নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বাজার গুলোতে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি হয়েছে। ১,২,৩ ও ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল বাজার থেকে উধাও হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের ক্ষমতায় আসেন ড. ইউনূসের সরকার। এই সরকারে বাণিজ্য উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আকিজ-বছির গ্রুপের মালিক শেখ বছির উদ্দিন কে। দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেন ১০ লাখ পোশাক শ্রমিককে টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহ করার। সে লক্ষ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা করে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করা হয়। এতে সর্বমোট খরচ হয় ৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বসুন্ধরা গ্রুপ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে একটি অলিগার্ক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত ছিলো। বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক শেখ হাসিনার পতনের পূর্ব মুহুর্তেও সরকারের পাশা থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল। শেখ হাসিনার সময়ে দেশের ছোট বড়ো অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের বিরোধ চলছিল। রঙধনু ও গাজী গ্রুপের সাথে তিক্ততা ছিলো চরম পর্যায়ের। এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক দেশের একজন চিহ্নিত ভূমিদস্যু হিসাবে পরিচিত। শেখ হাসিনার পতনের পর গিরগিটির মতো রঙ বদলিয়ে নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য ড. ইউনূসের সরকারের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু তবুও বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করেন অনেক ভুক্তভোগীরা। বসুন্ধরা গ্রপের মালিকের পরিবারের সদস্যদের দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। অন্যদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজেও ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তারই প্রেক্ষিতে ধারণা করা যাচ্ছে গত ২৭ নভেম্বর সরকার সয়াবিন তেল কিনে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে। এরপর বসুন্ধ্ররা গ্রুপ সহ অন্যান্য গ্রুপ তেলের সংকটের অজুহাত দেখিয়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। এই বিষয়ে নিজে দোকানে গিয়ে সয়াবিন তেল কেনার ছোট্ট একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। গত দুই অথবা তিন ডিসেম্বর বাজার থেকে ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল কিনে আনি। প্রতি লিটার তেলের দাম পড়েছে ১৬৫ টাকা করে। তাহলে ৫ লিটার তেলের দাম দাঁড়ায় ৮২৫ টাকা। অদ্ভুত ব্যাপার হলো সরকার ২৭ নভেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বসুন্ধরা থেকে কিনেছে ১৬৬ করে কিন্তু তারও প্রায় ৩/৪ দিন পর আমি বাজার থেকে সয়াবিন তেল কিনি ১৬৫ করে। সরকার কিভাবে আমার চেয়ে ১ টাকা বেশি মূল্যে পাইকারিতে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনে? ইহার হিসাব আমি মেলাতে পারি না।
বাংলাদেশের বাজারে সাতটির মতো কোম্পানি রয়েছে যারা পুরো সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা, মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ, টি কে গ্রুপের পুষ্টি, সিটি গ্রুপের তীর, স্কয়ার গ্রুপের রাঁধুনি, বসুন্ধরা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপের সয়াবিন তেল। এই তালিকায় অবশ্য আরো কিছু ছোট কোম্পানির নাম রয়েছে, যারা বড় কোম্পানির ডিলারের মাধ্যমে সয়াবিন তেল বাজারজাত করে। সরকার যখন টিসিবির জন্য সয়াবিন তেল বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে ক্রয় করলো তখন বসুন্ধরা সহ বাকি ৬টি কোম্পানি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে অধিক মুনাফার আশায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই দফা তেলের উপর শুল্ক কমিয়েছে। তারপরও পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে শুধুমাত্র সিন্ডিকেট ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে।
সরকার ধীরে ধীরে অসৎ ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে যাচ্ছে। শেখ হাসিনাও নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বসুন্ধরা, এস আলমের মতো বড়ো কোম্পানিগুলোর সকল অনিয়ম দেখেও না দেখার ভান করেছে। তার ফল ভোগ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণ। বর্তমান সরকার যদি একই পথ অনুসরণ করে তবে নিশ্চিত বিপদ আসন্ন ! এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে সরকার ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা গড়ে না তুললে কিভাবে দেশ পরিচালনা করবে? এসব দূর্নীতি গ্রস্থ প্রতিষ্ঠান বাদে সরকারের সামনে অন্য তেমন বিকল্প নেই। সেটা ঠিক আছে কিন্তু টিসিবির পণ্য কেনার সময় সরকারের সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের আগের কোনো চুক্তি আছে কিনা অথবা চুক্তি পর্যালোচনা করতে পারে। খুচরা তেল লিটার প্রতি কত টাকায় পাওয়া যাচ্ছে তা বাজারে গিয়ে যাচাই করতে পারে। একই কোম্পানি থেকে চাহিদা মোতাবেক তেল না ক্রয় করে কয়েকটি কোম্পানি থেকে ক্রয় করতে পারে। সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে টিসিবির পণ্য কেনার সময় সর্বোচ্চ পরিমাণ সাশ্রয়ী হওয়া এবং তার সুযোগ নিয়ে কেউ যাতে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করতে পারে তা নজরদারিতে রাখা।
আজ বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর সয়াবিন তেল সরবরাহ কোম্পানিগুলো সিন্ধান্ত নিয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ করে বিক্রি করা হবে লিটার প্রতি। অর্থাৎ পূর্বের তুলনায় প্রায় ৮/১০ টাকা বেশি লিটার প্রতি দাম বাড়ানো হয়েছে। এসব অলিগার্কদের হাত থেকে মুক্ত হওয়া সময়ের দাবী।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ব্যবসায়ীদের নিয়ে কি করা যায়? রক্ত চুষে খাচ্ছে তারা। বসুন্ধরা গ্রুপ গাজী ফ্যাক্টরি তে আগুন লাগিয়ে ২০০০ লোক কে বেকার করেছে। টায়ার ও ট্যাংকির দাম বেড়েছে। টিস্যু তৈরি করে এমন এক কোম্পানির কারখানায় আগুন লাগার পর বাজারে টয়লেট টিস্যুর দাম বাড়াইছে। আপনি মুরুব্বি মানুষ তাও বলি, জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়েছে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে। আমার বন্ধুর মেডিসিনের ব্যবসা করে তার দোকানে বসেছিলাম। যে আসে বলে দাম বেশি!
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:০৩
জেনারেশন৭১ বলেছেন:
কোন রাজনীতিবিদকে দেশের মানুষ সন্মান করে না; এর অর্থ হলো, দেশে জ্ঞানী ও সৎ মানুষ নেই; মানুষ কারো কথা শুনতে চাচ্ছে না।
ড: ইউনুস ব্যবসায়ী মানুষ, দরিদ্র মানুষের কথা বলে কোটী কোটী ডলার সংগ্রহ করে, উহাকে ক্যাপিটেল হিসেবে ব্যবহার করে নিজে বিলিওনিয়ার হয়েছে; নিজের জন্য আয় করতে জানে, মানুষের জন্য আয় করতে জানে না।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:১২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইহা তো আরো বড়ো সমস্যা ! রাজনীতিবিদ দের প্রতি সম্মান কিভাবে থাকবে? মুক্তিযুদ্ধ করেছেন আবার দেশের টাকা পাচার করেছেন এমন লোক বাংলাদেশে রাজনীতি করেছেন। গায়ক, নায়ক সবাই এমপি হয়েছেন। সরকারের জন্য কাজ করে আমলারা এমপি হয়েছেন। আমলারা চাকুরির করার সময় সাধারণ মানুষকে দুই পয়সার মূল্য দেয় নি। এরা সংসদে গিয়ে মানুষের জন্য কথা বলবে? ব্যবসায়ীদের খালেদা ৯১ সালে নোমিনেশন দিয়ে রাজনীতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আছেন সেনাবাহিনীর এক্স সদস্য রা। তারা কেন জনগণের কথা ভাববেন? কি ঠেকা তাদের?
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:১৪
জেনারেশন৭১ বলেছেন:
কোন মুক্তিযোদ্ধা "টাকা পাচার করার মতো ধনী হননি"; ১০/১৫ জন মুক্তিযুদ্ধের "সংগঠক" টাকা পয়সার মালিক হয়েছিলো; ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে ১০০০ খানেক অনেক টাকার মালিক হয়েছিলো।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বীর বিক্রম গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে হত্যা, হিন্দুদের জমি দখল সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। নারায়নগঞ্জ ১ আসনের এমপি ছিলেন। গাজী গ্রুপ আর কি! এরপর ইনু, মেনন, শাহাজাহান খান এদের আচরণ দেখে মানুষ হতাশ। আমি নিজেও একটি ব্লগ লিখেছি। আমার কাছেও হতাশা লাগছে। এরপর আসেন কর্ণেল অলির কথা! তিনি এখন জামাতের পক্ষে কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা এমন ভূমিকায় দেখতে চাই না।
৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: আমার ঘরে আগামী একমাসের তেল মজুদ আছে।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:২৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত মাইন্ড!
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৯
জেনারেশন৭১ বলেছেন:
আমাদের জাতি কিছু করতে পারছে না ভারতের কারণে; পাশে ভারত না'থাকলে আমরা জাপানীদের মতো হয়ে যেতাম।