নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই ।

কুয়াশা প্রান্ত

সাধারন মানুষ । সাধারন মানুষের কথা বলতে পছন্দ করি । সাধারন মানুষের জন্য কিছু করতে চাই ।

কুয়াশা প্রান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছায়ামানবী

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:১১



"ছায়ার মাঝে বসত তোমার ,
তুমি ছায়ামানবী ,
তোমার জন্য উজার আমার ,
রোদেলা পৃথিবী " . . .
কাট !
-awesome নীলা ।চমত্কার নেচেছো ।এই দৃশ্যর
জন্য এবার ঈদে নাটকটি ভালো জাবে ।
-ধন্যবাদ জামাল ভাই ।
-ধন্যবাদের কি আছে রে ? তোমার
এক্টিং এর জন্য তুমি অনেক উপরে যাবে ।
-উপরে যেতে চাই না ভাইয়া । আমি এমনই
থাকতে চাই ।
-god bless u .
pack uppppp. . .
নীলা একজন প্রফেশনাল আর্টিস্ট নয়
।"ছায়ামানবী" নাটকে সেই প্রধান
চরিত্রে অভিনয় করছে । এই নীলার প্রথম
নাটকে অভিনয় করা ।ঈদের পরদিন রাত
আটটায় প্রচারিত হয় নীলার নাটক ।এই
নীলার প্রথম ও শেষ নাটক করা । তার
চাচাতো ভাইয়ের ভীষণ
অনুরোধে নীলা নাটকটি করতে বাধ্য হয় ।
আর তখনও নীলা জানত যে ,
মিডিয়া জিনিসটা এতো খারাপ ।
মিডিয়াতে নীলার অনেক বড় বড় মানুষের
সাথে ব্যাক্তিগত ও
পারিবারিকভাবে সম্পর্ক আছে । সবাই
নীলাকে ভালো জানে । পরিচিত দেখেই
হয়তো আট দশটা মেয়ের মতো মিডিয়ার
খারাপ দিকগুলো তার
মোকাবেলা করতে হয়নি , কিন্তু তবুও
নীলা মিডিয়া জগত্কে পছন্দ করে না ।
নিজের চোখে দেখেছে মিডিয়ার জন্য তার
অনেক বান্ধবী তাদের জীবন নষ্ট
করতে বাধ্য হয়েছে । তাই যতটা সম্ভব
দূরে থাকে । কিন্তু চাচাতো ভাইয়ের
আবদার সে ফেলতে পারে নি । তবুও
সে বলে দিয়েছিল এই তার প্রথম ও শেষ
নাটক । বাধ্য ছেলের মতো ভাইটি তা কবুল
করে নিয়েছিল ।
সাদামাটা মানুষ নীলা । নেই কোন
উগ্রতা তার মাঝে । যেমন মার্জিত তেমনই
সাদা মনের মানুষ ।
ঈদের তিন মাস পর আড়ং এ যায়
শপিং করতে । হঠাত্ একটি ছেলে ,
কালো ফর্মাল ড্রেসে এগিয়ে আসে নীলার
দিকে ।
-এক্সকিউজ মি ।
-জি বলেন ।
-আমি যদি ভুল না করি , আপনি ছায়ামানবী ?
r8 ?
-জি না । আমি নীলা । ছায়ামানবী আমার
অভিনিত একটি চরিত্র ।
-oh sorry ! আমি আপনার মতো এতো সুন্দর
করে গুছিয়ে বলতে পারি না । কিন্তু
আমি এইটাই বলতে চেয়েছি ।
-it's ok . .
-i like u ! sorry ! sorry ! i like ছায়ামানবী । খুব
ভালো লেগেছে আপনার অভিনয় ।
-ধন্যবাদ । খুশী হলাম শুনে । আমার একটু
তাড়া আছে । তাই যেতে হবে । ভাল
থাকবেন ।
-sure. আপনিও ভালো থাকবেন ।
পরদিন
ফেইসবুকে নীলাকে একটি ছেলে request
পাঠায় । নাম শুভ্র রায়হান । profile pic
টা দেখে চিনতে পারল নীলা । ব্যস্ততার
জন্য গত দিন নীলা তার প্রথম ফ্যানের
সাথে একটু কথা বলতে পারে নি । এই
ভেবে request accept করে । সাথে সাথে শুভ্রর
ধন্যবাদ সহ একটি মেসেজ পেল নীলা ।
আস্তে আস্তে শুভ্র আর নীলার
মাঝে কথা বার্তা চলতে থাকে চ্যাটে । এই
কথা থেকে ফোনে কথা শুরু হয় ।
শুভ্র গ্রামীণ ফোনের কম্পানীতে খুব
ভালো পোস্টে জব করে । খুবই মেধাবী আর
ভালো পরিবারের ছেলে ।
আস্তে আস্তে সব জানতে পারে নীলা ।
কিন্তু একদিন যখন জানতে পারে শুভ্র তার
সাথে একই ভার্সিটি থেকে পাশ
করেছে তখন সে স্তব্ধ হয়ে যায় । কারণ
ভার্সিটিতে থাকা অবস্থায় শুভ্র
নামে একটি ছেলে ওকে প্রায় গিফট
পাঠাতো । ও অনেক খোঁজ করেছে ছেলেটির
। কিন্তু কোন খোঁজ পায় নি । আজ এত বছর
পর যখন নীলার মনে পড়লো সে কথা , তখন
সাথে সাথে শুভ্রকে ফোন দিল ।
সরাসরি জানতে চাইলো সেই ছেলেটি কি ও
নাকি । অকপটে শুভ্র সব স্বীকার করলো ।
হ্যাঁ এই সেই নীলার রোমিও । কিছু
না বলে নীলা শুভ্রকে বলে দেয় আর
কোনদিন ফোন না দিতে ।
ফেইসবুকে ডুকে ব্লক করে দেয় সে শুভ্রকে ।
পাল্টে ফেলে ফোন নাম্বার । নীলার এই
আচরণে ভীষণ কষ্ট পায় শুভ্র ।
একটি ছেলে হয়ে সারা রাত জেগে ভীষণ
কাঁদে । কি এমন অপরাধ ছিলো শুভ্রর ? শুধু
ভালোবেসে গেছে নিরবে । এই ছিল তার
অপরাধ । কিছু না বলেই
নীলা শুভ্রকে যোগাযোগ করতে বারণ
করে দিল ।
প্রায় ২০ দিন শুভ্রর সাথে নীলার কোন
যোগাযোগ নেই । শুভ্র মানষিক
অশান্তিতে ভুগছে । এইদিকে গ্রামীণ
ফোনের নতুন Add এ শুভ্র অভিনয়
করবে বলে কথা ছিল । দেখতে সুন্দর ও নতুন
add এর জন্য পারফেক্ট দেখে ওকে বাছাই
করা হয়েছে । শুটিং এর ঠিক তিন
ঘন্টা আগে নীলা এসে উপস্থিত শুভ্রর
অফিসে । শুভ্র তখন তার কলিগ মায়ার
সাথে ডেস্কে বসে ডিজাইন দেখছে ।
নীলাকে দেখে শুভ্র অবাক ।
খুশী হবে নাকি অবাক হবে তা বুঝার আগেই
নীলা তাকে বলল , একটু বাহিরে আসতে ।
শুভ্র বাহিরে যায় ।
-আজ তোমার শুটিং । আমি চাই
তুমি এটা করবে না । বাকিটা তোমার ইচ্ছা ।
-নীলা আমার উপর অনেক রাগ তুমি ?
-কাল ressot resturant এ এসো বিকেল
পাঁচটায় । বায় ।
শুভ্রকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই
চলে গেলো নীলা । শুভ্র কিরবে ভাবছে ।
আজ
শুটিং না করলে তাকে চাকরী থেকে বরখাস্ত
করা হবে নিশ্চিত । তাই কিছু না বলে বোর্ড
অফ ডিরেক্টরের টেবিলে রিজাইন লেটার
রেখে চলে এলো শুভ্র । তবুও সে খুশী ।
বহুদিনপর নীলাকে কাল সে দেখবে মন ভরে ।
হয়তো এটাই হবে নীলাকে তার শেষ দেখা ।
শেষ কথা । তবুও সে খুশী ।
বিকেল পাঁচটার আগেই শুভ্র resturant এ
যেয়ে বসে আছে । ৬টা বেজে গেছে ।
নীলা আসছে না । মাথা ডাউন করে শুভ্র
বসে আছে । এমন সময়
একটি মিষ্টি কন্ঠে বলে ,বসতে পারি ?
এ কি ! এ যে নীলা ।
মেরুন রঙের কাতান পরে এসেছে ।
সাথে ম্যাচিং জুয়েলারী ও খোঁপায়
গোলাপ । নীলা বসে শুভ্রর
সামনে একটি বিয়ের কার্ড রাখলো । শুভ
বুঝতে পেরেছে নীলা বিয়ে করছে । খুব
কষ্টে কার্ডটি খুলে দেখে তাতে লেখা ,
অনামিকা হক নীলা ও শুভ্র রায়হানের শুভ
বিবাহ ।
শুভ্র যেন আকাশ থেকে পড়লো ।
আগামী মাসে নাকি তাদের বিয়ে । বিশ্বাসই
হয়নি শুভ্রের । কিন্তু নীলা যখন শুভ্রের হাত
ধরে বলল , ভালোবাসি । তখন শুভ্র বিশ্বাস
করে । নীলা বলে ,সে এই ২০ দিন শুভ্র ও তার
পরিবারকে রাজি করিয়েছে ।
শুভ্রকে চমকে দিতে সব নাটক করেছে । আর
এও বলে যে ,
সে জানে মিডিয়াতে গেলে কেউ
ভালো থাকে না । তাই সে শুভ্রকে add
টি করতে মানা করে ।
আজ শুভ্র তার এতো বছরের সাধনার ফল
পেয়েছে । এত বছরে কোন
মেয়েকে জীবনে আসতে দেয়নি ।
ভালোবাসতো মনে প্রাণে ।তাই আজ শুভ্র
নীলাকে পেয়েছে ।
ছায়ামানবী হয়ে সবসময় নীলা তার
সাথে ছিলো । এখনও আছে । সবসময় শুভ্র
এভাবে নীলাকে তার
ছায়া করে রাখবে বলে promise করে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.