব অর্থ, সময় ও মেধা ব্যয় করে, এমনকি কোন কোন সময় কায়িক শ্রম দিয়েও এসব কাজে অংশ নিত। তাদের এতটা আগ্রহ দেখে তাদেরকেও এসটিএইচ এর সাথে সম্পৃক্ত করে নেয়া হয়। আমি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করি প্রায় ৭৫ বছর বয়স্ক একজন প্রকৌশলীও স্বেচ্ছায় একাজে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।
ঐ সভায় একজন প্রস্তাব উল্থাপন করে যে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার (কিন্তু দূরত্ব অনুযায়ী ইসলামপুর উপজেলার অধিকতর নিকটবর্তী) নিকটে “দূরমুট” নামক একটি রেল স্টেশন আছে। সেই রেল স্টেশনের খুব কাছ দিয়েই ব্রহ্মপুত্র নদ প্রবাহিত। সেই নদের চরাঞ্চলের মানুষ একেবারেই হতদরিদ্র। ঐ এলাকার দরিদ্র জনগণের জন্য, বিশেষ করে অতি দরিদ্র নারী ও শিশুদের জন্য আমরা কিছু স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি। কেননা এসব এলাকার নারীদেরকে এমনকি অন্তঃসত্তা অবস্থায়ও অমানুষিক কায়িক পরিশ্রম করতে হয়, অথচ ওরা দু’বেলা ঠিকমত খাবারও পায় না। মহিলাদের রোগ ব্যাধি হলে ওদের স্বামীরা ডাক্তার দেখাতে মোটেই উৎসাহী হয়না এবং সাধারণতঃ মহিলারা একেবারে শয্যাশায়ী না হলে ডাক্তারের মুখ দেখতে পায়না। দেশের এত জায়গা থাকতে ঐ জায়গাটির প্রস্তাব উঠেছিল কারণ ঐ অঞ্চলের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দুই পুত্র একদা এমসিসি’র ক্যাডেট ছিল। বড়ভাই এর নাম সৈয়দ সাবের কামাল জামান। ডাক নাম ফয়সাল। আর ছোট ভাই এর নাম সৈয়দ রিয়াসুজ্জামান রুশো। রুশো ঐ এলাকায় একটি দাতব্য স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওদের কিছু পারিবারিক জমি ছেড়ে দিতে অকাতরে সম্মত হয়। সেই সূত্রে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে ওদের ছেড়ে দেয়া জমিতে আমরা একটি দাতব্য স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করবো। লন্ডন থেকে তার ভাইও টেলিফোন করে তার অনুমতি দেয় এবং আমাদেরকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে। শুরু হয়ে যায় আমাদের কাজ। আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে আজ স্মরণ করছি ক্লিনিকটি নির্মাণের ব্যাপারে ৭৫ বছর বয়স্ক সেই মুরুব্বী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের কথা, যিনি ক্লিনিকটি নির্মানের সময় একাধিকবার নিজ গাড়ীতে সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এবং যেদিন প্রথম গ্রাউন্ড ব্রেকিং স্পেড ওয়ার্ক হয়, সেদিন তিনি নিজে বর্ষাভেজা মাঠে নেমে মাপামাপি করেছিলেন। কার্যরত অবস্থায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অসংখ্য মশার কামড় উপেক্ষা করে তিনি সেই খোলা মাঠের মধ্যেই একটা চেয়ারে বসে মাগরিব এর নামায পড়ে দোয়া দরুদ পাঠ করেছিলেন। তিনি বছর দুয়েক আগে ইন্তেকাল করেছেন, তবে তার আগের বছর তিনি ক্লিনিকটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হতে পেরেছিলেন।
দুপুরে খবর পেলাম, আজ সকালে রুশো ফজরের নামায পড়ে এসে তার কক্ষে প্রবেশ করেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বাড়ীতে তার বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ নেই। মাকে দেখভাল করার জন্য রুশো দূরমুট ছেড়ে অন্য কোথাও যায়নি। তিনি তখন ঘুমন্ত ছিলেন। একজন গৃহকর্মী রুশোকে লক্ষ্য করে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে, কিন্তু তাড়াতাড়ি করে ইসলামপুরের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করার মত কেউ ছিলনা। তাই হাসপাতালে নেয়ার আগেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। সম্ভবতঃ একটা ম্যাসিভ কার্ডিয়াক এ্যারেস্টই তার মৃত্যুর কারণ। একাডেমিক বর্ষ অনুযায়ী রুশো আমার চেয়ে আট বছরের কনিষ্ঠ ছিল।
সৈয়দ রিয়াসুজ্জামান রুশো অনেক বড় মনের মানুষ ছিল। সৈয়দ বংশের ছেলে, সেরকমই ছিল তার আচার ব্যবহার। আমি তাকে একজন খুবই দয়ালু ব্যক্তি হিসেবে চিনে এসেছি। আমার সাথে পরিচয় হবার পর রুশো আমাকে অনেকদিন বলেছে, ‘খায়রুল ভাই, একমাত্র আপনিই আমার নামটি (Rousseau) সঠিকভাবে লিখতে কোনদিন ভুল করেন নি; অনেকেই আমার নামের বানানটা ভুল করে লিখে”। বোধ করি ওদের পিতা ফরাসী দার্শনিক Jean-Jacques Rousseau (জন্ম সুইজারল্যান্ডে) এর নামানুসারেই রুশোর নামটি রেখেছিলেন, যার একটি বিখ্যাত উক্তিঃ What wisdom can you find that is greater than kindness? এই kindness কথাটা ওর নামের সমার্থক ছিল। যেসব বাচ্চারা আমাদের শিক্ষা প্রকল্পের অধীনে ছিল, প্রতিবছর কুরবাণীর ঈদ এলেই রুশো মেসেজ পাঠাতো বাচ্চাদের নিয়ে ঈদ করার জন্য একটা গরু কুরবাণী দিতে চায়। সাথে সাথেই স্পনসর যোগার হয়ে যেত, কেউ না কেউ এগিয়ে আসতো, অনেক সময় একাধিক জন। Ex Cadets' Forum (ECF) এর Toys R Urs (Toys Are Yours) নামে একটা প্রকল্প আছে, যেখানে তারা স্বচ্ছল ও দয়ালু ব্যক্তিদের কাছ থেকে পুরনো ব্যবহারোপযোগী খেলনা সংগ্রহ করে দরিদ্র শিশুদের মাঝে বিতরণ করে। ওদের সাথে যোগাযোগ করে একবার আমরা অনেক খেলনা সেখানে পাঠিয়েছিলাম। খেলনাগুলো শিশু ও বালক বালিকাদের মাঝে বিতরণ করার পর ওদের মুখে যেমন আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছিল, রুশোর মুখেও তেমনি একটা ঔজ্জ্বল্য ভেসে উঠেছিল। বাচ্চাদেরকে যে রুশো এত ভালবাসতো, সেই রুশোই আজীবন অকৃতদার রয়ে গেল, কে জানে মনের কোন দুঃখে! খুবই সরল মনের মানুষ, কিছুটা পাগলাটে স্বভাবেরও। কিন্তু আমার কাছে মনে হতো, সে ছিল এক বিজনবাসী, নিভৃতচারী সাধু। হাসতো, খেলতো, সিগ্রেট খেতো দেদারসে, বৃদ্ধা বিধবা মাকে দেখাশুনা করতো পরম নিষ্ঠায়, গরীব আম জনতাকে চিকিৎসা সেবা দিত তার নিজস্ব স্টাইলে- কখনো পথ চলতে চলতে, সিগ্রেট ফুঁকতে ফুঁকতে অথবা চলন্ত রিক্সা থামিয়ে খস খস করে হাঁটুর উপরে ধরে রাখা একটা যেমন তেমন কাগজে সে প্রেসক্রিপশন লিখে দিত। সবাইকে তুই তুই করে বলতো, সবাই সেটাকে আপন করে নেয়ার অভিব্যক্তি বলেই মনে করতো। দিনশেষে সে একলা ঘরে থাকতো, কখনো গান শুনতো, কখনো কোন অধরা সুখের সন্ধানে অজানা কল্পনায় ভেসে বেড়াতো। এই রুশোই একাদশ শ্রেণীতে থাকা কালে বার্ষিক এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় প্রথমে নিজ কলেজে, তার পর আন্তঃ ক্যাডেট কলেজ প্রতিযোগিতায় “দ্রুততম ক্যাডেট” শিরোপা অর্জন করেছিল। পরবর্তী জীবনে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় সে সেখানেও দাপটের সাথে এ সাফল্য ধরে রাখে। ফিল্ডট্র্যাকে এতটা ক্ষিপ্র রুশো জীবনের ট্র্যাকে উঠে কি কারণে তার স্টীম হারিয়ে ফেলেছিল, সেটা নিয়ে কেউ ভাবেনি, সে নিজেও কখনো না।
আগামীকাল বাদ জুম্মা দূরমুটে ওর জানাযা ও দাফন অনুষ্ঠিত হবে। আমার দুঃখ, এই মহান প্রাণের চিরবিদায়ের শেষ আনুষ্ঠানিকতায় আমি উপস্থিত থাকতে পারবো না। আজ ২০ শে সেপ্টেম্বর। গতবছর ঠিক এই দিনেই আমি ব্লগে আমার এই কবিতাটা একদিন শুধু ছবি হয়ে যেতে হবে প্রকাশ করেছিলাম। তারিখ সহ কবিতাটা কতই না কাকতালীয়ভাবে রুশোর জীবনে সত্য হয়ে গেল! আজ থেকে রুশো শুধু একটি নির্বাক, ফ্রেমাবদ্ধ ছবি হয়ে রবে। তার ছবি ফ্রেমে বাঁধিয়ে বাড়ীর দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার মত তার বাড়ীতে আজ কেউ নেই। সে রবে আমাদের সবার অন্তরে- কখনো নির্বাক ছবি হয়ে, কখনো সবাক চলচ্চিত্র হয়ে এক বেদনা বিধুর জীবনের কাহিনী শুনিয়ে আমাদের কাঁদিয়ে যাবে।
ঢাকা
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
পুনশ্চঃ ঢাকা থেকে নামাযে জানাযায় অংশ নিতে যাওয়া রুশোর একজন ব্যাচমেটের ভাইবার মেসেজ থেকে উদ্ধৃত করছিঃ
"প্রতিদেনের মতো গতকালও শেষরাতে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে হেঁটে ক্লিনিকে এসে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েছে, মাযারের কাছের মসজিদে গিয়ে ফজর পড়ে আবার ক্লিনিকে এসে সূর্যোদয়ের পর এশরাক নামাজ পড়ে হেঁটে নিজের রুমে গিয়ে ফ্লোরে পাতা তার বিছানায় শোয়ার আগে বললো....... তুস্টি, চা দে.......এই তার শেষ কথা..... ৪ মিনিটের মধ্যে সব শেষ..... সময় তখন সকাল ৬ টা।"
তুষ্টি ওদের বাসায় আশৈশব থাকা এবং বড় হওয়া একজন বিশ্বস্ত গৃহকর্মী তথা কেয়ার টেকার। এখন তার বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। যারা একবার ওদের দুরমুটের বাসায় গিয়েছে, তাদের সবার ওকে চেনার কথা। খালাম্মা ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। তিনি এখন আর রুশোর বন্ধুদেরকে চিনতে পারেন না, এমনকি যারা বছরে বছরে বহুবার ওদের বাসায় যাতায়াত করেছে, তাদেরকেও না। তাঁকে জানাযার আগে পর্যন্ত খবরটা ভেঙে বলা হয়নি। তবে তিনি বাড়ির চারপাশে অনেক মানুষ দেখে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘চারিদিকে এত মানুষ কেন’? জানাযার ঠিক আগে আগে ওনাকে খবরটা ভেঙে বলার সময় উনি কিছুক্ষণ বিমূঢ় হয়ে বসেছিলেন, অশ্রুপাতও করেছিলেন, কিন্তু তার পরে মনে হয় আবার সবকিছু ভুলে গিয়েছেন। কতই না ঠুনকো মানুষের এ স্মৃতিময় জীবন! বোধশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেললে মানুষের জীবনটা কতটা অসার হয়ে পড়ে!
নীচে রুশোর দুটো ছবি সংযোজন করলাম। প্রথমটা একাদশ শ্রেণীতে সে যখন "দ্রুততম ক্যাডেট" হয়েছিল, সে সময়ের রুশো বিজয় স্তম্ভে দাঁড়ানো। পরেরটা পরিণত বয়সের, ক্ষিপ্রতা হারানো শান্ত, সৌম্য রুশো।
ছবি সৌজন্যঃ মোস্তাক আহমেদ
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: বুঝা যাচ্ছে যে, তিনি অন্য মানুষকে সম্ভব মতো প্রশান্তি দেয়ার মাঝে নিজের জীবনের সার্থকতা খুঁজে পেয়েছিলেন - হ্যাঁ, ঠিক তাই। নিজে সারাজীবন অকৃতদার ছিলেন, কিন্তু অন্যের বাচ্চাদেরকে তিনি ইট ভাঙ্গার মত শিশুশ্রমের কাজ থেকে ধরে এনে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। শিশুরাও ওনাকে খুব ভালবাসে। ওদের অনেক আব্দার তিনি নিজ পকেট থেকেই পূরণ করতেন। না পারলে এসটিএইচ এর সাহায্য চাইতেন।
২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৯
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: ভালো মানুষগুলো, সমাজের উপকারে যারা কাজ করে তারা এতো তাড়াতাড়ি চলে যায় কেন!!!
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: এটা স্রষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত। এক চুল এদিক ওদিক হবার কোনই উপায় নেই।
৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০০
অচেনা হৃদি বলেছেন: আল্লাহ তাঁকে উত্তম প্রতিদান দিক।
ভালো মানুষেরা দ্রুত আমাদের ছেড়ে বিদায় নিচ্ছে। ভালো মানুষ হায়াত কম পায় এটা কি তবে সত্য প্রবাদ?
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: হায়াত মউতের উপর কারো কোন কিছু বলা বা করার নেই, এটা স্রষ্টার এখতিয়ার। যতটুকুই হায়াত মানুষ পাক না কেন, সে ঐ সময়টুকু কিভাবে কাজে লাগালো, সেটাই আসল বিবেচ্য।
৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০৯
রাকু হাসান বলেছেন:
আপনার উপস্থাপনার মাধ্যমে যতটুক জানতে পারলাম । একজন সাদা মনের মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো । উনার কৃত কর্ম মানুষ কোনো না কোনো ভাবে মনে রাখবে । আপনাদের মনে বেঁচে থাকবে অনেক দিন । প্রয়াত রুশো সাহেবের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । আল্লাহ্ উনাকে উত্তম প্রতিদান দিবে নিশ্চয় । েএমন একজন কাছের বন্ধুর শেষ দর্শন হবে না ,জেনে আমারও খারাপ লাগছে । দিনশেষে এই যে আকুতি ,দোয়াটাই উনার রুহের জন্য সুখ ভয়ে আনুক ।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: দিনশেষে এই যে আকুতি ,দোয়াটাই উনার রুহের জন্য সুখ ভয়ে আনুক - অনেক ধন্যবাদ, এমন আন্তরিক একটা প্রার্থনার জন্য। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রেস্পেক্টেড স্যার,
আজকের আপনার পোস্টটি পড়ে আপনার আরেকটি মনের পরিচয় পেলাম।
রুশোসাহেবের প্রয়াণে পোস্টটি পড়ে যে শ্রদ্ধাবোধ চলে এসেছে তাতে গভীরভাবে আমিও শোকাহত। ওনার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। যেহেতু ওনার নাম রুশো, সেকারনে বোধহয় দার্শনিক রুশোর মত ওনার হৃদয়টি ছিল ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। যে ভালোবাসা উনি জীবনভর বিলিয়েছেন। আমি রুশোর একটি কথাতেই শেষ করবো,
" Man is born free but everywhere he is in chain. "
হ্যাঁ, উনি স্বাধীন হয়ে জন্মেছিলেন। মাঝে শৃঙ্খলিত জীবনের মধ্যে থেকে আবার স্বাধীন হয়ে গেলেন। বস্তুত যে নিয়মে আমরা কেউ ব্যতিক্রম নই।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভকামনা আপনাকে।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার সহমর্মিতার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
উনি সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন ছিলেন। এখন আরো স্বাধীন হয়ে গেলেন।
৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৯
ল বলেছেন: প্রতেকটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে,
সমাজে অনেক ভালো লোক আছে যাঁর জীবিত অবস্থায় কর্মের তেমন মৃল্য পান না, কিন্ত কিছু হৃদয়ে স্হান করে নেন অনায়াসে।
রুশো সাহেবের প্রতি রইলো হৃদয়ের গহীন থেকে দোয়া।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: রুশো সাহেবের প্রতি রইলো হৃদয়ের গহীন থেকে দোয়া - অনেক ধন্যবাদ আপনার এই দোয়ার জন্য। ওনার এলাকার লোকজন ওনাকে দীর্ঘদিন স্মরণে রাখবেন বলে আমার বিশ্বাস।
৭| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৪৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আল্লাহ উনাকে জান্নাত বাসী করুন। প্রতিটা মৃত্যুই আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায় এই জীবন সম্পর্কে...
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রতিটা মৃত্যুই আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায় এই জীবন সম্পর্কে... - ঠিক বলেছেন। নামাযের ব্যাপারে উনি আগে গাফেল ছিলেন, কিন্তু শেষ কয়েকটি বছরে উনি নিয়মিতভাবে নামায পড়েছেন। ঢাকা থেকে নামাযে জানাযায় অংশ নিতে যাওয়া ওনার একজন ব্যাচমেটের ভাইবার মেসেজ থেকে উদ্ধৃত করছিঃ
"প্রতিদেনের মতো গতকালও শেষরাতে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে হেঁটে ক্লিনিকে এসে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েছে, মাযারের কাছের মসজিদে গিয়ে ফজর পড়ে আবার ক্লিনিকে এসে সূর্যদয়ের পর এশরাক নামাজ পড়ে হেঁটে নিজের রুমে গিয়ে ফ্লোরে পাতা তার বিছানায় শোয়ার আগে বললো....... তুস্টি, চা দে.......এই তার শেষ কথা..... ৪ মিনিটের মধ্যে সব শেষ..... সময় তখন সকাল ৬ টা।"
তুষ্টি ওদের বাসায় আশৈশব থাকা এবং বড় হওয়া একজন বিশ্বস্ত গৃহকর্মী তথা কেয়ার টেকার। এখন তার বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। যারা একবার ওদের দুরমুটের বাসায় গিয়েছে, তাদের সবার ওকে চেনার কথা।
অশীতিপর খালাম্মা ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। তিনি এখন আর রুশোর বন্ধুদেরকে চিনতে পারেন না, এমনকি যারা বছরে বছরে বহুবার ওদের বাসায় যাতায়াত করেছে, তাদেরকেও না। তাঁকে এখনো খবরটা ভেঙে বলা হয়নি। তবে তিনি বাড়ির চারপাশে অনেক মানুষ দেখে জিজ্ঞাসা করছেন, চারিদিকে এত মানুষ কেন? ওনাকে এখন খবরটা ভেঙে বলার সময় হয়ে এসেছে, কারণ আর একটু পরেই মরদেহ জানাযার জন্য মাসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। একজন ডাক্তার এবং একটি এম্বুল্যান্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে ওনাকে জরুরী পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য।
এই জীবন নিয়েই আমাদের এত খেলা!
৮| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
এদেশে এমন ভাল আর সাদা মনের আত্মার বড়ই অভাব; উনার প্রতি রেসপেক্ট৷স্যার, আপনাকে সরাসরি কখনো দেখিনি, আশা করি কোন একদিন দেখা হবে৷আমার আপনাকেও একজন সুশিক্ষিত, ভদ্র আর সজ্জন মানুষ মনে হয়৷আপনার সুস্থতা আর দীর্ঘ জীবন কামনা করছি ৷
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আশা করি কোন একদিন দেখা হবে - ইন শা আল্লাহ, হবে। আগামী বইমেলায় কোন একদিন দেখা হয়ে যেতে পারে।
আপনার মন্তব্যের উদারতায় মুগ্ধ হ'লাম, প্লাসে অনুপ্রাণিত।
অনেক, অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা!
৯| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১:৫৮
চাঙ্কু বলেছেন: এক জন ভাল মানুষকে হারালাম
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০১
খায়রুল আহসান বলেছেন: হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শুভকামনা...
১০| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০২
কাতিআশা বলেছেন: খুব খারাপ লাগছে রুশো ভাই এভাবে চলে গেলেন...ইননা লিললা হি ওয়া ইননা ইলাইহি রাযেউন! উনি আমার হাজব্যানডের রুমমেট ছিলেন ক্যাডেট কলেজে..খুব মন খারাপ ওর!
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: রুশোকে গত প্রায় বছর পাঁচেক ধরে বেশ নিকট থেকে দেখে এসেছি। ওর প্রতি ভীষণ একটা মায়া জন্মেছিল। খুব ভাল মনের মানুষ ছিল। কখনো ভাবতেই পারিনি ও এত আগে চলে যেতে পারে। ওকে নিয়ে এই পোস্টটা লিখেছি সেই মায়া থেকেই।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
আপনার যাওয়া আসা.... পোস্টে আপনিও রুশোকে স্মরণ করেছেন, সেটা পড়ে এলাম।
ভাল থাকুন, সপরিবারে...
১১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৪২
বাকপ্রবাস বলেছেন: আল্লাহ যেন বেহেস্ত নসিব করে নেন, আর আপনাদের কাজগুলোর বরকত দেন যেন গরীব দুঃখীরা সাহয্য সহযোগীতা পায়
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব সুন্দর করে দোয়া করে গেছেন, এজন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন আপনার এই নেক দোয়া কবুল করে নিন! আমীন!
জাযাকাল্লাহু খাইরাঁ।
১২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০৪
ওমেরা বলেছেন:
ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন | নিশ্চয় আল্লাহ উনার ভাল কাজের প্রতিদান দিবেন।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: আশাকরি এবং প্রার্থনা করি, আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন ওনার জীবনের সকল শুধু ভাল কাজই নয়, ভাল নিয়্যত বা ইচ্ছাগুলোও, যদি উনি সেগুলো সম্পূর্ণ করতে নাও পারেন, কবুল করে নিবেন এবং ওনার জীবনের সকল ছোট বড় গুনাহগুলো মা'ফ করে দিবেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, ওমেরা।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার পুরনো দুটি পোস্ট- স্বপ্ন গুলো যায় হারিয়ে দূর অজানায় এবং ছোট ছোট ঢেউ পড়ে দুটো মন্তব্য রেখে এসেছি। আশাকরি, সময় করে একবার দেখে নেবেন।
১৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২০
সনেট কবি বলেছেন: তাঁর জন্য শ্রদ্ধা।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খাইরাঁ।
১৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৪
এ.এস বাশার বলেছেন: অসাধারন গুনাবলির মানুষ গুলোর জীবন কেমন জানি খুব সংক্ষিপ্ত হয়.....!
তার আত্মার মাগফেরাত কমনা করছি... সৃষ্টি কর্তা তাকে জান্নাত বাসি করুন....
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার দোয়ার জন্য। মন্তব্যে এবং প্লাসে প্রীত ও অনুপ্রাণিত হ'লাম।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:০৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার শেষ দুটো পোস্টে দুটো মন্তব্য রেখে এসেছি। আশাকরি, একটু সময় বের করে আপনার পোস্টে দেয়া পাঠকের মন্তব্যগুলোর উত্তর দিয়ে যাবেন।
১৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তবতা বাস্তবতাই, বাস্তবতাকে আন্দাজ করার দার্শনিকতা বালক-বালিকাদের চমৎকৃত করলেও তার উপযোগিতা নাই।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: বাস্তবতা বাস্তবতাই - এটুকু বুঝলাম এবং একমত হ'লাম।
১৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২২
ওসেল মাহমুদ বলেছেন: ডা: রুশো ভাই কি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল থেকে পাশ করা ?! মহান ব্যাক্তি ! সবার প্রিয় ছিলেন রুশো ভাই ! তাঁর জন্য শ্রদ্ধা। সত্যি, অসাধারন গুনাবলির মানুষ গুলোর জীবন কেমন জানি খুব সংক্ষিপ্ত হয়.....! তার আত্মার মাগফেরাত কমনা করছি... সৃষ্টি কর্তা তাকে জান্নাত বাসি করুন....! আমিন !
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমি যতদূর জানি, রুশো রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছিল।
মন্তব্য এবং দোয়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৭| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০০
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখাগুলো পড়লে ভালো কিছু করার ইচ্ছে জাগ্রত হয়। একটা লেখায় দেখলাম রাস্তায় আহত একজনকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর ঘটনা। এখানে সমাজসেবার কথা। আবার কোন একটা লেখায় গৃহকর্মীর প্রতি দায়িত্বপালনের কথা পড়েছিলাম।
সেই কবেই কুসুমকুমারী দাস লিখে গিয়েছিলেন-
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে
আর পবিত্র কুরআনেই বলা হয়েছে- কুল্লু নাফসিন জা'ইকাতুল মাউত। এর অন্যথা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। আমরা শুধু সৈয়দ রিয়াসুজ্জামান রুশোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করতে পারি। নিশ্চয় আল্লাহ উনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দেবেন।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার মন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। চেষ্টা করি, চলার পথে মানুষের প্রতি ইহসান করার জন্যে। কারণ আমি বিশ্বাস করি, ভাল কাজের প্রতিদান অবশ্যই পাওয়া যায়, অনেকগুণ বর্ধিত হারে। এবং আমি পেয়েছিও।
যখন সরকারী চাকুরীতে ছিলাম, অনেক ট্যুরে যেতে হতো। অনেক সময় গভীর রাতেও লং ডিসট্যান্স ট্রাভেল করতে হতো। পথে হয়তো দেখতাম চৌরাস্তার মোড়ে অনেক যাত্রী "লাস্ট বাস" মিস করে অপেক্ষমান, পথ তাদের রাতের মধ্যেই পাড়ি দিতেই হবে যে করেই হোক। বাস মিস করে হেডলাইটের আলো দেখলেই হাত তুলতো ট্রাক ভেবে, যাতে ট্রাকের উপরে বসে যেতে পারে। আমি থেমে যতজনকে সম্ভব, জীপে/ পিকআপে তুলে নিতাম। পথে পথে তাদের নামিয়ে দিয়ে বাড়ী ফিরতাম। এসব করে আনন্দ অনুভব করতাম। যখন নামিয়ে দিতাম, তাদের কৃতজ্ঞ চোখের ভাষা মুখের ভাষাকে ছাড়িয়ে কথা বলতো। আমি সে ভাষা পথের মৃদু আলোতেও পড়তে পারতাম।
১৮| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:৩৭
সোহানী বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেল খায়রুল ভাই। এভাবে চলে যেতে দেখতে ভালো লাগে না। কখনই ভালো লাগে না।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: এভাবে চলে যেতে দেখতে ভালো লাগে না - অবশ্যই ভাল লাগেনা, কিন্তু আল্লাহই সবকিছু ভাল জানেন।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা...
১৯| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯
জাহিদ অনিক বলেছেন:
আমরা একজন ভালো মানুষকে হারালাম।
আপনার লেখাটা পড়ে মন ভারী হয়ে উঠলো।
ভালো থাকবেন।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখাটা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভেচ্ছা---
২০| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩
করুণাধারা বলেছেন: যে কোন মৃত্যুর খবরই দুঃখজনক, তাই এই মৃত্যুর খবর পেয়েও দুঃখ পেলাম, কিন্তু সাথে সাথেই মনে হচ্ছিল এমন মৃত্যু কজনের হয়! জাগতিক নানা চাহিদা ভুলে তিনি অন্যের কল্যাণে নিয়োজিত ছিলেন, বোঝা যাচ্ছে মায়ের দেখাশোনাও তিনিই করতেন। তাহাজ্জুদ, ফজর ও ইশরাকের নামাজ পড়ার কিছুক্ষণ পর তিনি ইন্তেকাল করেন। আল্লাহ তাকে জান্নাত বাসী করুন।
ছোটবেলায় পড়া একটা কবিতা মনে পড়ছে,
এমন জীবন হবে করিতে গঠন
মরণে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন।
কবিতার কথাগুলো ওনার জীবনের সাথে মিলে যায়।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩১
খায়রুল আহসান বলেছেন: কিন্তু সাথে সাথেই মনে হচ্ছিল এমন মৃত্যু কজনের হয়! - ঠিকই বলেছেন, এমন নির্ঝঞ্ঝাট মৃত্যু খুব বেশী জনের ভাগ্যে হয় না।
কবিতার কথাগুলো ওনার জন্যেও প্রযোজ্য হয়েছে। শত শত শোকার্ত নর নারী ও শিশুদের কান্নার মাঝে ওনার নিথর দেহ শুয়ে আছে, ছবিতে এমনটাই দেখেছি।
মন্তব্যে এবং প্লাসে অনেক অনুপ্রাণিত হ'লাম। ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....
২১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬
নীলপরি বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেলো । ওনার প্রতি শ্রদ্ধা রইলো ।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১২
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওনার প্রতি শ্রদ্ধা রইলো - অনেক ধন্যবাদ, নীলপরি। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
২২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একজন পূন্যাত্মা সম্মানীত রুশোর প্রতি রইল অভিবাদন।
মরণেও যারা মৃত্যুকে জয় করতে পারে কর্শ দিয়ে- সেই দুর্লভদের একজন তিনি।
উনার বিদেহী আত্মার শান্তি, মুক্তি ও কল্যানের প্রার্থনা রইল।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনার এই আন্তরিক প্রার্থনার জন্য। মন্তব্যে এবং প্লাসে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
শুভকামনা---
২৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬
পদ্মপুকুর বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার, ভাল্লাগলো আপনার কথা শুনে। এই যায়গাটাতে আপনার সাথে আমার মিল রয়েছে। সেই উবার বা পাঠাও আসার আগ থেকেই আমি অফিসে আসার পথে কাউকে পেলে উঠিয়ে নিই গন্তব্য মিলে গেলে। তাঁরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। নানারকম মজার অভিজ্ঞতাও হয়েছে এতে করে। ইদানিং কাউকে গাড়িতে ওঠার জন্য রিকোয়েস্ট করাও রিস্কি। মানুষ ভয় পায়। উঠতে চায় না।
সম্প্রতি নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ে আমি রামপুরা ব্রিজে থেমে থেমে বয়স্ক পথচারীদের ডেকেছি গাড়িতে ওঠার জন্য। বেশিরভাগ সময়েই কেউ রাজি হয়নি। এই যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে, এটা সামগ্রিক অর্থে আমাদের সামাজিক ব্যর্থতা।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: এই যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে, এটা সামগ্রিক অর্থে আমাদের সামাজিক ব্যর্থতা - আপনি ঠিকই বলেছেন।মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। তবে এটা ১৬ কোটি মানুষের দেশ। আমি অন্তরে বিশ্বাস করি, এদেশে ভাল মানুষের সংখ্যাটাই এখনো অনেক বেশী।
বছর পাঁচেক আগে একবার আদমজী কলেজের সামনে দেখলাম, এক কলেজ ছাত্রী লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে ওঠার সময় যেই না তার টার্ন আসলো অমনি বাসটা ছেড়ে দিল। প্রত্যাখাত হবার লজ্জা ও উষ্মা তার চোখেমুখে প্রকাশ পাচ্ছিল। আমি তাকে ক্রস করার সময় ইনটুইটিভলী চালককে বললাম গাড়ী থামাতে। জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় যাবেন? তিনি বললেন ফার্ম গেইট। আমি যাচ্ছিলাম মতিঝিল, তাই পথেই পড়বে। তাকে গাড়ীতে নিয়ে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে গেলাম। বাসায় এসে গিন্নীর সাথে ঘটনাটি শেয়ার করাতে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে আমাকে সাবধান করে দিয়েছিলেন, আর যেন কখনো এমন বোকামী না করি।
২৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪১
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: রুশোর মতো মানুষদের অনেক দিন বেঁচে থাকা উচিৎ। কিন্তু অনেকেই বলে ভালো মানুষরা নাকি বাঁচে কম। রুশো যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক, এই কামনা।
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০২
খায়রুল আহসান বলেছেন: সবই অদৃষ্টের লিখন, মানুষের করার কিছুই নেই।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। মন্তব্যে প্রীত হ'লাম।
২৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০১
মেহবুবা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে নিভৃতচারী নিপাট ভদ্রলোক রুশো ভাইয়ের বিষয়ে লেখার জন্য ।
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব খুশী হ'লাম আপনি এ লেখাটা পড়ে গিয়েছেন দেখে। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত।
আপনি কি রুশোকে চেনেন?
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
বুঝা যাচ্ছে যে, তিনি অন্য মানুষকে সম্ভব মতো প্রশান্তি দেয়ার মাঝে নিজের জীবনের স্বার্থকতা খুঁজে পেয়েছিলেন; এসব মানুষের ভাবনার মাঝে থাকবেন তিনি অনেকদিন যাবত।