নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“কলিমদ্দিকে আবার দেখা যায় ষোলই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাজারের চা স্টলে। তার সঙ্গীরা সবাই মুক্তি, সে-ই শুধু তার পুরনো সরকারি পোশাকে সকলের পরিচিত কলিমদ্দি দফাদার।”

কলিমুদ্দি দফাদার

“ঘুরছি আমি কোন প্রেমের ই ঘুর্নিপাকে, ইশারাতে শিষ দিয়ে কে ডাকে যে আমাকে”

কলিমুদ্দি দফাদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক কিছুই এখনো নতুনের মতো পড়ে আছে।

ভাবিকে ফোন দিলাম—কি দেওয়া যায়? ভাবি জানালেন,
“তোমার ভাইয়ার নাকি অনেকদিন ধরে কাঁসার প্লেট আর পানির গ্লাসের শখ! সময় পাচ্ছে না কিনে নেওয়ার।”
আমি একটু “থো” হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, Are you sure? কাঁসার থালা?

কাঁসা যে চিনি না বা নাম শুনিনি—এমন না। তবে জানতাম এটা সনাতনী প্রতীক! অনেক হিন্দু সিরিয়ালে কাঁসার জিনিসপত্র দেখেছি। হুমায়ূন আহমেদের ছবি ঘেটুপুত্র কমলা কাঁসার তৈজসপত্র উপস্থিতি দেখছি। তাই মুসলমান ঘরে কাঁসার থালা–বাটি—কেমন জানি অচেনা মনে হলো। যাই হোক, ভাবি কথা শেষ করার পুর্বে বললেন,
“এগুলোর ভালোই দাম, সাথে ক্যাশ নিয়ে যাইয়ো।”

১) কাঁসার প্লেট–গ্লাস ব্যবহার নাকি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
– এতে নাকি হার্টের সমস্যা কমে।
– গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটিও নাকি হয় না।
– তাছাড়া কাঁসার তৈজসপত্র বেশ ভারী ও টেকসই।

২) এসব উপকারিতা অবশ্য আমার কাছে গুজব মনে হয়নি। অনেক ধাতু, পদার্থ বা পাথরেই ব্যবহারিক গুণ থাকে। তবে বিক্রেতারা অবশ্যই একটু অতিরঞ্জিত করে বলে—এটাও সত্য।

উপহার হিসেবে কিনবো আবার দামি জিনিস তাই ইউটিউব ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করলাম। প্রথমেই পেলাম জামালপুরে নির্মিত কাঁসার জিনিসপত্রের বিখ্যাত একটা পেইজ—দাম বেশ চড়া। এত দামি জিনিস অনলাইনে অর্ডার করা ঠিক হবে না। এরপর পেলাম নিউমার্কেটের কিছু দোকানদারের ভিডিও তে বলছে—গুজরাটি চকচকে পালিশ করা কাঁসার থালা–বাটি। কিন্তু নিউমার্কেট মানেই টাউট–বাটপারের স্বর্গ! যে দোকানদার কথা বলছিল, তার বাবড়ি চুল ও লুক দেখে মনে হলো—পুরাই ব্লগার চাঁদাগাজীর মতো টা**! তাই এখান থেকে ভুলে ও কেনা যাবে না। কিনতে হবে আদি কোন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে।


ঘাঁটাঘাঁটি করে প্রাপ্ত জ্ঞান থেকে আসল কাঁসা চিনার উপায় জানলাম-
“কোনো লোহার দণ্ড দিয়ে কাঁসায় আঘাত করলে তরঙ্গ বেশ কিছুক্ষণ থাকে। লোহার বেলায় তা হয় না।”
এই জ্ঞান পকেটে নিয়ে বের হলাম শাঁখারি বাজারের উদ্দেশ্যে।

অর্ধেক ঢাকা পাড়ি দিয়ে সন্ধ্যায় পৌঁছালাম। শাঁখারি বাজারে এর আগে এসেছিলাম ২০১৩-১৪ সালে, হলি উৎসবে। ঢাকার সেরা হলি হয় এখানেই—বন্ধু–বান্ধব নিয়ে রং–হইচই, নাচানাচি! ফেরার পথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে দেখেছিলাম ধবধবে সাদা কবুতরের মতো জামা পরা দুই সুন্দরী মেয়ে—রং লাগানোর ভয়ে সেখান দিয়ে যেতে সংকোচ বোধ করছিল। তখন ছিলাম বেশ পোংটা-
সুন্দর করে বলেছিলাম—“Holy is for celebration! অসভ্যতামি করবো না, রং কিন্তু লাগাবোই।”
দেখতে শুনতে খারাপ আর ভালো অ্যাপ্রোচে দেখে তারা ও মুচকি হেসে নিষেধ করেনি।
দিলাম গালে রং লাগিয়ে.....

পুরো শাঁখারি বাজার হয়তো আধা কিলোমিটার। শাঁখারি বাজার—এক আলাদা জগত ঢাকার ভেতর এমন জায়গা আর নেই যেখানে সনাতনী আচার–আচরণ, রীতিনীতি আর বাঙালি সংস্কৃতির মিলন এত স্পষ্ট। বাদ্যযন্ত্র, তৈজসপত্র, মিষ্টান্ন–ভাজাপোড়া, কসমেটিক—কি নেই!

মোট চারটি মন্দির চোখে পড়লো—প্রথমেই জগন্নাথ পুরীর মন্দির, এরপর রামকৃষ্ণ মন্দির (সবচেয়ে কোলাহলপূর্ণ), একটি কালী মন্দির, আরেকটি নাম মনে পড়ছে না....

এবার আসল কাজ—কাঁসার থালা কেনা। দাম—কেজি ৩০০০ টাকা।
প্লেট–গ্লাস ওজন করে বিক্রি করা হয়।

যেই দোকান থেকে কিনবো, সেই প্রবীণ দোকানদার লোকটির আচরণে আমি কিছুটা মুগ্ধ। কথা শুনেই তিনি বুঝে ফেললেন—আমি আসল–নকল নিয়ে দ্বিধায় আছি। দু’ধরনের প্লেট দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“দেখেন কোনটা আসল কাঁসা? আমরা না বললে আপনে চিনতে পারবেন না!”
সত্যিই—শব্দ তরঙ্গ দুটোরই প্রায় একই লাগলো।
পুরোটা সময় জুড়েই মনে হলো তিনি আমার সাইকোলজি নিয়ে খেলছেন।

শেষে হাতে পেটানো একটি কাঁসার প্লেট নিলাম- ১২০০ গ্রামের মতো ওজন হবে
আর পানির গ্লাস—৭৫০ গ্রামের মতো। কোন দামাদামি নাই—ফিক্সড।
কইলো লাইফটাইম কালার গ্যারান্টি। স্লিপ দিয়া দিবো কিছু হইলে নিয়া আসতে____

আর ইনস্ট্রাকশন দিল
“ভিম বা লিকুইড দিয়ে ভুলেও না; তেঁতুল আর লেবুর রস দিয়ে বাসায় গিয়ে মাজবেন—সোনার মতো চকচকে হবে।”

যাক কথাবার্তা আর ব্যবহার দিয়ে খুব আপ্যায়ন করলো তারাও শুনে কিছুটা আশ্চর্য—ঢাকার আরেকপ্রান্ত থেকে এসেছি! তাই আমি ও তাঁদের একটি খুশি করে দিলাম-
“আপনাদের সম্প্রদায়ের আদি প্রতিষ্ঠানের লোকেরা তুলনামূলক সৎ। তাই এতদূর থেকে আসা।”
উফffff… খুশির ঠেলায় কি হাসি দিলো সবাই! :p

ফিরার পথে হাতে রাখা পেপারে মুড়ানো পলিথিনে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার কাঁসার থালা আর গ্লাসের দিকে তাকালাম।
ভাবলাম—এই জিনিস যদি এলিফ্যান্ট রোড, গুলশান–২, বা ধানমন্ডির কোনো সিরামিক দোকান থেকে কিনতাম—তাহলে কেমন প্যাকেজিং আর আপ্যায়ন পেতাম?

পক্ষান্তরে মনে হলো—
এটাই হয়তো একটি আদি প্রতিষ্ঠানের মাহাত্ম্য; খাঁটি জিনিসই আসল, দৃষ্টিনন্দন চকচকে মোড়ক নয়


আমার লিখার স্পেলিং, সেন্টেস ফ্রেমিং নিয়ে অনেক ব্লগার অভিযোগ করেছেন-
তাই এখন এআই দিয়ে শুদ্ধে নিয়েছি। আমি এখন এআই সাহিত্যক :p

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আমিও তো এআই ইউজ করি ....। ;)

আপনার লেখার ভালো দিক হলো ইউনিক বি্ষয় নিয়ে লিখতে পারেন। ইউনিক experience share করেন ।

তবে জলে এবং থ হলো সঠিক বানান । সেটা চাইলে ঠিক করতে পারেন ।

জলে ফেলা হবে হয়তো ।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩৮

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

আপনার লেখার ভালো দিক হলো ইউনিক বি্ষয় নিয়ে লিখতে পারেন। উফফফ!!! কুতুব সাহেব এভাবে বলিয়েন‌ নি...
আচ্ছা শাইয়্যান ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করি। আসছে বই মেলায় বই বের করমু। :p

তবে জলে এবং থ হলো সঠিক বানান । এইসব জ্বল-পানি এখন আর আমার ঘাড়ে চাপায়ে লাভ নাই;
ইহা সবই এআইয়ের তেলেসমাতি। কয়েকদিন বাদে ব্লগে লিখার মতো মন্তব্যে এআই দিয়ে ফ্রেমিং করে দিবো।

আমিও তো এআই ইউজ করি তবে একটা জিনিস কি?? বানান ভুল সেন্টেস ফ্রেমিং অসুন্দর হইলে ও আমার লেখাগুলো যখন পুনরায় পড়তাম একটা আবেগ আর মায়া কাজ করতো কিন্তু এই লিখাটা এআই ঠিক করে দেওয়ার পর ঠিক তেমন টা লাগে নাই। যাক তারপর ও পাঠকরা খুশি থাকে........

২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৯

গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: কাঁসার মূল আবেদন বন্ধক রাখা যায়।
এই কারণে নিম্ন মধ্যবিত্তের ঘরে কাঁসার অনেক ডিমান্ড ছিল।
কাঁসার পাত্র হার্টের সমস্যা, গ্যাসের সমস্যা দূর করে এরকম কোন বৈজ্ঞানিক কারণ মনে হয় নাই। তবে এর ন্যাচারাল মাইক্রোব রেজিস্ট্যান্স ক্ষমতা আছে শুনেছি। আর কাঁসার পাত্রে অনেকক্ষণ টমেটো দিয়ে রান্না করা খাবার বা যে কোন এসিডিক খাবার লেবুর রস লবণ ইত্যাদি অনেকক্ষণ রাখলে পাত্র থেকে কপার লিচ হয়ে শরীরে ঢুকতে পারে। কপার শরীরের জন্য খুব বেশি ভালো না। তবে যদি কপার লিচ হয় ও ,এত সামান্য পরিমাণ কপার শরীরে ঢুকবে যেটা কোন খারাপ কিছু ঘটাতে পারে বলে মনে হয় না।
সনাতন ধর্মলম্বীদের সততার ঘটনা ডিবেটেবল। পশ্চিমবঙ্গের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখেছি, বিহারে মাস স্কেলে নকল কাঁসার বাসন কোসন তৈরি করা হয়। কপালের বদলে লোহার বাসন তৈরি করে গিলটি করা হয়। চুম্বক দিয়ে সহজে এই চুরি ধরা যায়।

বানানের মায়ের বাপ। এআই সাহিত্যিক! কারে কোনখানে কি ভরে দিলেন বুঝলাম না

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫৪

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
সচরাচর ব্লগে যেমন মন্তব্য করেন তার থেকে একদম ভিন্ন ধর্মী তথ্যবহুল অতিসুন্দর একটি মন্তব্য করলেন। খুবই ভালো লাগলো পড়ে। কাসার ব্যবহার এবং উপকারিতা নিয়ে আসলে আমি অতোটা ঘাঁটাঘাঁটি করিনি; তাই বিস্তারিত অতো জানি না।‌তবে আপনার মন্তব্য বেশ যুক্তিযুক্ত মনে হলো। যেমন দোকানীরা একটু অতিরঞ্জিত করে বলে বিক্রির জন্যে..... কিন্তু পাথর এবং ধাতুর উপকারিতা এবং প্রভাব আমি বিশ্বাস করি। আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আকিদ পাথর ব্যবহার করতেন।

কাঁসার মূল আবেদন বন্ধক রাখা যায়। ইহার কারন কি হতে পারে? কাসা কি মুল্যবান কোন ধাতু স্বর্নের মতো? আবার হলে ও হতে পারে! প্রাচীনকালে কোন ক্রাইসিস থেকে হয়তো ইহা অভ্যাস পরিনত হইছে। আর কাসার-পিতলের বড় পাতিলের বিয়ে সহ অনন্যা অনুষ্ঠানের রান্না নাকি খুবই সুস্বাদু। তারা তো ইহা এভাবে ব্যাখা করে।

সনাতন ধর্মলম্বীদের সততার ঘটনা ডিবেটেবল। আরে টাউট বাটপার তো সবখানেই আছে। আমার অবজারভ করা কিছু স্বনামধন্য আদি প্রতিষ্ঠান দেখছি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পরিচালনা করে। এটা হতে পারে মিষ্টির দোকান, স্বর্নের দোকান কসমেটিকস বা অন্যান্য যে কোন কিছু। ওনারা তুলনামূলক ভালো বা খাঁটি জিনিসটা দিয়ে ব্যবসা করে। এজন্য অনেক নাম-ডাক আর সুনাম।‌

বানান ভরাভরি ইহা সবই এখন এআইয়ের হাতে। :p

৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৬

কামাল১৮ বলেছেন: সব থেকে ভালো উপহার হলো গিফট কার্ড বা নগদ টাকা।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৩৮

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
আমাদের পরিবারে এতো ফর্মালিটিজ মেইনটেইন করা হয় না।

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:২১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: যে দোকানদার কথা বলছিল, তার বাবড়ি চুল ও লুক দেখে মনে হলো—পুরাই ব্লগার চাঁদাগাজীর মতো টা**! তাই এখান থেকে ভুলে ও কেনা যাবে না। আপনে তো মনে হয় ''চাগা সিনড্রোম'' এ ভুগতেছেন। এরে সিরিয়াসলী নেওয়ার কিছু নাই, বিনোদন হিসাবে নেন। ;)

ফিরার পথে হাতে রাখা পেপারে মুড়ানো পলিথিনে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার কাঁসার থালা আর গ্লাসের দিকে তাকালাম।
ভাবলাম—এই জিনিস যদি এলিফ্যান্ট রোড, গুলশান–২, বা ধানমন্ডির কোনো সিরামিক দোকান থেকে কিনতাম—তাহলে কেমন প্যাকেজিং আর আপ্যায়ন পেতাম?
মিশন সাকসেসফুল দেখে ভালো লাগলো। আপনার ভাইয়ের রিয়্যাকশান কেমন জানাইলে ভালো হইতো।

আমার লিখার স্পেলিং, সেন্টেস ফ্রেমিং নিয়ে অনেক ব্লগার অভিযোগ করেছেন- তাই এখন এআই দিয়ে শুদ্ধে নিয়েছি। আমি এখন এআই সাহিত্যক :p এই লাইনেই তিনটা ভুল!!!! =p~

কারো জন্য গিফট কেনা আমার কাছে বিশাল সমস্যার মনে হয়। আমি আবার খুতখুইতা স্বভাবের; যারে দিবো, তার পছন্দ হবে কিনা সেইটা নিয়া ভাবি। সেইজন্যই বই হইলো আমার সহজ সমাধান। অপছন্দ হইলেও কেউ এইটা নিয়া কমপ্লেইন করার সুযোগ পায় না। আমি এইটার নাম দিছি ''বই ডিপ্লোম্যাসি''!!! :-B

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫৮

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

এরে সিরিয়াসলী নেওয়ার কিছু নাই, বিনোদন হিসাবে নেন। সিনড্রোম- টিনড্রোম কিছু না, ব্লগ মডারেটর তার কার্যক্রম কে প্যারালাইসড করে রাখছে; কিছু বলার ক্ষমতা নাই :p তাই একটু বিনোদন নিলাম।

মিশন সাকসেসফুল দেখে ভালো লাগলো। আপনার ভাইয়ের রিয়্যাকশান কেমন জানাইলে ভালো হইতো। ভাইয়ের থেকে ভাবীর উৎসাহ/খুশি বেশি ছিল। আপু নিজেই নাকি ভাইরে উপহার দিতো কিন্তু সময় আর ওই এলাকা ঠিক মতো চিনে না। বাড়ো মুশকিল আমি আহসান করে দিলাম। খুশির ঠেলায় বলে জিনিসটা নাকি বুঝে/চিনে আনতে পেরেছি। উপহার আর দেওয়া হয় নাই; আপু টাকা পকেটে ভরে বলে তুমি অন্য কিছু দাও এইটা আমার তরফ থেকে.........

এই লাইনেই তিনটা ভুল!!!! এর পর থেকে বিশেষ দ্রষ্টব্য আর মন্তব্যর মধ্যে এআই ব্যবহার করবো। :p বাই দ্যা ওয়ে কিছু ছবি তুলেছিলাম কিন্তু ব্লগে আপলোড করতে পারছি‌ না, মন্তব্য ও না, ইনসার্ট ইমেজ দেখাচ্ছে। ব্লগারদের কি ছবি আপলোড দেওয়ার লিমিট থাকে নাকি???

কারো জন্য গিফট কেনা আমার কাছে বিশাল সমস্যার মনে হয়। উপহারের বেলায় আমি ঠিক খারাপ ও না। যেমন আমার বন্ধুর ভাইয়ের বিয়েতে হাজার দুয়েক টাকার মধ্যে আলি এক্সপ্রেস থেকে ইউনিক এক মেকাপ কিট এনে দিছি। তার বউ সেইটা পেয়ে একদম খুশিতে গদগদ......

৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:১৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: সুখপাঠ্য পোস্ট। শাঁখারি বাজারের বর্ণনাটা যদিও সংক্ষিপ্ত, তবু বেশ ভালো লাগলো।

খুব ছোটবেলায় গ্রামের বিয়েতে উপহার হিসেবে কাঁসার থালা-বাটি দিতে দেখেছি। হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়েই। আধুনিক কালে এসে বিয়েতে ডিনার সেট উপহার দেওয়ার মতোই হয়তো, তবে এর সাথে মূল্যবান ধাতু হিসেবে দাম ধরে রাখার বিষয়টি জড়িত ছিল।

ছোটবেলায় নানা-বাড়িতে আমার জন্যও একটা কাঁসার থালা-বাটি তোলা থাকতো। সেই কাঁসার থালা পানি দিয়ে ভরাট করে, এবং পানি কম-বেশি করে, একটা কিছু দিয়ে আঘাত করে শব্দতরঙ্গ তৈরির খেলা করতাম। তেতুল দিয়েই কাঁসার বাসন মাজার রীতি চালু ছিল।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৭

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
শাঁখারি বাজার এদেশে সনাতনী কৃষ্টি কালচার এবং সাম্প্রদায়িক ভ্রাতৃত্বের এক স্মৃতিচিহ্ন। মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে সেখানে কাজ বা ব্যবসা করে। শুধু শাঁখারি বাজারের উপর একটি আলাদা পোষ্ট করা যায়। কিন্তু আমি বাদ্যযন্ত্র, ভাজাপোড়া, কিছু প্রতিমার
ছবি তুলেছিলাম শিখার সাথে যুক্ত করবো। কিন্তু কোন এক অজানা সমস্যায় ছবি আপলোড হয়নি।

ছোটবেলায় গ্রামের বিয়েতে উপহার হিসেবে কাঁসার থালা-বাটি দিতে দেখেছি মুল্যবান ধাতু বলতে সোনা,রুপা আর তামাকে জানি। এই কাঁসা মনে হয় সংকর ধাতু; সলিড তামার সাথে জিংকের সংমিশ্রন করা হয়। তাই মনে হয় নিম্নবিত্ত হিন্দুদের কাছে কাঁসার তৈজসপত্র ছিল স্বর্নের অনুরূপ।

আপনি ছোটবেলায় কাঁসার বাটি ব্যবহার করেছেন। তো এর ব্যবহারিক বৈজ্ঞানিক গুনাগুণ আসলে কতটুকু? এই হার্ট ভালো থাকে,‌আ্যাসিডিটির সমস্যা করে কম ইত্যাদি। নাকি ইহা নিঝক বিক্রির একটি কৌশল।

৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



পুরো পোস্টটি পড়লাম। খুব ভালো লিখেছেন। এআই কিছুটা ঝামেলা তৈরি করলেও লেখাটি মোটের উপর সুখপাঠ্য মনে হয়েছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আপনার বড় ভাইয়ের মতো এই জিনিসের শখ আমারও বহু দিনের। কিন্তু আমার তো আপনার মতো কোনো ছোট ভাই নেই যিনি শখ পূরণ করবেন। তার উপর, আমার ম্যারেজ ডে যে কখন আসে কখন যায়, আমি নিজেই যেহেতু জানি না, সেহেতু অন্যরা জানবে, এটা তো একেবারেই অসম্ভব। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী ইত্যাদি দিবস উদযাপন ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য পালনীয়/ গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়।

যাই হোক, হয়তো এই শখ আমার পূরণ হওয়ার নয়।

আপনি অনেক ভালো থাকুন, এই প্রার্থনাই করি। আবারও ধন্যবাদ।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৩

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

আপনার মন্তব্যেটি পড়ে বড়ই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লাম। কাঁসার প্লেটের শখ আর ছোট ভাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেন সেটা হৃদয়ের অন্তঃস্থলে স্পর্শ করেছে। উপরওয়ালা আপনার ডাক নিশ্চয়ই একদিন শুনবেন। আপনি নিজে কাঁসার তৈজসপত্র প্রেমী জেনে কিছুটা অবাক হলাম।

যাক কথা হলো, ম্যারেজ ডে, বার্থ ডে এই কর্ম-ব্যস্ত দিনে আমার নিজের মনে থাকে না। তবে পরিবারের নারী সদস্যদের এইসব বিষয় নিয়ে আগ্রহ থাকে। তাই অনেক সময় ঘরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ‌ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এইসব বিষয়ে উৎসাহ সহ অংশগ্রহণ করতে হয়। :p

সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
ভালো থাকুন।

৭| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার নানা নানীর কাসার থালা বাটির ব্যবসা ছিলো।
বিশাল কারখানা ছিলো ভারতের আসামে।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পন্ন পোষ্ট পড়েন‌ না, টাইটেল আর দুই-চাড় বুঝে মন্তব্য করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা গেল।
ওস্তাদ জ্বি কে নিয়া মন্তব্য উপেক্ষা করে নানা-নানীর কাসার কারখানায় চলে গেলেন....
যাক শুনে খুব ভালো লাগলো। দেশে ও কাঁসা নিয়ে কাজ করা শুরু করতে পারেন।
কাসার ভিশন‌ দাম।

৮| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৪

জেন একাত্তর বলেছেন:



খুচরা

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৬

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:

কিতা!

৯| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২১

গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: "সচরাচর ব্লগে যেমন মন্তব্য করেন তার থেকে একদম ভিন্ন ধর্মী তথ্যবহুল অতিসুন্দর একটি মন্তব্য করলেন। "

ডান্ডি খোর গোলু লকাপে ছিল বলে স্বাভাবিক ব্লগিং করা সম্ভব ছিল।
কিন্তু এই গান্ডুকে ছাড়া ব্লগ এডমিনদের আবার বিছানা গরম হয় না বলে নতুন মোড়কে এই টোকাই ফিরে এসেছে, কাজেই আবারো গলুর পোদে লাথি মারা মন্তব্য করতে হচ্ছে।

"কাঁসার মূল আবেদন বন্ধক রাখা যায়। ইহার কারন কি হতে পারে?"
আপনি কাঁসা কিনেছেন তিন হাজার টাকা কেজি দরে। আড়াইশো গ্রাম ওজনের একটা কাঁসার গ্লাসের বাজার দাম সাড়ে সাতশ টাকা; অনায়াসে দু তিনশ টাকায় বন্ধক রাখা যায়। একটা পরিবারের চার-পাঁচ দিনের চাল কেনার টাকা হয়ে যায়। উনিশ শতক এবং বিশ শতকের গোড়ার দিকের অনেক গল্প উপন্যাসে কাঁসার ঘটি বাটি বন্ধক রাখার কথা পড়েছি।

আমার বিসিএস পড়ুয়া ফ্লাট মেটের মন্তব্য এই যে কাঁসাতে কপারের সাথে টিন মেশানো হয়, পিতলে জিঙ্ক মেশানো হয়। রান্নার জন্য সবচেয়ে ভালো কপার বা তামার পাত্র, কারণ এর হিট কন্ডাক্টিভিটি খুব ভালো, পাত্রের কোন জায়গায় হটস্পট তৈরি হয়ে পোড়া লাগার সম্ভাবনা কম। পিতলের পাত্রে জিঙ্ক থাকায় সামান্য পরিমাণে লিচিং হয়ে শরীরে ঢুকলে তা শরীরের জন্য উপকারী।
কাঁসার পাত্র ভিম লিকুইড সাবান সবকিছু দিয়ে ধোয়া যায়, তবে স্টিলের মাজুনী বা এরকম খর খরা কিছু ব্যবহার করা যাবে না। তেতুল লেবু ভিনেগার ইত্যাদি এসিডিক জিনিস দিয়ে মাজলে সোনার মতো চকচকা থাকবে।।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৬

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
ভালো-মন্দ সবকিছু ব্লগে আসবে-যাবে; ব্লগ চলবে তার আপন গতিতে, এইসব নিয়ে আমি ভাবিত নয়।‌ আমি সব কিছুকে উপভোগ করতে চাই। রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধা, স্বৈরাচার, সবাইকেই নিয়ে চলতে হবে.....

যাক এবার মুল প্রসঙ্গ কাঁসায় ফিরে আসা যাক। আপনার বর্ননা শুনে মনে হচ্ছে পুর্বে কাঁসা এক প্রকার গরীবের স্বর্ন/সোনার মতন ইং ছিল। এই কথার আদলেই হটাৎ মনে পড়লো বই বা কোন ছবিতে যেন দেখেছি কাসার তৈজসপত্র পুটলায় পেচায়া মাটির নিচে লুকায়ে রাখতে।‌ পুর্বে ছিল কাসা এরপর সময় পরিবর্তনে সাথে মাটির থালা-বাসন, টিনের যুগ শেষ করে সিরামিক প্রবেশ করলো। শহুরে কিছু ধনীরা এখন আবার মাটি ও‌ নাড়ির টানে কাসা ও মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার করে।

আপনার ফ্লাট মেট ঠিক ই বলেছে। "কাসা" রুপা বা তামার মতো পিউর কোন ধাতু না। জিংক সহ আরো কি কি যেন মিশানো হয়। তবে বাংলাদেশের কাসার দামটা একটু বেশিই মনে হলো। ভারতে বা কলকাতায় দাম দেখলাম অনেক কম। ৬০০/৭০০ রুপির মতোন কেজি হবে। সেখানে চাহিদা বেশির জন্যেই এমন কিনা কে বলবে; তবে ভারতীয় কাসার তৈজসপত্র নাকি কিছুটা হালকা আর মেশিনে তৈরি করা......

কাসার জিনিসের শখ যার মানে আমার ভাই-ভাবী তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়ে গেছে। তারা এখন যা দিয়ে মন চায় এটা‌ পরিস্কার করুক। :p আমার এইসব কাসার প্লেটে খাওয়ার সখ নাই। রান্না মজা না হইলে কিংবা কাসার থালায় মুলা খাইলে কি মাংসের স্বাদ পামু? তবে খুঁজে কিনার অভিজ্ঞতা টা বেশ দারুন ছিল।

সুন্দর মন্তব্যের জন্যে আবারো ধন্যবাদ।

১০| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৩

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: কাঁসার প্লেট–গ্লাস ব্যবহারের জন্য হলে ও বর্তমান ব্যস্ততার যুগে
আমরা ব্যবহার করতে চাইনা ।
কিন্ত লক্ষ্য করা গেছে ,
কিছু নব্য ধনীরা নিজেদের আভিজাত্য প্রকাশের জন্য
ঘরে এসব সাজাঁয়ে রাখে এবং অন্যকে বুঝাতে চায়
তাদের অবস্হান ।

.....................................................................................
গ্রামে যখন যাই , এর মাধুর্য টের পাই
খেতে বসে মনে হয় অন্য এক আবহের মধ্যে আছি ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৪

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
কাঁসার প্লেট–গ্লাস ব্যবহারের জন্য হলে ও বর্তমান ব্যস্ততার যুগে
আমরা ব্যবহার করতে চাইনা ।
ব্যবহারের জন্যে তো ঠিক আছে। কিন্তু কাসার যে দাম তা সর্বসাধারণের নাগালের বাইরে। তাই যারা কাসা চিনে অনেকের স্বাদ থাকলে সাধ্যে নেই..... আর সিরামিকের হালকা সুন্দর ডিজাইনের তৈজসপত্র এই ফাঁকা স্থান পুরন করে নিয়েছে

কিছু নব্য ধনীরা নিজেদের আভিজাত্য প্রকাশের জন্য সত্যি কথা বলতে দুই-চার জন ধনী আত্নীয় স্বজন বা পরিচিত কারো বাসায় খেতে গিয়ে এখনো কাসার কোন কিছু পাইনি বা দেখিনি। যারা ব্যবহার করে তারা হয়তো এর গুনাগুণ বা জেনেশুনেই করে। তবে কিছু রুচিশীল শিক্ষিত মানুষের বাসায় মাটির অনেক নান্দনিক তৈজসপত্র দেখেছি। আবার ধনীর কাঁসা ব্যবহার আপনারা ধারনা ও সঠিক হতে পারে।

গ্রামে যখন যাই , এর মাধুর্য টের পাই
খেতে বসে মনে হয় অন্য এক আবহের মধ্যে আছি ।

শুনে বেশ ভালো লাগলো। তবে আমার কাছে গ্রামের পরিবেশের সাথে মাটির তৈজসপত্র বেশি ভালো লাগবে।
আমার পুর্ব পুরুষ দাদা-নানা মনে হয় অন্তত গরীব ছিল কখনো তাদের কাছে কাঁসার কোন জিনিসপত্র দেখছি বলে মনে হয় না। :p

১১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ২:৪৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বা! সুন্দর লিখেছেন, লেখাটার পুরোটাই যেন একধরনের কাঁসা কাহিনি অ্যান্ড সাইকোলজি থ্রিলার। উপহারের
চিন্তা দিয়ে শুরু হলেও, শেষমেশ ভাইয়ের শখের চেয়েও বেশি ঝামেলা হয়ে দাঁড়ালো আসল কাঁসা বনাম
নকল কাঁসা গোয়েন্দাগিরি।

আর ইউটিউব রিসার্চ সাথে নিউমার্কেটের দোকানদারের বাবড়ি হেয়ারস্টাইল দেখে তারে ব্লগার চাঁদাগাজী ঘোষণা
এখানেই তো দেখি রসের তুফান! শাঁখারি বাজারে গিয়ে দোকানদারের সাথে সংলাপ খেলা দেখেন কোনটা আসল?
আর দু’দিকেই একই শব্দ!এখানে মনে হল কাঁসা না কিনে আপনি যেন নিজের ইগো আর আত্মসম্মানই ওজন
করাচ্ছিলেন কেজি দরে।

সব শেষে ভাই-ভাবি হয়তো থালা গ্লাস দেখে ভাবছে, ভাইয়া কি বৌয়ের শখ পূরণ করলো, না ইতিহাস ঐতিহ্য
সংরক্ষণ কমিটির সদস্য হলো? । এখানেও মনে হল এটা শুধুই উপহার কেনার মিশন নয় কাঁসার থালা কিনতে
গিয়ে প্রমাণ করলেন প্রাচীন ধাতুর চেয়েও মানব মনের তরঙ্গ বেশি সময় ধরে বাজে !! সুন্দর লিখেছেন ।

এই রম্য কাহিনীটির মধ্যে থাকা তামা কাশার বিষয়ে পদার্থ আর রসায়নের রস মিশ্রিত বিষয়গুলি নিয়েও
দু চারটি কথা না বলে যাওযাটা যুক্তি সম্মত মনে হলনা । তাই এ বিষয়েও বৈজ্ঞানিকদের জ্ঞান ধার করে ছোট্ট
একটি মুল্যায়ন রেখে গেলাম ।

কাঁসা সাধারণত তামা ও টিন এর একটি সংকরধাতু । ধাতুর সংকরায়নে ধাতুর ঘনত্ব বাড়ে ফলে জিনিস ভারী হয়,
যা লেখায় ঠিকভাবেই উল্লেখ আছে।সংকরায়ন ধাতুকে সাধারণত আরও শক্ত, টেকসই ও ক্ষয়রোধী করে।
লেখাটিতে থাকা স্বাস্থ্যগত যে উপকারিতার কথা যথা হার্টের রোগ কমানো, অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক কমানো এসব
দাবির পক্ষে সরাসরি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ খুব সীমিত। তবে তামার কিছু বৈজ্ঞানিক গুণ রয়েছে যথা তমা পদার্থটি
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যাকটেরিয়া ও কিছু ভাইরাসের বৃদ্ধি কমাতে পারে। গরম খাবারের এসিডিক প্রকৃতিতে
তামা/টিনের খুব সামান্য আয়ন দ্রবীভূত হয়, যা সাধারণত স্বাস্থ্যঝুঁকির পর্যায়ে নয় যদি খাদ্যে অত্যধিক এসিড না
থাকে। এগুলো থেকে হালকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সুবিধা পাওয়া সম্ভব, কিন্তু হার্ট বা গ্যাস্ট্রিকের ওপর সরাসরি
প্রভাব বিজ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত কিনা তা আরো গবেষনার বিষয় । তাই গুজব মনে হয়নি বললেও বৈজ্ঞানিকভাবে
এগুলোকে নিশ্চিত স্বাস্থ্য উপকারিতা হিসেবে গণ্য করা যায় না।

শব্দ তরঙ্গ থেকে আসল কাঁসা চেনার বৈজ্ঞানিক দিক তথা লোহার দণ্ড দিয়ে আঘাত করলে বিভিন্ন ধাতু বা
সংকরধাতুর ইলাস্টিসিটি, ঘনত্ব, এবং শব্দের গতি ভিন্ন হয়।কাঁসার ধ্বনিতরঙ্গ স্থায়িত্ব সাধারণত লোহার তুলনায়
দীর্ঘস্থায়ী এটি বৈজ্ঞানিকভাবে যুক্তিসংগত।তবে কাঁসা ও অন্যান্য চকচকে ধাতুর মধ্যে শুধুই শব্দ শুনে পার্থক্য
করাটা সবসময় নির্ভুল নয়।কেননা সংকরধাতুর অনুপাত সামান্য বদলালেও শব্দের বৈশিষ্ট্য বদলায়।
অতএব এটি সহায়ক পরীক্ষা, কিন্তু চূড়ান্ত প্রমাণ নয়।

পরিষ্কারের উপায় বিষয়ে দোকানদারের দেওয়া নির্দেশ ভিম দিয়ে নয়, তেঁতুল/লেবু দিয়ে মাজবেন এর পেছনে
রসায়ন খুব স্পষ্ট, কারণ ভিম/লিকুইড এর ক্ষারীয় প্রকৃতি কাঁসার পৃষ্ঠে তামা-অক্সাইড স্তরকে অসমভাবে ক্ষয়
করতে পারে। লেবু/তেঁতুলের সাইট্রিক ও টারটারিক অ্যাসিড হালকা ভাবে অক্সাইড স্তর সরিয়ে ধাতুকে উজ্জ্বল করে।
অতএব এই পরামর্শ বৈজ্ঞানিকভাবে যথার্থ।

তাই সাধুবাদ লেখক ও দোকানী উভয়ের জন্যই

শুভেচ্ছা রইল

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০১

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন:
সম্পন্ন পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে খুঁটি-নাটি বিষয়গুলো তুলে এনে আমার মতো ক্ষুদ্র একজন ব্লগারের পোষ্টে যে অসাধারণ একটি মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করলেন, তাতে আপনাকে অন্তরের অন্তঃস্থলে থেকে ধন্যবাদ।

আপনার মেধা-মনন আর অতি চমৎকার শব্দের খেলা দিয়ে ভুমিকার প্রথম কয় লাইনেই পোষ্টটির সারাংশ সংক্ষিপ্ত আকারে বলে দিয়েছেন। পাশাপাশি জৈনক ব্লগার কে উল্লেখ করে লেখা রসিকতা বেশ বেজায় ধরতে পেরেছেন দেখে খুবই বিস্মিত ও মজা পেলাম। এখানে মনে হল কাঁসা না কিনে আপনি যেন নিজের ইগো আর আত্মসম্মানই ওজন করাচ্ছিলেন কেজি দরে।। সত্যি! এই একটি লাইনে বুঝলাম-"অভিজ্ঞতা চুল এমনে এমনি সাদা হয় না"-এই যে আপনার মেধা অভিজ্ঞতা আর প্রাপ্ত জ্ঞান থেকে আমার অবস্থা ঠিক অনুধাবন করতে পেরেছেন। প্রবীন কাশা ব্যবসায়ীর বিক্রির অভিজ্ঞতা হয়তো আমার বয়সের থেকে বেশি; তিনি আমার মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো বেশ ভালোই রিড করতে পেরেছেন।

কাশার বিষয়ে পদার্থ আর রসায়ন মিশ্রিত আপনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ টি পোষ্টটি একটি অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল। আমি ধাতুর ব্যবহারিক গুণাবলি নিয়ে কিছুটা জ্ঞাত ছিলাম। যে মানব জীবনে এর কিছুটা প্রভাব আছে। কাশার ব্যবহারিক গুণাবলী নিয়ে আমার সঠিক কোন ধারনা না থাকলে ও অবিশ্বাস বা মিথ্যা কিছু মনে হয়নি। তবে আপনার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় আকারে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়ার পর বিষয়টি সম্পন্ন পরিস্কার হয়ে গেল। কাশাকে বিক্রির উদ্দেশ্যে হয়তো ব্যবসায়ীরা কিছুটা অতিরঞ্জিত করে বলে থাকে। পাশাপাশি আরো মনে হলো কাশা প্রেমী বা ব্যবহারকারীরা হয়তো হাজারো বছরের প্রচলিত প্রথাকে বিজ্ঞান দিয়ে যাচাই করে; নিজেদের এক প্রকার আত্মতুষ্টি থেকে বঞ্চিত করতে চায় না।

কেননা সংকরধাতুর অনুপাত সামান্য বদলালেও শব্দের বৈশিষ্ট্য বদলায়।অতএব এটি সহায়ক পরীক্ষা, কিন্তু চূড়ান্ত প্রমাণ নয়। নতুন কেহ "কাশার" সাথে পরিচিত এমন কারো কাছে বা যাহারা কাশা ব্যাবসার সাথে যুক্ত; স্বল্প সময়ের মধ্যে আসল-নকল বোঝাতেই এই পদ্ধতিটি অনুসরন করে থাকে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আসল-নকল বা ক্ষার মিশানো দুটি থালা থেকে একই ফ্রিকোয়েন্সির যে তরঙ্গ শোনার পরে মনে হচ্ছে আপনার এই তত্ত্বটি ই ঠিক। আসল কাশার পরিমাপ বোঝাতে তরঙ্গের স্থায়িত্ব সর্বোত্তম কোন পন্থা নয়। পরিশেষে, কাশাকে পরিস্কার চকচকে করতে তেঁতুল এবং লেবুর ব্যবহার কে বৈজ্ঞানিক ভাবে বুঝিয়ে দিলেন। এরপর হয়তো কাশা বিষয়ক কোন কুসংস্কার বা অতিরঞ্জিত কিছু বিশ্বাস করার অবকাশ নেই।

কাশা আবহমান বাংলার সহ উপমহাদেশের হাজারো বছরের সংস্কৃতির অংশ ও ধারক-বাহক‌। সিরামিক, টিন মাটি সহ অন্যান্য তৈজসপত্র সহজলভ্যতা এবং কাশা মুল্যে তুলনামূলক বেশী হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে হয়তো আগ্রহ কম।

অতি চমৎকার মন্তব্যের জন্যে আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।

১২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.