নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মা,ঘরের বাতি নিভিয়ে দিয়ে ল্যাপটপের আলোয় তোমাকে লিখছি। আমি জানি তুমি রাতে বারবার ওঠো, কখনো আমার ঘরের সামনে দিয়ে ঘুরে যাও; তখন দরজার ফাঁক দিয়ে আলো দেখা গেলেই তুমি দরজায় টোকা দিয়ে বল, "ঘুমিয়ে যা বাবা।" আমি তখন বাতি নিভিয়ে বসে থাকি যেন তুমি ভাব যে আমি ঘুমিয়ে গেছি। আমার চোখের সুদূর কোনেও ঘুমের কোন লেশমাত্র থাকে না। মা, তুমি জানতেও পারো না নিদ্রাহীন তোমার ছেলের বুকের মধ্যে কত অনুভূতির জন্ম হচ্ছে, সমাপ্তিও ঘটছে। আজ আমি বাতি জ্বালাইনি,আজ এক বিশেষ রাত। আমি চাই আজ আমি একা বসে তোমাকে অনেক কথা বলব- তাই আজ আমি চাইছি না আমার কাজে কোন ব্যাঘাত ঘটুক। তাই আজ তোমার কাছে নিজেকে ঘুমন্ত প্রমাণ করতে বাতি নিভিয়ে বসে থাকা, আর চিঠি লিখে চলা।
ছোটবেলা থেকেই আমি তোমাকে বড্ড ভালবাসি মা, তোমার হাসিমুখ দেখতে আমি করতে পারি না এমন কোন কাজ নেই। মনে আছে মা, ক্যাডেট কলেজের এডমিশন টেস্টের আগে আমার জণ্ডিস হল, তুমি বললে পরীক্ষা দেবার দরকার নেই কিন্তু আমি অসুখ নিয়েই পরীক্ষা দিলাম আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে খুব ভাল করলাম। তোমার খুশি দেখে আমার ভাল লাগছিল, কিন্তু একই সাথে মনে হচ্ছিল এই সব কিছুই অর্থহীন। বাড়ি ছেড়ে ক্যাডেট কলেজে যেতে আমার দুঃখ বা আনন্দ কিছুই হয় নি, মনে হচ্ছিল এইসব কিছু আমার জীবনে ঘটছে না; যেন কোন এক একাকী বালকের জীবনে ঘটছে আর আমি কেবল দর্শক হয়ে দেখছি। তুমি যা চেয়েছিলে তাই হয়েছিল- ক্যাডেট কলেজে আমি পড়াশোনায় আর খেলায় সবার চেয়ে এগিয়েই থাকতাম। কিন্তু এত পেয়েও আমার কিছুতেই কিছু যায় আসত না। আমার অনেক বন্ধু ছিল, সবাই বলত আমি খুব নিরহংকার। আসলেই কি তাই? আসলে আমি একাকী, উদাসীন।
এইচ এস সির পর যেখানেই পরীক্ষা দেই দেখি ভাল রেজাল্ট করে ফেলেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উনিশ হলাম- তোমাকে বললাম বুয়েটে আর ভর্তি পরীক্ষা দিব না। তুমিও রাজি হলে আর আমি ভর্তি হলাম ঢাবিতে। মা, এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল- আমি সব পরীক্ষায় প্রথম হই, অনায়াসে। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা acmICPC তেও আমি জিতে এলাম। কলেজের মত এখানেও আমি খেলাতে ভাল- আন্তঃবিভাগীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্টে আমি প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট! বন্ধুদের নিয়ে বানানো ব্যান্ডে আমি গিটারিস্ট - ইউটিউবে আমার বাদন সবাই মুগ্ধ। কিন্তু কেউ কখনো জানে না আমার মনের ভেতর শুধু একটা বাদনই বাজে আর বলে চলে, "হেতা নয় হেতা নয় অন্য কোথা, অন্য কোনখানে!"
আমি যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারছি, হাহা করে হাসছি কেউ জানতে পারছে না আমার বুকের ভেতর কোন ব্যথার রোদন বাজে; তুমিও বুঝতে পারনি মা যখন আমি থালা চেটেপুটে খেয়ে বলছি, "খুব মজার রেঁধেছ" আসলে তখন আমি খেয়ে কোন স্বাদই পাই নি! কি করব, আমার শুধুই মনে হয় জীবনে যাই পেতে চেয়েছি তাই পেয়ে গেছি, জীবনে আর কিছুই করার নেই। জীবন কেমন একঘেয়ে অর্থহীন মনে হয়। দিনগুলো সব যেন পুনরাবৃত্তি। ভাল লাগে না কিছুই। তোমাকে বলতে গেলাম- তুমি বললে এসব চিন্তা বাদ দিতে। কিন্তু কি করে বাদ দেব সেকথা বললে না। আমি শুন্যতার বৃত্তে বন্দী হয়ে থাকতে চাইনি কিন্তু কত জনকে বললাম তবু কেউ আমাকে এই বৃত্ত থেকে বের করে আনার জন্য সাহায্যের হাত বাড়াল না- কেউ না, কোন বন্ধু না, কোন কাজিন না। মরিয়া হয়ে একবার বন্ধুদের বলছিলাম আমার খুব ইচ্ছা করে উঁচু কোন জায়গা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মরে যাই কিন্তু নাকমুখ থেঁতলে গিয়ে বিভৎস দেখাবে বলে সেটা করি না। বন্ধুরা ভাবল আমি রসিকতা করছি, তারা খুব হাসল, তারপর বল্ল, "জিনিয়াসের চিন্তাভাবনাই আলাদা।" আরেকবার বললাম "আমার মাঝে মাঝে গলায় ফাঁসি দিয়ে মরে যেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু তাতে জিব বের হয়ে খারাপ দেখাবে বলে মরি না।" এবারো বন্ধুরা ভাবল আমি মজা করছি, এবারো তারা হাসল খুব আর তারপর একজন বল্ল, " মুখে চওড়া টেপ পেঁচিয়ে নিস, তাহলে আর জিব বেরোবে না।" আমি তাদের এস ও এস পাঠিয়েছিলাম, তারা বুঝলই না।
এখন আমার ল্যাপটপে আমার প্রিয় গান বাজছে। খুব ভাল লাগছে মা। ফেসবুকে বন্ধুদের জন্য গানের কয়েকটা কথা লিখলাম, তোমার জন্যও লিখে দিলাম মা-
I tried so hard and got so far
But in the end it doesn't even matter.
I had to fall to lose it all
But in the end it doesn't even matter.
তোমার সবুজ ওড়নাটা তোমার ঘর থেকে নিয়ে এসেছিলাম বিকালেই। ওটা একহাত দিয়ে ধরে তোমাকে চিঠি লিখছি- মনে হচ্ছে তোমাকেই ছুঁয়ে আছি। টেপটাও আজই কিনেছি মা। এখন ওটা মুখে পেঁচাব- তারপর তোমার ওড়নাটা গলায় বাঁধব। যেতে যেতেও তোমাকেই ছুঁয়ে থাকব মা।
ছবি: অন্তর্জাল।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১২
করুণাধারা বলেছেন: না রাজীব নুর, অতি মনোরম না এটা অতি দুঃখের ঘটনা যা আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪
শায়মা বলেছেন: কেনো?
কেনো সে মরে গেলো আপু?
আর সে কোন মায়ের ছেলে?
কার কথা লিখেছো?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৯
করুণাধারা বলেছেন: আগে মায়ের কথা বলে নেই- গোলগাল, সদাহাস্য, সুখী চেহারার মা। আমি একদিনই দেখেছিলাম, এই ছেলেটা আর আমার ছেলে একই সাথে ভরতি পরীক্ষা দিয়েছিল।
কেন সে মরে গেল কেউ জানে না, কিন্তু সে অনেকের কাছেই বলেছিল- কেউ বোঝে নি ওকে সাহায্য করা দরকার।
ও ঢাবিতে CS এতে প্রথম হত, প্রায় তিনবছর আগে মারা গেছে কিন্তু আজো আমার মনে হয় কেন মরে গেল!
আজ হামার পোস্ট পড়ে মনে পড়ল, তাই লিখলাম। এমন যেন আর কারো জীবনে না হয়।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৩
জাহিদ অনিক বলেছেন: খুবই করুণ গল্প। ছেলেটা তার মা'কে খুব ভালবাসে।
অথচ বিশ্রী রকমভাবে মরে গেল----
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৩
করুণাধারা বলেছেন: হ্যাঁ জাহিদ অনিক, খুব করুন গল্প। ছেলেটা মাকে খুব ভালবাসত, সুইসাইড নোটে এই কথাগুলো লেখা ছিল শুনেছি কিন্তু মাকে চিঠি লিখেছিল নাকি জানি না। আমি ওর গল্প বলার জন্য চিঠি লিখলাম।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৫৯
মাইনুল ইসলাম আলিফ বলেছেন: আসলে গল্পটা যেমন, আপনি তার চেয়েও অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছন।অসাধারণ......................অসাধারণ।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪২
করুণাধারা বলেছেন: আমি চেষ্টা করেছি ছেলেটাকে বুঝতে, তাই হয়ত লেখাটাকে আপনার গোছান মনে হয়েছে। কিন্তু আপনি কি তাকে চিনতেন মাইনুল ইসলাম আলিফ?
৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: না রাজীব নুর, অতি মনোরম না এটা অতি দুঃখের ঘটনা যা আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না।
আসলে পাঠক একটা বিষয়কে তার নিজের মতো করে নেয়।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৫
করুণাধারা বলেছেন: ঠিক! একটা বিষয়কে পাঠক তার নিজের মত করে নেয়- আপনিও সেভাবেই নিয়েছেন। আমার কাজ বলে যাওয়া, আমি আমার মিত বলে গেলাম।
৬| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০
হাসান মাহবুব বলেছেন: ছেলেটা ওর সমস্যার কথা কাউকে বলতে পারে নি? কেউ বুঝতে পারে নি?
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪১
করুণাধারা বলেছেন: ছেলেটা একটা সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিল, সেখানে সে উল্লেখ করেছিল বন্ধুদের আর কাজিনদের সাথে কিভাবে মারা যায় তা আলোচনা করেছিল।
মনে হয় কেউ বুঝতে পারে নি ছেলেটা সত্যি বলছে। হয়ত বড়দের কাছে এ খবরটা পৌঁছালে এমন ঘটত না। তাই কেউ যদি বলে যে মরে যেতে ইচ্ছা করছে তখন কথাটা সিরিয়াসলি নেয়াই উচিত।
৭| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমাদের চারপাশে কত আপন আপন মানুষের বসবাস।অথচ সত্যিকারের আমাদের বা আমাদের মন বোঝার মত কি একজনও আছে?
ছেলেটার মনকে যদি কেউ বুঝতে চেষ্টা করত সে হয়তো এভাবে মরে যেতনা।
চিঠিটা পড়ে খুব মন খারাপ হল
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯
করুণাধারা বলেছেন: সত্যিই মোস্তফা সোহেল, আমারও শুধু মনে হয় কেউ যদি ছেলেটার মন বুঝত, কেউ যদি ওকে সাহায্য করত!!!
শুনেছি অনেক আত্মহত্যার পর কাছের মানুষেরা বুঝতে পারে যে আত্মহত্যাকারী নানা ভাবে ইংগিত দিয়েছিল, তারা সেটা ধরতে পারে নি। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩১
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এমন কেনো? গল্পটা কি অন্য রকম হতে পারতো না?
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৬
করুণাধারা বলেছেন: এমন কেন এই কথাটা আমিও ভাবি। গল্পটা নিশ্চয় অন্যরকম হতে পারত, যদি কেউ ছেলেটার মনের টানাপোড়ন বুঝতে পারত। কেউ তা বুঝতে পারেনি। আসলে আমরা শুধুই নিজেকে নিয়েই ভাবি আর নিজের মত করেই সবকিছু বুঝি।
৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩২
সাদা মনের মানুষ বলেছেন:
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮
করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার চায়ে মন ভাল হয়ে গেল সাদা মনের মানুষ। আমি এমন মগ ভরা দুধ- চা খেতেই পছন্দ করি। অসংখ্য ধন্যবাদ।
১০| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৯
সোহানী বলেছেন: আমি জানি না কেন এরা এ ধ্বংসের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। খুব খুব কষ্ট হয় ওদের জন্য। কি অকাল পরিনতি...। একটু ভাবে না মায়ের কথা বাবার কথা বোনের কথা .. কি স্বার্থপরের মতো চলে যাওয়া।
বিদেশে প্রতিটি স্কুল কলেজে মেন্টাল ফিটনেস ক্লাস করতে হয় বছরে কয়েকবার। অথচ আমাদের দেশে এমন কোন কিছু নেই। কেউই বুঝতে চায় না ওদের কষ্ট, কেউই জানতে চায় না ওদের দু:খ।
খুব খারাপা লাগলো........
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫
করুণাধারা বলেছেন: আমিও জানি না কেন এরা ধ্বংসের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়- কিন্তু মনে হয় কেউ যদি তখন এদের হাতটা ধরে ফেলত তখন হয়ত তাদের ফেরানো যেত। মানসিক সমস্যায় পড়া মানুষদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়া নিয়ে হামা-র একটা পোস্ট দেখে তাৎক্ষণিকভাবে এটা লিখেছিলাম।
আমাদের দেশে স্কুল কলেজে দূরে থাক, একমাত্র ঢাবি ছাড়া আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের মেন্টাল ফিটনেসের জন্য কোন ব্যবস্থা আছে বলে শুনি নি। তাই এদের দুঃখ শোনার কেউ নেই- তাই এমন দুঃখজনক ঘটনা আবারো ঘটতে পারে।
ওর বন্ধুরা ওকে নিয়ে ইউটিউবে একটা ভিডিও দিয়েছে, কিন্তু আমি লিংক দিতে জানি না। Tribute to Sabit Hasan লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলে প্রানবন্ত ছেলেটিকে দেখতে পাবেন।
১১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫১
নূর-ই-হাফসা বলেছেন: জীবনের কিছু ক্ষেত্রে অসফল থাকা হয়তো ভালো । তাহলে হাহুতাশ করে সময় পাড় করা যায় ।
একজন সফল মানুষ হতাশায় আচ্ছন্ন হবার হয়তো কারন খুঁজে পায়না । তার জীবন হয়ে উঠে অর্থ হীন । কিছু পাওয়ার ইচ্ছে না থাকলে বাঁচা অনেক কষ্টের ।
লেখা টা চমৎকার ভাবে একটা ছেলের কাহিনী তুলে ধরেছেন ।
জীবন কত অদ্ভুত । অন্যের ঘটনা না শুনলে বুঝা মুশকিল ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৩
করুণাধারা বলেছেন: হ্যাঁ নূর-ই-হাফসা, জীবন সত্যি অদ্ভুত- জীবনের পথে যত আগাবেন ততই একথা বুঝতে পারবেন। আর কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই বলে জীবন শেষ করে দিতে হবে এমন ভাবনা সত্যিই অদ্ভুত।
আমি ওর জীবনের ঘটনাগুলো বর্ণনা করার জন্য এই চিঠি লিখেছি। আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। একবার দেখুন ছেলেটাকে Tribute to Sabit Hasan লিখে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে, আপনি তখন ভাববেন "কেন?"
১২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:১০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার লেখা এ কাহিনীটা পড়ে বুকটা হু হু করে উঠলো। ছেলেটার জন্য প্রচন্ড মায়া আর ভালবাসা অনুভব করছি। লেখাটা পড়ে মনে হলো, পরিবারের প্রত্যেকেরই প্রত্যেকের উপর আরও ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখা উচিত।
"আসলে আমি একাকী, উদাসীন" - ছেলেটার এ উক্তিটা পড়ে মনে হলো, কিছু কিছু মানুষ থাকে, যারা আশৈশব একাকীত্ব বোধ করে।
একজন সফল মানুষ হতাশায় আচ্ছন্ন হবার হয়তো কারন খুঁজে পায়না । তার জীবন হয়ে উঠে অর্থ হীন । কিছু পাওয়ার ইচ্ছে না থাকলে বাঁচা অনেক কষ্টের - ১২ নং মন্তব্যে নূর-ই-হাফসা এর এ কথাগুলো খুব ভাল লাগলো।
পোস্টে ভাল লাগা + +
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
করুণাধারা বলেছেন: সত্যিই খায়রুল আহসান, এই ঘটনাটা খুব কষ্টকর। লিখতে গিয়ে আগের অসংখ্যবারের মত আরেকবার মনে হয়েছিল এমন ঘটনা কি এড়ানো যেত না! ও SOS পাঠিয়েছিল বারবার, কিন্তু ওর কাছের মানুষদের কারো অনুভূতিতে সেই সিগনাল ধরা পড়েনি। খুব দুঃখজনক। আমরা অভাবগ্রস্তকে অর্থ সাহায্য করি, অসুস্থকে সেবা করি কিন্তু মানসিকভাবে পর্যুদস্ত একজন মানুষের দিকে কেন হাত বাড়াতে পারি না জানিনা।
নূর-ই-হাফসার এই কথাগুলো আমারও ভাল লেগেছে।
যেহেতু এই খবর পত্রিকায় ও টিভিতে প্রকাশিত হয়েছে, ওর বন্ধুরা ওকে নিয়ে ইউটিউবে ভিডিও ছেড়েছে তাই আমার মনে হয় ওর নাম প্রকাশ করছি বলে কোন দোষ করছি না। আপনাকেও অনুরোধ করছি Tribute to Sabit Hasan লিখে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে প্রাণবন্ত ছেলেটিকে একবার দেখতে।
মন্তব্য ও প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
১৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব বাজল মনে একাকী ছেলে টার কষ্ট , মায়ের জন্য ও ।
লেখায় ভালোলাগা আপু ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
করুণাধারা বলেছেন:
আমারো কষ্ট হয় ছেলেটার কথা ভাবলে। এমন মৃত্যু মায়ের জীবনে কতটা কষ্ট বয়ে আনতে পারে ছেলেটা মনে হয় একবারও ভাবে নি। এমন যেন আর কারো জীবনে না ঘটে!
অজস্র ধন্যবাদ মনিরা সুলতানা,শুভকামনা।
১৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৮
মলাসইলমুইনা বলেছেন: ঢাকার এ'রকম একটা ঘটনা আমিও শুনে ছিলাম | জানিনা আমাদের নতুন প্রজন্মটা দেশের যেই ঝামেলার মধ্যে বড় হয়ে উঠছে তাতে এই সমস্যাটা যে মহামারীর মতো হয়ে উঠছে না তার জন্য আমি শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহর সবসময় | প্রত্যেকটা পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস, ইউনিভার্সিটি -গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস, বিসিএসের প্রশ্ন ফাঁস ! চাকুরী পেতে অর্জাতিকতা !স্বাভাবিক ভাবে মেধা দিয়ে কিছু করার সুযোগ এতো কমে আসছে যে এই বয়সী ছেলে মেয়েরা যদি জীবন সম্পর্কে হতাশ এই আত্মহননের দিকে আরো ঝুকে পরে তাতে কোনো আশ্চর্যের কিছু থাকবে না বলেই আমার মনে হয় | গত কয়েকদিনের ব্যস্ততায় কমেন্ট করা হয় নি | আপনার লেখা পড়েছি কিন্তু পোস্ট করার দিনই | ভালো থাকবেন |
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০০
করুণাধারা বলেছেন: আপনি যে এত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে সুন্দর মন্তব্য করেছেন এজন্য অনেক ধন্যবাদ মলাসইলমুইনা।
জানি না কেন এখন তরুনদের মধ্যে রাগ, ধৈর্যহীনতা যেন বেড়েই চলেছে। প্রায়ই শুনি হাইওয়েতে চলন্ত বাসে পাথর ছুঁড়ে মারে, তাতে কাঁচ ভেংগে পাথরের আঘাতে অনেকেই মারাত্মক আহত হন। ব্যাগ ছিনতাই করতে গিয়ে মানুষ মারছে- নির্বিকারভাবে। খুব হতাশাজনক পরিস্থিতি।
আরেকবার ধন্যবাদ মলাসইলমুইনা, ভাল থাকুন।
১৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:১৯
নূর-ই-হাফসা বলেছেন: আপু এখনকার ছেলে মেয়েরা সুন্দর শৈশব পাচ্ছে না । চার বছর হলেই তাকে পড়াশোনার প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে । কাধে ঝুলছে মস্ত বড় ব্যাগ । অবসর মেলে না । অবসর মানে গেমস না হয় কার্টুন । ছেলে সন্তান বাহিরে খেলার একটু সুযোগ পেলেও মেয়ে সন্তান চার দেয়ালে বন্ধী । বাবা মা ব্যস্ত কর্মজীবনে , সময় কম দিচ্ছে । একক পরিবার , একা একা বেড়ে উঠছে । এখন কিছু বাচ্চাদের দেখেছি ভাই বোন আর না থাকাতে একা একা কথা বলে নিজে নিজে খেলছে । এই বাচ্চারা বড় হয় পড়াশোনা যুদ্ধ করতে করতে আর শৈশব হত্যা করে, অনেকটা একাকীই ।
ওরা কেন বাঁচতে চাইবে ? বেঁচে থাকা মানেই তো কেবল যুদ্ধ । অতীত হাতড়ে সুখের অস্তিত্ব তারা খুঁজে পায় না ।
এখন উচিত জীবন কে আনন্দ পূর্ণ করার উপায় জানা , বাস্তবতা র মাঝেও প্রিয়জনের জন্য সময় রাখা । আর শিশু দের জীবনের অর্থ বুঝানো ।
ভিডিও টা শীঘ্রই দেখবো
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪০
করুণাধারা বলেছেন: আবার ফিরে এসে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ নূর-ই-হাফসা। আমার সত্যি দুঃখ হয় এখনকার বাচ্চাদের জন্য। এরা এত চাপের মধ্য দিয়ে বড় হচ্ছে যে নিজের পছন্দ, প্যাশন, লক্ষ্য কিছুই জানতে পারছে না। ফলে জন্ম নিচ্ছে ক্ষোভ, আর হতাশা-
এরা সহজেই অন্যকে আঘাত করতে পারে, নাহলে নিজেকে আঘাত করে।
আপনার মন্তব্য পড়ে আমি একটা লেখার বিষয় পেয়ে গেলাম, তাই আবারো ধন্যবাদ।
শুভকামনা।
১৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা ,
খুব করূন একটি লেখা । পড়ছি যখন তখনই কষ্ট লাগছিলো , পরে মন্তব্যে এসে দেখলুম সত্য একটা কাহিনী ; তখন বুকটা শূন্য হয়ে গেলো।
প্রায় সবারই মন্তব্যে একাকীত্বের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে ।
কিন্তু বাস্তবে আমরা কি তেমন পারি !!!!!!!!!!!! কে জানে ....................
এমন ধরনের মানসিক অবস্থা যা আত্মহননের পথে নিয়ে যায় তা নিয়ে আরও আলোচনা হওয়া উচিৎ ।
০১ লা মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:১৮
করুণাধারা বলেছেন: আমরা শারীরিকভাবে দুর্বল মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াই, কিন্তু মানসিকভাবে দুর্বল মানুষকে উপহাস করে থাকি যা তাদের আরো দুর্বল করে তোলে। আমাদের সচেতন হওয়া খুব দরকার।
এই গল্পটা সত্যিই করুন, অন্য সব আত্মহত্যার গল্পের মত। এমন যেন আর কারো জীবনে না ঘটে এটাই কাম্য।
আপনার মন্তব্যটি ভাল লাগল আহমেদ জী এস, শুভকামনা।
১৭| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০০
খায়রুল আহসান বলেছেন: আমরা শারীরিকভাবে দুর্বল মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াই, কিন্তু মানসিকভাবে দুর্বল মানুষকে উপহাস করে থাকি যা তাদের আরো দুর্বল করে তোলে। আমাদের সচেতন হওয়া খুব দরকার - হৃদয়মথিত আপনার এ আত্মোপলব্ধি আমাকে স্পর্শ করে গেল! খুবই সত্য কথা বলেছেন। মানসিক ভারাক্রান্তদের বা বিষাদগ্রস্তদের প্রতি আমরা খুবই উদাসীন থাকি, কখনো কখনো জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে নির্দয় আচরণ করে থাকি। এর অবসান হওয়া দরকার।
সমাজ থেকে মায়া ভালবাসা, স্নেহমমতা যত নির্বাসিত হতে থাকবে, এরকম দুর্ঘটনা ততই বাড়তে থাকবে।
০৭ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:১৩
করুণাধারা বলেছেন: আবারো ফিরে এসে মন্তব্য করে আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, অজস্র ধন্যবাদ।
জীবনের জটিলতা, সম্পর্কের জটিলতা, কিংবা শারীরবৃত্তীয় জটিলতার কারণে অনেকেরই মানসিক অক্ষমতা জন্মায়। এটা কোন দোষ বা অপরাধ নয়, এটা কেবলই এক ধরনের দুর্বলতা যা কাটিয়ে ওঠার জন্য অন্যদের সহায়তা প্রয়োজন হয়। আমাদের আশেপাশে, এমন কি এই ব্লগে এমন অনেকেই আছেন যাদের এই সহায়তা প্রয়োজন। আমরা যেন তাদের চিনতে পারি এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারি।
আপনার সুন্দর মন্তব্য আমার জন্য অনুপ্রেরণা। আবারো ধন্যবাদ।
১৮| ০৭ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অত্যন্ত মাকে বলতে পারত সমস্যার কথা। তা হলে হয়তো বেঁচে যেত।
হায়রে মৃত্যু..........................
০৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮
করুণাধারা বলেছেন: মনে হচ্ছে ছেলেটা একটা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গিয়েছিল সে সময়, তাই হয়তো মাকে একথা বলতে পারেনি। এমন মেধাবী ছেলে এমন কাজ করে কি করে! ঘটনাটা আমাকে খুবই দুঃখ দিয়েছিল, তাই সবার সাথে শেয়ার করার জন্যই এই লেখা।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকুন সবসময়।
১৯| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মায়ের প্রতি যার এত ভালবাসা যার সে আত্মহত্যা করলো? চমৎকার ছিল আপনার লেখনি।
০৯ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৮
করুণাধারা বলেছেন: আমি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি। হয়ত সে এমন কোন শূন্যতা বোধে আক্রান্ত হয়েছিল, যে জাগতিক সমস্ত কিছুই তার কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছিল।
আপনার প্রশংসায় আপ্লুত হলাম, ভাল থাকুন।
২০| ০৯ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩
প্রামানিক বলেছেন: মায়ের প্রতি ছেলের ভালোবাসা মন্দ নয়। ধন্যবাদ
১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৩৫
করুণাধারা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ, এমন মন্তব্য করার জন্য।
ভালো থাকুন
২১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮
ওমেরা বলেছেন: অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না ----------- বাবা, মায়ের সচেতনতার অভাবে আমাদের ইয়ং জেনারশন বিপথে যাচ্ছে।
১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯
করুণাধারা বলেছেন: "বাবা-মায়ের সচেতনাতার অভাবে আমাদের ইয়ং জেনারেশন বিপথে যাচ্ছে- সহমত ওমেরা।
ভালো থাকুন সর্বদা।
২২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর গল্প,পড়ে মন্তব্য করলাম এবং লাইক দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে দিলাম ।
১৮ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪২
করুণাধারা বলেছেন: হায়! হায়! এই পোস্টে মন্তব্য করে ঋণ পরিশোধ করে দিলেন! আমিতো ভাবছিলাম আমার সাম্প্রতিক পোস্টে মন্তব্য করে ঋণ পরিশোধ করবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: অতি মনোরম।