![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
জুলাই অভ্যুত্থানের পর ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে দাবী উঠেছিল পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগকে কোনো ভাবেই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনা সহ সকল আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্নসমর্পণ ব্যতীত দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুযোগ নেই। কিন্তু সময় যত গিয়েছে আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে যে ক্রেজ ছিলো তা কমে গিয়েছে। সময়ের সাথে মানুষ আস্তে আস্তে সকল দুঃখ ভরা স্মৃতি ভুলে যেতে থাকে। এভাবে ২০২৪ সালের সমাপ্তি ঘটে।
নতুন বছরে আওয়ামী লীগ কিছু তৎপরতা দেখাতে সিদ্ধান্ত নেয়। শেখ হাসিনা ভারচুয়ালি নেতা কর্মীদের সাথে আলাপ করবেন এমন বার্তা যখন দেশে ছড়িয়ে পড়ে তার রিয়াকশন স্বরূপ ধানমন্ডি ৩২ সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা কর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ফেব্রুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ হরতাল কর্মসূচি ডেকে কর্মীদের চাঙা করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ঘন ঘন কর্মসূচি দেওয়ায় সমাজের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রব উঠে। সরকারের মধ্যে এমন কর্মসূচির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো। প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু সব হিসাব নিকেশ উল্টে যায় যখন সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে সরকার কে পরামর্শ দেন। সেনাপ্রধানের এমন বক্তব্যের পর যারা আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ করা এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিরোধিতা করেছিলো তারা সবাই চুপ মেরে গিয়েছেন। সবাই এখন শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার দাবী করছেন। জাতিসংঘের তদন্ত রিপোর্টে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করতে বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদনও বিরোধী পক্ষের চুপ মেরে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছিলো আওয়ামী লীগ কে তারা নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয়। জনগণের উপর তারা আওয়ামী লীগের ভাগ্য ছেড়ে দিতে চেয়েছে। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পর প্রধান উপদেষ্টার বিবিসিতে দেয়া সাক্ষাৎকারে যেন বিএনপির কথার প্রতিফলন ঘটলো। পূর্বে আওয়ামী লীগের ভাগ্য জনগণ নির্ধারণ করবে এমন আলাপ শুনলে লম্ফ-জম্প করে ফ্যাসিবাদের দোসর তকমা দিতো তাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা অন্য একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সেটা তাদের কেই ভেবে দেখতে হবে। এমন বক্তব্য শুনে বিপ্লবীদের মাথায় রক্ত উঠে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান আওয়ামী লীগের দেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার বিষয়ে কিছু শর্ত জুড়ে দেয়ার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে এসব উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের দল গোছাতে ব্যস্ত। সরকার ব্যস্ত মব সামলানো নিয়ে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করার মতো ম্যোরাল গ্রাউন্ড নেই। তাদের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে যে পাহাড়সম অপরাধের অভিযোগ তার বিচার শেষ হতে এক যুগ পার হয়ে যাবে। শীর্ষস্থানীয় বেশিরভাগ নেতা সীমাহীন অপরাধ করে এখন বিদেশে পলাতক। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার কোন পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের সম্ভাবনা নেই। ভুল রাজনীতি করে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছেন তিনি। কিন্তু আম্লিকের সাপোর্টার রা এখনও স্বপ্ন দেখছে ১৯৮১ সালের মতো শেখ হাসিনা আবার প্রত্যাবর্তন করবে। তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। ২০১৪-২০২৪ সাল পর্যন্ত ছলচাতুরি করে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার পরও মনের আশা পূর্ণ হয় নাই। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে এমন বয়ান দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্তি করে রেখেছিলো তারা। জুলাই অভ্যুত্থানে পতনের পরও তাদের এসব প্রচারণা বন্ধ হয় নি। দেশ জঙ্গীবাদের দখলে এমন ন্যারেটিভ বিশ্বে তারা প্রচার করছে। শেখ হাসিনার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য ছিলো এসব জঙ্গীবাদ দমন করা। কিন্তু তিনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে সিরিয়া-আফগানিস্তান বানানোর ক্ষেত্র তৈরি করে গেছেন। এরকম দল আবার দেশে ফিরে কি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করবে ? শেখ হাসিনা উনার বাবার অবদান কে বাংলাদেশে এত বেশি এসটাবলিশ করতে চেয়েছিলেন যে তা সাধারণ মানুষের বদহজমের কারণে হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অনেক সাপোর্টার এখন বিরোধী পক্ষের উপর নাখোশ কারণ তারা কথিত বিদেশি শক্তির সাহায্যে পতন ঘটায়েছে। কিন্তু একই কাজ তো আওয়ামী লীগ ২০১৪ সাল থেকে করে আসছে। ভারত-চীন-রাশিয়া সবাইকে ম্যানেজ করে এবং বিরোধী শক্তিকে দমন নিপীড়ন করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলো। এত এত উন্নয়ন করেছে তাহলে নির্বাচনে এত কারচুপির কারণ কি ? আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো স্বাধীনতা কামীদের সংগঠন নেই তাই নিজের ক্ষতি করে আওয়ামী লীগ কে সাপোর্ট দিতে হবে। দেশের মানুষজন রাজনীতি বুঝে না, আওয়ামী লীগ বাদে অন্য দলে রাজনীতিবিদ নেই এবং আওয়ামী লীগের পতন হলে স্বাধীনতাবিরোধীরা কালো থাবা বসাবে তাই যে কোন মূল্যে তাদের ক্ষমতায় থাকা জরুরি। দেশের মানুষকে সুশিক্ষিত করার বিপরীতে আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত করার চেষ্টা করেছিলো আওয়ামী লীগ।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের বিগত পনেরো বছরের স্বভাব পরিবর্তন হয় নি। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা শাহাজাহান খান আশা করেন আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন। দেশ পরিচালনার ব্যর্থতা উনাকে অনুতপ্ত করেনি। এরকম ক্রিমিনাল মাইন্ডের একটি দলের কোনো নেতার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকার পরও আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করে যদি নির্বাচনে প্রার্থী হয় তাহলে ভবিষ্যতে ইন্টেরিম সরকার কে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় হতে হবে।
০৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কিন্তু শেখ হাসিনা আমাদের শিখিয়েন উনার বাবাই হর্তাকর্তা।
২| ০৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪৮
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: ইন্টেরিম সরকার অবস্থা বুঝে পালিয়ে গেলেই হবে।
০৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৫১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সাত মাস ধরে নাকি সংস্কার শুরুই করতে পারেনি। আরো সাত বছর লাগবে।
৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ২:৫৬
কামাল১৮ বলেছেন: এই সরকারের নির্বাচন দেখে যাবার ভাগ্য হবে না।
০৭ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: হয়তো!
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৪৫
ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:
আওয়ামী লিগের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে মওলানা; বাকীগুলোর প্রতিষ্টাতারা হচ্ছে মিলিটারী ও জামাতের ক্রিমিনালরা।