নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
আজ বাংলাদেশে বিজয় দিবস পালিত হবে। ১৯৭১ সালের এইদিনে পাক হানাদার বাহিনী পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে আত্নসমর্পণ করে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে আত্নপ্রকাশ করে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষের শোষণ, বঞ্চনা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে এক বিশাল সংখ্যক বাঙালি পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলন যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তান সামরিক জান্তা নিরীহ মানুষের উপর গণহত্যা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো পূর্ব পাকিস্তানের মুখ চিরতরে বন্ধ করে দেয়া। তাছাড়া পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে গেলে পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশও স্বাধীন হওয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করতে পারে। পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামী নেতারা পশ্চিম পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র টের পেয়ে বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে বলেন। তন্মোধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের কথা না বললেই নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামে যার এক ডাকে বাংলাদেশ অংশের বিরাট সংখ্যক মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু হয় যুদ্ধ এবং নয় মাস যুদ্ধের পর অসংখ্য মানুষের আত্নত্যাগের বিনিময়ে আমরা পাই একটি নতুন পতাকা, নতুন দেশ যার নাম রাখা হয় বাংলাদেশ।
রাজনৈতিক অদক্ষতা ও ক্ষমতা দখলের নোংরা প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মানুষের যে আশা আকাঙ্খা ছিলো তা ক্রমেই মলিন হয়ে যায়। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী শক্তিগুলো ১৯৭১ সাল পরবর্তী সঠিক ভাবে বিচার না হওয়ায় এবং আত্নগোপনে চলে যাওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ১৯৭২ সাল থেকেই এই স্বাধীনতা বিরোধিরা শেখ মুজিবের শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করে। তারা বলতে থাকে স্বাধীন হয়ে কি লাভ হইলো, আগেই ভালো ছিলাম, ভারত আমাদের শোষণ করছে, পাকিস্তান আমাদের ধর্মের ভাই ইত্যাদি। রাজনৈতিক অদক্ষতার কারণে সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ না হওয়াতে তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। স্বাধীনতা বিরোধীদের বাংলাদেশ আলাদা হওয়া ভুল ছিলো এই প্রচার স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও চালু রয়েছে। পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে কি বাংলাদেশের কোন লাভ হয় নি?
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। পাকিস্তানের ভাগ্যে বারবার সামরিক শাসন জুটেছে। সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ পাকিস্তানকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছে। পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সব সময় চেয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কথায় চলুক, দেশের de-facto ক্ষমতায় তারা থাকবেন। তাছাড়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষ যাতে ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে সে জন্য জাতিগত বিভেদ বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এসব সহিংসতায় মানুষ মরছে প্রতিদিন। সেনাবাহিনী ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকে তাদের নিজেদের আখের গোছাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দক্ষ নেতৃত্ব না থাকায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে তারা ব্যর্থ হচ্ছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন চরমপন্থী গ্রুপ সৃষ্টি করে বিভিন্ন মতের নিরীহ মানুষকে মারছে, মসজিদে হামলা করে মারছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করে শিশুদের হত্যা করছে। এসব কিছুর মূলেই রয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ সঠিক ভাবে চিন্তা না করতে পারে, শিক্ষা না পায়। এসব রাজনৈতিক অস্থিরতায় পাকিস্তানে অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ যদি স্বাধীন না হইতো এসব কারসাজি পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বাংলাদেশের সাথেও ঘটাতো।
পাকিস্তান বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ৭-৯ বিলিয়ন ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২.৩৭% অন্যদিকে বাংলাদেশের ৩.৯২%। বাংলাদেশের এক টাকায় পাকিস্তান প্রায় আড়াই টাকার সমান। পাকিস্তানের বৈদিশিক ঋণের পরিমাণ ১৫০ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের প্রায় ৯৯ বিলিয়ন ডলার! অবস্থা কারোই সুবিধাজনক নয় কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি পাকিস্তানের তুলনায় সচল ও বৈদিশিক ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধ করার সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের তুলনায় বেশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পাচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশেও আছে তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কিছু সময় চলমান থাকায় অর্থনীতি পাকিস্তানের তুলনায় অবস্থা ভালো। বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের মানুষের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কম দামে কিনে খেতে পারছে। পাকিস্তানে আটার কেজি ৮০০ রুপি, সিলিন্ডার গ্যাস ৩৩০০ টাকা এবং মূল্যস্ফীতি গড়ে ১৫-২০ শতাংশ! অন্যদিকে বাংলাদেশের আটার কেজি ৪৫ টাকা, গ্যাস সিলিন্ডার ১৫০০ টাকা এবং গড়ে মূল্যস্ফীতি ৮-১০ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় পাকিস্তান থেকে উন্নত।
পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ এসব কারণে পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চায়। বিশেষত বেলুচিস্তানের কথা না বললেই নয়। বেলুচি দের অভিযোগ পাকিস্তান তাদের প্রদেশের সব আয় পাকিস্তান সরকার নিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রদেশের কোন উন্নয়ন করা হচ্ছে না। ঠিক যেন বাংলাদেশের মতো অবস্থা। পাকিস্তান সামরিক জান্তা বেলুচি দমনের জন্য প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। আবার খাইবার-পখতুন ও কাশ্মীর নিয়েও সমস্যা রয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য যে তারা পাকিস্তানের মতো একটি ব্যর্থরাষ্ট্রের অংশ হিসাবে থাকতে হয় নি। আর তার পিছনে সবচাইতে যাদের অবদান বেশি তারা হইলেন বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক এবং ছাত্রদের সম্মিলিত জোটের সমর যুদ্ধে অংশ নেয়া। তারা আমাদের জাতির সূর্য সন্তান। তাদের কারণেই আমরা পেলাম একটি নতুন পতাকা, নতুন দেশ বাংলাদেশ! ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সে সব মহান বিপ্লবীদের জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করি যাতে তাদের কাজের উত্তম প্রতিদান তারা পান।
জয় বাংলা, জয় ছাত্রজনতা !
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা থাকল ।
........................................................
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: তোমার আমার ঠিকানা : পদ্মা-মেঘনা-যমুনা
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪০
কামাল১৮ বলেছেন: বর্তমান রিজার্ভ ২়৯
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এই টাকা তো আওয়ামী লীগের এমপি দের কাছে থাকার কথা!
৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:০০
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক লাভ হয়েছে। অনেক।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ভোর ৬:৪০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: হ্যা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আমরা ন্যায্যতা, ন্যায়পরণতা আশা করেছিলাম
স্বাধীনতার কাছে ।
...................................................................
সেই আশা আকাঙ্খা যার বাস্তবায়ন কবরে , তাদের
না ছিল অভিজ্ঞতা না ছিল সততা ।
সে কারনে আজ ৫৩ বৎসর পরও
নিজেকে হারায়ে খুঁজি ... ... ...