নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দরিদ্র দেশের জনসংখ্যা কে জনশক্তি তে পরিণত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।

সৈয়দ কুতুব

নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!

সৈয়দ কুতুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতীয় নাগরিক পার্টির জন্য সদ্য অনুষ্ঠিত জরিপের ফলাফল হতে পারে একটি সতর্কবার্তা !

০৮ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৪৮


ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশ ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা গত ঊনিশে ফেব্রুয়ারী থেকে তেসরা মার্চ পর্যন্ত সারাদেশের প্রায় এগারো হাজার মানুষের উপর জরিপ চালিয়েছে। জরিপটি পরিচালনার মূল উদ্দেশ্য ছিলো দেশের মানুষ রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক সংস্কার ও সংবিধান সংস্কার নিয়ে কি ভাবছে তা সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া। জরিপে যে সব প্রশ্ন করা হয়েছিলো তা হচ্ছে:

১- এই মূহুর্তে নির্বাচন হলে কাকে ভোট দিবেন ?
জরিপের ফলাফল : প্রায় ৪১ ভাগ মানুষ বিএনপিকে, ৩১ ভাগ মানুষ জামায়াত কে, ১৪ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ কে এবং ৫ ভাগ মানুষ তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে ভোট দিবে।

২- নির্বাচন কখন হলে ভালো হয় ?
জরিপের ফলাফল : প্রায় ৩০ ভাগ মানুষ এ বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চান। ওভার অল প্রায় ৫৯ শতাংশ মানুষ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চান। বাদবাকিরা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে আশা করছে ।

৩- রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে সাধারণ মানুষ কি ভাবছেন?
জরিপের ফলাফল: মাত্র ১৩ ভাগ মানুষ রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে । বাদবাকিরা মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ।

৪- সংবিধান সংস্কারের ব্যাপারে সাধারণ মানুষ কি ভাবছেন ?
জরিপের ফলাফল: মাত্র ৯ ভাগ মানুষ সংবিধান সংস্কার করা জরুরি বলে মনে করেন। বাদবাকিদের মিশ্রপ্রতিক্রিয়া রয়েছে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে ।

জরিপের প্রতিটি প্রশ্ন ছিলো গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু স্যাম্পলিং এর পরিমাণ খুব কম। মাত্র এগারো হাজারের মতো মানুষের উপর এই জরিপ চালানো হয়েছে। তাই পুরো দেশের মানুষ কি ভাবছেন তা জানা সম্ভব নয়। বিএনপির বিরুদ্ধে শত অভিযোগের পরও জনপ্রিয়তায় তারাই শীর্ষে। বিএনপির যারাই খারাপ কাজে জড়িত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি। বিএনপির যত নেতাকর্মী বহিস্কার হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসা করার মতো। অপর দিকে জামায়াতে ইসলামী ও তরুণদের অরাজনৈতিক সংগঠনের অপকর্ম মিডিয়ায় খুব কমই প্রকাশিত হয়েছে। নাহিদ যতদিন তথ্য উপদেষ্টা ছিলো বৈবিছার বড়ো কোনো অপরাধের খবর প্রকাশিত হয় নি। বৈবিছার সাথে জামায়াতের সুক্ষ সম্পর্ক থাকার কারণে মিডিয়ায় জামায়াতের অপকর্মের নিউজ কম এসেছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিকই অনেক খবর ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাহফুজ আলম তথ্য উপদেষ্টা হওয়ায় পর তরুণদের অরাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় বেশি মিডিয়াতে আসছে ।

জরিপে জামায়াতের জনপ্রিয়তার পারসেন্টেজ নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়েছে । জামায়াত-শিবির বিগত সাতমাসে বেশ কয়েকবার বিতর্কে জড়িয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, অভ্যুত্থানে তাদের ভূমিকা নিয়ে অহংকার করা, ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী বেশে ক্যাম্পাস দখল করা, ধানমন্ডি ৩২ সহ বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর করা সহ অনেক বিষয়ে। বাংলাদেশে কথিত জঙ্গীবাদের উত্থানে পিছনে জামায়াত-শিবিরের হাত থাকতে পারে বলে মানুষ সন্দেহ করছে। মব সৃষ্টি ও তৌহিদি জনতা সংক্রান্ত সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জামায়াতের দিকেই আঙ্গুল উঠছে। নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদ পাওয়া নিয়ে এক্স-শিবির বর্গের তৎপরতা যেমন জামায়াতের ইমেজ নষ্ট করেছে একইভাবে তরুণদের রাজনৈতিক দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জামায়াতে ইসলামীর ভোটের পারসেন্টেজ সত্যিকারের ভোটব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি দেখাচ্ছে। একই কথা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বর্তমানে ৫/৭ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দিতে পারে। খোদ আওয়ামী লীগের ঝানু সাপোর্টাররা তাদের উপর বিরক্ত। খুব সম্ভবত ইন্টেরিম সরকারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়া, কথিত মৌলবাদি রাষ্টের ব্যাপারে প্রচারণায় কিছু মানুষ ইউটার্ন করেছে বিধায় ভোটের পারসেন্টেজ বেশি দেখাচ্ছে।

সদ্য গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের পক্ষে মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়া সত্যিই বিস্ময়কর। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সকল ধরণের মিডিয়ার কমেন্ট বক্সে ছাত্রদের প্রতি জনসমর্থন দেখে মনে হয়েছিলো সবাই বুঝি তাদের পক্ষে আছে। আসল সত্য হচ্ছে বেশিরভাগই বট কমেন্ট ছিলো । যেহেতু বিএনপি সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদের বিপক্ষে কথা বলছে ভেবেছিলাম তাদের প্রতি জনগণের সমর্থন ৫ ভাগের বেশি হবে না। কিন্তু ঘটলো উল্টো ঘটনা। ছাত্রদের দল গঠনের সমসাময়িক সময়ের জরিপে তাদের নিয়ে যত বেশি আলোড়ন দেখা যাচ্ছিলো তার খুব কমই জরিপে প্রতিফলিত হয়েছে। এর পিছনে কারণ হচ্ছে তরুণেরা শুরু থেকেই ইনক্লুসিভ আচরণ করেনি। তাদের মধ্যে ঔদ্ধত্য দেখা গিয়েছে। তারা যে কাজ করছে বা যেই কথা বলছে তাই সঠিক বাকিরা ভুল এমন মনোভাব তাদের প্রতি মানুষের মন বিষিয়ে দেয়ার অন্যতম কারণ। সরকারের পৃ্‌ষ্ঠপোষকতায় দল গঠনের কারণে মানুষ তাদের প্রতি হতাশ এবং সন্দেহ পোষণ করছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো তরুণদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। তারা সংস্কার চায় না কিন্তু দ্রুত নির্বাচন চায়। এই জরিপ দেখার উপর নাহিদ কি ভাবছে তা জানা দরকার। কারণ সে হিসেবে সাধারণ জনগণ ও তরুণদের রক্তের দাম দিচ্ছে না। এনসিপির রাজনীতির দুইটি মূ্ল উদ্দেশ্য সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন ও সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণার প্রতি মানুষের জনসমর্থন নেই। এ থেকে বোঝা যায় তারা যে লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে তার মধ্যে গলদ আছে। জরিপের ফলাফল দেখে তাই নতুন রাজনৈতিক দলটির উচিত হবে দ্রুত তাদের লক্ষ্য সংস্কার করা এবং সাধারণ মানুষ কি চায় তা খুজে বের করা। অন্যথায় সময় যত গড়াবে জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হবে তারা।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:২৩

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আন্দোলনে নাহিদ নেতৃত্ব দিলেও তা বাস্তবায়নে বিএনপি-জামায়াতের বড় ভূমিকা ছিল। সেজন্য তাদের জনসমর্থন ৭২% হয়ে গেছে।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:৩২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জামাতের এককভাবে ৩১ শতাংশ সাপোর্ট থাকলে গত ১৫ বছরে তারা বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে প্রধান বিরোধী দল হতো। তারা স্থানীয় নির্বাচন আগে চাইতো না। তারা সংখ্যানুপাতিক সিস্টেমের কথা বলতো না। হাইয়েস্ট সিট পেয়েছিলো ১৮ টা। আগে তাই পেতে দেখাক একক ভাবে নির্বাচন করে।

নতুন রাজনৈতিক দলের আদর্শ কি বোঝা যাচ্ছে না। এরা নেগোসিয়েশন করে কতিপয় সমন্বয়ক এমপি ইলেকশনে দাঁড়াবে।

২| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:৩৬

রানার ব্লগ বলেছেন: জামাত ৩১ শতাংশ জনপ্রীয় ? হা হা হা B-) । কি খাইয়া জরিপ করছে এরা ! এই সব আবর্জনা দূরে ফেলে আসুন ।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:৫৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আচ্ছা ফেলে দিলাম।

৩| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:০০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:



নৌকায়ই আস্থা।
জয়বাংলা।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:১৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনাদের নেতারা এবং সাপোর্টার দের মধ্যে সাধারণ জনগণের প্রতি ক্ষোভ প্রশমন হচ্ছে না। নিজের ভুল বুঝতে না পেরে আপনারা জনগন কে দোষ দিচ্ছেন ডাউনফল এর জন্য। আপনারা আওয়ামী লীগের সাপোর্টাররা এখন সাধারণ মানুষ যখন বিপদে পড়ছে তখন মজা নিচ্ছেন। এতে আপনাদের এক বিন্দুমাত্র লাভ হচ্ছে না।

৪| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৬:৫৮

শায়মা বলেছেন: জরীপের লোকেরা নিজেদের লোকদের দিয়েই মনে হয় জরীপ করায়....



মানে এই দূর্নীতির সমাজে জরীপেও দূরনীতি থাকবে না ভাবতে পারছি না ..... :P

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:০৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: থাকতেই পারে। যারা জরিপ করেছে তারা রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

৫| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:২৭

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আমার মনে হয়না জাতীয় নাগরিক পার্টি সফল হবে।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৫৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার জন্য ও নাগরিক পার্টির জন্য শুভকামনা ।

৬| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: নাগরিক পার্টি বিরাট ধাক্কা খাবে। যদিও তারা শেষমেষ জামাতের সাথে জোট করবে।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জামাতের সাথে জোট করে লাভ আছে? বিএনপির সাথে যাবে।

৭| ০৯ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৩১

শ্রাবণধারা বলেছেন: আমার কাছে জরিপের ফলাফল বাস্তবসম্মতই মনে হয়েছে। জামাতিরা শয়তানি ও বদমায়েশি করে বেশ এগিয়ে গেছে, এতে সন্দেহ নেই।

আর খুব ক্যারিসম্যাটিক বা অনন্যসাধারণ প্রতিভাবান না হলে, নতুন কোনো দলের পক্ষে বাংলাদেশে ভোট পাওয়া সম্ভব নয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো অর্থেই প্রতিভাবান দল নয়। তবে তারা একটি বিষয় চেষ্টা করে দেখতে পারে - সেটা হলো দেশের নারীবান্ধব ও খেটে খাওয়া মানুষের দল হিসেবে গড়ে ওঠা।

০৯ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জানপার ৫/৬ বাদে আর কাউকে চিনে না মানুষ। ইহা আরো একটি সমস্যা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.