![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি একটি ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা আসলে হাস্যকর এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি , এবং চীনের ভূ-রাজনীতির ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা প্রদর্শন করে। জামায়াতের এই প্রস্তাব একটি রাজনৈতিক উদাহরণ হিসেবে সামনে আসে, যা শুধুমাত্র পলিটিক্যাল স্টান্টবাজি এবং দেশের মধ্যে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৌশল ছাড়া কিছু নয়।
আরাকান আর্মি মূলত রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, কিন্তু তাদের অবস্থানও খুবই পরিষ্কার: তারা মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একত্রিত হতে আগ্রহী নয়। রোহিঙ্গাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব আরাকান আর্মির লক্ষ্য নয়, কারণ তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বৌদ্ধদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাখাইন রাজ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের প্রতি বিরোধী মনোভাব পোষণ করে, তাদেরকে নিজেদের জনগণের অংশ হিসেবে বিবেচনা না করে, বরং তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে উপেক্ষা করে। এতে জামায়াতের ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ প্রস্তাব একেবারে অযৌক্তিক হয়ে পড়ে। কারণ, আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের জন্য কোনো সমর্থন দেবে না, বরং তারা নিজেরাই মুসলিমদের শাসনের পরিবর্তে বৌদ্ধদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে জামায়াতের প্রস্তাব একটি রাজনৈতিক বিপর্যয়ের প্রতিফলন হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জামায়াতের এই প্রস্তাবকে কখনোই মেনে নেবে না, কারণ এটি তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। মিয়ানমারের বর্তমান সরকার শুধু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নয়, তাদের নিজস্ব জনগণের প্রতি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নেয়। এই প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে মিয়ানমারের শাসক গোষ্ঠীর অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। তারা তাদের শাসনব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি অস্পষ্ট আচরণ বজায় রাখতে চায়, যা জামায়াতের ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ প্রস্তাবের পক্ষে সহায়ক নয়।
চীন, যেটি মিয়ানমারের প্রধান অর্থনৈতিক এবং সামরিক মিত্র, কখনোই এই ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করবে না। চীন তার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কারণে, বিশেষত উইঘুর মুসলিমদের বিরোধিতা এবং তাদের বিরুদ্ধে দমননীতি গ্রহণ করেছে। চীন কখনোই একটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে সমর্থন দেয়নি, কারণ এটি তাদের নিজের নিরাপত্তা এবং ভৌগোলিক স্থিতিশীলতার জন্য বিপদজনক হতে পারে। তাছাড়া, চীন মিয়ানমারে বেশ বড় একটি অর্থনৈতিক উপস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা তাদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত। চীন এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরও জটিল করতে চাইবে না। এর ফলে, জামায়াতের ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠন প্রস্তাব চীনের জন্য একেবারে অগ্রহণযোগ্য হয়ে দাঁড়ায়।
চীন এবং মিয়ানমারের সম্পর্ক এমন যে, তাদের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতের এই প্রস্তাব, যেখানে ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠনের কথা বলা হয়েছে, তা চীনের জন্য বড় ধরনের বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। চীন, যা দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তার রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছে, একটি মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠার ধারণা সমর্থন করবে না, কারণ এটি তাদের নিজস্ব ভূ-রাজনীতির জন্য বিপরীত হতে পারে।
ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিগুলি জামায়াতের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে থাকবে। ভারত, যে নিজেও কাশ্মীর সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করে, জামায়াতের এই প্রস্তাব মেনে নেবে না। যুক্তরাষ্ট্রও তাদের মানবাধিকার নীতি অনুসারে, মিয়ানমারে একটি মুসলিম রাজ্য গঠনকে কখনোই সমর্থন করবে না, কারণ এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
তাহলে, জামায়াত কেন এমন একটি অযৌক্তিক প্রস্তাব দিচ্ছে ? এর একমাত্র কারণ—রাজনৈতিক স্টান্টবাজি । তারা জানে যে, তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছে না, তাই তারা আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি হাস্যকর কল্পনা হাজির করেছে। জামায়াতের ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ প্রস্তাব মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, আরাকান আর্মি এবং চীনের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্বারা একেবারে অস্বীকৃত হবে। এর ফলে, জামায়াতের এই প্রস্তাব শুধু হাস্যকর নয়, এটি তাদেরকে বৈশ্বিক রাজনীতিতে তারা কতটা আনাড়ি সেটাই প্রকাশ করে।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বলেন আপনি পছন্দ করেন না। কিন্তু জামায়াত কি বুঝে চায়না কে এই প্রস্তাব দিলো ? তাদের মন মস্তিষ্কে কি কাজ করে না?
২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৩:৩৭
যামিনী সুধা বলেছেন:
শি জিনপিং জামাতকে উইগুর ও আরাকান উপহার দিবে।
৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৩:৫৪
রানার ব্লগ বলেছেন: আরাকানীরা কি চায়?
৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:০৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
দেখতে হবে সেই অঞ্চলের মানুষ চায় কিনা?
আগে গণভোট নিতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: চীনের মুসলমানদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবে।বেশি মুসলিম মুসলিম করলে।চীনাদের প্রজেক্ট নিরাপদ করতেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ পাঠালো।পৃথিবীর কেউ মুসলমানদের পছন্দ করে না।এটাই বাস্তবতা।