নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“কলিমদ্দিকে আবার দেখা যায় ষোলই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাজারের চা স্টলে। তার সঙ্গীরা সবাই মুক্তি, সে-ই শুধু তার পুরনো সরকারি পোশাকে সকলের পরিচিত কলিমদ্দি দফাদার।”

কলিমুদ্দি দফাদার

“ঘুরছি আমি কোন প্রেমের ই ঘুর্নিপাকে, ইশারাতে শিষ দিয়ে কে ডাকে যে আমাকে”

কলিমুদ্দি দফাদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূর্য দীঘল বাড়ী ....

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১:২৯


ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল বন্ধ থাকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন গভীর রাতে পুরানো বাংলা ক্লাসিক ছবি দেখার একটা অভ্যাস হয়েছিল। ইতিমধ্যেই দেখেছি "গোলাপী এখন ট্রেনে","সারেং বউ",‌ পর্দা নদীর মাঝি‌ ইত্যাদি। পুরানো বাংলা ছবির একটি বিশেষ ভাললাগা হচ্ছে, ৬০-৭০ দশকের  আর্থ-সামাজিক, যাতায়াত ব্যবস্থা সহ মানুষের সংগ্রাম সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাওয়া যায়। কয়েকদিন আগে দেখলাম "সুর্য দীঘল বাড়ী"। অসাধারণ মেকিং! বিদেশি চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে অস্কার পাওয়ার যৌগ্যতা রাখতো।  কিছুটা দেখার পর একটু আগ্রহ নিয়ে ছবি সম্পর্কে গুগল করলাম।  ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত একটি ছবি; তৎকালীন ২.৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সরকারি অনুদানের বানানো ; আবু ইসহাকের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত।


ছবির প্রেক্ষাপট বৃটিশ শাসনামলে শেষভাগ বাংলা ১৩৫০ সনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অবিভক্ত ভারতের বাংলায় ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে 'পঞ্চাশের আকাল' নামে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তাতে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারায়। শহরে ক্ষুদা, দারিদ্র্য, তীব্র শীতের কষ্টে টিকতে না পেরে  গ্রামের ফিরে আসা অসহায় এবং খুবই দরিদ্র একটি পরিবারের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। একটি সামান্য  ডিম একবেলা গরম  ভাত, ঈদের দিন নারকেল দিয়ে সেমাই খাওয়ার আনন্দ আর উচ্ছাস দেখে ভীষণ মন খারাপ হইলো। আহ! এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে?

ছবিটি দেখে থেকে আরো জানতে পারলাম বাঙালী সৃষ্টিলগ্ন থেকে চোর; রিলিফের পাঠানো চালের বস্তা তখনো ও ব্লাকে বিক্রি হতো। ১৯৭৯ সালে ও এদেশে স্টীম ইন্জিনের ট্রেন ছিল। গ্রামের মাতব্বররা ধর্মকে নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নানা উপায়ে ব্যবহার করতো, এতে খুব সুক্ষ্মভাবে সায় দিতো মসজিদের হুজুররা; ( একটি শিক্ষিত জেনারেশন কে ধর্মবিমুখ করার পিছনে অনেকটা দায়ী মাতাব্বর, কাঠমোল্লারা) গ্রামাঞ্চলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন,  ওঝা,‌ পীর ফকিরে ভরা। খাল-বিল নদী বেশি থাকায়  নৌকা ছিল যাতায়াতের অন্যান্য মাধ্যমে‌। এই সময়ে একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১০-১২ আনা। আনার হিসাব যেহেতু আমি বুঝি না, একটু চেট জিপিটি করে দেখলাম ১৬ আনায় ১ টাকা। এটা বৃটিশ ভারতের সময়কার মুদ্রার হিসাব। ১২ আনা এখনকার ২০০-২৫০ টাকার সমান।


ছবিটির  বিচিত্রতার মধ্যে মূল বিষয় একটিই; তা হচ্ছে কুসংস্কার, সম্পদ, ধর্ম, প্রতিপত্তি, সামাজিক বাধা-নিষেধ, এমনকি জাতীয়তাবোধ- এ সব কিছুকেই কাজে লাগিয়ে শ্রমজীবী ক্ষুধার্ত মানুষকে ক্রমাগত শোষণ। ছবির একাংশের বৃটিশ থেকে পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার মানুষের উচ্ছাস ছিল; চালের দাম কমবে, মিলিবে অর্থনৈতিক মুক্তি । এরপর ক্রমান্বয়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ১৯৯১, ২০০৯, ২০২৪। রাজনীতি ও ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবার ই প্রতারিত হয়েছে এদেশের জনগন। বাঙালি অভিশপ্ত এক জাতি; ঈশ্বরের দূত পাঠালে ও এই অভিশপ্তদের নিকট হতে পলায়ন করবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.