নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার জিভটা এখনো আমারইজিভ আমরা গলাটা এখনো আমরাইগলা।কেটে উপহার দেই নি কাউকেআমি অভ্যাস আজও সময়ের কথা বলা।

আতাউর রহমান কাওছার

Life is short but Hope is Long...

আতাউর রহমান কাওছার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের স্বরূপ

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩

বাংলা সনের প্র্র্রবর্তক ছিলেন
সম্রাট আকবরের নবরতœ সভার
প্র্র্র্রভাবশালী সদস্য আমির
ফতেহ্ উল্লাহ্ সিরাজী। তার
প্র্রবর্তিত বাংলা সনের
প্র্র্রথম দিনটিতে বর্ষবরণের
নামে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন
করা হতো, তার উৎপত্তি হলো
মন্দির। আমি বাংলা
ভাষাভাষী হওয়ায় আর
মাতৃভূমি বাংলাদেশে
জন্মগ্রহণ করায় যেমন বাঙালি,
ঠিক তেমনিভাবে ইসলামের
অনুসারী হিসেবে আর
মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণ করায়
মুসলিমও। বাঙালিত্ব টেকানোর
সাথে (বিজাতীয়) কৃষ্টি
অনুকরণের কোন সম্পর্ক নেই, বরং
মুসলমানিত্ব রক্ষার জন্য ভিন্ন
ধর্মের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের
অনুকরণ না করাও অপ্ররিহার্য।
বাঙালি উৎসবের লেবাস
পরিয়ে হিন্দুদের নানা পূজা-
অর্চনাকে সার্বজনীন রূপ দেয়ার
অপর নাম হলো পহেলা বৈশাখ
উদযাপন বা বাংলা নববর্ষ বরণ।
ইসলাম বৈরীদের নিয়ন্ত্রিত
মিডিয়ার বদৌলতে ইতোমধ্যে
হিন্দুদের বহুমাত্রিক পূজা এখন
মুসলিম বাঙালিদের কাছেও
নিছক বর্ষবরণ অনুষ্ঠান!!।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের
বিরুদ্ধে কথা বললে আমার ওপর
হয়তো ক্ষেপে যেতে পারেন
বর্ষবরণপ্র্রেমিরা। কেউ কেউ
হয়তো আমাকে সেকেলে
মনোভাবের অধিকারী বা
ধর্মান্ধ উপাধিতে ভূষিত করতে
পারেন। যে যাই ভাবুন, আর যাই
বলুন না কেন আমি বাঙালি
মুসলিম হিসেবে আমাকে আমার
বাঙালিত্ব আর মুসলমানিত্ব
কেড়ে নেবে অজানা আর
ভিনদেশি সংস্কৃতি তা হতে
পারে না।
বৈশাখী সংস্কৃতি বর্জনের
৬টি কারণ :
প্র্রথম কারণ : হাল জামানার
তথাকথিত বাঙালি চেতনার
নামে প্রচারিত পহেলা
বৈশাখের সংস্কৃতির
আগাগোড়া হিন্দুধর্মের আচার
অনুষ্ঠানের নকল বা ফটোকপি।
গণেশ পূজার ‘মঙ্গলযাত্রা’
থেকে নেয়া ‘মঙ্গল
শোভাযাত্রা’, ‘চৈত্র
সংক্রান্তি পূজা’ থেকে নেয়া
‘চৈত্র সংক্রান্তি’, হিন্দু-
বৌদ্ধদের ‘উল্কি পূজা’ থেকে
নেয়া ‘উল্কি উৎসব’, বিভিন্ন
হিংস্র-অহিংস্র জীবজন্তুর
পূজা থেকে নেয়া রাক্ষস-
খোক্কসের মুখোশ ও পশুপাখির
প্রতিমা নিয়ে উৎসব, হিন্দুদের
‘আশ্বিনে রান্না কার্তিকে
খাওয়া’ প্রথার আদলে চৈত্রের
শেষদিনে রান্না করা, অন্নে
জল ঢেলে পহেলা বৈশাখের
সকালে পান্তা খাওয়ার প্রথা
এবং পূজোর অপরিহার্য
বাধ্যযন্ত্র ঢোল-তবলা, কুলা ও
হিন্দু রমণীর লাল সিঁদুরের
অবিকল লাল টিপ-পূজোর লেবাস
সাদা শাড়ি ইত্যাদি হলো
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা
নববর্ষ উদযাপনের প্রধান
উপাদান। অথচ রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে
ব্যক্তি কোন ধর্মের মানুষের
(ধর্মীয় আচারের) অনুকরণ বা
সাদৃশ্য গ্রহণ করবে, সে তাদের
অন্তর্ভুক্ত গণ্য হবে। সুনানে আবু
দাঊদ
দ্বিতীয় কারণ : উল্কি অঙ্কন।
নাসাঈ শরিফের বর্ণনা মতে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“উল্কি অঙ্কনকারিনী ও যার
গায়ে অঙ্কন করা হয়- উভয়ের
প্রতি আল্লাহ তায়ালার
অভিশাপ বর্ষণ হয়।” তাছাড়া
এতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন
করা হয়, যা কোরআনের
নির্দেশনা মতে হারাম।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতেও
উল্কি অঙ্কন ত্বকের জন্য
মারাত্মক ক্ষতিকর। আর ইচ্ছাকৃত
স্বাস্থ্যহানি করাও ইসলামে
নিষিদ্ধ।
তৃতীয় কারণ : গান ও ঢোল তবলা
ছাড়া পহেলা বৈশাখ উদযাপন
জমে উঠে না। অথচ, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘গান
মানুষের অন্তরে মোনাফেকি
সৃষ্টি করে’। তিনি আরও
বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা
আমাকে প্রেরণ করেছেন
বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য।
তাছাড়া পূজোর অন্যতম
উপাদান হলো গান ও ঢোল-
তবলা বাজানো।
চতুর্থ কারণ : নির্লজ্জতা ও
অশ্লীলতা চর্চা। শালীন
মেয়েরাও পহেলা বৈশাখ
উদযাপনের দোহাই দিয়ে
বেহায়া আর বেলাল্লাপনার
চাদর গায়ে দিয়ে বের হয়।
বৈশাখীর রংবেরংয়ের
পোশাক পরে পরপুরুষের হাত ধরে
নির্জন নিরিবিলি স্থানে
বেড়াতে যান। যে দেশের
শতাধিক গরিব মানুষ
অর্ধাহারে-অনাহারে
দিনাতিপাত করে থাকে সে
দেশে বৈশাখী পালনের নামে
লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে
পান্তা-ইলিশ খাওয়ার
যৌক্তিকতা কী? এটা অপচয় বৈ
কিছু নয়। কোরআনের
ভাষ্যানুযায়ী অপচয়কারী
শয়তানের ভাই।
পঞ্চম কারণ : পহেলা
বৈশাখকে ধর্মীয় অন্যান্য
অনুষ্ঠানের মর্যাদায় স্থান
দিয়ে বাহারি রংয়ের নতুন
জামা ও আকর্ষণীয় খাবার
গ্রহণের কালচার সৃষ্টি করা হয়।
এমনকি এও বলা হয় যে, এটা
নাকি বাঙালির সবচে বড় আনন্দ
উৎসব। অথচ মুসলিম জাতির জন্য
আনন্দ আর উল্লাসের জন্য দু’টি
উৎসব নির্দিষ্ট রয়েছে। তবে
কেন নিজস্ব সংস্কৃতি আর
আনন্দের দিনকে মাইনাস করে
আমরা মুসলমান হয়ে পহেলা
বৈশাখকে আরেকটি উৎসবের
দিন হিসেবে গ্রহণ করবো। তবে
কেন আমরা নিজেদের আদর্শ
আর সংস্কৃতিকে জলাঞ্জলি
দিয়ে অনাদর্শ আর
অপসংস্কৃতির পেছনে দৌড়াবো।
ষষ্ঠ কারণ : জীবন নামের
ডায়েরির পাতা থেকে মহা
মূল্যবান একটি বছর ঝড়ে পড়ার
ক্ষণে আত্মজিজ্ঞাসা না করে
ফুর্তি-আমোদ আর বিলাসিতা
করার প্রকৃত অর্থ এ দাঁড়ায় যে,
আমরা চিরস্থায়ী আখেরাতের
পরিবর্তে ক্ষণস্থায়ী এ
দুনিয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছি
বেশি। অথচ, প্রকৃত মুমিন সে যে
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতে
আখেরাতের বীজবপন করে আর
আখেরাতকে সবকিছুর ওপর
প্রাধান্য দেয়।
অতএব, আসুন আমাদের
সংস্কৃতিতে আঘাতহানা,
আমাদের আদর্শ আর ঐতিহ্যে
কালিমা লেপনকারী, আমাদের
মুসলমানিত্ব আর বৈশিষ্ট
বিধ্বংসকারী পহেলা বৈশাখ
উদযাপনের নামে চলমান
বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে
বেঁচে থাকি। আল্লাহ আমাদের
সবাইকে প্রতি ভালো কাজে
প্রতিযোগিতা করার তৌফিক
দান করুন। আমিন।
আতিকুর রহমান নগরী
লেখক : প্রাবন্ধিক কলামিস্ট

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.