![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ঘুরছি আমি কোন প্রেমের ই ঘুর্নিপাকে, ইশারাতে শিষ দিয়ে কে ডাকে যে আমাকে”
ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল বন্ধ থাকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন গভীর রাতে পুরানো বাংলা ক্লাসিক ছবি দেখার একটা অভ্যাস হয়েছিল। ইতিমধ্যেই দেখেছি "গোলাপী এখন ট্রেনে","সারেং বউ", পর্দা নদীর মাঝি ইত্যাদি। পুরানো বাংলা ছবির একটি বিশেষ ভাললাগা হচ্ছে, ৬০-৭০ দশকের আর্থ-সামাজিক, যাতায়াত ব্যবস্থা সহ মানুষের সংগ্রাম সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাওয়া যায়। কয়েকদিন আগে দেখলাম "সুর্য দীঘল বাড়ী"। অসাধারণ মেকিং! বিদেশি চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে অস্কার পাওয়ার যৌগ্যতা রাখতো। কিছুটা দেখার পর একটু আগ্রহ নিয়ে ছবি সম্পর্কে গুগল করলাম। ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত একটি ছবি; তৎকালীন ২.৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সরকারি অনুদানের বানানো ; আবু ইসহাকের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত।
ছবির প্রেক্ষাপট বৃটিশ শাসনামলে শেষভাগ বাংলা ১৩৫০ সনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অবিভক্ত ভারতের বাংলায় ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে 'পঞ্চাশের আকাল' নামে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তাতে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারায়। শহরে ক্ষুদা, দারিদ্র্য, তীব্র শীতের কষ্টে টিকতে না পেরে গ্রামের ফিরে আসা অসহায় এবং খুবই দরিদ্র একটি পরিবারের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। একটি সামান্য ডিম একবেলা গরম ভাত, ঈদের দিন নারকেল দিয়ে সেমাই খাওয়ার আনন্দ আর উচ্ছাস দেখে ভীষণ মন খারাপ হইলো। আহ! এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে?
ছবিটি দেখে থেকে আরো জানতে পারলাম বাঙালী সৃষ্টিলগ্ন থেকে চোর; রিলিফের পাঠানো চালের বস্তা তখনো ও ব্লাকে বিক্রি হতো। ১৯৭৯ সালে ও এদেশে স্টীম ইন্জিনের ট্রেন ছিল। গ্রামের মাতব্বররা ধর্মকে নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নানা উপায়ে ব্যবহার করতো, এতে খুব সুক্ষ্মভাবে সায় দিতো মসজিদের হুজুররা; ( একটি শিক্ষিত জেনারেশন কে ধর্মবিমুখ করার পিছনে অনেকটা দায়ী মাতাব্বর, কাঠমোল্লারা) গ্রামাঞ্চলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন, ওঝা, পীর ফকিরে ভরা। খাল-বিল নদী বেশি থাকায় নৌকা ছিল যাতায়াতের অন্যান্য মাধ্যমে। এই সময়ে একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১০-১২ আনা। আনার হিসাব যেহেতু আমি বুঝি না, একটু চেট জিপিটি করে দেখলাম ১৬ আনায় ১ টাকা। এটা বৃটিশ ভারতের সময়কার মুদ্রার হিসাব। ১২ আনা এখনকার ২০০-২৫০ টাকার সমান।
ছবিটির বিচিত্রতার মধ্যে মূল বিষয় একটিই; তা হচ্ছে কুসংস্কার, সম্পদ, ধর্ম, প্রতিপত্তি, সামাজিক বাধা-নিষেধ, এমনকি জাতীয়তাবোধ- এ সব কিছুকেই কাজে লাগিয়ে শ্রমজীবী ক্ষুধার্ত মানুষকে ক্রমাগত শোষণ। ছবির একাংশের বৃটিশ থেকে পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার মানুষের উচ্ছাস ছিল; চালের দাম কমবে, মিলিবে অর্থনৈতিক মুক্তি । এরপর ক্রমান্বয়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ১৯৯১, ২০০৯, ২০২৪। রাজনীতি ও ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবার ই প্রতারিত হয়েছে এদেশের জনগন। বাঙালি অভিশপ্ত এক জাতি; ঈশ্বরের দূত পাঠালে ও এই অভিশপ্তদের নিকট হতে পলায়ন করবে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
স্বাধীনতা পরবর্তী অনেক ছবিতে বাকশাল, মুজিব বাহিনীর ডাকাতের , হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, দুর্ভিক্ষ, অনাহারে থাকার বিষয়গুলো
উঠে এসেছে। এগুলি ও থাই ভাষায় অনুবাদ করে রিভিউ করা দরকার! কি বলেন? বাকশালী ভাতা এখনো ঠিকমতো পাচ্ছেন?
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:১৫
কামাল১৮ বলেছেন: ধর্মবিমুখ হলে মানুষ যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে শিখে।তারা মুক্ত চিন্তার অধিকারী হয়।আপনি বলছেন উল্টো কথা।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১২
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
লিখছি এক জিনিস আপনি না বুঝে ফাল পারতেসেন আরেক জিনিস নিয়ে। গ্রাম্য মাতাব্বর, হুজুরেরা সামাজিক নানাবিধ বিষয়ে ইসলামের নামে উল্টো পাল্টা ফতোয়া দিয়ে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করতো। কেউ আত্মহত্যা করলে লাশ ও পরিবারকে একঘরে করে দিয়ে জানাজা ছাড়া কবর দিয়ে দিতো। স্কুলে পড়া হারাম সহ আরো অনেকে বিষয়। এইসব মনগড়া বিধিনিষেধ অনেক মানুষ ধর্মবিমুখ ও সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস হারায়ে ফেলে।
৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৫২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমার কাছে পুরাতন ছবির মাঝে বেসট লাগে ছুটির ঘনটা । হারজিত চিরদিন থাকবে ....মানুষকে এগিয়ে যেতেই হবে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২১
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
হ্যাঁ। বাংলা ক্লাসিক ছবি দেখতে বেশ লাগে। আগেরকার গল্পকার, পরিচালক, অভিনেতা ছবির অন্যান্য কলা কৌশলীদের কি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যাগুলো কি সুন্দরভাবে গল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতো। এত সুন্দর শুরু দিয়ে আমাদের ফিল্মের এখন কোথায় থাকার কথা ছিল আর আছি কোথায়? দিন দিন শিক্ষার মান আর রুচির অধঃপতন হচ্ছে।
৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: সিনেমাটা দেখেছি। বইটাও পড়েছি।
আমি নিজেও লিখেছি সামুতে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২২
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
এইসব ছবি নিয়ে সবসময়ই আলাপ-আলোচনা হবে। এগুলি বাঙ্গালী সত্বার সাথে মিশে গেছে। রুচিশীল মানুষেরা ছবিগুলো দেখে। মন বসে না পড়ার টেবিলে, বস্তির রানী সুরিয়া দেখেছেন?
৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩১
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
বাকশাল বাংলাদেশকে স্বনির্ভর করতো; শেখ হত্যা করে, জিয়া, এরশাদ, খালাদা ও হাসিনা আজকের বাংলা গড়েছে।
আজকের বাংলায় আপনি পুরোনো মুভি রিভি্য্যু করার আগে ভেবেছিলেন কি, এসব মুভি দেখেনি এমন বাংগালী কি ব্লগে আসে, কত হাজার পোষ্ট এসেছে এসবের উপরে? কে আপনার বালছাল রিভিয়্যু পড়বে?
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৫
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
৭৫ পর্যন্ত দেশে যে সমৃদ্ধ করেছেন তার আদলে আমজাদ হোসেন ছবি বানিয়েছেন "ভাত দে"
আজকের বাংলায় আপনি পুরোনো মুভি রিভি্য্যু করার আগে ভেবেছিলেন কি, এসব মুভি দেখেনি এমন বাংগালী কি ব্লগে আসে, কত হাজার পোষ্ট এসেছে এসবের উপরে? কে আপনার বালছাল রিভিয়্যু পড়বে? বাকশালী ভাতার বিনিময়ে একটানা ১৬ বছর দৈনিক ১৪ ঘন্টা কেউ ব্লগে পড়ে থাকে না। কিছু মানুষের কর্ম করে ক্ষেতে হয়; এইসব ছবির রিভিউ তাঁদের জন্য।
অবসরের পর ও দক্ষ মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারা নানা উপায়ে আয় করে থাকেন। টাউট-মাউট, ডাকাতি করে সার্টিফিকেট নেওয়াদের হিসাব আলাদা?
৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৭
বিজন রয় বলেছেন: অভিশপ্ত জাতি বললেন। তো অভিশাপটা কোথায়?
আফগানিস্তান আর বাংলাদেশ ছাড়া এই অভিশাপ তো তেমন আর কোথাও দেখি না।
একটু বলেন......... শুনি।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৪০
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
তো অভিশাপটা কোথায়? বড়ো ই চিন্তার বিষয়? কিছু একটা তো আছে; তা নাইলে বারংবার হোঁচট খাবে কেন? ভাইবা চিন্তা বলি? কি বলেন?
৭| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬
শায়মা বলেছেন: সূর্য্য দীঘল বাড়ি বইটাও অনেক সুন্দর!
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৯
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
শুধুই ছবিটি দেখেছি গো আপু! অসাধারণ মেকিং; উপন্যাস যে আছে সেটাই জানি না।
৮| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৭
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৭
জুল ভার্ন বলেছেন: সূর্য দীঘল বাড়ি উপন্যাস আগেই পড়া ছিলো। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে “সূর্য দীঘল বাড়ি” একটি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা মিলে সম্ভবত ১৯৭৯/১৯৮০ সালে বলাকা হলে দেখেছিলাম। যুদ্ধোত্তর গ্রামীণ সমাজ, কুসংস্কার, দারিদ্র্য আর সামাজিক অস্থিরতার চিত্র এ সিনেমায় বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে।
গল্পে দেখা যায়- এক বিধবা নারী (অভিনতে ডলি আনোয়ার) নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে লড়াই করছে, কিন্তু গ্রামীণ সমাজের কটূক্তি, ধর্মীয় গোঁড়ামি আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েন তাকে বারবার নিঃস্ব করে তোলে। চরিত্রগুলোর অভিনয়, সংলাপের স্বাভাবিকতা এবং গ্রামীণ জীবনের নিখুঁত চিত্রায়ণ ছবিটিকে কালজয়ী করে তুলেছে। বাংলাদেশের প্রথম ফিচার ফিল্ম হিসেবে এটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয় এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ একাধিক স্বীকৃতি লাভ করে।
“সূর্য দীঘল বাড়ি” শুধু একটি সিনেমা নয়, বরং আমাদের সমাজের বাস্তব রূপের এক নির্মম দলিল।
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩০
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে “সূর্য দীঘল বাড়ি” একটি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। শুধুই কি গুরুত্বপূর্ণ? শাশ্বত গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি এই সিনেমা। যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে এই ছবিগুলো বাঙালীর হৃদয় গাঁথায় লিখা থাকবে। গ্রামের মানুষের এই নির্মম দুঃখ কষ্ট বেঁচে থাকার সংগ্রাম এতো সুনিপুণ ভাবে উপন্যাস, ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার পর আমাদের সরকার, ব্যুরোক্রেসি একটি সফল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পাড়লো না; সেটাই বুঝে উঠতে পারলাম না।
এটিএম শামসুজ্জামান, রওশন জামিল শিশু শিল্পী ইলোরা গহর বাদে কাউকে তেমন চিনতে পারলাম না। সবার অভিনয় অসাধারণ প্রাণবন্ত। ডলি আনোয়ার সম্ভবত ব্যক্তিগত কোন কারনে আত্মহত্যা করে।
“সূর্য দীঘল বাড়ি” শুধু একটি সিনেমা নয়, বরং আমাদের সমাজের বাস্তব রূপের এক নির্মম দলিল। একদম তাই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৩৪
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
আপনি যথাসম্ভব প্রথম বাংগালদেশী যিনি মুভিটি দেখেছেন।
অপুর্ব রিভিয্যু করেছেন; থাই ভাষায় এই মুভি নিয়ে কিছু লিখুন আপনার ফেইসবুকে।