নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীটা আদতে এখনো চলছে সেই পাওয়ার গেম নিয়েই, যা বরাবরই রাজত্ব করেছে মানবসভ্যতার ইতিহাসে। এখানে কেউই সাধু নয়, সবারই যার যার অবস্থান থেকে নিজেদের কাজ চালিয়ে যাবার কোনও না কোনও এজেণ্ডা আছে, লক্ষ্য ও উপলক্ষ আছে। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী চলতে গিয়ে বাঁধে কনফ্লিকট অব ইন্টারেস্ট। সংঘর্ষের সূচনা এখান থেকেই হয়। যুদ্ধ, ধংসযজ্ঞ এবং ব্যাপক মানুষের জানমালহানি যেখানে অবশ্যম্ভাবী পরিণতি। এমনটা মানবসভ্যতার ইতিহাসে হয়েছে বার বার। আমাদের একুশ শতকের পৃথিবীটা এখনো এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসেনি। আসবেও না।
রাশিয়া ইউরোপিয়ান পাওয়ার গেমের পুরনো খেলোয়াড়। সেই সোভিয়েত আমলের উত্তেজনা এখনো চলমান। বলা বাহুল্য এই উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে রাশিয়া। নতুন যুগের রাশিয়া আবারো সেই সোভিয়েত আমলের মতো প্রতাপশালী হতে চায়। সেই শৌর্য-বীর্য এখনো রাশিয়ার নতুন প্রজন্মকে করে উদ্বেলিত। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর চরম বিশৃঙ্খল, হতশ্রী এবং অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত রাশিয়াকে নতুনভাবে পুনর্গঠন করার সবচেয়ে বড় কাজটা সম্পাদন করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, সাবেক কেজিবির সেই দুর্ধর্ষ স্পাই। রাশিয়াকে সাম্রাজ্যবাদী খেলায় তিনিই ফিরিয়ে এনেছেন। নতুন করে। নতুন আঙ্গিকে। সিরিয়া যুদ্ধে রুশ ইনভল্ভমেন্ট ছিল তার সূচনা মাত্র। রাশিয়াকে ঘিরে ফেলার জন্য পশ্চিমা শক্তিগুলো যে খেলা খেলছিল ইউক্রেনকে নিয়ে এবং ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার যে স্বার্থ রয়ে গেছে তাতে করে রাশিয়া যে ইউক্রেনকে আক্রমণ করবে যখনই হোক, যেভাবেই হোক এটা এক প্রকার অনুমিতই ছিল। ইউক্রেন এমন এক প্রাকৃতিক সম্পদে ভীষণভাবে সমৃদ্ধ দেশ যাকে তুলনা করা যায় একত্রে বাংলা ও বিহারের মতো। যার প্রতি প্রলুব্ধ হয়ে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করতে উৎসাহী হয়েছিলো খোদ নাৎসি মহানায়ক এডলফ হিটলার। অধুনা পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো যে তাকে ন্যাটো জোটে ঢুকাতে চেয়েছে সেটারও বিশাল এক কারণ ইউক্রেনের শক্তিসম্পদ। আর সেই সাথে তাদের পুরনো শত্রু রাশিয়াকে বেকায়দায় ফেলাটাও আরেক কারণ। ইউক্রেনকে ঘিরে রাশিয়া আর পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সমস্ত খেলার কারণ এই দুটো। এমনিতেই ইউরোপে যে তেল ও গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া তার বড় এক অংশ গেছে ইউক্রেন হয়েই। এজন্য রাশিয়া সবসময় চেয়েছে ইউক্রেনের ওপর তার কর্তৃত্ব। ইউক্রেনের শাসকগোষ্ঠী চায় পশ্চিমাদের সাথে হাত মিলিয়ে চলতে। ইউক্রেনকে ন্যাটো জোটে ঢুকানো, পর্যায়ক্রমে তাকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য বানানো এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে খেলিয়ে রাশিয়াকে বেকায়দায় ফেলার সমস্ত আয়োজন রাশিয়া আজ বন্ধই করে দিল বলা যায়।
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই আক্রমণ সেই সোভিয়েত আমলের পর চেপে বসা এককেন্দ্রিক বিশ্ব-ব্যবস্থার অবসানকে পরিস্কার করে দিলো। পৃথিবী এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ড বাঁ বহু কেন্দ্রিক বিশ্বের দিকে। এই খেলায় একদিকে থাকবে যুক্তরাস্ত্র ও মিত্ররা, আরেকদিকে থাকবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলো আর অন্যদিকে থাকবে রাশিয়া ও চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা তাদের প্রতি অনুগত দেশগুলো। এই খেলা নতুন নতুন যুদ্ধ , নতুন নতুন প্রতিযোগিতা ও উত্তেজনা তৈরি করবে। এই ব্যবস্থা দ্বন্দ সংঘাতের ক্ষেত্র ক্রমাগতভাবে তৈরি করতেই থাকবে। হয়তো মানবসভ্যতা শেষ না হওয়া অবধি যার হাত থেকে মুক্তি নেই।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: পুতিন চান ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে না। তিনি পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এ নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন যে ন্যাটো আর এ অঞ্চল থেকে নতুন করে কোনো দেশকে সদস্য করবে না। কিন্তু পশ্চিমারা তাতে রাজি হয়নি। পুতিন মনে করছেন, পশ্চিমারা ন্যাটোর বাহিনী দিয়ে চারদিক থেকে রাশিয়াকে ঘিরে ফেলে ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২২
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: এসব যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা বন্ধ হোক। দ্রব্য মূল্যের চাপে এমনিতেই চ্যাপটা হয়ে আছি। দ্রব্য মূল্য আরো বাড়লে যুদ্ধ ছাড়াই আমাদের মরার উপক্রম হবে।