![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রসঙ্গ : ব্যক্তির মনুষ্যত্ব এবং মানুষের ব্যক্তিত্ব
---------------------------------------------------------------
তোমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নিজের প্রতি সন্দিহান না-হওয়া পর্যন্ত, আমি তোমার কোনো জানাকেই সঠিক জানা হিসেবে মেনে নিতে পারি না।
প্রত্যেক আমিত্বধারী ব্যক্তি, তার স্বভাবের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যে, নিজের ব্যক্তিসত্যকে চূড়ান্ত সত্য হিসেবেই গণ্য করে।
--‘নিশ্চয়ই আমি যা’ জানি, তোমরা তা’ জানো না।’- এই উক্তিটি প্রত্যেক ‘আমি’-র শাশ্বত স্বাভাবিক উক্তি। নির্দেশ মান্যকারী হওয়ার চে’ বরং নির্দেশদাতা হওয়ার ব্যক্তিভাবনাতে যেকোনো ব্যক্তি পরমানন্দের স্বাদ পায় এবং ব্যক্তিত্বের প্রদর্শনে প্রলুব্ধ হয়। পরিণতি ভাবনায় সমৃদ্ধ না-হওয়া পর্যন্ত, যেকোনো ব্যক্তি এভাবেই তৃপ্তি পেতে থাকে। আমিত্বের স্বেচ্ছাচারিতায় কখনোই কোনো ব্যক্তি অন্যের চে’ কম নয়।
কোনো ব্যক্তি যখন ব্যক্তি থেকে মনুষ্যে উন্নীত হয়, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য যখন আর প্রকাশমান থাকে না, পরিণতি ভাবনায় সমৃদ্ধ জ্ঞানে জ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তিটি তখন একজন ‘মানুষ’।
মানুষের আচরণে ব্যক্তিত্বের আচরণের দৃঢ়তা নেই জন্যে, মানুষের আচরণের প্রকাশটাও দুর্বল হয়ে থাকে। তারপরও এ-জগতে সর্বদিক বিবেচনায় ‘মানুষ’-ই সর্বশ্রেষ্ঠ। অন্যের নির্দেশ মেনে চলাতে, মানুষের আত্মসম্মানে যেমন কোনো আঁচড় পড়ে না, তেমনি অন্যদের ওপর নির্দেশক হওয়ার মধ্যেও, কোনো ব্যক্তির সর্বশ্রেষ্ঠত্বে ‘মানুষ’-এর চে’ উন্নততর নতুন কোনো উপাধির সংযুক্তি ঘটে না। নির্দেশ দেওয়া বা নির্দেশ পালন করা, উভয়ই একজন মানুষের কাছে সম-মর্যাদাপূর্ণ কর্তব্য হিসেবেই গণ্য হয়।
সাধারণত, ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব নিয়ে স্বেচ্ছাচারী থাকতেই পছন্দ করে এবং স্বার্থের বাধ্যবাধকতা না-থাকলে প্রাকৃতিকভাবেই যেকোনো ব্যক্তি অন্যের নির্দেশ মেনে চলাকে অপছন্দ করে। এমনকী, পরাধীন আশ্রিত ব্যক্তিও, তার আশ্রয়দাতা স্বাধীন মালিকদের সরলতা কিম্বা নীরবতার সুযোগে, আশ্রয়দাতাদের ওপরেও প্রভূত্ব খাটাতে কিম্বা নির্দেশক সাজতে লজ্জা পায় না।
ব্যক্তির আসল রূপটা তার স্বভাব-রূপ, যেটাকে স্বভাবধর্ম বা স্বভাবগুণ-ও বলা হয়। স্বভাবে কৃত্রিমতা না-ঢোকালে, তথা ব্যক্তির আদি স্বভাবটি অবিকৃত অবস্থায় রেখে দিলে কিম্বা প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির স্বতন্ত্র স্বভাবটির স্বেচ্ছাচারী প্রকাশ মেনে নিয়ে, বহুজনকে একই জনপদে থাকতে দিলে, ব্যক্তিত্বের কোন্দলটাই সেখানে অনিবার্য পরিণতি হ’তে বাধ্য হয় ফলাফলে।
সামাজবদ্ধ হ’য়ে টিকতে গেলে প্রত্যেককেই তার ব্যক্তিক অনিচ্ছায় নিজের স্বেচ্ছাচারিতাকে দমিয়ে কৃত্রিমতাকে বরণ ক’রে নিতেই হয়।
যে-কোনো শিক্ষায় শিক্ষিত হ’লে কিম্বা যে-কোনো জ্ঞান অর্জনের পর কোনো ব্যক্তি তার আদি অকৃত্রিমতা নিয়ে থাকতে পারে না, অথবা এভাবেও বলা যেতে পারে, অবিকৃত দশায় কেবল সেই ব্যক্তিটি থাকতে পারবে, যাকে কোনো জ্ঞান বা শিক্ষার সংস্পর্শে আসতে হবে না।
সাধারণ অর্থে আমরা যেগুলোকে মানবিক গুণ হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই, সেগুলো কোনো একক ব্যক্তিত্বের স্বভাবগুণ বা স্বভাবধর্ম নয়, বরং বলা যেতে পারে অকৃত্রিম ব্যক্তি-স্বভাবের সাথে কিছু কৃত্রিমতার যোগ ঘটিয়েই ব্যক্তির স্বাতন্ত্র্যে মানবিক রূপটির প্রকাশ ঘটানো হয়।
কোনো মানবসন্তান তার স্বতন্ত্র স্বভাবগুণে মানবিক হিসেবে বিকশিত হ’তে পারবেই না, এমন দাবি করছি না, তবে, যদি কোথাও কেউ অমন হ’তে পারে তো, সেটিকে বিরল কোনো দৃষ্টান্ত হিসেবে নিতে পারি, আমরা কোনো ব্যতিক্রমকে সাধারণ ধারাবাহিক ঘটনার সাথে মেলাতে পারি না।
স্বতন্ত্র গুণসম্পন্ন ব্যক্তি থেকে উন্নীত হয়ে, মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তিতে অর্থাৎ মানুষে পরিণত হওয়ার জন্যেও, সাধারণত, কিছু বিকৃতি বা কৃত্রিমতাই বরণীয়।
সামাজবদ্ধ থাকতে চাইলে ব্যক্তিক স্বেচ্ছাচারিতাকে দমানোই কর্তব্য। সামাজিক কৃত্রিমতাকে বরণ করার মধ্যেই সভ্য মানবসন্তানদের কৃতিত্ব।
-----------------------------------------------------------------------------
করণিক : আখতার২৩৯
##### ১৬/০৭/২০১২খ্রি:
প্রসঙ্গ : ব্যক্তির মনুষ্যত্ব এবং মানুষের ব্যক্তিত্ব
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।