![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নবাজ। একটা রাতের রংধনুর স্বপ্ন দেখি...। -কিঙ্কর আহ্সান (http://www.facebook.com/kingkor1)
বইয়ের পোকা
- কিঙ্কর আহ্সান
‘ভাইয়া, জীবনে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ নামের একটাই উপন্যাস পড়েছি। আর পাঞ্জেরী নোটের কারনে ‘হাজার বছর ধরে’ টাও পড়তে হয়নি পুরোটা ।’ এই কথা মেয়েটা আমাকে গর্ব করে বলে। টের পাই তার মাঝে যন্ত্রনা থেকে মুক্তির আনন্দ। পাঠ্যপুস্তকে ছিলো বলেই দুটো উপন্যাসের সাথে পরিচয় মেয়েটার। অবাক লাগে। আউট বই পড়ার কারনে কম মার খাইনি বাবার কাছে। বাড়ির পাশেই ছিলো ফাঁকা জমি। চারপাশটা দেয়াল দিয়ে ঘেরা। সে দেয়ালের ওপর বসে প্রতি বিকেলে কয়েক বন্ধু মিলে পড়তাম চাচা চৈাধুরী, বিল্লু, পিঙ্কি আর অগ্নিপুত্রের কমিকস্রে বই। পাঠ্যপুস্তকের ভেতর লুকিয়ে গল্পের বই পড়ি জানতে পেরে বাবা একদিন রেগে পুড়িয়ে দিয়েছিলো বুকসেলফে থাকা সবগুলো বই। ছোট্ট বয়সে সে কি কষ্ট ! কি কান্না ! অভিমানে বাবার সাথে কথা বলিনি অনেকদিন। ত্রিশ টাকায় সদস্য হবার পরে দু’টাকা করে দিলে ‘তিন গোয়েন্দার বই’ পড়তে দিত এক দোকানে। আমি আর বন্ধু সন্দীপ মিলে টাকা জমাতাম। ভাগাভাগি করে পড়তাম বই। মাসুদ রানার বই পড়তে নিষেধ করে দিয়েছিলো বড়রা। রাত এগারটায় সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর যখন শুধু ডিমলাইট জ্বলত তখন লুকোনো জায়গা থেকে মাসুদ রানার বই বের করে অই অল্প আলোতেই পড়তাম আমি। চোখে চশমা ঝুলছে এই বইয়ের কারনেই। যে বইগুলো আমি পড়লে বখে যেতে পারি সেগুলো বাবা এনে লুকিয়ে রাখত। তার ধারনা ছিলো এগুলো পড়লে নষ্ট হব। নষ্ট হয়েছে কিনা জানিনা তবে আলমারির কাপড়ের ভীড় থেকে নারী, পাক সার জমিন সাদ বাদ এসব বইগুলো খুজে ঠিকই পড়া হয়েছে আমার।
পড়াশোনা ভালো করে করলে মা বই কিনে দিত। নারায়নের টেনিদা, শিবরামের হাসির গল্প, অর্জুন, কাকাবাবু এসবের সাথে পরিচয় পড়াশোনায় ভালো করার কারনেই। এই বইগুলো পাওয়ার লোভেই প্রচন্ড অনিচ্ছা,যন্ত্রনা নিয়েও দিনের পর দিন ‘এ প্লাস বি হোল স্কোয়ার’ এর সূত্র মুখস্ত করেছি। লোটাকম্বল, সেই সময়, কালপুরুষ বইগুলো ডেস্ক এর নিচে রেখে পড়তে গিয়ে ক্লাসে ধরা পড়ে স্যারদের গালি খেয়েছি অনেকবার। বই নেশার মতন। নীলক্ষেতে যে কোন কাজে গেলেই বই দেখতে হয় আমার। ঘন্টার পর ঘন্টা সময় গেলেও টের পাওয়া যায়না। আমি, তমাল, বরুন তিন বন্ধু বহুদিন নীলক্ষেতের গলিতে গলিতে ঘুরেছি নিজের পছন্দের একটা বই কম দামে কেনার জন্যে। বইয়ের জন্যে এমন পাগলামি শুধু মানসিক শান্তির জন্যে। আনন্দের জন্যে। জ্ঞান অর্জন হবে এমনটা ভেবে কখনও বই পড়তে বসেছি বলে মনে পড়েনা। শুধু গল্প, উপন্যাসই নয় যে কোন বই পাঠই আনন্দদায়ক। বই পড়লে শৈশব ফিরে পাওয়া যায়। এই এত্তটা বড় হলেও বই পেলে খুশি হয়ে যাই। বুকের ভেতর বই রেখে, বালিশের নিচে বই রেখে ঘুম দেই। বইয়ের পাতায়,অক্ষরে, মলাটে নির্দ্ধিধায় নিজেকে রেখে বোহেমিয়ান হবার নিছক বিলাসি কল্পনায় মেতে উঠতে পারি। বই প্রেয়সীর মতন। আমাকে পোড়ায়, শান্তি দেয়, নিশ্চিন্ত করে। নতুন বইয়ের ঘ্রান মাতাল করার জন্যে যথেষ্ট। মন উচাটন করার জন্যে যথেষ্ট। ভেবে আফসোস হয় সময়ে, অসময়ে বারেবার শিশু হওয়ার, শৈশব ফিরে পাওয়ার মন্ত্রটা এই প্রজন্মের অনেক, অনেকেরই জানা নেই। প্রার্থনা করি বই ফিরে আসুক। হাটে, ঘাটে, মাঠে, প্রেমে- অপ্রেমে, যুদ্ধে, শান্তিতে বই থাকুক পাশে। বাতাসে প্রান ভরে নি:শ্বাস নেবার জন্যে বই আমার হোক। হোক আমাদের...।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১৬
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী। বই দারুন এক বন্ধু। সত্যি।
২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ভালো লিখেছেন। বই পড়া মানে অন্যরকম এক আনন্দ , বিনোদনের জন্য যত যা কিছুই আসুক না কেন , ক্ষণিক অবসরে ভলোলাগার একটা বইয়ের সাথে কিছুক্ষণ কাটানোর অনুভূতির জায়গাটা সেসব নিতে পারবে না কখনো।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২০
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: বিনোদনের জন্য যত যা কিছুই আসুক না কেন , ক্ষণিক অবসরে ভলোলাগার একটা বইয়ের সাথে কিছুক্ষণ কাটানোর অনুভূতির জায়গাটা সেসব নিতে পারবে না কখনো। সহমত পোষন করলাম। ধন্যবাদ রেজওয়ানা আলী তনিমা।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:২৮
শায়মা বলেছেন: বই আর ফিরবেনা সেভাবে।
তবে ডিজিটাল বই পাঠে অভ্যস্থ হবে বাবুরা।
আমার ক্লাসের ৫ বছরের জায়না বলে মিস বাবা আমাকে আইপ্যাডে কাল তিনটা বুক ডাউনলোড করে দিয়েছে।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০০
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: আমারও তাই মনে হচ্ছে আজকাল। এমন না হোক সে প্রার্থনাই করি। ভালো থাকবেন।
৪| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
আরজু পনি বলেছেন:
মালিবাগে একটা ছেলে বই ভাড়া দিত ... মনে আছে তিন গোয়েন্দর "সাগর সৈকত" বইটা ভাড়া নিয়েছিলাম সে সময় ।
আমার মেয়েটা কয়েকদিন আগে ক্লাস টু শেষ করলো ... ওকে পাঞ্জেরী প্রকাশনী থেকে কিশোর ক্লাসিক কিনে দিয়েছিলাম ২০১৩এর বই মেলা থেকে সেই থেকে ও মোটামুটি ২৫ টার মতো ক্লাসিক পড়ে ফেলেছে যদিও ওর বয়স থেকে বেশিই দেয়া আছে বইয়ের কভারে।
আসলে বই পড়ার অভ্যাসটা অভিভাবকরাও বাচ্চাদের মধ্যে আনন্দের ছলে ঢুকিয়ে দিতে পারে ...কেননা বর্তমান সময়ে ডিজিটাল বই পড়া যত সহজই হোক...কাগুজে বইয়ের মজাই অন্য রকম।
ঘরে সেলফের পর সেলফ ভরা শয়ে শয়ে বই থাকবে দেখতেই দারুন লাগে ।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২২
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: কাগুজে বইয়ের মজাই অন্য রকম। একদম সত্যি। ধন্যবাদ আরজুপনি ।
৫| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫
অজানিতা বলেছেন: সহমত। বইপড়ার আনন্দ এ জীবনে আর কিছুতে খুঁজে পাওয়া যাবেনা বোধহয়।অনেক কিছুই হয়তো বই পড়ার জন্য মিস করেছি। তবু আফসোস নেই কোন ।
কিঙ্কর আহ্সান আমি যে কি আনন্দিত আপনার ব্লগ দেখতে পেয়ে! অনেক ভালো থাকবেন।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৬
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ অজানিতা । ব্লগে নিয়মিত হবার চেষ্টা করবো। ভালো থাকবেন।
৬| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৩
মুহম্মদ ফজলুল করিম বলেছেন: একসময় ছিল ক্লাস সিক্সে পড়তাম।থাকতাম মফস্বলে।বিশ্বসাহিত্য সংস্থার ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি আমাদের মফস্বলে এসেছিলো।আসার একমাসের মধ্যেই বাবা ধরে বিশ্বসাহিত্য সংস্থার সদস্য করে দিলো।হাজার হাজার বই।প্রতি সপ্তাহের বুধবার দুপুর তিনটায় রোদে পুড়ে পুড়ে বই হাতে করে যেতাম।লাইব্রেরেরিয়ানকে হাত করে ফেলেছিলাম ।১টা বইয়ের জায়গায় , ২ টা কখনো কখনো ৩টা করে নিতাম।কয়েকদিন পরে দেখি, ১ কার্ডে কুলায়না।তাই,দুইটা সদস্যপদ খুললাম।আরেকটা বোনের নামে।আরও কয়েকদিন পর, বন্ধুর
নামে খুলে ফেললাম।কিন্তু কয়দিন পর,পিতাজি নির্দেশ দিলো , এক্সেস পড়া হয়ে যাচ্ছে । সব বন্ধ ! কিন্তু ব্যাঘ্র এতদিনে মানুষের গন্ধ পেয়ে গেছে, আর কি ছাড়ে ... । এখনো সম্ভব হয়নাই...
পুরানো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলেন...
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩১
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: পুরানো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলেন... =D
৭| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৭
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সত্যি বলতে বই পড়ার আনন্দ যে পায় নি সে বড়ই দুর্ভাগা। বই হচ্ছে জ্ঞানের দরজা। আমরা ভাগ্যবান, আমাদের শৈশব কেটেছে বই পড়ে, বই উপহার পেয়ে। কিন্তু আফসোস, এখনকার দিনের ছেলে মেয়েদের বই পড়ার ভ্যারাইটি খুবই কম।
কাগজের বই, তার গন্ধ এই সব কিছু কোনভাবেই ডিজিটাল বই এ পাওয়া সম্ভব হবে না। যদিও সামনে বই হয়ত মানুষ এইভাবেই পড়বে।
১৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৭
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: আমরা ভাগ্যবান, আমাদের শৈশব কেটেছে বই পড়ে, বই উপহার পেয়ে।
৮| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬
বইয়ের পোকা বলেছেন: যারা বই পড়ে না তারা যে কি মিস করছে??? তা একমাত্র আমরা যারা বই পড়ি তারাই বুঝি।
ওহ, বইয়ের পোকাতো আমি!!! আপনি,আমি একই ক্লাসেস ছাত্র!!
১৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০৬
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: ওহ, বইয়ের পোকাতো আমি!!! আপনি,আমি একই ক্লাসেস ছাত্র!!=D =D =D (y)
৯| ১৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০৪
সানফ্লাওয়ার বলেছেন: বই ছাড়া আমার একদিন ও চলে না
১৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৩৮
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন: =D =D =D সানফ্লাওয়ার ।
১০| ১৬ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭
আরিফ রুবেল বলেছেন: মনে আছে স্কুলে থাকাকালীন সময়ে টিফিনের টাকা জমিয়ে খেয়ে না খেয়ে কত বই কিনেছি ! যদিও এর বেশির ভাগটাই জুটেছে সেবা প্রকাশনীর ভাগে, তবে উপন্যাস গল্প ঈদ সংখ্যা এগুলোও কম কেনা হয়নি। ইদানিং বই কেনা তো দূর বই পড়াও হয় না। মাঝে ব্লগ পড়ার একটা অভ্যাস দাঁড়িয়েছিল। কাদা ছোড়াছুড়ির ভিড়ে বিরক্ত হয়ে সেটাও এখন নিয়মিত হয় না।
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯
কিঙ্কর আহ্সান বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৮
আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী বলেছেন: জ্ঞান অর্জন হবে এমনটা ভেবে কখনও বই পড়তে বসেছি বলে মনে পড়েনা। শুধু গল্প, উপন্যাসই নয় যে কোন বই পাঠই আনন্দদায়ক। বই পড়লে শৈশব ফিরে পাওয়া যায়।
ভাল্লাগছে লেখাটা।
-বই হোক সবার নিত্য সঙ্গী