নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিলেকোঠার ঘুলঘুলি

ভয়ংকর নেশা লেগেছে,তোমার ঠোঁটের সেই লাল রক্তের নেশা।

কাব্বিক্য

আমি মদ এর বোতলে কোক ঢুকিয়ে পান করে/ সবার সম্মুখে মাতলামি করি/ আর কিছু উল্টা পাল্টা শব্দমালা ব্যবহার করে কবিতা লিখে/ নিজেকে নিয়ে আতলামি করি...

কাব্বিক্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোনাস নিবে তাহলে তো রক্ত দিবে!!

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৯

(১)

"টুনি মা আমার একটু ভাত খা! সারাদিন ধরে কিছু খাস নাই মা আমার। আম্মায় মারছি বইলারাগ করছস"?



"না আমি ভাত খামু না..আগে কন আমারে এইবার ঈদে চুমকি লাগাইন্না কামিজ দিবেন! তাহলেই আমি ভাত খামু"।



"আইচ্ছা মা দিমু এখন ভাতটা খা"!



"সত্যি দিবেন"



"হ্যা দিমুরে মা তরে না দিলে কারে দিমু"



জরিনা জানে তার মেয়ের ঈদে চুমকি লাগানো কাপড় কিনে দেওয়ার ক্ষমতা নাই। গামেন্টসে কাজ করে যে বেতন পায় তা দিয়ে সংসার চালাতেই পারে না। আর ঈদে মেয়েরে দামি পোশাক কই থেকে কিনে দিবে! কিন্তু এখন একটা আশা আছে...বোনাস পাইতে পারে তা দিয়ে মেয়ের আবদার পূরণ করা যাবে। মেয়েটা কিছুই তো চায় না সহজে। এখন বোনাস পেলেই হল!



(২)

-আশফাক বাবা তোর ছোট ভাই তোজিদ ধরছে এইবার ঈদে তারে দুইটা শার্ট আর পেন্ট কিনে দিতে হইব।



:আপনি চিন্তা করবেন না আম্মা। ব্যবস্থা হইয়া যাইব।



-এত টাকা কই থেকে পাবি বাবা!



:আম্মা আপনি শুধু শুধু টেনশন নিতাছেন। আল্লাহ মিলাইয়া দিব! আপনি মিন্টুরেকইয়া দেন তার ভাই তার লাইগাঈদে তার জন্য ২টা শার্ট পেন্ট লইয়া আইব!



এতটুকু বলে ফোনটা রেখে দেয় আশফাক। সে জানে যে বেতন পায়তাতে হয়তোবা তার ভাইয়ের জন্য একটা পোশাক ও ঠিক মত কিনা যাবেনা এই অগ্নিমূল্যের বাজারে। তবু তার বুকে একটা ক্ষীন আশা আছে। বোনাসটা পেলে হয়তোবা কিছু একটা পথ হবে।



(৩)

"যাক এইবার তো ভালোই কাজ করছি। বেতন ও সাথে ওভারটাইম...সব মিলাইয়া মেলা ট্যাকা পামু। আর যদি বোনাস টা পাইয়া যাই। তাইলে তো ছক্কা। বুঝছস ময়না এইবার আম্মার লাইগা শাড়ী কিনুম চিন্তা করছি। আম্মারে কোন বার কিছু দেওয়া হয় নাই। সবচাইতে দামি শাড়ী আম্মারে দিমু কিইনা"।



"হ রে রাণী এইবার সত্যি ভালো কাজ করছি। এখন কাল বোনাস পাইলেই হল"!



"পামুনা কেন? বোনাস পাওয়া আমগো অধিকার! আর ঈদে চান্দে দিব না তে কবে দিব"?





জরিনা, আশফাক, রাণী সবাই আশায় বুক বেধে আছে ঈদের বোনাস পাবার আশায়। এই বোনাসের টাকা দিয়ে কেউ বা তার মেয়ের মুখে হাসি ফুটাবে, কেউ বা তার ভাইয়ের।কেউ বা আশায় বুক বেধে আছে তার দুঃখিনী মায়ের অনেক দিনের স্বপ্নপূরণ করবে একটা দামি শাড়ী ঈদে উপহার দিয়ে!

সবকিছু ঠিকঠাক বোনাস পাবে। কিন্তু হঠাত্ জানানো হল কোনপোশাক শ্রমিক বোনাস পাবে না। সবার স্বপ্ন মূহুর্তের মধ্য হাওয়ায় উড়ে গেল। কোন মুখে খালি হাতে তারা গিয়ে দাড়াবে তাদের মেয়ে,ভাই বা মায়ের সামনে?



এই থেকে মুক্তির পথ তাদের কাছে একটাই ছিল আন্দোলন করা। তাদের দাবি আদায় করা। কিন্তু এতে ও তারা বিফল হল।ক্ষমতার দম্ভে পোশাক কারখানার মালিকটি তাদের পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করল। আর অনেকে ধরিয়ে পাঠিয়ে দিল জেলহাজতে।



এত কিছুর পর ও আমাদের জীবনে একটু দাগ কাটে না। "বোনাস না পাওয়ার" দাবিতে করা আন্দোলনটা মূর্হুতে সংবাদে উঠে আসে "বোনাস কম দেওয়ার অভিযোগে আন্দোলন" নামে।



এত কিছুর মধ্যে কেউ জানতে ও চায় না কোন টুনি,মিন্টু বা দুঃখিনীমায়ের মনের অবস্থাটা কি??



‪#‎ গাজিপুরে‬কালিয়াকৈর উপজেলার লিবাস টেক্সটাইল লিমিটেডে ঈদ বোনাস কম দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষুভ। পুলিশের লাঠি চার্জ আহত ৩০..গ্রেফতার শখানেক!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.